গিনিপিগ হ’ল ছোট কান বিশিষ্ট বড় ইঁদুর
জাতীয় একটি প্রাণী, যাকে চিকিৎসা শাস্ত্রের প্রয়োজনে যবহ করে কেঁটে-ছেটে
ইচ্ছামত ব্যবহার করা হয়। অত্যাচারী শাসকরা যখনই কাউকে তাদের স্বার্থের
বিরোধী মনে করে, তখনই তার উপর মিথ্যা অপবাদ দিয়ে অত্যাচারের খড়গ চালিয়ে
তাকে শেষ করে দেয় বা শেষ করে দেবার চেষ্টা করে। এই নিরীহ-নিরপরাধ ব্যক্তি
বা ব্যক্তি সমষ্টিকেই বলা হয় ‘গিনিপিগ’। এটি এখন আধুনিক রাজনীতির নোংরা
পরিভাষায় পরিণত হয়েছে। কখন কাকে যে গিনিপিগ বানানো হবে, কেউ তা
ঘূর্ণাক্ষরেও বুঝতে পারে না। অথচ পরে সরকারী অপপ্রচারের মাধ্যমে দেখা যায় ঐ
ব্যক্তি বা দল ‘জিরো থেকে হিরো’-তে পরিণত হয়েছে। বিগত যুগে নমরূদ ও
ফেরাঊনরা নবী ইবরাহীম ও মূসা (আঃ)-কে নিয়ে এবং সবশেষে মক্কার কুরায়েশ
নেতারা শেষনবী মুহাম্মাদ (ছাঃ)-কে নিয়ে যে গিনিপিগ রাজনীতি করেছিল, আধুনিক
যুগে তার অসংখ্য নযীর রয়েছে সভ্যতাগর্বী দেশগুলিতে। মধ্যপ্রাচ্যের
তৈলসমৃদ্ধ মুসলিম দেশগুলির উপর ছড়ি ঘুরানোর জন্য গত শতাব্দীতে ফিলিস্তীনী
মুসলমানদের গিনিপিগ বানানো হয় ও তাদেরকে ভিটেছাড়া করে সেখানে সারা দুনিয়া
থেকে ইহুদীদের এনে বসিয়ে দিয়ে ১৯৪৮ সালে ‘ইসরাঈল’ নামক একটি ইহুদী
রাষ্ট্রের পত্তন দেওয়া হয়। অতঃপর ইরাক ও আফগানিস্তানে হামলার অজুহাত তৈরীর
জন্য ২০০১ সালে ৯ই সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কের বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্র ধ্বংস করে
কথিত ‘টুইন টাওয়ার ট্রাজেডী’ মঞ্চায়িত করা হয়। যার ফলে আজও ইরাক ও
আফগানিস্তানে রক্ত ঝরছে। সেই সাথে বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের নামে
মুসলমানদেরকে সন্ত্রাসী ও ইসলামকে সন্ত্রাসী ধর্ম বলে শত শত মিডিয়ায়
অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। সেইসাথে পবিত্র কুরআন পোড়ানো ও শেষনবী মুহাম্মাদ
(ছাঃ)-এর ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ অব্যাহত রয়েছে।
আমাদের দেশের শাসকরাও কখনো বিদেশী প্রভুদের খুশী করার জন্য, কখনোবা নিজেদের হীন স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য অন্যকে গিনিপিগ বানিয়ে থাকেন। এজন্য হরহামেশা তাদের মিথ্যা বলতে হয় মানুষের মুখ বন্ধ করার জন্য। ফলে রাজনীতিকদের কোন কথাকেই লোকেরা এখন আর বিশ্বাস করে না। ২০০২ সালের ২১শে আগষ্ট ঢাকায় তৎকালীন বিরোধী নেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার করার জন্য তাঁকে লক্ষ্য করে তাঁর জনসভায় যে বোমা হামলা করা হয়, তাতে বর্তমান প্রেসিডেন্টের স্ত্রীসহ ২৪ জন নিহত হন ও তিন শতাধিক ব্যক্তি আহত ও চিরদিনের মত পঙ্গু হন। অথচ প্রকৃত ঘটনাকে আড়াল করার জন্য নোয়াখালীর এক দরিদ্র মায়ের একমাত্র সন্তান জজ মিয়াকে ধরে এনে তাকে দিয়ে স্বীকারোক্তি করিয়ে চমৎকার একটি নাটক সাজানো হয়, যা সকলের মুখরোচক ‘জজ মিয়া’ নাটক নামে পরিচিত। একই সরকার ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারীতে নিজেদের লালিত জঙ্গীদের আড়াল করার জন্য ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর নিরপরাধ নেতৃবৃন্দকে গিনিপিগ বানায় এবং মিথ্যা মামলা ও জেল-যুলুমের মাধ্যমে সারা দেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা বর্তমান সরকার কেউই এর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। এমনকি মানবতার পক্ষে সদা সোচ্চার তথাকথিত সুশীল সমাজ এই অমানবিক ও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে টুঁ শব্দটি পর্যন্ত করেনি। বরং কথিত গোয়েন্দা তথ্যের বরাত দিয়ে বিভিন্ন মিডিয়া আজও এই সংগঠনের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা মহান আল্লাহর নিকটে বিচার দিয়েছি। আমরা বিশ্বাস করি, মযলূমের দো‘আ আল্লাহ ফিরান না। যালেমকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে। সে যতবড় শক্তিশালী হৌক না কেন।
বর্তমান সরকারের আমলে গিনিপিগ হ’ল রামু, উখিয়া ও পটিয়ার নিরপরাধ বৌদ্ধরা ও তাদের বিহারগুলি। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং ক্ষতিগ্রস্ত ভাই-বোনদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি। আমরা এই মর্মান্তিক ঘটনার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত ও মর্মাহত। যারা এ কাজ করেছে, তারা মানবতার শত্রু, ইসলামের শত্রু এবং দেশের শত্রু। প্রকাশ্যে যারা এ কাজ যারা করেছে, তাদের ছবিসহ নাম-ধাম সবকিছু পরের দু’দিনের পত্রিকায় এসেছে। নেপথ্য নায়করা কখনো ধরা পড়বে কি-না সন্দেহ। তবে ঘটনার পরের দিনই সরকারের সর্বোচ্চ ব্যক্তিরা কোনরূপ তদন্ত ছাড়াই বিরোধী দল ও ইসলামী নেতা-কর্মীদের দায়ী করে যেভাবে হম্বি^তম্বি শুরু করলেন তা নিতান্তই হাস্যোদ্দীপক। ফলে হামলাকারীরা উৎসাহিত হয়ে পরদিন উখিয়ার বৌদ্ধ বিহার ও পটিয়ার বৌদ্ধ বিহার ও হিন্দু মন্দিরে হামলা করল। সরকারের সর্বোচ্চ ব্যক্তি পর্যন্ত রামু সফরে গিয়ে বিরোধী দলীয় এম.পিকে দায়ী করে বক্তব্য দিলেন। যদিও তাঁর কাছ থেকে সকলে নিরপেক্ষ বক্তব্য আশা করেছিল। ফলে এটা নিশ্চিত ধারণা করা যায় যে, এ ঘটনার কোন নিরপেক্ষ তদন্ত হবে না এবং প্রকৃত দোষীরা কখনোই শাস্তি পাবে না। দেখা গেল যে, তাঁর ঐ জনসভায় ৩০/৪০ জনের বেশী বৌদ্ধ নাগরিক উপস্থিত ছিলেন না এবং মঞ্চে মাত্র একজনকে ডাকা হয়েছিল যাকে মন খুলে কথা বলতে দেওয়া হয়নি। বৌদ্ধ নেতারা দুঃখ করে বলেছেন, শত শত বছর ধরে আমরা মুসলমান প্রতিবেশী ভাইদের সাথে শান্তি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে বসবাস করছি। একদিন আগেও আমাদের মধ্যে কোন উত্তেজনা ছিল না। হঠাৎ ফেসবুকে অপপ্রচারের দোহাই দিয়ে ২৯ সেপ্টেম্বর রবিবার দিবাগত রাত ১১-টার দিকে শত শত বহিরাগত ব্যক্তি ট্রাকে করে এসে আমাদের ঘরবাড়ী জ্বালিয়ে দিল ও উপাসনালয় ধ্বংস করল। ধ্বংস কার্যে ব্যবহৃত গান পাউডার, পেট্রোল জেরিকেন, আড়াই ইঞ্চি ব্যাসের সিমেন্টের রক এখানে কিভাবে এল? এসব তো রামুতে পাওয়া যায় না। কক্সবাজার যেলার রামু উপযেলার হাইটুপি গ্রামের বেŠদ্ধ যুবক উত্তম কুমার বড়ুয়ার ফেসবুক একাউন্টে ‘ইনসাল্ট আল্লাহ’ নামক পেজ থেকে অন্য কেউ ট্যাগ করে দেয়। যাতে আল্লাহ শব্দকে বিকৃত করা হয়েছে। দেখানো হয়েছে, ‘পবিত্র কুরআনের উপর একজন মহিলার দু’টি পা’ এবং ‘কা‘বা শরীফে কেউ ছালাত পড়ছেন, কেউ পূজা করছেন’। স্থানীয় সরকারী দলের এক নেতা ঐ ছেলেকে এজন্য মোবাইলে কৈফিয়ত তলব করেন রাত ১০ টায়। অতঃপর ঘন্টা খানেকের মধ্যে মিছিল অতঃপর হামলা শুরু হয়। প্রশ্ন হ’ল, এই ঘটনা ঐ এলাকার কয়জন লোক জেনেছিল? কয়জনের বাড়ীতে ইন্টারনেট আছে? তাছাড়া বাবরী মসজিদ, গুজরাট ইস্যু, আসামে মুসলিম নিধন, মিয়ানমারের বৌদ্ধদের দ্বারা রোহিঙ্গা মুসলিম বিতাড়নের টাটকা ইস্যুতেও যখন মুসলমানেরা হিন্দু ও বৌদ্ধদের উপর হামলা করেনি, সেখানে আজকে ফেসবুকের কয়েকটা ছবিকে ইস্যু করে মুসলমানেরা কেন এমন কাজ করবে? এদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গারাই বা কেন তাদের উপর হামলা করে নিজেদের একমাত্র আশ্রয়স্থলকে হুমকির সম্মুখীন করবে?
নিঃসন্দেহে এটি আকস্মিক উত্তেজনার ফল নয়। বরং পূর্ব পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের বহিঃপ্রকাশ। এ ঘটনা যারাই ঘটাক না কেন, এ ফলে বৌদ্ধদের সাথে গিনিপিগ বনে গেছে খোদ সরকার এবং সেই সাথে পুরা দেশ। কেননা এর মাধ্যমে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে এদেশের হাযার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সোনালী ঐতিহ্য। গোয়েন্দা সংস্থা ও আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী সজাগ থাকলে এই নারকীয় কর্মকান্ড আদৌ ঘটতে পারত কি-না সন্দেহ। এজন্য তাদেরকে অবশ্যই আল্লাহর নিকট জবাবদিহী করতে হবে। আমরা আশা করব, সংশ্লিষ্ট সকলে পূর্বের ন্যায় সম্প্রীতির বন্ধন অটুট রাখবেন এবং চক্রান্তকারীদের ব্যাপারে সর্বদা হুঁশিয়ার থাকবেন।
উক্ত ঘটনাকে পুঁজি করে ধর্মনিরপেক্ষ বুদ্ধিজীবীরা ইসলামের বিরুদ্ধে তাদের পুরানো কোরাস গেয়ে চলেছেন। ইসলামই যত নষ্টের মূল। অতএব ইসলাম হটাও। তাহ’লে দেশ অসাম্প্রদায়িক হবে এবং সর্বত্র শান্তি ফিরে আসবে। অথচ এরা বুঝেন না যে, মানবতার একমাত্র রক্ষাকবচ হ’ল ইসলাম। কম্যুনিষ্ট রাশিয়া ও চীনে যখন ধর্ম নিষিদ্ধ ছিল, তখন সেখানে মানবতার কি করুণ ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছিল, সেকথা কি তাঁরা ভুলে গেছেন? তাদের জানা উচিত যে, ইসলাম আছে বলেই এদেশে ধর্মের নামে কোন সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা নেই। অথচ পাশেই ধর্মনিরপেক্ষ ভারতে হরহামেশা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হচ্ছে ও মুসলিম নিধন চলছে। একইভাবে বছরের পর বছর ধরে প্রতিবেশী মিয়ানমারে চলছে রোহিঙ্গা বাঙ্গালী মুসলমানদের উপর ইতিহাসের জঘন্যতম নির্যাতন। অথচ বাংলাদেশী মানবতাবাদীরা মুখে কুলুপ এঁটে থাকলেন। তাহ’লে মুসলমানেরা তাদের দৃষ্টিতে কি মানুষও নয়? অমুসলিম সন্ত্রাসীরাই প্রকৃত মানুষ? পার্বত্য চট্টগ্রামে বিদেশী এনজিওগুলি কাড়ি কাড়ি টাকা ঢেলে তাদের খ্রিষ্টান বানাচ্ছে। দেশের অন্যত্রও খ্রিষ্টানীকরণ চলছে। অথচ এর বিরুদ্ধে সরকার বা ধর্মনিরপেক্ষ নেতাদের কোন মাথাব্যথা নেই। তাহ’লে কি একথাই সত্য হয়ে যাচ্ছে না যে, এইসব বুদ্ধিজীবীরা এদেশের স্বাধীনতা বিরোধী বিদেশী রাষ্ট্রগুলির চর? যারা সর্বদা পার্বত্য চট্টগ্রামকে বিচ্ছিন্ন করে আলাদা রাষ্ট্র বানাবার চক্রান্তে লিপ্ত। উদ্দেশ্য চীনকে ঠেকানো এবং একটা বাফার স্টেট কায়েম করে পাহাড়ের তলদেশের গ্যাস ও তৈলভান্ডার লুট করা। এরা সব জানেন, কেবল জানেন না ইসলাম ও ইসলামের নবীকে । তাই তাদের উদ্দেশ্যে নিবেদন করছি-
(১) ইসলাম মানুষের মস্তিষ্কপ্রসুত কোন ধর্ম নয়। এটি বিশ্বমানবতার কল্যাণে আল্লাহ প্রেরিত একমাত্র ধর্ম। এ ধর্ম কবুল না করে মারা গেলে তাকে পরকালে অবশ্যই জাহান্নামী হতে হবে (মুসলিম হা/১৫৩)। (২) সকল নবী ছিলেন গোত্রীয় নবী। কিন্তু শেষনবী মুহাম্মাদ (ছাঃ) হলেন বিশ্বনবী। তাই ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বিশ্বের সকল মানুষের তিনি একমাত্র নবী। কিয়ামত পর্যন্ত আর কোন নবী আসবেন না। (৩) এ ধর্ম মানুষকে সার্বিক জীবনে কেবল আল্লাহর দাসত্বের আহবান জানায়, অন্যের দাসত্ব নয় (৪) এ ধর্ম মানুষকে নশ্বর জীবনের বিনিময়ে পরকালের অবিনশ্বর জীবনে শান্তি ও মুক্তির পথ দেখায় (৫) এ ধর্মের পবিত্র গ্রন্থ কুরআন সরাসরি আল্লাহর কালাম, যার একটি বর্ণও পরিবর্তন হয়নি এবং তা করার সাধ্য কারু নেই (আন‘আম ৬/১১৫)। কুরআনের ব্যাখ্যা হাদীছ- সরাসরি তাঁর প্রেরিত রাসূলের অভ্রান্ত বাণী। যাতে কোন মিথ্যার সংমিশ্রণ নেই। (৬) এ ধর্মে অনুমোদিত জিহাদ, অন্যায় ও অসত্যের বিরুদ্ধে জিহাদ। পৃথিবীতে সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য যা অপরিহার্য। তা কখনোই কোন নিরপরাধ ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নয়। (৭) এ ধর্ম কখনোই অন্যের উপর যবরদস্তিকে সমর্থন করে না। কেননা সরল পথ ও ভ্রান্ত পথ স্পষ্ট’ (বাক্বারাহ ২/২৫৫)।
উপরের বক্তব্যগুলির বাস্তবতা দেখুন নিম্নের ঘটনাগুলিতে।- (১) চক্রান্তকারী ইহুদী বনু নাযীর গোত্রকে ৪র্থ হিজরীতে মদীনা থেকে বহিষ্কার করার সময় দুধ-মা হবার সুবাদে তাদের গৃহে প্রতিপালিত আনছার সন্তানদের ফিরিয়ে নেবার জন্য তাদের মুসলিম মায়েরা রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট জোর দাবী জানালো। এই সময় রাসূল (ছাঃ)-এর একটি হুকুমই যথেষ্ট ছিল। কিন্তু না। আয়াত নাযিল হ’ল, ‘লা ইকরা-হা ফিদ্দীন’ ধর্মের ব্যাপারে কোন যবরদস্তি নেই (বাক্বারাহ ২/২৫৫)। (২) এক ইহুদী বালক রাসূল (ছাঃ)-এর খাদেম ছিল। তার রোগশয্যায় আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) তাকে দেখতে গেলেন। মৃত্যু লক্ষণ বুঝতে পেরে রাসূল (ছাঃ) তাকে বললেন, তুমি বল, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ। বালকটি তার ইহুদী পিতার দিকে তাকালো। পিতা চুপ রইল। রাসূল (ছাঃ) পুনরায় বললেন। ছেলেটি আবার তার বাপের দিকে তাকাল। এবার পিতা বলল, তুমি আবুল কাসেমের (নবীর) কথা মেনে নাও। ছেলে তখন কালেমা শাহাদাত পাঠ করে মুসলমান হয়ে গেল। বেরিয়ে আসার সময় রাসূল (ছাঃ) বললেন, যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি আমার মাধ্যমে ছেলেটিকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিলেন’ (বুখারী হা/১৩৫৬)।
এরূপ অসংখ্য ঘটনা রাসূল (ছাঃ), খুলাফায়ে রাশেদীন ও দিগ্বিজয়ী মুসলিম সেনানায়কদের জীবনীতে পাওয়া যাবে। যার কোন তুলনা পৃথিবীর ইতিহাসে নেই। অতএব প্রকৃত মুসলমান কখনোই কোন ধর্মীয় গোষ্ঠীর উপর অন্যায়ভাবে হামলা করে না। তবে কেউ অন্যায়াচরণ করলে তার প্রতিরোধ করার অধিকার সবার আছে। বরং এটাই সত্য যে, ধর্মনিরপেক্ষতা ও গণতন্ত্রের নামে আমাদের দেশে ও বিশ্বব্যাপী যে দলীয় ও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চলছে, ইতিহাসে তার দৃষ্টান্ত বিরল। অতএব যদি কেউ পৃথিবীতে প্রকৃত শান্তি চান, তাহ’লে তাকে ফিরে আসতে হবে ইসলামের কাছে, অন্য কোথাও নয়। আল্লাহ আমাদের সরল পথ প্রদর্শন করুন- আমীন! (স.স.)।
[আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষে সকল পাঠক-পাঠিকা, লেখক-লেখিকা এবং দেশী ও প্রবাসী সকল শুভানুধ্যায়ীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।- সম্পাদক।]