উত্তর : হিন্দু, পারসিক ও গ্রীক দর্শনের কু-প্রভাবে মুসলিম উম্মাহর মধ্যে হিজরী তৃতীয় শতাব্দীতে মা‘রেফাতের নামে ছূফীবাদের সূচনা হয়। ছূফী আরবী ‘ছুফ’ শব্দ থেকে এসেছে যার অর্থ পশম। ছূফীরা তাদের বৈরাগ্যের নিদর্শনস্বরূপ পশমের কাপড় পরতো বলেই সম্ভবতঃ এই নামে পরিচিত হয়েছেন। সর্বপ্রথম ইরাকের বছরা নগরীতে যুহ্দ বা দুনিয়া ত্যাগের প্রেরণা থেকে এটা শুরু হয়। প্রবল আল্লাহভীতি ও দুনিয়াত্যাগের বাড়াবাড়ি, সার্বক্ষণিক যিকর, আযাবের আয়াত পাঠে বা শুনে অজ্ঞান হওয়া বা মৃত্যু বরণ করা ইত্যাদির মাধ্যমে ছূফীবাদের যাত্রা শুরু হয়। ছূফীবাদের পরিভাষায় এই অবস্থাকে ‘হাল’ বলে। রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরামের যুগে ছূফী শব্দের সাথে কেউ পরিচিত ছিলেন না। বরং রাসূল (ছাঃ) ছাহাবায়ে কেরাম ও তাবেঈনে এযামের তিনটি স্বর্ণযুগের পরে (তৃতীয় শতাব্দী হিজরীতে) এই প্রথা চালু হয়। যখন অতি পরহেযগারীর নামে এগুলি প্রকাশ পেতে শুরু করে , তখন ছাহাবী ও তাবেঈগণ এসবের তীব্র প্রতিবাদ করেন (ইবনু তায়মিয়াহ, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ১১/৬)। পরবর্তীতে এই ছূফীবাদী ধ্যান-ধারণা বিজাতীয় নানা মরমীবাদী দর্শনের সংস্পর্শে এসে বিবিধ শিরকী আক্বীদা ও বিদআতী রীতি-নীতির নোংরা গরলে নিমজ্জিত হয় এবং ইসলামের মৌলিক আক্বীদা-আমল থেকে সম্পূর্ণভাবে বিচ্যুত হয়ে পড়ে। তাদের আক্বীদাকে তিনটি মাযহাবে ভাগ করা যায়।

- প্রাচ্য দর্শনভিত্তিক মাযহাব, যা দক্ষিণ এশীয় হিন্দু ও বৌদ্ধদের নিকট থেকে এসেছে। এই মাযহাবের অনুসারী ছূফীরা মা‘রেফাত হাছিল করার জন্য দেহকে চরমভাবে কষ্ট দিয়ে স্বীয় ক্বলবকে তাদের ধারণা মতে জ্যোতির্ময় করার চেষ্টা করে থাকে। প্রায় সকল ছূফীই এরূপ প্রচেষ্টা চালিয়ে থাকেন।

২- খ্রিষ্টানদের নিকট থেকে আগত মাযহাব, যা ‘হুলূল’ ও ‘ইত্তেহাদ’ দ’ুভাগে বিভক্ত। হুলূল অর্থ ‘মানুষের দেহে আল্লাহর অনুপ্রবেশ’। হিন্দু মতে ‘নররূপী নারায়ণ’। ইরানের আবু ইয়াযীদ বিস্তামী (মৃঃ ২৬১ হিঃ) ওরফে বায়েযীদ বুস্তামী ছিলেন এই মতের হোতা। এই মাযহাবের অন্যতম নেতা হুসাইন বিন মনছূর হাল্লাজ (মৃঃ ৩০৯ হিঃ) নিজেকে সরাসরি আল্লাহ (আনাল হক্ব) বলে দাবী করায় মুরতাদ হওয়ার কারণে তাকে শূলে বিদ্ধ করে হত্যা করা হয়।

৩- ইত্তেহাদ বা ওয়াহদাতুল উজূদ বলতে অদ্বৈতবাদী দর্শন বুঝায়, যা ‘হুলূল’-এর পরবর্তী পরিণতি হিসাবে রূপ লাভ করে। এর অর্থ হ‘ল আল্লাহর অস্তিত্বের মধ্যে বিলীন হয়ে যাওয়া। অস্তিত্ব জগতে যা কিছু আমরা দেখছি, সবকিছু একক এলাহী সত্তার বহিঃপ্রকাশ।  এই আক্বীদার অনুসারী ছূফীরা স্রষ্টা ও সৃষ্টিতে কোন পার্থক্য করে না। এদের মতে মূসা (আঃ) -এর সময়ে যারা বাছুর পূজা করেছিল, তারা মূলতঃ আল্লাহকে পূজা করেছিল। কারণ তাদের দৃষ্টিতে সবই আল্লাহ। আল্লাহ আরশে নন, বরং সর্বত্র ও সবকিছূতে বিরাজমান। অতএব, মানষের মধ্যে মুমিন ও মুশরিক বলে কোন পার্থক্য নেই। যে ব্যক্তি মুর্তিপুজা করে বা পাথর, গাছ, মানুষ, তারকা ইত্যাদি পুজা করে, সে মূলতঃ আল্লাহকেই পুজা করে। সবকিছুর মধ্যে মুমিন আল্লাহর নূর বা জ্যোতির প্রকাশ রয়েছে। তাদের ধারণায় খৃষ্টানরা কাফের এজন্য যে, তারা কেবল ঈসা (আঃ)-কেই প্রভূ বলেছে। যদি তারা সকল সৃষ্টিকে আল্লাহ বলত, তাহ’লে তারা কাফের হ’ত না। বলা বাহুল্য এটাই হ‘ল  হিন্দুদের ‘সর্বেশ্বরবাদ’। তৃতীয় শতাব্দী হিজরী থেকে চালু এই সব কুফরী আক্বীদার ছূফী সম্রাট হ’লেন সিরিয়ার মুহিউদ্দিন ইবনু আরাবী (মৃঃ ৬৩৮ হিঃ)। বর্তমানে এই আক্বীদাই মা‘রেফাতপন্থী ছূফীদের মধ্যে ব্যপকভাবে প্রচলিত। এদের দর্শন হ‘ল এই যে, প্রেমিক ও প্রেমাষ্পদের মধ্যকার সম্পর্ক এমন হ’তে হবে যেন উভয়ের অস্তিত্বের মধ্যে কোন ফারাক না থাকে’। বলা বাহুল্য ‘ফানাফিল্লাহ’-র উক্ত আক্বীদা সম্পূর্ণরূপে কুফরী আক্বীদা। এই আক্বীদাই বর্তমানে চালু আছে।  

সর্বোপরি ইসলামী আক্বীদার সাথে মা‘রেফাতের নামে প্রচলিত ছূফীবাদী আক্বীদার কোন সম্পর্ক নেই। ইসলাম ও ছূফীদর্শন সরাসরি সংঘর্ষশীল। ছূফীবাদের ভিত্তি হ‘ল  আউলিয়াদের কাশ্ফ, স্বপ্ন, মুরশিদের ধ্যান ও ফয়েয ইত্যাদির উপরে। পক্ষান্তরে ইসলামের ভিত্তি হ‘ল  আল্লাহর প্রেরিত ‘অহি’ পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের উপরে। ছূফীদের আবিস্কৃত তরীকা সমূহ তাদের কপোলকল্পিত। এর সাথে কুরআন, হাদীছ, ইজমায়ে ছাহাবা, ক্বিয়াসে ছহীহ কোন কিছুরই দূরতম সম্পর্ক নেই। ছূফীদের ইমারত খৃষ্টানদের বৈরাগ্যবাদ-এর উপরে দন্ডায়মান। ইসলাম যাকে প্রথমেই দূরে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে (হাদীদ ২৭)(দ্রঃ দরসে কুরআন, মা‘রেফতে দ্বীন, ২য় বর্ষ ৪র্থ সংখ্যা, জানুয়ারী ১৯৯৯)

ছূফীদের মধ্যে যারা হুলূল ও ইত্তেহাদ তথা অদ্বৈতবাদী ও সর্বেশ্বরবাদী আক্বীদা পোষণ করে এবং সেমতে আমল করে, যা কুফরীর পর্যায়ভুক্ত সেসব ইমামের পিছনে জেনেশুনে ছালাত আদায় করা সিদ্ধ হবে না।






প্রশ্ন (১২/২৫২) : ইমাম গাযালী (রহঃ) ও তাঁর লেখনী সম্পর্কে জানিয়ে বাধিত করবেন।
প্রশ্ন (৩৮/১১৮) : চার রাক‘আত বিশিষ্ট ছালাতের শেষ বৈঠকে নিতম্বের উপরে বসতে হয়। এক্ষণে দু’রাক‘আত বিশিষ্ট ছালাতেও এভাবে বসতে হবে কি? - -মানছূরা, কাছনা, রংপুর।
প্রশ্ন (৯/২৪৯) : রাসূল (ছাঃ) উট বা ঘোড়ায় সওয়ার অবস্থায় নিয়মিতভাবে পবিত্র কুরআন খতম করতেন কি? এ ব্যাপারে তাঁর নিয়মিত কোন আমল ছিল কি? - ইদ্রীস মোল্লা শিবগঞ্জ, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
প্রশ্ন (২৭/২২৭) : হামযাহ (রাঃ)-এর হত্যাকারী ওয়াহশী (রাঃ) ইসলাম গ্রহণ করলেও রাসূল (ছাঃ) তাকে তাঁর সামনে আসতে নিষেধ করেন। এ ঘটনার কোন সত্যতা আছে কি? - -আব্দুল কাদের, নকলা, শেরপুর।
প্রশ্ন (২৮/১৮৮) : পিতা আমাকে নটরডেম কলেজে ভর্তি হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। মিশনারী স্কুল হওয়ায় সেখানে ক্রুশ চিহ্ন সম্বলিত ইউনিফর্ম পরিধান করা অপরিহার্য। এরূপ প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা গ্রহণ করা জায়েয হবে কি?
প্রশ্ন (৯/৮৯) : কেবল পরিদর্শনের জন্য মাযার বা শিরকী কার্যকলাপ চলে এরূপ স্থানে যাওয়া যাবে কি?
প্রশ্ন (১৩/২১৩) : আমার কোম্পানীতে প্রতিদিন যে কাজ তা মাঝে মাঝে দ্রুত শেষ করে আমি অন্যদের সাথে গল্প বা মোবাইল ব্যবহার করে অনেক সময় অপচয় করি। এসময় চাইলে অন্য কাজ করা যায়। কিন্তু আমার সিনিয়র আরেকজন বসে থাকায় আমি করি না। বেশী কাজ করলে সহকর্মীরাও রাগ করে। এক্ষণে আমার এই অফিস টাইম নষ্ট করা কাজে ফাঁকি হিসাবে গণ্য হবে?
প্রশ্ন (১৩/২৯৩) : আমি যেখানে চাকুরী করি, সেই কোম্পানীরই ডরমেটরীতে থাকি। কোম্পানী করোনা ভাইরাসের জন্য বন্ধ করে দিলে বাড়ি যেতে পারব কি? এটা হাদীছ বিরোধী কাজ হবে কি? - -নক্বীব হোসাইন, সাহেব বাজার, রাজশাহী।
প্রশ্ন (১৯/৯৯) : ‘তোমাদের প্রত্যেকে মৃত্যুবরণ করবে। তবে সৎ ব্যক্তিদের আগে উঠিয়ে নেওয়া হবে’ মর্মে হাদীছটির ব্যাখ্যা জানতে চাই। - -আহমাদুল্লাহ, নীলফামারী।
প্রশ্ন (২৩/৬৩): অপারেশনের মাধ্যমে তিনটি সন্তান হওয়ার পর পুনরায় গর্ভ ধারণ করা জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এমতাবস্থায় স্থায়ী জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ করা যাবে কি?
প্রশ্ন (৭/৭) : হযরত ওমর (রাঃ) সম্পর্কে শোনা যায় তিনি রাতে প্রজাদের অবস্থা দেখার সময় জনৈক মাকে শুন্য হাড়ি চড়িয়ে ক্ষুধার্ত শিশুদের সান্ত্বনা দেওয়ার দৃশ্য দেখে স্বয়ং বায়তুল মাল থেকে পিঠে খাদ্যদ্রব্য বহন করে তাদের খাবারের ব্যবস্থা করেছিলেন। এ ঘটনার কোন সত্যতা আছে কি?
প্রশ্ন (১৮/৩৭৮) : করোনাকালে ইহরাম অবস্থায় মাস্ক পরিধান করা যাবে কি?
আরও
আরও
.