আল্লাহ আমীরুল মুমিনীনকে দীর্ঘজীবী এবং তাঁর সমুদয় নে‘মত ও গৌরবকে তাঁর জন্য স্থায়ী করুন। তিনি ইহজগতে যে সুখ সম্পদের অধিকারী হয়েছেন, পরলোকের অনন্ত নে‘মতও যেন তাঁর সঙ্গে অবিচলিত থাকে। তিনি যেন নবী করীম (ছাঃ)-এর সাহচর্য লাভের গৌরব অর্জন করতে সমর্থ হন।

আমীরুল মুমিনীন আমাকে রাজস্ব, ওশর, ছাদাক্বা এবং জিযিয়া প্রভৃতি আদায় করার নিয়ম সম্বন্ধে জ্ঞাতব্য ও অনুসরণযোগ্য একখানা বিস্তৃত গ্রন্থ প্রণয়ন করতে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি এর সাহায্যে প্রজাপুঞ্জের উপর হ’তে অত্যাচার বিদূরিত করার এবং তাদের সংশোধন ও হিত সাধনের সংকল্প করেছেন। আল্লাহ আমীরুল মুমিনীনকে এর তাওফীক দান করুন এবং যে কাজ তিনি সাধন করতে চেয়েছিলেন, তাতে তাঁর সহায় এবং পৃষ্ঠপোষক হউন। আর যা তিনি আশংকা করছেন এবং যে বিষয় হ’তে বাঁচতে চেয়েছেন, তাঁকে সে বিষয় হ’তে রক্ষা করুন। তিনি যে কাজের অভিপ্রায় পোষণ করেন সে বিষয়ে সুস্পষ্ট ও সবিস্তার ব্যাখ্যা আমার কাছে চেয়েছেন। আমি তার সবিস্তার ও স্পষ্ট ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ পেশ করেছি।

হে আমীরুল মুমিনীন! আল্লাহর জন্য সর্ববিধ উত্তম প্রশস্তি যে, তিনি আপনাকে এক গুরুতর দায়িত্বভার সমর্পণ করেছেন, এর পুরস্কার সর্বাপেক্ষা অধিক এবং এর দন্ডও সর্বাপেক্ষা ভয়াবহ। এই উম্মতের শাসনভার আপনার উপর ন্যস্ত করা হয়েছে, আপনার প্রভাত ও সন্ধ্যা বিশাল সৃষ্টজীবের দায়িত্বভারে পূর্ণ। আল্লাহ আপনাকে তাদের শাসক, রক্ষক ও অছী নিযুক্ত করেছেন। আপনাকে তাদের শাসন কার্যের পরীক্ষায় নিক্ষেপ করেছেন। যে প্রতিষ্ঠান আল্লাহর ভয় অর্থাৎ তাক্বওয়ার ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত নয়, তা টিকতে পারে না। ভিত সমেত বিধ্বস্ত করে আল্লাহ তাকে প্রতিষ্ঠাতা এবং তার সাহায্যকারীদের মাথার উপর নিক্ষেপ করে থাকেন। অতএব হে আমীরুল মুমিনীন, সাবধান! এই উম্মতের এবং প্রজাপুঞ্জের যে গুরুদায়িত্ব আপনাকে আল্লাহ সমর্পণ করেছেন, আপনি কদাচ তার অপচয় করবেন না। কারণ কর্মশক্তি আল্লাহর অনুগ্রহেই অর্জিত হয়।

আজকের কাজ কালকের জন্য স্থগিত রাখবেন না। আপনি যদি এরূপ করেন তাহ’লে আপনি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। নির্ধারিত সময়ের (মৃত্যু) মধ্যে বিলম্ব ঘটার সম্ভাবনা নেই। সুতরাং কর্ম দ্বারা নির্ধারিত সময়ের জন্য ত্বরান্বিত হৌন। কারণ নির্ধারিত সময়ের পর সমুদয় কর্মের অবসান ঘটবে। রাখালদেরকে তাদের প্রভুদের কাছে যেমন জওয়াবদিহী করতে হয়, শাসনকর্তাদেরকেও তাদের প্রভুর কাছে ঠিক সেভাবেই জওয়াবদিহী করতে হবে। অতএব দিবসের যে কোন মুহূর্তে, আপনাকে যে ভার সমর্পণ করা হয়েছে, আপনি তজ্জন্য ন্যায়কে প্রতিষ্ঠা করুন। যে শাসনকর্তা দ্বারা প্রজাপুঞ্জ সমৃদ্ধি লাভ করবে, ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহর কাছে তিনিই সর্বাপেক্ষা সমৃদ্ধ হবেন। আপনি যদি বক্রপথ অবলম্বন করেন, নিশ্চয়ই জানবেন, আপনার প্রজারাও বক্রপথের পথিক হবে। সাবধান! আপনি প্রবৃত্তির অনুসারী এবং ক্রোধে আক্রান্ত হবেন না। এমন দু’টি বিকল্প পন্থা যদি আপনার সম্মুখে উপনীত হয় যে, একটিতে শুধু ইহলৌকিক মঙ্গল এবং অপরটিতে শুধু পারলৌকিক মঙ্গল নিহিত, তাহ’লে আপনি পারলৌকিক মঙ্গলজনক পথের অনুসরণ করবেন। কারণ পরকাল অবিনশ্বর এবং ইহকাল অস্থায়ী।

আপনি আল্লাহর ভয়ে সাবধানতা অবলম্বন করুন। আল্লাহর শাসন বিধানে আপনার কাছে নিকট ও দূরবর্তী সকলেই সমতুল্য হওয়া আবশ্যক। আল্লাহর আদেশ প্রতিপালনের ব্যাপারে কোন নিন্দুকের নিন্দা গ্রাহ্য করবেন না। সর্বদা সাবধান থাকবেন; সাবধানতা অন্তরের বিষয়, উচ্চারণের বস্ত্ত নয়। আল্লাহর জন্য তাক্বওয়া অবলম্বন করবেন। সাবধানতা দ্বারাই তাক্বওয়া অর্জিত হয় এবং যে আল্লাহর জন্য সাবধান থাকে, আল্লাহ তাকে সুরক্ষিত করেন।

আপনি নির্ধারিত সময়ের জন্য কর্মরত থাকুন তা সুনিশ্চিত। অধিকাংশই এই পথে চলে গেছেন, এটা অনুসরণীয় পথ, এটা কঠোর সত্য, এটা প্রত্যাবর্তনের ঘাট! এই সন্দেহাতীত ঘাটে, এই বিশালতম প্রতীক্ষাক্ষেত্রে প্রবল পরাক্রান্ত সম্রাটের বিক্রমে হৃদয়সমূহ প্রকম্পিত হবে এবং সমুদয় যুক্তিতর্কের অবসান ঘটবে। সমুদয় সৃষ্টি তাঁর সম্মুখে সমবেত, তাঁর বিচারের জন্য অপেক্ষমান এবং তাঁর শাস্তির জন্য শঙ্কিত হবে। শাস্তির পূর্বে সকলেই মনে করবে যেন শাস্তি হচ্ছে। যারা জানাশুনা সত্ত্বেও কর্ম করল না, তাদের অনুশোচনা ও পরিতাপ সেই বিরাট প্রতীক্ষা ক্ষেত্রে যথেষ্ট হবে। সেদিন সকলের পদযুগল স্খলিত, সকলেই বিবর্ণ হবে। প্রতীক্ষা হবে অত্যন্ত সুদীর্ঘ আর হিসাব হবে বড়ই কঠিন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘তাদের প্রভুর নিকট এক দিবস তোমাদের গণনার সহস্র বৎসরের সমতুল্য’ (হজ্জ ৪৭)। তিনি বলেন, ‘এটা মীমাংসার দিবস, এই দিবসে তোমাদেরকে এবং পূর্ববর্তীদেরকে আমরা একত্রিত করব’ (মুরসালাত ৩৮)। পুনরায় তিনি বলেন, ‘নিশ্চয়ই মীমাংসার দিবস তাদের সকলের জন্য নির্দিষ্ট’ (দুখান ৪০)। মহান আল্লাহ আরো বলেন, ‘যে দিবসের প্রতিশ্রুতি তাদেরকে দেওয়া হয়েছে, সেদিন তারা দেখবে যেন দিবসের মুহূর্ত মাত্র তারা পৃথিবীতে অবস্থান করেছিল’ (আহকাফ ৩৫)। তিনি আরো বলেন, ‘সেদিন তারা দেখবে যেন পৃথিবীতে একটি সন্ধ্যা অথবা তার প্রভাত ছাড়া তারা অবস্থান করেনি’ (নাযি‘আত ৪৬)। অতএব যে দন্ড কখনো হ্রাস হবে না তা কিরূপ ভীষণ এবং যে অনুশোচনা ফল প্রদর্শন করবে না তা কত করুণ!

দিবস যামিনীর পরিবর্তন সমূদয় নতুনকে জরাগ্রস্ত এবং সমুদয় দূরত্বকে নিকটতর করে ফেলছে। দিবস ও রাত্রির আবর্তন প্রতি মুহূর্তে সেই দিনকে আকর্ষণ করছে, যেদিন আল্লাহ প্রত্যেককে তার উপার্জনের ফল প্রদান করবেন, নিশ্চয়ই তিনি দ্রুত হিসাব গ্রহণকারী।

অতএব হে আমীরুল মুমিনীন! আল্লাহকে ভয় করুন। আল্লাহকে ভয় করুন। জীবনের স্থায়িত্ব অতি অল্প এবং কর্ম বহুল। পৃথিবী এবং পৃথিবীতে যা কিছু আছে ধ্বংসের পথে দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে এবং পরলোক স্থায়ী। অতএব সীমালংঘনকারীদের পথের পথিক রূপে আগামীকাল কদাচ যেন আল্লাহর সঙ্গে আপনার সাক্ষাৎকার না ঘটে। কারণ বিচার দিবসে যিনি বিচারক হবেন, তিনি বান্দাদের আচরণ অনুযায়ী বিচার করবেন, তাদের পদমর্যাদানুসারে বিচার করবেন না। আল্লাহ আপনাকে সতর্ক করেছেন। অতএব আপনি সতর্ক হউন। আপনাকে অনর্থক সৃষ্টি করা হয়নি এবং আপনাকে নিরর্থক ছেড়ে দেওয়া হবে না। আপনি কি করছেন এবং কার অনুসরণ করছেন, আল্লাহ তা আপনাকে জিজ্ঞেস করবেন। আপনার উত্তর কী হবে, তা ঠিক করুন।

এটাও আপনি জেনে রাখুন যে, সেদিন জিজ্ঞাসার উত্তর না দিয়ে কেউ আল্লাহর সম্মুখ হ’তে সরে যেতে পারবে না। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘ক্বিয়ামতের দিন কোন বান্দা তার পদযুগল উত্তোলিত করতে পারবে না, যতক্ষণ না সে চারটি বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। সে তার বিদ্যানুসারে কি আমল করেছে? সে তার বয়স কিসে নিঃশেষিত করেছে? সে তার ধন কিভাবে উপার্জন করেছে এবং কোন পথে ব্যয় করেছে? সে তার দেহ কোন কাজে ক্ষয় করেছে? অতএব হে আমীরুল মুমিনীন! আপনি প্রশ্নগুলির উত্তর নির্ণয় করুন। কারণ আজ আপনি যে কাজ করেছেন, আগামীকাল তার বিবরণী আপনার সম্মুখে পঠিত হবে। অতএব যে গুপ্তরহস্য আজ শুধু আপনার ও আল্লাহর মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে, সেদিন সর্বজন সমক্ষে তা প্রকাশিত হয়ে পড়বে। সেদিনকার সেই নিদারুণ অবস্থা আপনি স্মরণ করুন।

হে আমীরুল মুমিনীন! আমি আপনাকে অছিয়ত করছি যে, আল্লাহ যে দায়িত্ব আপনাকে সমর্পণ করেছেন তা আপনি যথাযথভাবে প্রতিপালন করুন এবং আপনাকে যে বিষয়ে প্রতিভূ করেছেন, বিশ্বস্ততার সাথে তা রক্ষা করুন। আল্লাহকে ব্যতীত এবং তাঁর জন্য ব্যতীত আপনি অন্য কোনদিকে দৃষ্টি সঞ্চালিত করবেন না। এই নিয়মের অনুসরণ না করলে হেদায়াতের সরলতা আপনার জন্য দুরূহ হয়ে পড়বে। আপনার দৃষ্টি অন্ধ এবং হেদায়াতের নিদর্শন সমূহ আপনার জন্য নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। এর প্রশস্ততা আপনার জন্য সংকীর্ণ হয়ে পড়বে। অন্যায় আপনার বাঞ্ছিত ও ন্যায় আপনার অপ্রিয় হয়ে উঠবে। আপনার ভিতর অন্যায়ের আকর্ষণ অনুভূত হ’লে আপনি আপনার প্রবৃত্তির সাথে কঠোর সংগ্রামে প্রবৃত্ত হউন। শাসনকর্তার হাতে যা বিনষ্ট হবে, তার জন্য তাকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। কারণ আল্লাহর অনুমতিক্রমে সে চেষ্টা করলে নিধনের স্থান হ’তে জীবন ও সুরক্ষার স্থলে জনগণকে সে ফিরিয়ে আনতে পারত। এ চেষ্টা পরিহার করার দরুন সে প্রজামন্ডলীর ক্ষতি করেছে। আর যদি সে অন্য ব্যাপারে মনোনিবেশ করে থাকে, তাহ’লে ক্ষতি গুরুতর ও দ্রুততর হবে। আর যদি সে সঠিকভাবে কর্তব্য সম্পাদন করে থাকে, তাহ’লে সে সৌভাগ্যবান। সে যে পরিমাণ কর্তব্য পালন করেছে তার বহুগুণ অধিক সে পুরস্কৃত হবে। অতএব সাবধান! আপনি আপনার প্রজাপুঞ্জকে বিনষ্ট করবেন না, নতুবা তাদের প্রভু আপনার নিকট হ’তে পুরাপুরি ক্ষতিপূরণ আদায় করবেন এবং আপনাকে বিনষ্ট করবেন। প্রাসাদ বিধ্বস্ত হবার পূর্বে তার বুনিয়াদ নড়ে উঠে। যাদের শাসন সংরক্ষণের ভার আল্লাহ আপনাকে সমর্পণ করেছেন, তাদের সুখ-শান্তির জন্য আপনি যে পরিশ্রম করবেন, তার প্রতিদান আপনার জন্য রয়েছে। আর তাদের যথার্থ প্রাপ্যের যা আপনি নষ্ট করবেন তার দন্ড আপনাকে ভোগ করতে হবে। যদি জনমন্ডলীর সুখ-সুবিধার চেষ্টা আপনি বিস্মৃত না হন, তাহ’লে আপনাকেও ভুলে যাওয়া হবে না। তাদের এবং তাদের স্বার্থ সম্বন্ধে যদি আপনি উদাসীন না হন, তাহ’লে আপনার সম্বন্ধেও উদাসীন থাকা হবে না।

দুনিয়ায় আপনার করণীয় কর্তব্যের মধ্যে দিবস-যামিনী সংগোপনে আল্লাহর তাসবীহ ও তাহলীল উচ্চারণ এবং রহমতের নবী ও হেদায়াতের ইমাম আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)-এর প্রতি দরূদ পাঠ করা কদাচ পরিহার করবেন না। আল্লাহ তাঁর অপরিসীম অনুগ্রহ, রহমত ও ক্ষমাগুণে শাসকবর্গকে পৃথিবীতে তাঁর প্রতিনিধি (খলীফা) করেছেন। জনমন্ডলী যে সকল বিষয়ে অন্ধকারে হাবুডুবু খাচ্ছে, তার শৃংখলা বিধানের জন্য তাঁদেরকে আলোকবর্তিকায় পরিণত ও তাদের পারস্পরিক দাবীদাওয়া সম্বন্ধে মতভেদের মীমাংসাকারী করেছেন। আল্লাহর দন্ডবিধির প্রতিষ্ঠা করা, প্রকৃত অধিকারীকে তার পাওনা বুঝে দেওয়া, যা সুস্পষ্ট তা দৃঢ়তার সাথে বলবৎ করা এবং ন্যায়নিষ্ঠগণের রীতিসমূহের পুনরুজ্জীবন সাধনের সুবর্ণ সুযোগ শাসনকর্তাগণের উজ্জ্বল নূরের সহায়তায় লাভ করা যায়। সুন্নাতের পুনঃ প্রতিষ্ঠা এমন একটি সৎকাজ যা চিরঞ্জীবী। শাসকদের অত্যাচার প্রজাপুঞ্জের বিনাশ প্রাপ্তির কারণ। যারা নির্ভরযোগ্য এবং সাধু, তাঁদের ছাড়া অন্যের সাহায্যে শাসন পরিচালনা করার অবশ্যম্ভাবী ফল জনমন্ডলীর সর্বনাশ!

হে আমীরুল মুমিনীন! আল্লাহ আপনাকে যে সকল নে‘মত দান করেছেন, সেগুলির উত্তম প্রয়োগ দ্বারা আপনি সেগুলিকে সার্থক করুন এবং সেগুলির জন্য আল্লাহর নিকট কৃতজ্ঞ হয়ে অধিকতর নে‘মতের অধিকারী হউন। কেননা আল্লাহ তা‘আলা স্বীয় মহিমান্বিত গ্রন্থে বলেছেন, ‘যদি তোমরা কৃতজ্ঞ হও, তাহ’লে আমরা তোমাদেরকে অধিকতর নে‘মতের অধিকারী করব, আর যদি নাফরমানী কর তাহ’লে আমার শাস্তি নিশ্চয়ই কঠোর হবে’ (ইবরাহীম ৭)

আল্লাহর কাছে শান্তি অপেক্ষা প্রিয়তর আর অশান্তি অপেক্ষা ঘৃণিত কিছুই নেই। তাঁর নে‘মতের অকৃতজ্ঞতার তাৎপর্য হচ্ছে- পাপ ও নিষিদ্ধ কাজে লিপ্ত হওয়া।  যে সকল জাতি আল্লাহর নে‘মতের নিমকহারামী করেছে অথচ অবিলম্বে তওবার জন্য অগ্রসর হয়নি, আল্লাহ তাদের জাতীয় গৌরব কেড়ে নিয়ে তাদেরকে শত্রুদের অধীনতাপাশে আবদ্ধ করেছেন। হে আমীরুল মুমিনীন! আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি যে, শাসন কাজের যে রীতি তিনি আপনাকে বুঝার সুযোগ দিয়েছেন, আপনার সেই কাজে আপনাকে যেন তিনি নিঃসঙ্গ না করেন, বরং তাঁর বন্ধু ও প্রীতিভাজনের তিনি যেরূপ পৃষ্ঠপোষকতা করে থাকেন, আপনারও তদ্রূপ পৃষ্ঠপোষক হৌন! কারণ তিনিই প্রকৃত সহায় এবং এই রীতি তাঁর মনোনীত।

আপনি যেরূপ আদেশ করেছেন, তদনুসারে আমি আপনার জন্য এই গ্রন্থ সংকলিত করেছি, (আবশ্যক ক্ষেত্রে) ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণও দিয়েছি। আপনি এটা হৃদয়ঙ্গম করবেন, এটার তাৎপর্য উপলব্ধি করবেন এবং পুনঃ পুনঃ পাঠ করে একে স্মৃতিপটে ধারণ করবেন। আমি আপনার জন্য এটার সংকলন কাজে যথেষ্ট পরিশ্রম করেছি। আপনার এবং মুসলিমগণের মঙ্গল সাধনায় আমি ত্রুটি করিনি এবং এই কাজ শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ, ছওয়াবের আশায় এবং তাঁর শাস্তির ভয়ে করেছি। আমি আশা রাখি যে, এই পুস্তকের অনুসরণ করলে মুসলমান ও চুক্তি আবদ্ধদের নিকট হ’তে বিনা অত্যাচারে আপনার রাজস্বের পরিমাণ আল্লাহ বর্ধিত করে দিবেন এবং এটা আপনার প্রজাবৃন্দের সুখ-সমৃদ্ধির কারণ হবে। শারঈ শাসনের প্রতিষ্ঠা দ্বারা অত্যাচার নিবারিত এবং তাদের পারস্পরিক দাবী-দাওয়া নিরাকৃত হয়ে থাকে। সুতরাং এটা তাদের সুখ-সমৃদ্ধের কারণ হবে।

অতঃপর আপনার জন্য আমি কতকগুলি সুন্দর হাদীছ লিপিবদ্ধ করছি। আপনি যা চেয়েছেন এবং যা করতে ইচ্ছা করেছেন এই হাদীছগুলিতে সে সম্পর্কে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ যে কাজে আপনার প্রতি সন্তুষ্ট হন, আপনাকে তার তওফীক দান করুন। আপনার এবং আপনার হাতে কল্যাণ সাধিত হোক।






সততা ও ক্ষমাশীলতার বিরল দৃষ্টান্ত - মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম
পরিবর্তনের জন্য চাই দৃঢ় সংকল্প - নাজমুন নাঈম
দিলালপুর : আহলেহাদীছ আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্র - এডভোকেট জারজিস আহমাদ
অভাবী গভর্ণরের অনুপম দানশীলতা - মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম
তাতারদের আদ্যোপান্ত (শেষ কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম
মহামারী থেকে আত্মরক্ষায় বিদ‘আতী আমলের পরিণতি - মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম
তাতারদের আদ্যোপান্ত (৩য় কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম
ওমর ইবনে আব্দুল আযীয (রহঃ)-এর মৃত্যুকালীন নছীহত - আব্দুল্লাহ আল-মা‘রূফ
খলীফা হারূনুর রশীদের নিকটে প্রেরিত ইমাম মালেক (রহঃ)-এর ঐতিহাসিক চিঠি (২য় কিস্তি) - ইহসান ইলাহী যহীর
নীলনদের প্রতি ওমর (রাঃ)-এর পত্র - ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ নাজীব
খলীফা হারূনুর রশীদের নিকটে প্রেরিত ইমাম মালেক (রহঃ)-এর ঐতিহাসিক চিঠি - ইহসান ইলাহী যহীর
খলীফা ওমর (রাঃ)-এর অনুশোচনা
আরও
আরও
.