উত্তর :
ইবনু জারীর ত্বাবারী (মৃ. ৩১০হি.), ইবনু বাত্ত্বা (মৃ. ৩৮৭হি.) ও ইবনু
মানদাহ (মৃ. ৩৯৫হি.) প্রমুখ বিদ্বান সর্বপ্রথম অধিকতর বোধগম্যতার জন্য ইলমী
দৃষ্টিকোণ থেকে তাওহীদকে একাধিক ভাগে বিভক্ত করেন। অতঃপর ইমাম ইবনু
তায়মিয়াহ (রহঃ) ও ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) তাওহীদকে দুইভাগে ভাগ করেন, যা তিন
প্রকার তাওহীদকেই শামিল করে (ইবনু বাত্ত্বা, আল-ইবানাহ ২/১৭২-৭৩; ইবনু মানদাহ, আত-তাওহীদ ১/৩৩; ইবনু তায়মিয়াহ, মাজমূউল ফাতাওয়া ১৫/১৬৪)।
পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের অসংখ্য দলীল দ্বারা এই ভাগগুলি প্রমাণিত।
যেমন সূরা ফাতিহার মধ্যেই এই তিনটি প্রকারের দলীল রয়েছে। তাওহীদকে
পূর্ণাঙ্গভাবে উপলব্ধির জন্য এই ভাগগুলি খুবই যথার্থ, যার কোনটিই অস্বীকার
করার সুযোগ নেই।
উদাহরণস্বরূপ : (১) তাওহীদে রুবূবিয়াত তথা রব ও সৃষ্টিকর্তা হিসাবে আল্লাহর একত্বের দলীল হ’ল- আল্লাহ বলেন, ‘যদি তুমি তাদের জিজ্ঞেস কর, কে তাদের সৃষ্টি করেছে, তারা অবশ্যই বলবে ‘আল্লাহ’। এরপরেও তারা কোথায় ঘুরছে? (যুখরুফ ৪৩/৮৭)। (২) তাওহীদে উলূহিয়াত বা একমাত্র মা‘বূদ হিসাবে আল্লাহর ইবাদতের দলীল হ’ল- আল্লাহ বলেন, ‘অতএব তুমি জেনে রাখ যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। আর তুমি ক্ষমা প্রার্থনা কর তোমার ও মুমিন নর-নারীদের জন্য। বস্ত্ততঃ আল্লাহ ভালভাবেই জানেন তোমাদের চলাফেরা ও আশ্রয় সম্পর্কে’ (মুহাম্মাদ ৪৭/১৯)। (৩) তাওহীদে আসমা ওয়া ছিফাত তথা নাম ও গুণাবলীর ক্ষেত্রে আল্লাহর একত্বের দলীল হ’ল- আল্লাহ বলেন, ‘তাঁর তুলনীয় কিছুই নেই। তিনি সবকিছু শোনেন ও দেখেন’ (শূরা ৪২/১১)। তিনি আরও বলেন, ‘তিনি জানেন যা কিছু তাদের সম্মুখে ও পিছনে আছে। আর তারা তাঁকে জ্ঞান দ্বারা আয়ত্ত্ব করতে পারে না’ (ত্বোয়াহা ২০/১১০)।
সুতরাং তাওহীদের প্রকারভেদ কোন নতুন আবিষ্কার নয়; বরং কুরআন ও ছহীহ হাদীছ থেকেই গৃহীত (শানক্বীত্বী, তাফসীর আযওয়াউল বায়ান ৩/১৭-১৯; দ্র. আব্দুর রাযযাক আল-বদর, আল-ক্বাওলুস সাদীদ ফী রাদ্দে ‘আলা মান আনকারা তাক্বসীমাত-তাওহীদ)।
প্রশ্নকারী : মাহদী হাসান রেযা, হালসা, নাটোর