উত্তর :
করা যাবে। আত্মহত্যা করা জঘন্য অপরাধ হ’লেও এর কারণে সে কাফের হয়ে যায় না,
বরং মুসলমানই থাকে। আর যেকোন মুসলমানের জন্য দান-খয়রাত ও দো‘আ করা যায়।
জাবের (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) যখন মদীনায় হিজরত করেন, তখন
তুফায়েল বিন আমরের সঙ্গে অন্য আরেকজন লোকও হিজরত করে। মদীনার আবহাওয়া
অনুকূলে না হওয়ায় অসহ্য হয়ে লোকটি স্বীয় হাতের আঙ্গুলসমূহের গিরা কেটে
ফেলে। ফলে অধিক রক্ত ক্ষরণে সে মৃত্যুবরণ করে। তারপর তুফায়েল বিন আমর একদিন
স্বপ্নযোগে লোকটিকে খুব ভাল অবস্থায় দেখেন। কিন্তু তার হাত দু’খানা ছিল
আবৃত। তিনি তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার হাত দু’টি আবৃত কেন? জবাবে সে বলল,
মদীনায় হিজরত করার কারণে মহান আল্লাহ হাত দু’টি ছাড়া আমার সবকিছুই ক্ষমা
করে দিয়েছেন। অতঃপর তুফায়েল স্বপ্নের ঘটনা নবী করীম (ছাঃ)-এর কাছে বললে
তিনি আল্লাহর নিকট দো‘আ করেন। ফলে তার হাত দু’টিও ভাল হয়ে যায় (মুসলিম হা/১১৬; ‘আত্মহত্যাকারী কাফের না হওয়া’ অনুচ্ছেদ; মিশকাত হা/৩৪৫৬)। উল্লেখ্য, আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত অন্য হাদীছে এসেছে ‘কেউ আত্মহত্যা করলে সে চিরস্থায়ীভাবে জাহান্নামে শাস্তি ভোগ করবে’ (মুসলিম হা/১০৯)।
ছহীহ মুসলিমের ভাষ্যকার ইমাম নববী (রহঃ) উক্ত হাদীছের ব্যাখ্যায় বলেন,
এখানে خالدًا مخلدًا এর মর্ম হ’ল সুদীর্ঘকাল ও অধিককাল, চিরস্থায়ী নয় (মুসলিম শরহ নববী ২/১২৫, হা/১১৩-এর ব্যাখ্যা দ্রঃ)।
অর্থাৎ দীর্ঘকাল সে জাহান্নামে শাস্তি ভোগ করবে এবং পরে জান্নাতে যাবে। আর
চিরস্থায়ী শাস্তি ঐ ব্যক্তির জন্য প্রযোজ্য, যে আত্মহত্যাকে হালাল বলে
বিশ্বাস করে। এরূপ বিশ্বাস করার কারণে সে কাফের হয়ে যাবে। আর কাফের
নিঃসন্দেহে চিরস্থায়ী জাহান্নামী। অতএব উভয় হাদীছের মধ্যে কোন বিরোধ নেই।