উত্তর :
দানিয়াল সম্পর্কে কুরআন ও হাদীছে কিছু পাওয়া যায় না। অতএব তিনি যে নবী
ছিলেন, এ বিষয়ে নিশ্চিতভাবে বলার কোন উপায় নেই। তবে ঐতিহাসিকভাবে যা জানা
যায় তা নিম্নরূপ : আবুল ‘আলিয়ার বর্ণনা অনুযায়ী, ওমর (রাঃ)-এর খেলাফতকালে
(১৩-২৩ হিঃ) আবু মূসা আশ‘আরী (রাঃ) কর্তৃক ইরাকের তুসতার নগরী বিজিত হ’লে
সেখানকার শাসক হুরমুযানের বায়তুল মালে চৌকির উপরে একজন ব্যক্তির অক্ষত লাশ
পাওয়া যায়। যার মাথার কাছে একটি মুছহাফ ছিল। মুছহাফটি ওমর (রাঃ)-এর নিকটে
পাঠানো হয়। সেখানে তিনি নওমুসলিম ইহূদী পন্ডিত কা‘ব আল-আহবারকে ডেকে আরবীতে
তার মর্ম উদ্ধার করেন। যার মধ্যে মানুষের আচরণবিধি, আদেশ-নিষেধ ও
ভবিষ্যদ্বাণীসমূহ লিপিবদ্ধ ছিল। অতঃপর খলীফার নির্দেশক্রমে সেখানে দিনের
বেলা ১৩টি কবর খনন করা হয় এবং রাতের বেলায় এগুলির কোন একটিতে দাফন করে মাটি
সমান করে দেওয়া হয়। যাতে লোকেরা তা খুঁজে না পায় এবং ফিৎনায় পতিত না হয়।
কেননা ইতিপূর্বে খরার সময় লোকেরা চৌকিসহ লাশটি বের করত এবং তার অসীলায়
বৃষ্টি প্রার্থনা করত। বর্ণনাকারীর ধারণা মতে এটি ৩০০ বছর পূর্বেকার লাশ।
লাশটির মাথার পিছনের কয়েকটি চুল পাকা ব্যতীত দেহের কোন অংশে পরিবর্তন
ঘটেনি। কারণ নবীদের লাশ মাটি ও পশুতে খায় না’। ইবনু কাছীর (রহঃ) বলেন, আবুল
‘আলিয়া পর্যন্ত বর্ণনাটির সূত্র ছহীহ। তবে ৩০০ বছরের পূর্বেকার ধারণামূলক
বক্তব্যটি যদি সঠিক হয়, তাহ’লে তিনি নবী ছিলেন না বরং একজন সৎ ব্যক্তি
ছিলেন। কেননা ঈসা ও মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর মধ্যে কোন নবী ছিলেন না, যা ছহীহ
বুখারীর হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত’ (আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ ২/৪০; আলবানী, তাখরীজ ফাযায়েলুশ শাম ১/৫১, আছার ছহীহ)।
উল্লেখ্য যে, দানিয়াল বিষয়ে একটি হাদীছ বর্ণিত হয়েছে যে, ‘যে ব্যক্তি
দানিয়াল সম্পর্কে খবর দিবে, তোমরা তাকে জান্নাতের সুসংবাদ দিয়ো’। ইবনু
কাছীর (রহঃ) বলেন, হাদীছটি ‘মুরসাল’ এবং এর সনদ নিরাপদ হওয়ার ব্যাপারে
সন্দেহ রয়েছে (আল-বিদায়াহ ২/৪১)। এতদ্ব্যতীত দানিয়াল সম্পর্কে আরও অনেক কিছু বর্ণিত হয়েছে, যা বিশুদ্ধভাবে প্রমাণিত নয়।