উত্তর : আল্লামা নাছেরুদ্দীন আলবানী ইবনু ওমর (রাঃ)-এর হজ্জকালীন একটি আমলের উপর ভিত্তি করে এমন ফৎওয়া দিয়েছেন (সিলসিলা যঈফাহ ৫/৩৭৮; সিলসিলাতুন নূর ওয়াল হুদা টেপ নং ৮৭৬)। তবে তার এই ফৎওয়া শায তথা বিচ্ছিন্ন। অতীতের কোন বিদ্বান এরূপ ফৎওয়া দেননি। বরং দাড়িকে নিজ অবস্থায় ছেড়ে দিতে হবে, এটিই সুন্নাত। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, তোমরা মুশরিকদের বিরোধিতা কর এবং দাড়িকে নিজের অবস্থায় ছেড়ে দাও। আর গোঁফ ছোট কর (বুখারী হা/৫৮৯২; মুসলিম হা২৫৯; মিশকাত হা/৪৪২১)। দাড়ি ছাড়ার ব্যাপারে হাদীছে ছয় ধরনের শব্দ এসেছে। যেমন- আওফিরূ, আওফূ, আরখূ, ওয়াফ্ফিরূ, আরজূ, আ‘ফূ (أَوْفِرُوا، وَأَوْفُوا، وَأَرْخُوا، وَوَفِّرُوا، أَرْجُوا، أعْفُوا)। শব্দগুলি সব একই মর্ম বহন করে। আর তা হ’ল, দাড়িকে তার নিজ অবস্থায় ছেড়ে দেওয়া। দাড়ি কাটা বা ছাঁটার পক্ষে কোন দলীল নেই; বরং এটি রাসূল (ছাঃ)-এর আদর্শের পরিপন্থী। উল্লেখ্য যে, দাড়ি ছাঁটার পক্ষে তিরমিযীতে যে হাদীছ বর্ণিত হয়েছে, তা জাল (তিরমিযী হা/২৭৬২; মিশকাত হা/৪৪৩৯; সিলসিলা যঈফাহ হা/২৮৮)। আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে এক মুষ্টির অধিক দাড়ি কাটা সম্পর্কে যে হাদীছটি বর্ণিত হয়েছে, সেটি যঈফ (মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বা, হা/২৫৪৮১; আবূদাউদ হা/৪২০১)। 

শায়খ আলবানী যে হাদীছটিকে দলীল হিসাবে গ্রহণ করেছেন সেখানে বলা হয়েছে যে, ইবনু ওমর (রাঃ) যখন হজ্জ বা ওমরাহ করতেন তখন তিনি তাঁর দাড়ি মুষ্টি করে ধরতেন এবং মুষ্টির বাহিরে যতটুকু বেশী থাকত, তা কেটে ফেলতেন (বুখারী হা/৫৮৯২)। এই হাদীছের ব্যাখ্যায় কিরমানী বলেন, তিনি হয়ত উক্ত মৌসুমে সূরা ফাৎহ ২৭ আয়াতের আলোকে মাথা মুন্ডন করে ও দাড়ি ছেঁটে উভয়টির নেকী পেতে চেয়েছিলেন। আর এটাকে তিনি দাড়ি ছেড়ে দেওয়ার সাধারণ নির্দেশ থেকে হজ্জ ও ওমরার জন্য খাছ ভেবে করেছিলেন’। ইবনুত তীন ইবনু ওমরের এক মুষ্টি দাড়ি কাটার কথার প্রতিবাদ করে বলেন, এর অর্থ তিনি এলোমেলো বা অধিক লম্বা দাড়ি ছেঁটে গোছালো করতেন’ (ফাৎহুল বারী হা/৫৮৯২-এর ব্যাখ্যা ১০/৩৫০-৫১ পৃ.)। এতদ্ব্যতীত এটি ছিল তাঁর ব্যক্তিগত আমল। অন্য কোন ছাহাবী এমনটি করতেন মর্মে কোন বিশুদ্ধ দলীল পাওয়া যায় না। আর তিনি কাউকে করার জন্য নির্দেশও দেননি। দ্বিতীয়তঃ তিনি শুধু হজ্জ ও ওমরার সময় করেছেন, অন্য সময় নয়। তৃতীয়তঃ এটি ব্যাখ্যাগত বিষয়, যা স্পষ্ট দলীলের বিপরীতে গ্রহণযোগ্য নয়।

স্মর্তব্য যে, সূরা ফাৎহ ২৭ আয়াত রাসূল (ছাঃ)-এর উপর নাযিল হয়েছে। কিন্তু তিনি দাড়ি ছাঁটার কথা বলেননি। তাছাড়া ওমর (রাঃ)-এর একটি আমলের সাথে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর আমলের দ্বন্দ্ব হ’লে করণীয় সম্পর্কে ইবনু ওমরকে প্রশ্ন করা হ’লে তিনি উত্তরে দ্ব্যর্থহীনভাবে বলেন, ‘তোমাদের জন্য রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সুন্নাত অধিক অনুসরণযোগ্য, না কি ওমরের সুন্নাত’ (মুসনাদে আহমাদ হা/৫৭০০; তিরমিযী হা/৮২৪, সনদ ছহীহ)

ইমাম নববী বলেন, সৌন্দর্য বর্ধনের নামে দাড়ির দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ ছাটা সিদ্ধ নয় (ফাৎহুল বারী ১০/৩৫১)। তিনি বলেন, দাড়িকে নিজ অবস্থায় ছেড়ে দেওয়াটাই বিশুদ্ধ। যেভাবে ছহীহ হাদীছে বর্ণিত হয়েছে’ (আল-মাজমূ‘ শারহুল মুহাযযাব ১/২৯০)

সঊদী আরবের সর্বোচ্চ ওলামা পরিষদ এ ব্যাপারে বলেন যে, দাড়ি মুন্ডন বা দাড়ির দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ হ’তে কিছু কেটে নেওয়া বৈধ নয়। এটা রাসূল (ছাঃ)-এর সুন্নাত বিরোধী কাজ (ফাতাওয়া লাজনা দায়েমাহ ৫/১৩৭)। শায়খ উছায়মীন (রহঃ) বলেন, যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (ছাঃ)-এর অনুসরণ করতে চায়, তারা যেন অবশ্যই দাড়ির কোন অংশ না কাটে। কেননা শেষনবী (ছাঃ) এবং তার পূর্বের কোন নবী দাড়ি কাট- ছাঁট করতেন না (উছায়মীন, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ১১/৮২)। শায়খ বিন বায (রহঃ) বলেন, দাড়িকে তার নিজ অবস্থায় ছেড়ে দেওয়া ওয়াজিব (বিন বায, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ১০/৯৬-৯৭)। অতএব সৌন্দর্যের দোহাই দিয়ে দাড়ি কাট-ছাঁট করা সঠিক নয়। বরং দাড়ি তার নিজ অবস্থায় ছেড়ে দেওয়াটাই সৌন্দর্য। যেভাবে আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন। আর আল্লাহ নিজে সুন্দর। তিনি সৌন্দর্যকে পসন্দ করেন (মুসলিম হা/৯১; মিশকাত হা/৫১০৮)। অতএব সর্বাবস্থায় রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সুন্নাতের অনুসরণই কাম্য (বিস্তারিত দ্র. আত-তাহরীক ১৪/৬ সংখ্যা, মার্চ ২০১১ প্রশ্নোত্তর ২২/২২৮)






প্রশ্ন (১০/৪১০) : এক ব্যক্তির বিবাহপূর্ব জনৈকা নারীর সাথে অবৈধ সম্পর্ক ছিল। বিবাহের পর আগের সম্পর্ক থেকে তওবা করা সত্ত্বেও ভুলবশত তার সাথে অপকর্মে লিপ্ত হয়। এখন সে চরম অনুতপ্ত এবং হতাশায় ভুগছে। তওবা করে এর ক্ষমা পাওয়া যাবে কি? অপকর্মের কারণে বিবাহিত স্ত্রীর সাথে সম্পর্কের কোন ক্ষতি হবে কি?
প্রশ্ন (২৯/২৯): কেউ দো‘আ চাইলে কী বলতে হবে?
প্রশ্ন (৩৯/২৩৯) : দাজ্জাল কি মৃত্যুবরণ করবে? সে কিভাবে মারা যাবে?
প্রশ্ন (৮/৮) : ফরয ও নফল ছালাত শেষে একাকী নিয়মিতভাবে হাত তুলে দো‘আ করা যাবে কি?
প্রশ্ন (১৬/২৯৬) : জনৈক মেয়ে বিয়ের তিনদিনের মাথায় ‘খোলা‘ করে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তাদের মধ্যে কোন নির্জনবাস হয়নি। এক্ষণে ঐ মেয়েকে কতদিন ইদ্দত পালন করতে হবে? - -আতাউর রহমান, নিয়ামতপুর, নওগাঁ।
প্রশ্ন (২৫/৩০৫) : অনেক আলেম বলেন, স্ত্রীর চিকিৎসা খরচ বহন করা স্বামীর দায়িত্ব নয় এবং একাধিক স্ত্রী থাকলে কেবলমাত্র ভরণপোষণ ও রাত্রিযাপনের ক্ষেত্রে ইনছাফ করতে হবে। অন্য ক্ষেত্রে নয়। যেমন কারো কাছে দিনের অধিকাংশ সময় ব্যয় করা, কাউকে বেশী বেশী ভ্রমণে নিয়ে যাওয়া এসব ক্ষেত্রে ইনছাফ করার প্রয়োজন নেই। উক্ত বক্তব্য সঠিক কি?
প্রশ্ন (৩৩/২৩৩) : মসজিদে বারান্দায় আকীকার পশু যবেহ করা যাবে কি?
প্রশ্ন (২০/২০) : একজন মেয়ে আল্লাহর কসম করে বলেছে, কোন গায়ের মাহরাম ছেলেদের সাথে কখনো কথা বলবে না। কিন্তু তাকে বাইরে যেতে হয়। অনেক সময় ছেলেদের সাথে যেমন রিকশাওয়ালাদের সাথে প্রয়োজনীয় কথা বলতে হয়। এক্ষণে তার করণীয় কি? তাকে কি নিয়মিত কাফফারা দিতে হবে নাকি একবার কাফফারা দিলেই যথেষ্ট হবে?
প্রশ্ন (৩১/১১১) : মাগরিবের ছালাত ক্বাযা অবস্থায় মসজিদে গিয়ে এশার ছালাত চলতে দেখলে মুছল্লীর জন্য করণীয় কি? সে কি জামা‘আতের সাথে আগে এশা আদায় করবে? না কি এশার জামা‘আতের সাথে মাগরিবের নিয়ত করবে? যদি মাগরিব আদায় করে সেক্ষেত্রে রাক‘আতের সমন্বয় কিভাবে করবে? কেননা মাগরিব হচ্ছে তিন রাক‘আত আর এশা হচ্ছে চার রাক‘আত। জানিয়ে বাধিত করবেন। - -মাওলানা ছফিউল্লাহ, জগৎপুর, বুড়িচং, কুমিল্লা।
প্রশ্ন (১৫/১৩৫) : হানাফী মসজিদে ফজরের ছালাত কিছুটা বিলম্বে আদায় করা হয়। এক্ষণে আমি উক্ত ছালাত বাড়িতে আদায় করব কি?
প্রশ্ন (৫/৩২৫) : আমার স্বামী গত বছর ৩১শে ডিসেম্বর এক তালাক দেয়। অতঃপর এই বছরের ৭ই জানুয়ারী রাজ‘আত করে ও আমাদের মিলন হয়। আবার ১২ তারিখে এক তালাক দেয়। পরে ফেব্রুয়ারীর ২৬ তারিখে ঋতুকালীন সময় আবার তালাক দেয়। মার্চের ২০ তারিখে পবিত্র অবস্থায় আরেক তালাক প্রদান করে। এক্ষণে আমার স্বামীর সাথে সংসার করার কোন সুযোগ আছে কি?
প্রশ্ন (৭/৪৪৭) : ছিয়াম ভঙ্গের কারণ সমূহ কী কী? ছিয়াম অবস্থায় কী কী কাজ করা মাকরূহ।
আরও
আরও
.