উত্তর : আরকানুল ইসলাম ৫টি (বুখারী হা/৮)। এখানে যোগ-বিয়োগের কোন সুযোগ নেই। কুরআন-হাদীছ বা সালাফে ছালেহীন থেকে জিহাদকে ৬ষ্ঠ রুকন হিসাবে আখ্যায়িত করার কোন দলীল পাওয়া যায় না। তবে হুযায়ফা (রাঃ)-এর একটি আছার পাওয়া যায়। যেখানে তিনি জিহাদকে ইসলামের আটটি অংশের একটি হিসাবে আখ্যায়িত করে বলেন, সে ব্যক্তি ধ্বংস হ’ল যার কোন একটি অংশ নেই’ (আবু ইয়া‘লা হা/৫২৩; ছহীহ আত-তারগীব হা/৭৪১, সনদ হাসান)।
তবে জিহাদ নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত। ইমাম আহমাদ (রহঃ) বলেন, ‘ফরয ইবাদতের পরে জিহাদ অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ আমল অন্য কিছু জানি না (মুগনী ৯/১৯৯)। শায়খুল ইসলাম ইবনু তায়মিয়াহ (রহঃ) বলেন, ‘আমার জানা মতে আলেমদের ঐক্য রয়েছে যে, নফল ইবাদতসমূহের মধ্যে জিহাদ সর্বশ্রেষ্ঠ’ (মাজমূ‘ ফাতাওয়া ২৮/৪১৮)। তবে তার জন্য নির্দিষ্ট স্থান, কাল ও পাত্র রয়েছে। যা বিবেচনায় না নেয়ায় অনেকেই বিভ্রান্তিতে পতিত হন। যেমন আব্দুল্লাহ ইবনে যুবায়ের (রাঃ)-এর যুগে উদ্ভূত ফিৎনার সময় এক ব্যক্তি ইবনু ওমর (রাঃ)-এর নিকট এসে বলল, হে আবূ আব্দুর রহমান! আপনি এক বছর হজ্জ করেন এবং এক বছর ওমরাহ করেন। অথচ আল্লাহর পথে জিহাদ ত্যাগ করেছেন? নিশ্চয়ই আপনি জ্ঞাত আছেন যে, আল্লাহ এই জিহাদ সম্পর্কে কিভাবে উদ্বুদ্ধ করেছেন! ইবনু ওমর (রাঃ) বললেন, হে ভাতিজা! ইসলামের ভিত্তি স্থাপিত হয়েছে পাঁচটি বস্ত্তর উপর। আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (ছাঃ)-এর প্রতি ঈমান, পাঁচ ওয়াক্ত ছালাত প্রতিষ্ঠা, রামাযানের ছিয়াম পালন, যাকাত প্রদান ও হজ্জ পালন (অর্থাৎ তিনি যেন বুঝাতে চাইলেন যে, জিহাদ ইসলামের মৌলিক পাঁচ স্তম্ভের মধ্যে নয়)। তখন সে ব্যক্তি বলল, আল্লাহ তা‘আলা স্বীয় কিতাবে কী বলেছেন তা আপনি শুনেননি? ..অতঃপর সে সূরা হুজুরাতের ৯ এবং আনফালের ৩৯ আয়াত পাঠ করল। (আয়াতদ্বয় শ্রবণ করার পর) ইবনু ওমর (রাঃ) বললেন, আমরা এ কাজ রাসূল (ছাঃ)-এর যুগে করেছি এবং তখন ইসলামের অনুসারীগণ স্বল্প সংখ্যক ছিল। যদি কোন ব্যক্তি দ্বীন সম্পর্কে ফিতনায় পতিত হ’ত, তখন হয় তাকে হত্যা করা হ’ত অথবা শাস্তি প্রদান করা হ’ত। এভাবে ইসলামের অনুসারীর সংখ্যা বেড়ে গেল। তখন আর কোন ফিতনা রইল না (অর্থাৎ আর যুদ্ধের প্রয়োজন রইল না) (বুখারী হা/৪৫১৪)।
ইবনু রজব (রহঃ) বলেন, জিহাদ অন্যতম শ্রেষ্ঠ আমল হওয়া সত্ত্বেও ইবনু ওমরের হাদীছে জিহাদের কথা উল্লেখ নেই (জামেঊল ঊলূম ওয়াল হিকাম ১/১৫২)।