শহীদ জননী খানসা (রাঃ)
শহীদ জননী খানসা (রাঃ)-এর আসল নাম তামাযুর। খানসা ছিল তার উপাধি। তার পিতার নাম আমর বিন শুরাইদ। নজদ বা বর্তমান আরবের মধ্য অঞ্চলে বনু সুলাইম গোত্রে ৫৭৫ খৃষ্টাব্দে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। ইসলামের ইতিহাসে খানসা সবচেয়ে প্রভাবশালী নারী কবি। শোকগাথা রচনার জন্য তিনি বিখ্যাত ছিলেন। কবিতার জগতের লোকেরা এতে ঐক্যমত পোষণ করেন যে, তার থেকে উত্তম কোন মহিলা কবি ইতিপূর্বে কখনো আরবী কবিতার জগতে আবির্ভূত হয়নি।
৬২৯ খৃষ্টাব্দে তার গোত্র বনু সুলাইমের লোকদের সাথে তিনি নবী করীম (ছাঃ)-এর কাছে আসেন এবং ইসলাম গ্রহণ করেন। লোকদের আলোচনা হ’তে জানা যায়, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাকে কবিতা শুনাতে বলতেন। তার কবিতা তাঁর খুব পসন্দ ছিল। তিনি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে কবিতা শুনাতেন, আর তিনি হাতের ইশারায় বলতেন, খানসা, চালিয়ে যাও।[1] ইসলাম গ্রহণের পর তার কাব্যপ্রতিভা তিনি ইসলামের সেবায় নিয়োজিত করেন। ইসলাম নিয়ে যেসব কবি ব্যঙ্গাত্মক কবিতা রচনা করতেন তিনি কবিতা দিয়েই সেগুলোর জবাব দিতেন।
জাহেলী যুগে তাঁর দুই ভাই ছাখার ও মু‘আবিয়া নিহত হ’লে তা তার অন্তরে ভীষণভাবে আঘাত করে। তিনি চরম দুঃখিত হন। বছরের পর বছর তিনি তাদের বিচ্ছেদে কান্নাকাটি করেন। আর সেই বেদনা তার কবিতায় রূপায়িত হয়। এতে তিনি এতটাই বাড়াবাড়ি করেন যে, তার কবিতার পান্ডুলিপি শোকগাথায় ভরে ফেলেন। ভাই ছাখারের শোকগাথায় তিনি বলেছেন,
يُذكِّرني طلوعُ الشمس صَخراً + وأندُبُه لكل غُروبِ شمسِ
‘ভোরের সূর্যোদয় আমাকে ছাখারের কথা মনে করিয়ে দেয়
‘আমার মত ভাই হারাদের আধিক্য যদি আমার পাশে বেশী দেখা না দিত, তাহ’লে আমি আমার ভাইয়ের বিরহে নিজেই নিজেকে হত্যা করতাম’।
তিনি তাকে নিয়ে আরও বলেছেন,
وإنَّ صخراً لمقدامٌ إذَا ركبوا + وإنَّ صخراً إذَا لعقّار.
‘ছাখার নিশ্চয়ই আমাদের অভিভাবক, আমাদের নেতা।
যখন লোকেরা ক্ষুধার্ত তখন ছাখার উট যবেহ করে দেয়’।
صخراً لتأتمّ الهداة بهِ + كأنَّه علمٌ في رأسهِ نار.
‘ছাখার এমন মানুষ যে, পথিকেরা তার সাহায্যে পথ পেয়ে যায়।
যেন সে একটা পতাকা, যার মাথায় আগুন জ্বলছে’।
مثلَ الرّدينيِّ لمْ تنفذْ شبيبته + كأنَّه تحتَ طيِّ البردِ أسوار.
‘রুদাইনির মতো তার যৌবন ফুরিয়ে যায়নি।
যেন সে শিলাবৃষ্টির ভাঁজে চাপা পড়া প্রাচীরের সমষ্টি’।
জাহেলী যুগে তার দুই ভাইয়ের হত্যাকান্ডের পর তার অবস্থা এমনই দাঁড়িয়েছিল যে, দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে শুধুই কান্না করা, দুঃখ করা আর মর্ছিয়া গাওয়া। কাঁদতে কাঁদতে তার দু’চোখের পানি শুকিয়ে গিয়েছিল। নির্ঘুম দিবস রজনীতে তার দু’চোখের পাতা এক হ’ত না। কিন্তু ইসলামের আলো অন্তরে প্রবেশ করা মাত্রই তার অবস্থা আমূল বদলে যায়। জাহেলিয়াতের লেশ মাত্রও আর তার মধ্যে থাকেনি।
তিনি পারস্যের জিহাদে অংশ নেন এবং কাদেসিয়ার মতো ভয়াবহ যুদ্ধে তিনি তার চার পুত্রসহ সরাসরি উপস্থিত ছিলেন। ময়দানে নামার আগে তিনি সবাইকে একত্র করে নিম্নের চিরস্মরণীয় কথাগুলো বলেন এবং তাদের অন্তরে ঈমানের স্ফুলিঙ্গ ও ইয়াক্বীনের নূর জ্বালিয়ে দেন।
তিনি বলেন, বাছাধনরা আমার! তোমরা স্বেচ্ছায় ইসলাম গ্রহণ ও হিজরত করেছ। যেই আল্লাহ ছাড়া আর কোন মা‘বূদ নেই তাঁর কসম, তোমরা সবাই একই পুরুষের ঔরসজাত পুত্র, যেমন তোমরা একই মায়ের গর্ভজাত পুত্র। আমি তোমাদের পিতার সাথে কোনরূপ বিশ্বাসঘাতকতা করিনি। তোমাদের মামাদেরও অপমান-অপদস্থ করিনি। আমার বিয়ে শিশুকালে অপরিপক্ক বয়সেও হয়নি এবং আমি তোমাদের বংশেও কালিমা লেপন করিনি। কাফের-মুশরিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে কি যে ব্যাপক প্রতিদান আল্লাহ তা‘আলা মুসলিমদের জন্য প্রস্ত্তত করে রেখেছেন তা তো তোমরা জান। জেনে রেখ, ক্ষণস্থায়ী আবাস থেকে চিরস্থায়ী আবাস শ্রেয়। মহান আল্লাহ বলেন, يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اصْبِرُوا وَصَابِرُوا وَرَابِطُوا وَاتَّقُوا اللهَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ، ‘হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা ধৈর্যধারণ কর ও ধৈর্যের প্রতিযোগিতা কর এবং সদা প্রস্ত্তত থাক। আর আল্লাহকে ভয় কর, যাতে তোমরা সফলকাম হ’তে পার’ (আলে ইমরান ৩/২০০)। আল্লাহ তা‘আলা মুসলিমদের জন্য যে সফলতা ও নে‘মতে ভরা জান্নাতের ব্যবস্থা রেখেছেন তোমরা সে কথাও জান। সুতরাং আগামী ভোরে আল্লাহ চাহেন তো তোমরা ছহীহ সালামতে জেগে উঠে শত্রুর বিরুদ্ধে সচেতন মনে যুদ্ধে অবতীর্ণ হবে। আর যখন তোমরা দেখবে যুদ্ধ তুমুল আকার ধারণ করছে এবং আগুন হয়ে উঠছে তখন তোমরা খেয়াল করবে কোন জায়গায় যুদ্ধ প্রচন্ড রূপ নিচ্ছে। তোমরা সেখানে ঝাঁপিয়ে পড়বে এবং শত্রুপক্ষের নেতাদের নিশানা করবে, যখন কিনা শত্রু বাহিনীর পাঁচ ব্যূহ একসঙ্গে জ্বলে উঠবে।
চতুর্থ দিন ভোরবেলায় যুদ্ধের দামামা বেজে উঠল। এক পর্যায়ে ঘোরতর যুদ্ধ শুরু হ’লে তার চার পুত্র রণাঙ্গন পানে এগিয়ে গেলেন এবং মৃত্যুর ভয় উপেক্ষা করে শত্রু পক্ষের উপর একের পর এক আঘাত হানতে লাগলেন। এক পর্যায়ে তারা সবাই শাহাদাতের পেয়ালা পান করলেন।
তাদের শাহাদাতের খবর যখন মা খানসার কাছে পৌঁছল তিনি কোন অস্থিরতা প্রকাশ করেননি। এর আগে তিনিই তো তাদের যুদ্ধে যেতে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। বরং তিনি বলেছিলেন, সকল প্রশংসা আল্লাহর, যিনি তাদের নিহত হওয়ার মধ্য দিয়ে আমাকে গৌরবান্বিত করেছেন। আমার রবের নিকট আমি আশা করি, তিনি তাঁর রহমতের আবাসে আমাকে তাদের সাথে মিলিত করবেন।
কাদেসিয়ার ঘটনা ঘটেছিল হিজরী চতুর্দশ বর্ষ মোতাবেক ৬৩৬ খৃষ্টাব্দে। আমীরুল মুমিনীন ওমর বিন খাত্ত্বাব (রাঃ) সা‘দ ইবনু আবী ওয়াক্কাছ (রাঃ)-এর নেতৃত্বে পারসিকদের হাত থেকে ইরাক মুক্ত করার জন্য সেনাবাহিনী প্রেরণ করেন। আল্লাহর নামে আল্লাহর পথে এ বাহিনী রওয়ানা দিয়ে ইরাকের কাদেসিয়া প্রান্তরে উপনীত হন। সেখানে উভয় বাহিনী পরস্পরের মুখোমুখি হয়। মুসলিম বাহিনীর সেনাধ্যক্ষ ছিলেন সা‘দ বিন আবু ওয়াক্কাছ, আর পারসিক বাহিনীর সেনাপতি ছিলেন রুস্তম। মুসলিমদের সৈন্যসংখ্যা কত ছিল তা নিয়ে ঐতিহাসিকগণ মতানৈক্য করেছেন। প্রসিদ্ধ মতে তাদের সংখ্যা ছিল ত্রিশ হাযার। পারসিক বাহিনীর সংখ্যা নিয়েও একইভাবে কথা রয়েছে। নিম্নে ষাট হাযার থেকে নিয়ে ঊর্ধ্বে এক লাখ বিশ হাযার। অধিকন্তু পারসিক বাহিনীর হাতে এমন সব অস্ত্র-শস্ত্র ছিল, যা ব্যবহার তো দূরে থাক সেগুলোর সাথে ইতিপূর্বে মুসলিমদের পরিচয়ও ঘটেনি। তাদের বাহিনীতে বেশ কিছু হাতি ছিল। কেউ বলেছেন ত্রিশ, কারো মতে সত্তর।
যুদ্ধের প্রথম দিন মুসলমানদের উপর খুব কঠিন হয়ে পড়েছিল। হাতীদের বিকট চীৎকারে মুসলিমদের ঘোড়াগুলো ভয়ে পালিয়ে যেতে থাকে। তাদের অনেক সৈন্য নিহত হয়।
খানসা (রাঃ) কাদেসিয়ার যুদ্ধে নারীদের সাথে অংশ নিয়েছিলেন। নারীদের কাজ ছিল সেনাদলের সেবা-যত্ন করা, খানা পাকানো, পানি পান করানো এবং তাদের নানা প্রয়োজনের দিকে লক্ষ্য রাখা। যুদ্ধক্ষেত্রে আহত ও নিহত সৈনিকদের মুসলিম সেনাদলের ডেরায় বয়ে আনার কাজও তারা করছিলেন। প্রথম দিনে হাতীর কারণে যুদ্ধে যে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল তাতে মুসলিম বাহিনী খুব পেরেশান হয়ে পড়ে। ফলে সেনা প্রধান সা‘দ বিন আবু ওয়াক্কাছ (রাঃ) কিভাবে হাতীকে পরাস্ত করা যায় তাঁর কৌশল নির্ণয় করতে প্রবীণ মুসলিম নেতৃবৃন্দকে এক জায়গায় আহবান জানান। তারা দু’টি কৌশলে এগোনোর সিদ্ধান্ত নেন।
এক- কিছু তীরন্দায হাতীর উপর আরোহীদেরকে তাদের বর্শার নিশানা করবে। তখন তারা নিজেদের রক্ষার্থে বর্শা প্রতিহত করতে ব্যস্ত হয়ে পড়বে। এর ফাঁকে অন্য কিছু মুসলিম সৈনিক হাতীর পিঠে বাঁধা হাওদার রশি কেটে দেবে, যাতে করে হাতীর উপরস্থ আরোহীরা গড়িয়ে নিচে পড়ে যাবে। এ কৌশলে হাতীগুলো উচ্চ রবে চিৎকার করবে এবং ডানে বামে ছুটাছুটি করবে। তারা আর তীর নিক্ষেপে সক্ষম হবে না।
দুই- কিছু উটকে হাতী রূপে সাজান। যা দেখে হাতীর বহর মুসলিম বাহিনীর দিকে অগ্রসর হবে না। তিন দিন কেটে গেল। যুদ্ধে জয়ের পাল্লা একবার মুসলিমদের দিকে হেলে তো আরেকবার পারসিকদের দিকে।
চতুর্থদিন খানসা (রাঃ) তার চার ছেলেকে জমা করেন এবং তাদেরকে পূর্বে উল্লিখিত কথাগুলোর পুনরাবৃত্তি করেন। তুমুল যুদ্ধে মুসলিম বাহিনী জয় লাভ করে। কিন্তু খানসা (রাঃ)-এর চার ছেলেই শাহাদাত বরণ করেন। যুদ্ধে পারসিক সেনাপতি রুস্তমও নিহত হয়। তার সেনাদলও পালিয়ে যায়। তারা এমনভাবে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় যে, পিছন ফিরে তাকানোর ফুরসৎও তাদের মেলেনি।
একইদিনে চার ছেলের শাহাদত বরণে খানসা (রাঃ)-এর মানসিক অবস্থা এবং ইসলামপূর্বকালে তার দুই ভাইয়ের নিহত হওয়ার পরে তার মানসিক অবস্থা নিয়ে কেউ যদি চিন্তা-ভাবনা করে তাহ’লে তার বিশ্বাসই হবে না যে, ইনিই সেই মহিলা যিনি দীর্ঘকাল ধরে তার দুই ভাইয়ের হত্যার শোকে একসময় মর্ছিয়া গেয়েছেন আর কান্নাকাটি করেছেন।
ঈমান আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্টি এবং তার ফায়ছালার প্রতি সর্বান্তঃকরণে সন্তোষ প্রকাশ তো একেই বলে। তিনি মা, কিন্তু অন্য মায়েদের থেকে ব্যতিক্রম। এমন মা, যিনি বীর বাহাদুর তৈরী করে গেছেন। এমন মা, যিনি ইসলামের গৌরব ও ইয্যতের কথা আমাদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।
মহান আল্লাহ খানাসার উপর রহমত করুন। রহমত করুন তার চার ছেলের উপর। রহমত করুন আমীরুল মুমিনীন ওমর বিন খাত্ত্বাব (রাঃ)-এর উপর, যিনি এই মহীয়সী বৃদ্ধার আত্মত্যাগ ও দ্বীন রক্ষায় ঝুঁকিপূর্ণ বীরত্ব প্রকাশের দরুন দ্রুতই তার পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন এবং রাষ্ট্রীয় ভাতা প্রদানের মাধ্যমে তাকে সরফরায করেছেন। তিনি তার মৃত্যু অবধি চার পুত্রের ভাতা তাঁর নামে জারী করে দেন।
২৪ হিজরী মোতাবেক ৬৪৫ খৃষ্টাব্দে আমীরুল মুমিনীন ওছমান (রাঃ)-এর খিলাফতের শুরুর দিকে বাদিয়া অঞ্চলে এই মহিয়সী নারী কবি ও চার শহীদের গর্বিত জননী ইহজগত ত্যাগ করে তার মালিকের সান্নিধ্যে গমন করেন।
রাবী‘আ বিন আবু আব্দুর রহমান ফাররুখ রায় (রহঃ)-এর মা
মদীনা মুনাওয়ারা নগরীর বিখ্যাত আলেম রাবী‘আ বিন আবু আবদুর রহমান তায়মী (রহঃ) ছিলেন বিখ্যাত ইমাম ও হাদীছ বিশারদ ইমাম মালিক বিন আনাস (রহঃ)-এর শিক্ষক। ‘রাবী‘আ রায়’ নামে তিনি খ্যাত। আবু ওছমান মাদানী (রহঃ) ছিলেন ইসলাম গ্রহণ সূত্রে তার ওলী বা অভিভাবক।
এই মনীষীর মা ছিলেন সেই বিখ্যাত মায়েদের অন্যতম, যারা তাদের সন্তানকে শিক্ষিত করতে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছিলেন। তার নাম ছিল সুহায়লা, স্বামীর নাম ফাররুখ, যার কুনিয়াত বা উপনাম ছিল আবু আব্দুর রহমান। উমাইয়া শাসনামলে তার স্বামী ফাররুখ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। তার কর্মস্থল ছিল খোরাসান অঞ্চলে। খোরাসান বর্তমান আফগানিস্তানের অন্তর্গত ছিল। যদিও এ নামে বর্তমান ইরানে একটি প্রদেশ রয়েছে। তিনি যখন মদীনা থেকে খোবাসানের পথে যাত্রা করেন তখন রাবী‘আ ছিলেন মাতৃগর্ভে। সন্তান যাতে ভালোভাবে প্রতিপালিত হ’তে পারে এবং তার শিক্ষাদীক্ষা উত্তমভাবে সম্পন্ন হয় সেজন্য তার স্বামী তার হাতে ত্রিশ হাযার দীনার রেখে যান।
২৭ বছর পর তিনি বাড়ী ফিরে আসেন। প্রথমেই তিনি মসজিদে নববীতে যান। সেখানে তখন এক বিরাট জমায়েতে শিক্ষা দানের কাজ চলছিল। সে পাঠে মালিক, হাসান ও মদীনার নামীদামী লোকেরা উপস্থিত ছিলেন। তা দেখে তিনি জিজ্ঞেস করলেন, এ মজলিস কার? লোকেরা বলল, রাবী‘আ বিন আবু আব্দুর রহমানের। সেখান থেকে তিনি বাড়ি ফিরে এলেন। বহুদিন পর স্বামী-স্ত্রীর সাক্ষাৎ ঘটল। তিনি স্ত্রীকে বললেন, আমি তোমার ছেলেকে শিক্ষা-দীক্ষার এত উঁচু আসনে দেখে এসেছি যে, অন্য কাউকে আমি এত বড় যোগ্যতার আসনে কখনও দেখিনি।
তার স্ত্রী তাকে বললেন, তোমার কাছে কোনটা ভালো লাগছে ত্রিশ হাযার দীনার, না যে অবস্থানে ছেলে উপনীত হয়েছে সেই অবস্থান? উত্তরে তিনি বললেন, না, আল্লাহর কসম, বরং এ অবস্থান। স্ত্রী বললেন, আমি সকল সম্পদ ছেলের পিছনে ব্যয় করেছি। শুনে তার স্বামী বললেন, আল্লাহর কসম, তুমি সম্পদ পানিতে ফেলনি।
বিশুদ্ধ মতে ইমাম রাবী‘আ (রহঃ) ১৩৬ হিজরীতে মৃত্যুবরণ করেন।
[ক্রমশঃ]
-মূল (আরবী) : ইউসুফ বিন যাবনুল্লাহ আল-‘আতীর
-অনুবাদ : মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক
[1]. আল-ইছাবাহ ফী তামঈযিছ ছাহাবা ১৩/৩৩৪।