সুপ্রিম কোর্টে ন্যায় বিচারের প্রতীক হিসাবে এবার কোন গ্রিক পৌরাণিক কাহিনীতে উল্লিখিত দেব-দেবীর মূর্তি নয়; বরং নিজস্ব অর্থায়নে স্থাপন করা হয়েছে আল্লাহ্র পবিত্র কুরআনের সূরা নিসার ১৩৫ আয়াত। হাইকোর্টের মাযারগেট দিয়ে প্রবেশের পর জাতীয় ঈদগাহের উত্তর-পশ্চিম কোণে স্থাপন করা হয়েছে এই ক্যালিগ্রাফি। আরবী ও বাংলা অনুবাদসহ ন্যায়বিচারের পক্ষে এই বাণী যেন ভিন্ন এক দ্যুতি ছড়াচ্ছে। মামলা শুনানির ব্যস্ততায় রুদ্ধশ্বাসে ছুটে চলা আইনজীবী ও বিচার প্রার্থীরা থমকে দাঁড়াচ্ছেন। ক্ষণিক দাঁড়িয়ে মনোযোগ নিবদ্ধ করছেন পবিত্র কুরআনের আয়াতে। সবাই প্রধান বিচারপতির এই উদ্যোগে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছেন (দৈনিক ইনকিলাব, ২০শে অক্টোবর ২০২২, ১ম পৃষ্ঠা)।
[আমরা এজন্য মাননীয় প্রধান বিচারপতি জনাব হাসান ফয়েজ সিদ্দীকীর প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আল্লাহ তাঁকে ইহকালে ও পরকালে সর্বোত্তম জাযা দান করুন! প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য যে, ২০১৬ সালের ১৮ই ডিসেম্বর রাতে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে ‘ন্যায় বিচারের প্রতীক’ হিসাবে গ্রীক দেবী থেমিসের মূর্তি স্থাপন করেন। এতে ধর্মপ্রাণ মানুষ ক্ষোভে ফুঁসে ওঠেন। প্রবল আন্দোলনের মুখে ৫ মাস ৬দিন পর ২৫শে মে ২০১৭ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে সেটি হঠানো হয়। কিন্তু ৪৮ ঘণ্টা পর ২৭শে মে শনিবার দিবাগত রাতে ১লা রামাযান তারাবীহর ছালাতের সময় কড়া পুলিশী প্রহরার মধ্যে সুপ্রীম কোর্টের এ্যানেক্ল ভবনের সামনে পুনরায় সেটি স্থাপন করা হয়। যা আজও রয়েছে। মূর্তিটি বর্তমান প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ ছিদ্দিকী দায়িত্বে এসেই বিচার প্রার্থীদের জন্য ন্যায়-কুঞ্জ স্থাপনসহ বেশ কিছু প্রশংসনীয় উদ্যোগ নেন। যার সর্বশেষ সংযোজন কুরআনের আয়াতের এই ক্যালিগ্রাফি স্থাপন।
এক্ষণে আমরা দাবী জানাচ্ছি, আদালত এলাকার কোন স্থানে যেন ঐ মূর্তি সহ কোন মূর্তি স্থান না পায়। কেননা মূর্তি হ’ল শিরকের প্রতীক। আর রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘যে গৃহে (প্রাণীর) ছবি থাকে, সে গৃহে (রহমতের) ফেরেশতা প্রবেশ করে না’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৪৪৮৯)। অথচ আমেরিকার হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির ল’ ফ্যাকাল্টির লাইব্রেরীর সামনে ন্যায়বিচারের সর্বোচ্চ বাণী হিসাবে সূরা নিসা ১৩৫ আয়াতের ইংরেজী অনুবাদ ইস্পাতের সাইনবোর্ডে খোদাই করে লিপিবদ্ধ আছে (আত-তাহরীক, সম্পাদকীয়, আগস্ট ২০২২)। আল্লাহ মাননীয় প্রধান বিচারপতিকে সর্বোচ্চ তাওফীক দান করুন- আমীন! (স.স.)]