উত্তর : হাদীছের ভাষায় বুঝা যায় ঋণ পরিশোধ না করা পর্যন্ত মাইয়েত কবরের আযাব থেকে রক্ষা পাবে না। বরং সে ঋণের সাথে ঝুলন্ত থাকে এবং তার উপর কবরের আযাব হ’তে থাকে। তবে এ ক্ষেত্রে যদি মৃতের নিকটাত্মীয় বা অন্য কোন ব্যক্তি ঋণদাতার নিকট থেকে সময় নেন এবং ঋণ পরিশোধের দায়িত্ব নেন, তাহ’লে মাইয়েত উক্ত আযাব থেকে রক্ষা পাবেন বলে আশা করা যায় ইনশাআল্লাহ। রাসূল (ছাঃ) বলেন, মুমিনের আত্মা ঝুলন্ত রাখা হয় তার ঋণের কারণে। যতক্ষণ না সেটি তার পক্ষ থেকে পরিশোধ করা হয়’ (তিরমিযী হা/১০৭৮; মিশকাত হা/২৯১৫; ছহীহুত তারগীব হা/১৮১১)। রাসূল (ছাঃ) বলেন, সুবহানাল্লাহ, আল্লাহ ঋণের ব্যাপারে কত কঠিন বিধান নাযিল করেছেন। যার হাতে আমার প্রাণ তার শপথ, যদি একজন লোক আল্লাহ্র পথে শহীদ হয় আবার জীবিত করা হয় এবং আবার শহীদ হয়, আবার জীবিত করা হয় এবং আবার শহীদ হয়, অথচ তার ঋণ থাকে এবং তা তার পক্ষ থেকে পরিশোধ করা না হয়, তাহ’লে সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না (হাকেম হা/২২১২; ছহীহুল জামে হা/৩৬০০)

জনৈক ব্যক্তির দুই দীনার ঋণ ছিল। রাসূল (ছাঃ) তার জানাযা আদায়ে অস্বীকৃতি জানালেন। আবু ক্বাতাদা (রাঃ) ঐ ঋণ পরিশোধের দায়িত্ব নিলে তিনি তার জানাযায় ইমামতি করেন। পরের দিন ক্বাতাদার সাথে দেখা হ’লে রাসূল (ছাঃ) ঋণ পরিশোধের বিষয়টি জিজ্ঞেস করেন। তিনি বললেন, সে তো কেবল গতকাল মারা গেছে। রাসূল (ছাঃ) বিষয়টির গুরত্বারোপ করে চলে গেলেন। পরের দিন দেখা হ’লে আবারো ঋণের বিষয়টি জিজ্ঞেস করেন। আবু ক্বাতাদা ঋণ পরিশোধের বিষয়টি জানালেন। তখন রাসূল (ছাঃ) বললেন, এখন তার চামড়া কবরের আযাব থেকে ঠান্ডা হ’ল’ (আহমাদ হা/১৪৫৭২; ছহীহুত তারগীব হা/১৮১২)

উক্ত হাদীছের ব্যাখ্যায় নববী বলেন, ‘এখন তার চামড়া ঠান্ডা হল’ কথাটি রাসূল (ছাঃ) তখনই বললেন যখন তার পক্ষ থেকে ঋণ আদায় করা হ’ল। আবু ক্বাতাদা ঋণের যিম্মাদারী নেওয়ার সময় বলেননি (আল-মাজমূ‘ ৫/১২৪)। শাওকানী বলেন, ‘ঋণের ব্যাপারে আযাব তখনই বন্ধ হবে যখন ঋণ আদায় করা হবে। কেবল যিম্মাদারী নিলেই মাইয়েতের আযাব বন্ধ হবে না। আর এজন্যই রাসূল (ছাঃ) দ্রুত দ্বিতীয় দিন আবু ক্বাতাদাকে তার ঋণের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করেন’ (শাওকানী, নায়লুল আওতার ৫/২৮৫)। একই মন্তব্য করেছেন ইমাম ত্বাহাবী, ইবনুল মুলাক্কিন, ইবনু বাত্ত্বাল, ইবনু আব্দিল বার্র (রহঃ) (শারহু মুশকিলুল আছার ১০/৩৩৫; আত-তাওযীহ ১৫/১২৪; শারহুল বুখারী ৬/৪২১; আল-ইস্তিযকার ৭/২২০)

উক্ত আলোচনায় বুঝা যায় ঋণ গ্রহণ করে পরিশোধ না করার বিষয়টি অত্যন্ত ভয়াবহ। তাই বাধ্যগত কারণে ঋণ করতে হ’লে তা পরিশোধের ব্যাপারে পূর্ণ প্রতিজ্ঞা থাকতে হবে। যেমন হুযায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, উম্মুল মুমিনীন মায়মুনা (রাঃ) ধার-কর্জ গ্রহণ করতেন। তার পরিবারের কেউ কেউ এটা অপসন্দ করে বলল, আপনি ধার-কর্জ করবেন না। তখন তিনি বলেন, হ্যাঁ আমি আমার রাসূল (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি যে, কোন মুসলিম ধার-কর্জ গ্রহণ করে এবং আল্লাহ জানেন যে তা পরিশোধ করার অভিপ্রায় তার রয়েছে, তাহ’লে দুনিয়াতেই আল্লাহ তার ঐ ধার-কর্জ পরিশোধের ব্যবস্থা করে দেন (নাসাঈ হা/৪৬৮৬)

প্রশ্নকারী : আব্দুল্লাহ, বাসাবো, ঢাকা।







বিষয়সমূহ: বিধি-বিধান
প্রশ্ন (১০/১০) : বাঁশের বাঁশি বাজানো বা শোনা শরী‘আত সম্মত কি?
প্রশ্ন (২৯/১৪৯) : পরামর্শের ক্ষেত্রে মন্দের ভালো কারো ব্যাপারে আল্লাহর উপর ভরসা রেখে যদি সুফারিশ করা হয়, তারপর সে যদি দায়িত্বে এসে কোন অন্যায় করে, তাহ’লে পরামর্শদাতাকে এর জন্য গুনাহগার হ’তে হবে কি?
প্রশ্ন (২৩/৩০৩) : স্থির চিত্র ও ভিডিও চিত্রের ব্যাপারে শরী‘আতের হুকুম কি? বিভিন্ন ইসলামী অনুষ্ঠানেও ভিডিও প্রদর্শন করা হচ্ছে। রাসূল (ছাঃ) কোন ধরনের ছবি নিষেধ করেছিলেন এবং তার উদ্দেশ্য কী ছিলো? বিভিন্ন প্রয়োজনে কোন ছবি ধারণ করলে পাপ হবে কি?
প্রশ্ন (৩৭/১৫৭) : বিবাহের খুৎবা ঈজাব-কবুলের পরে হবে না আগে হবে? সম্মতি নেওয়ার জন্য পিতা ও সাক্ষীদেরকে মেয়ের কাছে যাওয়া কি শরী‘আতসম্মত?
প্রশ্ন (১৩/৯৩) : বাড়ী করার জন্য পিতা-মাতা আমাকে একখন্ড জমি দান করেন। কিন্তু আমি ভাইদের সাথে ঝগড়ার এক পর্যায়ে বলে ফেলি যে, আমি যদি ঐ জমিতে যাই তাহ’লে মুসলিম থেকে খারিজ হয়ে যাব। এখন ঐ জমিতে যেতে আমার করণীয় কি?
প্রশ্ন (৩৪/১১৪) : দশ বছরের শিশু বিছানায় অথবা তোষকে পেশাব করে। পরে শুকিয়ে যায়। এর উপর চাদর বিছিয়ে ছালাত আদায় করা যাবে কি এবং কুরআন তেলাওয়াত করা যাবে কি?
প্রশ্ন (৩২/১১২) : পিতা-মাতা এবং স্বামীর আদেশ সাংঘর্ষিক হ’লে স্ত্রীর জন্য কার আদেশ মানা যরূরী?
প্রশ্ন (১৪/১৭৪) : বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন রকমের দাড়ি রাখার অভ্যাস চালু আছে। মুখের কোন্ পর্যন্ত এবং কতটুকু দাড়ি রাখতে হবে?
প্রশ্ন (৩২/১৫২) : সূরা বাক্বারাহ ১১৫ আয়াতের সঠিক অর্থ জানতে চাই। - -আবু আব্দুল্লাহ, ইসলামপুর, জামালপুর।
প্রশ্ন (৮/১২৮) : জুম‘আর খুৎবা চলাকালীন সময়ে মসজিদে প্রবেশ করলে সালাম দেওয়া ও দুই রাক‘আত সুন্নাত পড়া যাবে কি?
প্রশ্ন (৪/২০৪) : বিবাহের সময় পরিস্থিতির কারণে দুই লাখ টাকা মোহরানায় রাযী হই। কিন্তু তা পরিশোধ করা আমার জন্য অতি কষ্টকর। স্ত্রী সর্বদা বলে, পঞ্চাশ হাযার টাকা পেলেই আমি খুশী। এক্ষণে আমার করণীয় কি? পুরো পাওনা না দিয়ে মারা গেলে কি আমি গোনাহগার হব? - তা‘লীমুল হক, সোনারগাঁও, নারায়ণগঞ্জ।
প্রশ্ন (৩৬/৩৯৬) : মসজিদের কিছু জমি সরকার অধিগ্রহণ করে ক্ষতিপূরণ দিয়েছে। উক্ত টাকা কি জমি ওয়াকফকারী না মসজিদ কর্তৃপক্ষ পাবে? এটা দিয়ে মসজিদের উন্নয়ন বা ইমাম-মুওয়াযযিনের বেতন দেওয়া যাবে কি?
আরও
আরও
.