উত্তর : চুল ও দাড়িতে মেহেদী ব্যবহার করা মুস্তাহাব (আওনুল মা‘বুদ ১১/১৭২; তোহফাতুল আহওয়াযী ৫/৩৫৪; নায়লুল আওতার ১/১৫২)। মক্কা বিজয়ের দিন আবুবকরের পিতা আবু কুহাফার মাথার চুল ও দাড়ি কাশফুলের মত সাদা দেখে রাসূল (ছাঃ) বলেছিলেন, এই সাদাকে পরিবর্তন কর এবং কালো রং থেকে বিরত থাক’ (মুসলিম হা/২১০২; আবুদাঊদ হা/৪২০৪; মিশকাত হা/৪৪২৪)। তবে  রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর মৃত্যু অবধি মাথার মাঝখানের কিছু চুল, ঠোঁটের নিম্নদেশের এবং চোখ ও কানের মধ্যবর্তী দাড়ির ও কানের মধ্যকার কিছু চুল সাদা হয়েছিল (বুখারী হা/৩৫৪৫; মুসলিম হা/২৩৪১ প্রভৃতি)। সেকারণ তিনি চুলে খেযাব লাগাতেন না (আহমাদ হা/১৩৩৯৬, ছহীহ-আরনাঊত্ব)। আনাস (রাঃ) বলেন, মৃত্যুকালে রাসূল (ছাঃ)-এর চুল ও দাড়ির বিশটি চুলও পাকেনি’ (বুখারী হা/৩৫৪৭; মুসলিম হা/২৩৪৭; সীরাতুর রাসূল (ছাঃ) ৩য় মুদ্রণ ৭৭৮ পৃ.)

অপরদিকে উম্মে সালামা, আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাঃ) প্রমুখের বর্ণনায় পাওয়া যায় যে, রাসূল (ছাঃ) ওয়ার্স ঘাস ও যাফরান দ্বারা নিজের দাড়িকে হলুদ রঙে রঞ্জিত করেছেন’ (বুখারী হা/৫৮৯৭; মিশকাত হা/৪৪৮০; নাসাঈ হা/৫২৪৪ প্রভৃতি; মিশকাত হা/৪৪৫৩, সনদ ছহীহ)। আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূল (ছাঃ) এরশাদ করেন, ইহূদী-নাছারারা খেযাব লাগায় না। অতএব তোমরা তাদের বিপরীত কর’ (বুঃ মুঃ মিশকাত হা/৪৪২৩)

বিদ্বানগণ উপরোক্ত পরস্পর বিরোধী বর্ণনাসমূহের মধ্যে সমন্বয় করে বলেন, খেযাব ব্যবহার রাসূল (ছাঃ)-এর নিয়মিত অভ্যাস ছিল না। বরং মাঝে-মধ্যে ব্যবহার করতেন। ইমাম নববী (রহঃ) বলেন, ‘এ ব্যাপারে গ্রহণীয় মত হ’ল তিনি কোন কোন সময় মেহেদী ব্যবহার করেছেন এবং অধিক সময় মেহেদী ব্যবহার করেননি’ (নববী, শরহ মুসলিম ১৫/৯৫)

ছাহাবীগণের মধ্যে হযরত আবুবকর, ওমর ও ওছমান (রাঃ) খেযাব লাগিয়েছেন (মুসলিম হা/২৩৪১ (১০১, ১০৩); মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ হা/২৫০৩৪)। একইভাবে ইবনু আববাস, ইবনু ওমর, আবু হুরায়রা (রাঃ) খেযাব লাগিয়েছেন (মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ হা/২৫০৩৮, ৩৫-৩৬)। হযরত আলী (রাঃ) সম্পর্কে দু’ধরনের বর্ণনা এসেছে। এক বর্ণনায় এসেছে, আলী (রাঃ) খেযাব লাগাননি (মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ হা/২৫০৫৫, ৫৯-৬০)। অন্য বর্ণনায় এসেছে, তিনি খেযাব লাগিয়েছেন (মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ হা/২৫০৩৬)। পক্ষান্তরে হযরত আবু যার গিফারী, সায়েব বিন ইয়াযীদ, উবাই বিন কা‘ব (রাঃ) প্রমুখ খেযাব লাগাতেন না (মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ হা/২৫০৫৬, ৫৯-৬১; হাকেম ৩/৩৪২, হা/৫৩১৪)। তাবেঈগণের মধ্যে আব্দুল্লাহ ইবনু আববাস (রাঃ)-এর শিষ্য মুজাহিদ, সাঈদ বিন জুবায়ের, ত্বাঊস প্রমুখ খেযাব লাগাতেন না (মুছান্নাফ হা/২৫০৫৮, ৬২)।    

ক্বাযী ‘ইয়ায ইমাম ত্বাবারাণীর বক্তব্য উদ্ধৃত করে বলেন, নবী করীম (ছাঃ) থেকে খেযাব লাগানোর পক্ষে-বিপক্ষে যেসব বর্ণনা এসেছে, সবটাই সঠিক। পরস্পরের মধ্যে কোন বৈপরিত্য নেই। বরং খেযাবের নির্দেশ হ’ল ঐ অবস্থার জন্য, যাদের চুল আবুবকরের পিতা আবু কোহাফার ন্যায় সাদা কাশফুলের মত হয়ে গেছে। আর না করার বিষয়টি হ’ল যাদের চুল সাদা-কালো মিশ্রিত। তিনি বলেন, পূর্ববর্তীদের মধ্যে দু’টিই করার পক্ষে-বিপক্ষে যে মতভেদ বর্ণিত হয়েছে, তা ছিল অবস্থার বিবেচনায়। আর এ ব্যাপারে ইজমা রয়েছে যে, খেযাব লাগানো ওয়াজিব নয়। সেকারণ এ বিষয়টি নিয়ে কেউ কাউকে দোষারোপ করতেন না এবং এ ব্যাপারে কোনটিকে নাসেখ-মানসূখ বলাটাও জায়েয নয় (নববী, শরহ মুসলিম হা/২১০১-এর আলোচনা ১৪/৮০ পৃ.)। অতএব মেহেদী ব্যবহার করলে ছওয়াব পাওয়া যাবে, কিন্তু ব্যবহার না করলে কেউ পাপী হবে না।

অনেকের দাড়ি খাটো, কিন্তু মেহেদী জোরালো। অথচ রাসূল (ছাঃ)-এর নির্দেশ হ’ল, গোঁফ ছাটো এবং দাড়ি ছাড়ো’ (বুঃ মুঃ মিশকাত হা/৪৪২১)। অতএব সুন্নাতী দাড়ি রাখার প্রতি যত্নবান হওয়া আবশ্যক।

প্রশ্নকারী : তরীকুযযামান, গাংণী, মেহেরপুর।






বিষয়সমূহ: বিধি-বিধান
প্রশ্ন (২৮/২৬৮) : সূরা তওবা ১১ ও ৮৪ নং আয়াতের ব্যাখ্যা জানতে চাই। - রফীকুল ইসলাম, ভালুকা, ময়মনসিংহ।
প্রশ্ন (৪০/৩২০) : রাসূল (ছাঃ)-এর স্ত্রী-কন্যাগণকে দেশীয় অনেক আলেম মা যুক্ত করে যেমন মা আয়েশা, মা ফাতেমা ইত্যাদি নামে আখ্যায়িত করে থাকেন। এভাবে বলা যাবে কি? - -আবু তাহেরসাতকানিয়া, চট্টগ্রাম।
প্রশ্ন (৩৫/৭৫) : জনৈক ইমাম জুম‘আর খুৎবায় বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) একদা রাতে পেশাব করে হাড়িতে রেখে সকালে একজন ছাহাবী আসলে তাকে প্রস্রাবগুলি ফেলে দিতে বললেন। ছাহাবী পেশাবের হাড়িটাকে বাহিরে নিয়ে গিয়ে রাসূলের প্রতি মহববতের কারণে তা খেয়ে নেন। এরপর রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর কাছে আসলে তিনি বলেন, কি ফেলে দিয়েছ? তখন ছাহাবী চুপ থাকেন। বারবার জিজ্ঞেস করার পর লোকটি বলেন আমি তা খেয়ে ফেলেছি। ফলে উক্ত ছাহাবী মারা গেলে তার শরীর থেকে সুগন্ধি বের হয়। উক্ত বক্তব্যের সত্যতা জানিয়ে বাধিত করবেন।
প্রশ্ন (১৭/৪১৭) : একাকী ছালাত আদায়ের ক্ষেত্রে আযান দেওয়া যাবে কি?
প্রশ্ন (১০/২৫০) : কাউকে স্বামী বা স্ত্রী হিসাবে কামনা করে আল্লাহর নিকটে দো‘আ করা যাবে কি? - -রায়হান, যশোর।
প্রশ্ন (১৫/৩৭৫) : যখন আযানের জবাব দেয়া শেষ হবে তখন আল্লাহর নিকট প্রার্থনা কর, তাহলে তোমাকে প্রদান করা হবে’ (আবুদাঊদ) ‘আযান ও ইকামতের মাঝের দো‘আ ফেরত দেয়া হয় না’ (আহমাদ) এবং জুম‘আর দিনে একটি সময় রয়েছে সে সময় কিছু চাইলে আল্লাহ তাকে দান করেন (বুখারী, মুসলিম)। উক্ত স্থানগুলোতে হাত না তুলে মনে মনে বাংলায় চাওয়া যাবে কি?
প্রশ্ন (৩১/১৫১) : মাইয়েতের মুখ দেখার জন্য নারী-পুরুষ সবাই ভীড় জমায়। এটা কি শরী‘আতের দৃষ্টিকোণ থেকে জায়েয? - -ওয়াহীদুয্যামান, শিবগঞ্জ, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
প্রশ্ন (৩/১৬৩) : মুওয়াযযিনের আযান ও ইক্বামতের জবাব দেওয়া ও পরবর্তী দো‘আসমূহ পাঠ করার ফযীলত কি? - -শওকত ইসলাম, শেরপুর।
প্রশ্ন (৩৩/৩৩) : জনৈক আলেম বলেন, ওযূ করার ক্ষেত্রে কুলি করার সময় গড়গড়া করা যাবে না। এটা সঠিক কি?
প্রশ্ন (৪০/৪৪০) : আছহাবুল উখদূদের লোকসংখ্যা কতজন ছিল? সঠিক সংখ্যা জানিয়ে বাধিত করবেন।
প্রশ্ন (১৪/২৫৪) : অজ্ঞতার কারণে সম্পূর্ণ বা আংশিক হারাম টাকা দিয়ে ব্যবসা শুরু করে পরবর্তীতে মূলধনে যে পরিমাণ হারাম ছিল তা সরিয়ে ফেললে ব্যবসাটি হালাল হবে কি?
প্রশ্ন (১৭/২১৭) : আদম (আঃ)-এর সৃষ্টির বর্ণনা কুরআন মজীদে পাওয়া যায়। কিন্তু হাওয়ার সৃষ্টির বিবরণ জানা যায় না। তাই মা হাওয়ার সৃষ্টি সম্পর্কে জানিয়ে বাধিত করবেন।
আরও
আরও
.