উত্তর : স্ত্রী স্বামীকে যিহার করতে পারে না, বরং স্বামী স্ত্রীকে যিহার করে থাকে। ফলে এটি যিহারের অন্তর্ভুক্ত নয়। বরং একটি সাধারণ কথা মাত্র। এতে কোন কাফফারা দিতে হবে না। মূলতঃ ‘যিহার’ হ’ল, স্বামী যদি তার স্ত্রীকে অথবা তার কোন অঙ্গকে নিজের ‘মা’ অথবা ‘স্থায়ীভাবে বিবাহ হারাম’ এমন কোন মহিলার পৃষ্ঠদেশ বা কোন অঙ্গতুল্য বলে অভিহিত করে। একথা বলার উদ্দেশ্য, পরোক্ষভাবে মাহরাম নারীর মত স্ত্রীকে নিজের জন্য হারাম ঘোষণা করা। জাহেলী আরবে যিহারকে তালাক গণ্য করা হ’ত। ফলে যিহারের পর স্ত্রীকে আর ফিরিয়ে নেওয়ার অবকাশ ছিল না। ইসলাম এটিকে বাতিল করে এবং বলে দেয় যে, গর্ভধারিণী মা ব্যতীত অন্য কেউ সত্যিকারের ‘মা’ হ’তে পারে না। অতএব যিহার করলে তালাক হবে না, বরং এরূপ মিথ্যা ও চূড়ান্ত বেআদবীর জন্য তার উপর কাফফারা ওয়াজিব হবে। কাফফারা আদায় না করা পর্যন্ত স্ত্রী সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ থাকবে। কাফফারা আদায়ের পর যথারীতি ঘর-সংসার করা যাবে (আল-মাওসূআতুল ফিক্বহিইয়াহ ২৯/১৯০-৯১)

যিহারের কাফফারা হ’ল, একটি ক্রীতদাসকে মুক্ত করা অথবা একটানা দু’মাস ছিয়াম রাখা অথবা ষাটজন মিসকীন খাওয়ানো (মুজাদালাহ ৫৮/৩-৪)। যার পরিমাণ হ’ল, দৈনিক একজন মিসকীনকে মধ্যম মানের খাদ্য বা পোষাক প্রদান করা (মায়েদাহ ৫/৮৯)। বেশী দিলে বেশী নেকী পাবে (বাক্বারাহ ২/১৮৪)। কাফফারার ছিয়াম শেষ না হওয়া পর্যন্ত স্ত্রী স্পর্শ করবে না। কিন্তু যদি অধৈর্য হয়ে করেই ফেলে, তাহ’লে কাফফারা শেষ হওয়ার পূর্বে পুনরায় স্ত্রী স্পর্শ করবে না (ইবনু মাজাহ হা/২০৬৫; ইরওয়া ৭/১৭৯-৮০)। এটিই হ’ল অধিকাংশ বিদ্বানের অভিমত (মুগনী ৮/৪১)

এক্ষণে যারা বলেন স্ত্রী স্বামীকে যিহার করতে পারে, তারা নিম্নোক্ত হাদীছ থেকে দলীল নেন। যেমন আয়েশা বিনতে ত্বালহা বিন ওবায়দুল্লাহ-কে মুছ‘আব বিন যুবায়ের বিবাহের পয়গাম দিলে তিনি বলেন, যদি আমি মুছ‘আব বিন যুবায়েরকে বিবাহ করি, তাহ’লে সে আমার উপর আমার পিতার পিঠের ন্যায় হবে। পরবর্তীতে তিনি তাকে বিবাহ করতে চান। তখন এ বিষয়ে তিনি মদীনাবাসী ছাহাবীদের নিকট জিজ্ঞেস করেন। জওয়াবে তিনি আদিষ্ট হন এই মর্মে যে, فَأُمِرَتْ أَنْ تُعْتِقَ رَقَبَةً وَتَتَزَوَّجَهُ ‘তিনি একটি দাস মুক্ত করবেন, অতঃপর তাকে বিবাহ করবেন’ (দারাকুনী হা/৩৮৬৬; ইরওয়া হা/২০৮৯, সনদ ছহীহ)। উপরোক্ত হাদীছের ব্যাখ্যায় বিদ্বানগণ বলেন, এখানে আয়েশা বিনতে ত্বালহা তার কসমের কাফফারা আদায় করেছেন। অতঃপর বিবাহ করেছেন (ইবনু কুদামাহ, মুগনী ৮/৪২)। অতএব এটি যিহারের কাফফারা নয়, বরং কসমের কাফফারা।

তবে ইমাম ইবনু তায়মিয়াহ (রহঃ) বলেন, স্বামী-স্ত্রী উভয়ে একে অপরকে যিহার করতে পারে। এজন্য কাফফারা হিসাবে তারা একটি দাস মুক্ত করবে অথবা একটানা দু’মাস ছিয়াম রাখবে অথবা ষাট জন মিসকীন খাওয়াবে (ইবনু তায়মিয়াহ, মাজমূউল ফাতাওয়া ৩৪/৯)

প্রশ্নকারী : সানজিদ হাসানঢাকা।






বিষয়সমূহ: মহিলা বিষয়ক
প্রশ্ন (১৯/১৭৯) : আমাদের নবী মুহাম্মাদ (ছাঃ) সম্পদের দিক দিয়ে ধনী ছিলেন, না গরীব ছিলেন? ক্বিয়ামতের দিন তিনি কি সবার চেয়ে গরীব হয়ে উঠবেন?
প্রশ্ন (২০/১৪০) : ব্যবসায়ের মূলনীতি কি? দলীলভিত্তিক জানিয়ে বাধিত করবেন।
প্রশ্ন (১/৪১) : প্যাথলজি টেস্টের পেশাবের শিশি সাথে নিয়ে ছালাত আদায় করা যাবে কি?
প্রশ্ন (৩৫/১৯৫) : কোন কোন বাস প্রতি ওয়াক্ত ছালাতের সময় মসজিদে বিরতি দেয়। এমতাবস্থায় জমা করা যাবে কি? না কি প্রতি ওয়াক্তে পড়াই উত্তম হবে?
প্রশ্ন (২১/১০১) : ছাদাক্বা বয়স বৃদ্ধি করে এবং মন্দ মৃত্যু প্রতিরোধ করে -মর্মে বর্ণিত হাদীছটির বিশুদ্ধতা সম্পর্কে জানতে চাই। - -আল-আমীন, ভুগরইল পশ্চিমপাড়া, রাজশাহী।
প্রশ্ন (৮/২৮৮) : ওহোদ পাহাড় কি রাসূল (ছাঃ)-কে বা রাসূল (ছাঃ) নিজেই ওহোদ পাহাড়কে ভালবাসতেন? এর কারণ কি?
প্রশ্ন (১/২৪১) : মহিলারা পাঁচ ওয়াক্ত ছালাত মসজিদে গিয়ে আদায় করতে পারবে কি?
প্রশ্ন (৩১/৩১১) : ইজতিহাদে ভুল হ’লে যদি একটি নেকী হয়, তবে যেসমস্ত আলেম ভুল ইজতিহাদ করে হাদীছ বিরোধী আমল করে চলেছে তারা গোনাহগার হবে কি? - আব্দুল হালীম, মালদ্বীপ।
প্রশ্ন (৩৪/১৫৪) : সূরা ফাতিহা পড়ার পর কয়টি আয়াত পড়তে হবে? প্রথম রাক‘আতের পর দ্বিতীয় রাক‘আতের ক্বিরাআত লম্বা হলে সমস্যা হবে কি?
প্রশ্ন (১৩/২৫৩) : জান্নাতের নীচে যে নহরসমূহ প্রবাহিত রয়েছে, সেসব কিসের?
প্রশ্ন (২২/৪৬২) : যে ব্যক্তি ইসলামের পাঁচটি রুকনকে অস্বীকার করে, সে কি চিরস্থায়ী জাহান্নামী হবে? তার জান্নাতে যাওয়ার সুযোগ আছে কি? জাহান্নামে থাকার সময়টা কত বছর হ’তে পারে?
প্রশ্ন (২৪/২৪) : মুহাম্মাদ আবুল কাসেম নাম রাখা যাবে কি? জনৈক আলেম বলেন, এ নাম রাখার ব্যাপারে রাসূল (ছাঃ)-এর নিষেধাজ্ঞা আছে?
আরও
আরও
.