
গুগল জেমিনির নতুন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুল ‘কো-সায়েন্টিস্ট’ মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে একটি জটিল বৈজ্ঞানিক রহস্য সমাধান করে বৈজ্ঞানিক মহলে চমক সৃষ্টি করেছে। ব্রিটেনের লন্ডন ভিত্তিক ইম্পেরিয়াল কলেজের মাইক্রোবায়োলজিস্ট অধ্যাপক জোসে পেনাডেস এবং তার গবেষণা দল দীর্ঘ ১০ বছর ধরে একটি মারাত্মক জীবাণু তথা সুপারবাগ নিয়ে কাজ করছিলেন। এই সুপারবাগ অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে এতটা প্রতিরোধী যে, সাধারণ চিকিৎসায় এদের ধ্বংস করা কঠিন হয়ে পড়ে।
এটি এমন এক প্রকার ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাক, যারা একাধিক অ্যান্টিবায়োটিকের প্রভাবকে পরাস্ত করতে সক্ষম। অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের ফলে শরীরে এই ধরনের জীবাণুর জন্ম হ’তে পারে। একবার শরীরে ঢুকলে এটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে মারাত্মক ক্ষতি করে।
অধ্যাপক পেনাডেসের তত্ত্ব ছিল, সুপারবাগ একটি ভাইরাসের সাহায্যে এক ব্যাকটেরিয়া প্রজাতি থেকে অন্য প্রজাতিতে ছড়িয়ে পড়ে এবং তাতেই প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এই তত্ত্ব শুধুমাত্র গবেষকদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। কোথাও প্রকাশিত হয়নি। এরপর তিনি গুগলের এআই টুলকে এই রহস্য সমাধানের দায়িত্ব দেন। চমকপ্রদভাবে টুলটি মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই সমস্যাটির যুক্তিযুক্ত ব্যাখ্যা দেয় এবং একটি সম্ভাব্য সমাধানও প্রস্তাব করে। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয়, এটি শুধু গবেষকদের ধারণাকেই সমর্থন করেনি, বরং আরও চারটি নতুন হাইপোথিসিস বা সম্ভাবনার কথা বলেছে, যেগুলোর প্রতিটিই বৈজ্ঞানিকভাবে সঠিক।
পেনাডেসের মতে, তার গবেষণা এখনও প্রকাশিত হয়নি। তাই এআই কিভাবে এত নিখুঁতভাবে সেই গোপন তথ্য বুঝতে পারল, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন এবং অবাক তিনি। এই অগ্রগতি বিজ্ঞানীদের মনে নতুন আশার আলো জাগিয়েছে। তারা আশা করছেন, এআই-এর সহায়তায় অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী জীবাণুর বিরুদ্ধে কার্যকর ওষুধ তৈরি সম্ভব হবে এবং ভবিষ্যতে সুপারবাগ চিরতরে নির্মূল করা যেতে পারে।