উত্তরঃ
এতে শরী‘আতে কোন বাধা নেই; বরং উৎসাহিত করা হয়েছে। কেননা জুম‘আ মসজিদের
উদ্দেশ্যই হ’ল জামা‘আত বড় হওয়া। জামা‘আত যত বড় হবে, মুছল্লীর নেকী তত বেশী
হবে। এর মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহর ঐক্য যোরদার হয় এবং পরস্পরে পরিচিতি ও
ভালবাসা বৃদ্ধি পায়। আর এটাই হ’ল আল্লাহর কাম্য। তিনি বলেন, ‘হে
বিশ্বাসীগণ! যখন জুম‘আর আযান হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের দিকে দৌড়ে চলো
এবং বেচাকেনা ছেড়ে দাও। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা বুঝ’ (জুম‘আহ ৯)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, জামা‘আতে মুছল্লী যত বেশী হবে, আল্লাহর নিকটে তা তত বেশী প্রিয়তর হবে’ (আবুদাঊদ, নাসাঈ, মিশকাত হা/১০৬৬; ‘জামা‘আত ও উহার ফযীলত’ অনুচ্ছেদ; ঐ, বঙ্গানুবাদ হা/৯৯৯, ৩/৬৪ পৃঃ)।
সম্ভবতঃ একারণেই রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ও খুলাফায়ে রাশেদীনের সময়ে মদীনাতে মসজিদে নববীই একমাত্র জুম‘আ মসজিদ ছিল। যদিও তখন মুছল্লীর সংখ্যা বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছিল। একবার দূরে অবস্থানকারী বনু সালামাহ গোত্র মসজিদে নববীর কাছাকাছি এসে বাড়ী করার আকাংখা ব্যক্ত করে। তখন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাদের বলেন, ‘হে বনু সালামাহ! তোমরা তোমাদের বাড়ীতেই থাক। কেননা এতে (দূরত্বের কারণে) মসজিদে আসতে তোমাদের পদক্ষেপ বৃদ্ধি পাবে এবং তোমাদের পদচিহ্ন সমূহ (তোমাদের আমলনামায়) লিখিত হবে’ (মুসলিম, মিশকাত হা/৭০০; ‘মসজিদ সমূহ ও ছালাতের স্থান সমূহ’ অনুচ্ছেদ; ঐ, বঙ্গানুবাদ হা/৬৪৮)। তিনি বলেন, ‘ঐ মুছল্লী সবচেয়ে বেশী ছওয়াবের অধিকারী হবে, যে সবচেয়ে দূর থেকে মসজিদে আসে এবং ঐ মুছল্লী অধিক পুরষ্কৃত হবে, যে আগে মসজিদে আসে এবং অপেক্ষা করে। অতঃপর ইমামের সাথে ছালাত আদায় করে’ (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৬৯৯; ঐ বঙ্গানুবাদ হা/৬৪৭)। এমনকি দূরের বাসিন্দা অন্ধ ছাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতূমকেও আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) মসজিদে জামা‘আতে না আসার ব্যাপারে অনুমতি দেননি (মুসলিম, আবুদাঊদ, নাসাঈ, ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/১০৫৪, ১০৭৮)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, এক ইমামের অধীনে দুইজনের জামা‘আত আল্লাহর নিকট অধিক নেকী বর্ধক বিচ্ছিন্ন চারজন মুছল্লীর চাইতে। অনুরূপভাবে চারজনের জামা‘আত আটজন বিচ্ছিন্ন মুছল্লীর চাইতে এবং আটজনের জামা‘আত একশ’ জন বিচ্ছিন্ন মুছল্লীর চাইতে বেশী নেকী বর্ধক’ (ত্বাবারাণী, বাযযার, ছহীহ তারগীব হা/৪১২)। ছাহেবে মির‘আত বলেন, এ হাদীছে প্রতিবাদ রয়েছে ঐসব লোকের, যারা বলেন যে, সকল জামা‘আতের নেকী সমান। অথচ ২৭ গুণ নেকী বেশী হওয়ার হাদীছ তার চাইতে বেশী নেকী হওয়ার হাদীছগুলিকে রদ করে না (মির‘আত হা/১০৭৩-এর ব্যাখ্যা, ৩/৫১০ পৃঃ)।