ফিৎনা কালে বাতিল ক্বিয়াস সমূহ থেকে সাবধান

عَنْ شَقِيقٍ قَالَ قَالَ عَبْدُ اللهِ: كَيْفَ أَنْتُمْ إِذَا لَبِسَتْكُمْ فِتْنَةٌ يَهْرَمُ فِيهَا الْكَبِيرُ، وَيَرْبُو فِيهَا الصَّغِيرُ، وَيَتَّخِذُهَا النَّاسُ سُنَّةً، فَإِذَا غُيِّرَتْ قَالُوا: غُيِّرَتِ السُّنَّةُ. قَالُوا: وَمَتَى ذَلِكَ يَا أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ؟ قَالَ: إِذَا كَثُرَتْ قُرَّاؤُكُمْ، وَقَلَّتْ فُقَهَاؤُكُمْ، وَكَثُرَتْ أُمَرَاؤُكُمْ، وَقَلَّتْ أُمَنَاؤُكُمْ، وَالْتُمِسَتِ الدُّنْيَا بِعَمَلِ الْاٰخِرَةِ- رواه الدارمى-

শাক্বীক্ব (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ (রাঃ) বলেন, তোমাদের অবস্থা তখন কেমন হবে, যখন ফিৎনা তোমাদের আচ্ছন্ন করবে। যার মধ্যে বড়রা বৃদ্ধ হবে এবং ছোটরা বেড়ে উঠবে। আর সেটিকেই লোকেরা সুন্নাত হিসাবে গ্রহণ করবে। যখন তা পরিবর্তন করা হবে, তখন লোকেরা বলবে, সুন্নাতকে পরিবর্তন করে ফেলা হ’ল! তারা জিজ্ঞেস করল, হে আবু আব্দুর রহমান! এটা কখন ঘটবে? তিনি বললেন, যখন তোমাদের মধ্যে দরবেশের সংখ্যা বেশী হবে এবং বিশেষজ্ঞ আলেমদের সংখ্যা কমে যাবে। নেতার সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এবং আমানতদারের সংখ্যা হ্রাস পাবে। আখেরাতের কাজের মাধ্যমে দুনিয়া অন্বেষণ করা হবে’ (দারেমী হা/১৯১)

২১শে রামাযান ক্বদর রাতে বা ৬১০ খ্রিষ্টাব্দের ১০ই আগষ্ট সোমবার ‘ইক্বরা‘ বিসমে রবেবকা... প্রথম ৫ আয়াত নাযিলের মাধ্যমে রাসূল (ছাঃ) ‘নবুঅত’ লাভ করেন। তার কয়েকদিন পর সূরা মুদ্দাছ্ছির প্রথম ৫ আয়াত নাযিল হলে তিনি ‘রিসালাত’ লাভ করেন। ১ম অহি-কে ‘অহিয়ে নবুঅত’ এবং ২য় অহি-কে ‘অহিয়ে রিসালাত’ বলা যেতে পারে। অতঃপর তাঁর দিন-রাতের দাওয়াতে মক্কায় সংস্কারের যে ঢেউ ওঠে, তা কেবল মক্কা নয় পুরা আরব বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করে। যে মুহাম্মাদ কখনোই লেখাপড়া শিখেননি, তিনি নুযূলে অহি-র মাধ্যমে সসীম জ্ঞানের ঊর্ধ্বে অসীম জ্ঞানের সন্ধান পেলেন। তাঁকে নির্দেশ দেওয়া হ’ল, হে চাদরাবৃত! উঠে দাঁড়াও! ভোগবাদী মানুষকে শয়তানের ধোঁকা থেকে বাঁচাও! সার্বিক জীবনে আল্লাহর সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা কর! শিরকী জাহেলিয়াতের কলুষময় পোষাক ঝেড়ে ফেল! মানুষের মনোজগতে ও কর্মজগতে আমূল সংস্কার সাধনের প্রতিজ্ঞা নিয়ে বেরিয়ে পড়ো! তাকে জানিয়ে দাও দুনিয়া নয়, আখেরাতে জান্নাত লাভই হবে মানুষের পার্থিব জীবনের একমাত্র লক্ষ্য।

শুরু হ’ল নতুনের শিহরণ ও আন্দোলন। কিন্তু ইবলীসের শিখন্ডীরা বসে থাকেনি। তারা এর বিরুদ্ধে নানাবিধ সন্দেহ-সংশয় ও দুনিয়াবী লোভ-লালসার জাল বিস্তার করে চলল। ফলে মানুষের মধ্যে সৃষ্টি হ’ল দ্বিধা-দ্বন্দ্ব। বিশ্বাসী-অবিশ্বাসী- দুর্বল বিশ্বাসী লোকদের ভিড় জমলো। অবশেষে রাসূলকে মদীনায় হিজরত করতে হ’ল। সেখানে দেখা দিল কপট বিশ্বাসী, ইহূদী-খৃষ্টান ও পৌত্তলিকদের সশস্ত্র বাধা। কিন্তু দৃঢ় বিশ্বাসীদের সামনে কিছুই টিকেনি।

ইসলামের বিজয় ঠেকানোর জন্য শয়তান সকল যুগে ইসলামের নামে যেসব ফাঁদ পেতে রাখে, তার কিছু নমুনা নিম্নোক্ত ছহীহ হাদীছ সমূহে বর্ণিত হয়েছে। যাতে জান্নাত পিয়াসী মুমিন সেসব থেকে সতর্ক থাকে। যেমন-

(১) শা‘বী (২১-১০৩ হি.) বলতেন, আল্লাহর কসম! যদি তোমরা ক্বিয়াসের অনুসারী হও, তাহ’লে অবশ্যই হালালকে হারাম করবে ও হারামকে হালাল করবে’ (দারেমী হা/১৯৮)

(২) আবু ক্বিলাবাহ (মৃ. ১০৪ হি.) বলেন, তোমরা প্রবৃত্তির অনুসারীদের নিকটে বসবে না এবং তাদের সাথে ঝগড়ায় লিপ্ত হবে না। কেননা আমি এ ব্যাপারে আশংকামুক্ত নই যে, তারা তোমাদেরকে তাদের বিভ্রান্তিতে নিমজ্জিত করবে না। কিংবা তোমাদের চেনা-জানা বিষয়গুলিকেও তারা তোমাদের নিকটে সন্দেহপূর্ণ করে তুলবে’ (দারেমী হা/৪০৫)

(৩) নাফে‘ (মৃ. ১১৭ হি.) আব্দুল্লাহ বিন ওমর (রাঃ) হ’তে বর্ণনা করেন যে, এক ব্যক্তি ইবনু ওমর (রাঃ)-এর নিকট এসে বলল, অমুক ব্যক্তি আপনাকে সালাম দিয়েছেন। জওয়াবে তিনি বলেন, আমার নিকট খবর পৌঁছেছে যে, সে বিদ‘আত উদ্ভাবন করেছে। অতএব যদি সে বিদ‘আত সৃষ্টি করে থাকে, তাহ’লে তুমি তাকে আমার সালাম জানাবে না’ (দারেমী হা/৪০৭)

(৪) মুহাম্মাদ বিন ওয়াসে‘ (৪০-১২৩ হি.) বলেন, মুসলিম বিন ইয়াসার (মৃ. ১০০ হি.) বলতেন, তোমরা অবশ্যই ঝগড়া ও বিতর্ক হ’তে সাবধান থাকবে। কেননা সেটা হ’ল একজন আলেমের অজ্ঞতার মুহূর্ত এবং এর দ্বারা শয়তান তার পদস্খলনের সুযোগ খুঁজবে’ (দারেমী হা/৪১০)

(৫) মাকহূল (১১২ হি.) হ’তে বর্ণিত, ওয়াছিলাহ বিন আসক্বা‘ (রাঃ) বলেন, আমরা যখন তোমাদের নিকটে হাদীছের অর্থ বর্ণনা করি, তখন সেটাই তোমাদের জন্য যথেষ্ট হবে’ (দারেমী হা/৩২৪)

(৬) জারীর বিন হাযেম (মৃ. ১৭০ হি.) বলেন, হাসান বছরী (২১-১১০ হি.) এমনভাবে হাদীছ বর্ণনা করতেন যাতে মূল (অর্থ) একই হ’ত, কিন্তু শব্দ সমূহ পৃথক হ’ত’ (দারেমী হা/৩২৬)

(৭) আব্দুল্লাহ বিন যামরাহ (৮১ হি.) কা‘ব (রাঃ) হ’তে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, দুনিয়া ও এর মধ্যে যা কিছু আছে সবকিছুই অভিশপ্ত। কেবল কল্যাণকর বিষয়ে শিক্ষা অর্জনকারী এবং কল্যাণের শিক্ষা দানকারী ব্যতীত’ (দারেমী হা/৩৩১)

(৮) অহাব বিন মুনাবিবহ (৩৪-১১৪ হি.) বলেন, যে সময়টুকু ইল্ম সম্পর্কে আলোচনা করা হয়, সেই সময়টুকু (নফল) ছালাত আদায়ের চাইতে আমার নিকটে অধিক প্রিয়। হয়তো তাদের কেউ এমন কথা শুনবে যা দ্বারা সে সারা বছর কিংবা আমৃত্যু উপকৃত হবে’ (দারেমী হা/৩৩৫)

(৯) হাসান বিন ছালেহ (১০০-১৬৯ হি.) বলেন, লোকেরা যেভাবে তাদের খাদ্য ও পানীয়ের মুখাপেক্ষী, তেমনিভাবে তারা তাদের দ্বীনের বিষয়ে ইলমের মুখাপেক্ষী’ (দারেমী হা/৩৩৬)

বাতিল ক্বিয়াস সমূহের কিছু নমুনা

১. আক্বীদা বিষয়ে : (১) (হানাফী মাযহাব মতে) ঈমান ও তাওহীদ বিষয়ে সকল মুমিন সমান’ (মুক্বাদ্দামা হেদায়া ১/২০)। (তাহ’লে কি নবী ও তার উম্মতের ঈমান সমান?) (২) ফাসেক মুসলমান সাধারণ ফিরিশতাদের চাইতে উত্তম’ (দুর্রে মুখতার ১/২৪৫)। (৩) ঈসা (আঃ) অবতরণ করে ইমাম আবু হানীফার মাযহাব অনুযায়ী নির্দেশ দিবেন (দুর্রে মুখতার ১/২৪)। (৪) খিযির ইমাম আবু হানীফার নিকটে ৩০ বছর ইল্ম শিখেছেন’। খিযির থেকে ইমাম কুশায়রী ৩ বছরে তা হাছিল করেন এবং হাযারও গ্রন্থ রচনা করেন। অতঃপর সেগুলি সিন্দুকে ভরে ‘জীহূন’ নদীতে আমানত রাখেন। শেষ যামানায় ঈসা (আঃ) অবতরণ করে ঐ কিতাব সমূহ বের করে আনবেন ও তা দেখে আমল করবেন’ (দুর্রে মুখতার ১/২৪)। (৫) রাসূল (ছাঃ) বলেন, সকল নবী আমার জন্য গর্ব করে। আর আমি আবু হানীফার জন্য গর্ব করি। আবু হানীফা আমার উম্মতের প্রদীপ্ত ভাষ্কর’ (দুর্রে মুখতার ১/২২)। (৬)فلعنة ربنا أعدادَ رَمْلٍ + على من ردَّ قولَ أبي حنيفةَ ‘আমাদের প্রতিপালকের বালু কণা সম অগণিত লা‘নত বর্ষিত হৌক ঐ ব্যক্তির উপরে + যে ব্যক্তি আবু হানীফার কথা রদ করে (অর্থাৎ গ্রহণ না করে) (দুর্রে মুখতার ১/২৬)। অথচ ‘ইমাম আবু হানীফার দুই প্রধান শিষ্য ইমাম মুহাম্মাদ ও আবু ইউসুফ তাদের ইমামের দুই তৃতীয়াংশ ফৎওয়ার বিরোধিতা করেছেন’ (দুর্রে মুখতার ১/২৪)। (৭) আবু হানীফা ও তার দুই প্রধান শিষ্যের কথা ছহীহ হাদীছের বিপরীত হলে তাদের ইমামদের কথার উপরে আমল করবে, হাদীছের উপরে নয়’ (মুক্বাদ্দামা হেদায়া ১/১১০)। (৮) অথচ হেদায়া-র গুরুত্ব সম্পর্কে ভূমিকাতে বলা হয়েছে, إنَّ الهدايةَ كالقرآنِ قد نَسخَتْ + ما أُلِّفَتْ قبلَها في الشَّرعِ من كُتُب ‘নিশ্চয় হেদায়া হ’ল কুরআনের ন্যায় + যা শারঈ বিষয়ে ইতিপূর্বে রচিত সকল কিতাবকে রহিত করে দিয়েছে’। এই কিতাবে নিয়ত মুখে বলা ‘সুন্দর’ হওয়ার পক্ষে লেখক বুরহানুদ্দীন মারগীনানী (৫১১-৫৯৩ হি.) মত প্রকাশ করায় হানাফী সমাজে মুখে ‘নাওয়াইতু আন’ পড়ার বিদ‘আত চালু হয়েছে (দ্র. ছালাতুর রাসূল (ছাঃ) ৪৬ পৃ. টীকা-১১২)

২. ইস্তেঞ্জা বিষয়ে : (১) ইস্তেঞ্জার প্রথমে ও শেষে বিসমিল্লাহ বলবে’ (আলমগীরী ১/৬ পৃ.)। (২) মানুষের পেশাব মুষ্ঠি ভরে গেলেও ছালাত হয়ে যাবে। পুনরায় ওযূ করার প্রয়োজন নেই’ (হেদায়া ১/২২৬; দুর্রে মুখতার ১/২৫২)। (৩) যেসব পশুর মাংস হালাল সেসব পশুর পেশাব যদি কাপড়ের এক চতুর্থাংশ ভরে যায় তাতে ছালাত জায়েয হবে’ (হেদায়া ১/২২৭)। (৪) এমনকি সমস্ত কাপড়ও যদি ভিজে যায় তাতেও জায়েয হবে’ (ইমাম মুহাম্মাদ, কুদূরী ১৭)। 

৩. শূকর ও কুকুর বিষয়ে : (১) শূকর নাপাক নয়’ (আবু হানীফা, দুর্রে মুখতার ১/২৭১)। (২) শূকরের বেচা-কেনা জায়েয’ (মুনিয়াতুল মুছল্লী ৪৭)। (৩) কুকুর নাপাক নয়’ (আবু হানীফা, দুর্রে মুখতার ১/১০৫, হেদায়া ১/৯৪, ১১১, ১২৮)। (৪) কুকুর বেচা-কেনা জায়েয’ (হেদায়া ১/১১২)। (৫) কুকুরের চামড়া দিয়ে জায়নামায বানানো জায়েয’ (দুর্রে মুখতার ১/১০৫; হেদায়া ১/১১২)। (৬) শূকরের চামড়া দাবাগত করলে তা পাক হয়ে যায়’ (মুনিয়াতুল মুছল্লী ৪৭)। (৭) শূকর ব্যতীত অন্য হারাম পশু বিসমিল্লাহ বলে যবেহ করলে তার সমস্ত অঙ্গ-প্রতঙ্গ, চর্বি ও মাংস পবিত্র হয়ে যায়’ (হেদায়া ৪/১৭২; মুনিয়াতুল মুছল্লী ৪৮)। অন্য বর্ণনায় এসেছে, যে সব পশুর মাংস হারাম, সেসব পশু যবেহ করলে তার মাংস হালাল’ (হেদায়া ১/১১২; শরহ বেক্বায়া ৪৮)

এখানে গযনীর বিখ্যাত শাসক সুলতান মাহমূদ (৩৬১-৪২১ হি.)-এর একটি প্রসিদ্ধ ঘটনা উল্লেখ করা যেতে পারে। তিনি উঁচুদরের একজন হানাফী আলেম ছিলেন। তাঁর রচিত ‘আত-তাফরীদ’ হানাফী ফিক্বহের একটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ।

ইলমে হাদীছের প্রতি তিনি খুবই আকৃষ্ট ছিলেন। মন্ত্রী পরিষদসহ বড় বড় শায়েখদের নিকট থেকে তিনি হাদীছ শ্রবণ করতেন এবং তার ব্যাখ্যা জানতে চাইতেন। এতে তিনি অধিকাংশ হাদীছ শাফেঈ মাযহাবের অনুকূলে পেতেন। ফলে তার হৃদয়ে শাফেঈ মাযহাবের প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টি হয়। একদিন তিনি মার্ভে হানাফী ও শাফেঈ মাযহাবের ফক্বীহদের একত্রিত করে যেকোন একটি মাযহাবকে অগ্রাধিকার দেওয়ার আহবান জানালেন। তখন তারা সকলে এ মর্মে একমত হলেন যে, সুলতানের সম্মুখে দুই মাযহাবের পদ্ধতিতে দু’রাক‘আত নফল ছালাত আদায় করা হবে। অতঃপর তিনি তা পর্যবেক্ষণ করে যেটি সঠিক, সুন্দর ও বিশুদ্ধ মনে করবেন সেটি গ্রহণ করবেন। 

অতঃপর যুগশ্রেষ্ঠ ফক্বীহ, হাফেয ও দুনিয়াত্যাগী আলেম শায়েখ আবুবকর ক্বাফফাল আল-মারওয়াযী (৩২৭-৪১৭ হি.) প্রথমে শাফেঈ মাযহাব অনুযায়ী ছালাত আদায় করলেন। তিনি রাসূল (ছাঃ)-এর পদ্ধতিতে পবিত্র পানি দিয়ে ওযূ করলেন। অতঃপর পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন কাপড় পরিধান করে ক্বিবলামুখী হয়ে তাকবীরে তাহরীমা বলে ছালাত শুরু করলেন। অতঃপর যথাযথভাবে ছালাতের আহকাম ও আরকানসহ খুশূ-খুযূ সহকারে যাবতীয় কার্যাবলী সম্পাদন করলেন। অতঃপর সালাম ফিরানোর মাধ্যমে ছালাত শেষ করলেন। কেননা এরূপ পদ্ধতি ব্যতীত ইমাম শাফেঈ (রহঃ) ছালাত বৈধ মনে করতেন না।

এরপর তিনি হানাফী ফিক্বহে বর্ণিত বৈধ পদ্ধতিতে ছালাত আদায়ের প্রস্ত্ততি শুরু করলেন। প্রথমে তিনি কুকুরের দাবাগত করা চামড়া পরিধান করে তার এক চতুর্থাংশে নাপাকি লাগিয়ে নিলেন। অতঃপর খেজুরের পচা রস (নাবীয) দিয়ে ওযূ করলেন। এসময় খেজুরের পচা রসের দুর্গন্ধে মাছি ও মশা তাকে ঘিরে ধরল। অতঃপর ক্বিবলা সামনে করে তিনি ফার্সী ভাষায় তাকবীর দিয়ে ছালাত শুরু করলেন। ফার্সীতে ক্বিরাআত دَوْبَرْكَك سَبْز (এটি সূরা রহমানের ৬৪ আয়াত مُدْهَامَّتَانِ- -এর ফার্সী অনুবাদ) পাঠ করলেন। এরপর রুকূতে গেলেন। রুকূ থেকে মাথা ভালোভাবে না উঠিয়েই সিজদায় চলে গেলেন। অতঃপর মাটিতে ঠোকর দিলেন ও দু’সিজদার মাঝে স্বস্থির বৈঠক করলেন না। অতঃপর রুকূ থেকে মাথা না উঠিয়েই তাশাহহুদের বৈঠকে বসলেন। অতঃপর বায়ু নিঃসরণ করলেন এবং সালাম না ফিরিয়েই ছালাত শেষ করলেন। অতঃপর সুলতান মাহমূদকে বললেন, এটিই হ’ল হানাফী ফিক্বহে বর্ণিত ছালাতের পদ্ধতি।

তখন সুলতান মাহমূদ বললেন, এটি যদি হানাফী ফিক্বহে বর্ণিত ছালাতের পদ্ধতি না হয়, তাহ’লে আমি আপনাকে হত্যা করব। কারণ কোন দ্বীনদার ব্যক্তি এরূপ পদ্ধতিতে ছালাত আদায় বৈধ বলতে পারেনা। উপস্থিত হানাফী আলেমগণ তাদের ফিক্বহে এরূপ ছালাত আদায়ের পদ্ধতি বিদ্যমান থাকাকে অস্বীকার করলেন। তখন ক্বাফফাল হানাফী ফিক্বহের কিতাবসমূহ নিয়ে আসার নির্দেশ দিলেন। অতঃপর সেগুলি আনা হ’লে সুলতান মাহমূদ একজন খৃষ্টান পন্ডিতকে তা পাঠ করতে বললেন। অতঃপর যখন তিনি হানাফী ফিক্বহের কিতাব পাঠ করলেন, তখন সুলতান মাহমূদ বুঝতে পারলেন যে, ক্বাফফাল হানাফী ফিক্বহে বর্ণিত পদ্ধতি অনুযায়ীই ছালাত আদায় করেছেন। তিনি সত্য বুঝতে পারলেন এবং সঙ্গে সঙ্গে হানাফী মাযহাব ত্যাগ করে শাফেঈ মাযহাব গ্রহণ করলেন’ (সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা ১৭/৪৮৭ পৃ.)

এভাবে তিনি মূলত হাদীছকে অগ্রাধিকার দিলেন, মাযহাবকে নয়। ফলে তিনি নিঃসন্দেহে একজন ‘আহলেহাদীছ’ ছিলেন। যেমন ঐতিহাসিক মোল্লা মুহাম্মাদ ক্বাসেম হিন্দুশাহ ঈরানী ওরফে ফিরিশতা (৯৭৮-১০২১ হি.) তাকে ‘আহলেহাদীছ’ বিদ্বানদের মধ্যে গণ্য করেছেন (তারীখে ফিরিশতা, কানপুর, ভারত: নওলকিশোর ছাপা ১৩০১ হি., ১ম মাক্বালাহ, ১/৩ পৃ.; থিসিস, পৃ. ২৪১)

৪. তায়াম্মুম বিষয়ে : (১) তায়াম্মুমে তারতীব শর্ত নয়’ (শরহ বেক্বায়া ৫৭)। (২) কাদায় তায়াম্মুম করা জায়েয’ (হেদায়া ১/১৪৫; আলমগীরী ১/৩৫)। (৩) শূকর বা কুকুরের পিঠের ধুলাবালিতে তায়াম্মুম করা জায়েয’ (আবু হানীফা, হেদায়া ১/১৪৭)। (৪) জানাযা ও ঈদের ছালাতের জন্য তায়াম্মুম করা জায়েয। যদিও পানি মওজূদ থাকে’ (দুর্রে মুখতার ১/১১৫)

৫. মাসাহ বিষয়ে : মোযার উপরে মাসাহ করার কথা ভুলে গেলে এবং হঠাৎ মোযার উপরে পানি পড়ে গেলে, মাসাহ সঠিক হবে’ (শরহ বেক্বায়া ৬২; বেহেশ্তী জেওর ১/৯৩)

৬. আযান বিষয়ে : আযান ফার্সী বা যেকোন ভাষায় দেওয়া জায়েয। যদি লোকে বুঝতে পারে যে আযান হয়েছে’ (দুর্রে মুখতার ১/২২৫; হেদায়া ১/৩৪৯)

৭. ছালাত বিষয়ে : (১) ছালাতে যদি কেউ ছিয়ামের নিয়ত করে তবে সেটি জায়েয’ (দুর্রে মুখতার ১/২০৫)। (২) আরবী জানা থাকলেও ছালাত যেকোন ভাষায় শুরু করা জায়েয’ (দুর্রে মুখতার ১/২১০, ২২৪; আলমগীরী ১/৯৩)। (৩) শুরুতে আল্লাহু আকবরের স্থলে আল্লাহুল আকবর বা আল্লাহ কাবীর বা আল্লাহুল কাবীর, ইয়া আল্লাহু আকবা-র অথবা ইয়া আল্লাহুল আকবা-র বলা জায়েয’ (আবু ইউসুফ, দুর্রে মুখতার ১/২২৪; কুদূরী ২২; হেদায়া ১/৩৪৫)। (৪) ছালাতের মধ্যকার সকল দো‘আ যেকোন ভাষায় জায়েয’ (আবু হানীফা, দুর্রে মুখতার ১/২২৪ ও ২৫; শরহ বেক্বায়া ৯২; হেদায়া ১/৩৪৯)। (৫) আরবী জানা সত্ত্বেও ক্বিরাআত ব্যতীত সকল দো‘আ অন্য ভাষায় পড়া জায়েয’ (আবু হানীফা, দুর্রে মুখতার ১/২২৫)। (৬) সুবহানাকাল্লা হুম্মা ছানা পড়ার সময় হাত উঁচু করে ধরে রাখবে এবং ছানা শেষ হলে হাত বাঁধবে’ (দুর্রে মুখতার ১/২২৬)। (৭) মহিলারা বুকে হাত বাঁধবে’ (হেদায়া ১/১৫১; দুর্রে মুখতার ১/২২৬)। (যদিও মহিলাদের জন্য খাছ করার কোন দলীল নেই)। (৮) মুক্তাদীর জন্য সূরা ফাতিহা পড়া মাকরূহ তাহরীমী। তবে ছালাত শুদ্ধ হবে’ (দুর্রে মুখতার ১/২৫২; আলমগীরী ১/১৫০)

(৯) জানাযার ছালাতে যদি কেউ ছানার নিয়তে সূরা ফাতিহা পড়ে তবে সেটা জায়েয (দুর্রে মুখতার ১/৮৭, ১১৪)। (১০) কোন কোন বিদ্বান বলেন, আমি যদি ছালাতে মুক্তাদী হই, সূরা ফাতিহা না পড়ি, তাহ’লে ইমাম শাফেঈ আমাকে তিরষ্কার করবেন। আর যদি পড়ি, তাহ’লে ইমাম আবু হানীফা ক্রুদ্ধ হবেন। সেজন্য আমি মুক্তাদী না হয়ে ইমামতি করাকেই বেছে নিয়েছি’ (দুর্রে মুখতার ১/২৫৬)। (১১) যদি সূরা ফাতিহার পরিবর্তে কুরআনের অন্য কোন অংশ পড়ে, তাতে ফরয আদায় হয়ে যাবে’ (হেদায়া ১/৪২৫)। (১২) জেহরী বা সের্রী কোন ছালাতেই মুক্তাদী কোন ক্বিরাআত পড়বে না’ (হেদায়া ১/৪২৮)। (১৩) ইমামের পিছনে সূরা ফাতিহা পড়লে তার মুখে অগ্নি স্ফূলিঙ্গ ও পাথর মারবে’ (হেদায়া ১/৪৩৭)। (১৪) সশব্দে আমীন বলা ও রুকূর আগে বা পরে রাফ‘ঊল ইয়াদায়েন করা মাকরূহ’ (মুনিয়াতুল মুছল্লী ৮৮, ৮৯)। (১৫) সিজদা কেবল নাক অথবা কপালের উপর দেওয়া জায়েয (হেদায়া ১/৩৭৫)। (১৬) মহিলারা সিজদার সময় পেটকে তাদের দু’রানের সাথে মিলিয়ে রাখবে’ (দুর্রে মুখতার ২২৪; আলমগীরী ১/১৬)। (১৭) মহিলারা বৈঠকে বসার সময় দুই পা ডান দিকে বের করে দিয়ে নিতম্বের উপরে বসবে’ (হেদায়া ১/৩৯১; শরহ বেক্বায়া ১০৬)। (১৮) মহিলাদের জামা‘আত মাকরূহ তাহরীমী ও বিদ‘আত’ (হেদায়া ১/৪৫০)। (১৯) মাইয়েতের ক্বাযা ছালাতের জন্য কাফফারা জায়েয’ (দুর্রে মুখতার ১/৩৪৬)

(২০) খুৎবা যদি এক তাসবীহ (সুবহানাল্লাহ) পরিমাণ হয়, সেটাই যথেষ্ট হবে (শরহ বেক্বায়া ১৪৭)। (এটাতে মানুষ সন্তুষ্ট হবে না ভেবে এখন ‘খুৎবা পূর্ব বয়ান’ নামে তৃতীয় আরেকটি খুৎবা চালু করা হয়েছে। যা বিদ‘আত)। (২১) জুম‘আ ও ঈদায়েনের ছালাত গ্রামে জায়েয নয়, শহরের বড় জামে মসজিদ ব্যতীত’ (শরহ বেক্বায়া ১৪৭, ১৫০; হেদায়া ১/৬৪১)। (২২) জুম‘আর দিন রূহ সমূহ একত্রিত হয় (দুর্রে মুখতার ১/৩৮৩)। (সম্ভবত এ কারণেই জুম‘আ ও ঈদের দিন লোকেরা কবর যিয়ারতে গমন করে)। (২৩) গ্রামে বা বিভিন্ন স্থানে প্রথম প্রথম জুম‘আ পড়া জায়েয নয়। সেকারণ (জুম‘আর ছালাতের পর) ‘এহতিয়াত্বী যোহর’ ৪ রাক‘আত পড়তে হবে’ (আবু হানীফা, দুর্রে মুখতার ১/৩৭১)। (২৪) ঈদুল আযহার তাকবীর সরবে বলা বিদ‘আত (হেদায়া ১/৬৭৪)। (২৫) জোর করে আনা পশু দিয়ে কুরবানী করা জায়েয’ (শরহ বেক্বায়া ৫৫৯)। (২৬) গ্রামে ঈদুল আযহার ছালাতের পূর্বে কুরবানী করা জায়েয। অতএব (শহরে) ঈদুল আযহার ছালাতের পূর্বে কুরবানী করার হীলা বা কৌশল এই যে, পশুটি গ্রামে পাঠিয়ে দিয়ে সেখানে ছালাতের পূর্বে যবহ করবে’ (দুর্রে মুখতার ৪/১৮৫; বেহেশতী জেওর ৩/৪৭)

৮. যাকাত বিষয়ে : (১) কাউকে পুরস্কার দেওয়ার নামে যাকাত দিলে এবং অন্তরে নিয়ত করলে যাকাত আদায় হয়ে যাবে’ (বেহেশতী জেওর ৩/৩৫)। (২) যাকাত না দেওয়ার হীলা এই যে, যার নিকটে নেছাব পরিমাণ সম্পদ আছে বছর শেষ হওয়ার পূর্বে এক দিরহাম দান করে দিবে অথবা কিছু দিরহাম নিজের সন্তানদের ‘হেবা’ করে দিবে, যাতে সম্পদ নেছাব থেকে কমে যায় এবং যাকাত ওয়াজিব না হয়’। ইমাম আবু ইউসুফ বছরের শেষে তার স্ত্রীকে সম্পদ ‘হেবা’ করে দিতেন। অতঃপর পরের বছর তার স্ত্রীর সম্পদ নিজের নামে ‘হেবা’ করে নিতেন। যাতে যাকাত মওকূফ হয়ে যায়’। ইমাম গাযালী বলেন, এটি সঠিক। কেননা এটি দুনিয়াবী ফিক্বহ। কিন্তু আখেরাতের জন্য ক্ষতি। এটি হ’ল ক্ষতিকর ইল্মের দৃষ্টান্ত’ (গাযালী, এহইয়াউল উলূম (বৈরূত: দারুল মা‘রিফাহ ১/১৮)। (৩) যে ব্যক্তি যাকাতের টাকায় মসজিদ নির্মাণ করতে চায়, তার হীলা এই যে, যাকাত কাউকে দিয়ে দিবে। অতঃপর সে সেটি মসজিদ নির্মাণে ব্যয় করবে’ (দুর্রে মুখতার ১/৪৩৭)

৯. ফিদইয়া বিষয়ে : যদি কোন ব্যক্তি তার পিতার ক্বাযা ছিয়ামের ফিদইয়া না দিতে চায়, তার হীলা এই যে, দুই সের গম কোন ফকীরকে দিয়ে দিবে। অতঃপর তার নিকট থেকে হেবা হিসাবে চেয়ে নিবে, যতদিন ক্বাযা ছিয়ামের ফিদইয়া শেষ না হয়, ততদিন সে এভাবে করবে’ (আলমগীরী ৪/১০৪৪)

১০. হজ্জ বিষয়ে : মদীনা হারাম নয় (হানাফীদের নিকট) (দুর্রে মুখতার ১/৬১৯)। (যা হাদীছের স্পষ্ট বিরোধী)।

১১. বিবাহ বিষয়ে : (১) ‘নিকাহে মুতা‘ বা ঠিকা বিবাহ জায়েয, যুফার (রহঃ)-এর নিকট’ (শরহ বেক্বায়া ২৩৮)। (২) মোহর হিসাবে মদ বা শূকর প্রদান করলেও বিবাহ জায়েয হবে’ (শরহ বেক্বায়া ২৪৯)

১২. দুধপান বিষয়ে : দুধপানের মেয়াদ আবু হানীফার নিকট আড়াই বছর এবং ইমাম যুফারের নিকট ৩ বছর (শরহ বেক্বায়া ২৬১; কুদূরী ১৭০)। (অথচ কুরআনে এসেছে পূর্ণ ২ বছর (বাক্বারাহ ২৩৩)

১৩. তালাক বিষয়ে : পিতা যদি তার মেয়েকে নাবালিকা অবস্থায় বিয়ে দেয়, তাহ’লে সাবালিকা হওয়ার পর মেয়ে ঐ বিয়ে বাতিল করতে পারবে না’ (হেদায়া ২/৪১)। (অথচ সাবালিকা হওয়ার পর অনিচ্ছুক হ’লে মেয়ে ঐ বিয়ে বাতিল করতে পারে (আবুদাঊদ হা/২০৯৬; মিশকাত হা/৩১৩৬)

১৪. বংশ নির্ধারণ বিষয়ে : (১) স্বামীর বসবাস যদি এমন দূরত্বে হয়, যা এক বছরেও সাক্ষাৎ হয় না। অথচ ৬ মাস পরেই যদি স্ত্রীর বাচ্চা হয়, তাহ’লেও ঐ সন্তান জারজ হবে না। বরং এটি ঐ স্বামীর জন্য কেরামত হিসাবে গণ্য হবে’ (দুর্রে মুখতার ২/১৪০)। (২) স্বামী কয়েক বছর বিদেশে আছে, এদিকে স্ত্রীর সন্তান হয়েছে। তথাপি এটি স্বামীর সন্তান হবে। জারজ নয়’ (বেহেশতী জেওর ৪/৬৯)

১৫. ইদ্দত পালন বিষয়ে : স্বামীর মৃত্যুর পর ইদ্দতকালে স্ত্রীর ৩দিন কালো পোষাক পরা জায়েয’ (দুর্রে মুখতার ২/২২৯)। (অথচ এটি রাফেযী শী‘আ ও খৃষ্টানদের রীতি)।

১৬. দন্ডবিধি বিষয়ে : (১) অল্প বয়স্কা মেয়ে বা মৃতা বা পশুর সাথে সঙ্গম করলে তার কোন দন্ড নেই’ (দুর্রে মুখতার ২/৪০২)। (২) মাহরাম নারী (মা, বোন, মেয়ে, খালা, ফুফু প্রমুখ)-এর সাথে যদি কেউ হারাম জেনেও বিয়ে করে এবং হালাল মনে করে সঙ্গম করে, তাহ’লে তার কোন দন্ড নেই’ (আবু হানীফা, দুর্রে মুখতার ২/৪১৪; হেদায়া ২/৪৫৭)। (৩) যবরদস্তী যেনা করায় বা মজুরী দিয়ে যেনা করায় কোন শাস্তি নেই (দুর্রে মুখতার ২/৪১৬; আলমগীরী ২/৬১১)। (৪) রাষ্ট্রপ্রধান যেনা করলে তার শাস্তি নেই’ (দুর্রে মুখতার ২/৪১৭; হেদায়া ২/৪৬৩; শরহ বেক্বায়া ৩৩২)। (৫) লেওয়াতাত বা পায়ু পথে সঙ্গম করায় কোন শাস্তি নেই’ (আবু হানীফা, শরহ বেক্বায়া ৩৩১; কুদূরী ২২৬)। (৬) কাফন চোরের কোন শাস্তি নেই’ (দুর্রে মুখতার ২/৪৫২)। (৭) কারো দুধ, মাংস, কাঠ, ঘাস, ফল, মাঠের দাঁড়ানো ফসল, মসজিদের দরজা, কারু কুরআন ও কারো সম্পদ লুট করায় কোন শাস্তি নেই’ (শরহ বেক্বায়া ৩৩৭)। (৮) বায়তুল মাল বা সরকারী সম্পদ চুরি করলে শাস্তি নেই’ (শরহ বেক্বায়া ৩৩৮)। (৯) হানাফী যদি শাফেঈ হয়ে যায়, তাহ’লে তাকে শাস্তি দিতে হবে’ (দুর্রে মুখতার ২/৪৪৩; আলমগীরী ২/৭০২)। তার সাক্ষ্য কবুল হবে না এবং বিয়ের উকীল হিসাবে তার সাক্ষ্য কবুল হবেনা’ (দুর্রে মুখতার ৩/২৯৭)। (যদিও বলা হয় চার মাযহাব ফরয এবং চার মাযহাবই সত্য)

১৭. নেশাদার দ্রব্য বিষয়ে : (১) মদ খেয়ে বমি করার পর তার কোন শাস্তি নেই। এমনকি গন্ধ চলে যাওয়ার মদ্যপানের স্বীকৃতি দিলেও তার কোন শাস্তি নেই’ (আলমগীরী ২/৬২৭)। (২) ৯ পেয়ালা মদ খাওয়ার পর নেশা না হলে এবং ১০ম পেয়ালা খাওয়ার পর নেশা হলে ১০ম পেয়ালাটাই হারাম। আগের ৯ পেয়ালা হারাম নয়’ (দুর্রে মুখতার ৪/২৬৪)। (৩) মদ ব্যতীত অন্যান্য মাদক দ্রব্যে যতক্ষণ নেশা না আসে, ততক্ষণ তা পান করা হারাম নয়’ (হেদায়া ২/৪৭৬)। (সম্ভবত এ কারণেই হুক্কা, তামাক, জর্দা, গুল, বিড়ি-সিগারেট, ভাং ইত্যাদিকে অনেকে ‘মাকরূহ’ বলে জায়েয করে নেন)।

অতএব জান্নাত পিয়াসী মুমিনগণ সাবধান! আল্লাহ আমাদের এসব বাতিল ক্বিয়াস থেকে বিরত থাকার তওফীক দিন।-আমীন!

[সূত্র : ‘হাক্বীক্বাতুল ফিক্বহ’ লেখক : মুহাম্মাদ ইউসুফ জয়পুরী; তাছহী

হ : ছহীহ বুখারীর অনুবাদক ও ভাষ্যকার আল্লামা দাঊদ রায (ইদারাহ দাওয়াতুল ইসলাম, মুমিনপুরা, বোম্বাই-১১, তাবি.]






পরোপকারীর মর্যাদা - প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
ইলমের ফযীলত - প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
মাল ও মর্যাদার লোভ দ্বীনের জন্য নেকড়ে স্বরূপ - প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
নেকীর প্রতিযোগিতা কর - প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে আখেরাত বিশ্বাসের ফলাফল - প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
কল্যাণের চাবি - প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
সমাজ সংস্কারে ব্রতী হও - প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
হিংসা ও বিদ্বেষ : মানবতার হত্যাকারী - প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
কথা ও কাজ - প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
বড় পরীক্ষায় বড় পুরস্কার - প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
তিনটি শপথ ও একটি বাণী - প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
হে মানুষ! আল্লাহকে লজ্জা কর - প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
আরও
আরও
.