উত্তর :
বর্তমান মুসলিম সমাজে স্ত্রীর কাছ থেকে যৌতুক গ্রহণের রীতি মূলতঃ
হিন্দুয়ানী রীতির অনুকরণ মাত্র। কেননা হিন্দু উত্তরাধিকার নীতিতে কন্যা
সন্তান পিতা-মাতার সম্পত্তির অংশ পায় না। তাই বিয়ের সময় মেয়েকে সাধ্যমত
সবকিছু দিয়ে দেয়। যা যৌতুক নামে পরিচিত। পক্ষান্তরে ইসলামী বিধানে কন্যা
সন্তান পিতা-মাতার সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হয়। তাই এখানে বরং স্ত্রীকেই
মোহর দেওয়া স্বামীর উপর ফরয। এটা স্রেফ স্ত্রীর হক। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা
তোমাদের স্ত্রীদেরকে নির্লোভ চিত্তে মোহর প্রদান কর। তবে যদি তারা সেখান
থেকে স্বেচ্ছায় তোমাদের কিছু প্রদান করে, তাহ’লে তা হৃষ্টচিত্তে গ্রহণ কর (নিসা ৪)।
এক্ষণে স্ত্রীকে মোহর না দিয়ে বা দেবার নামে বাকী রেখে প্রতারণা করে উল্টা
স্ত্রীর কাছ থেকে যৌতুক আদায় করা, আল্লাহর আদেশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার
শামিল। যার পরিণাম জাহান্নাম ব্যতীত কিছুই নয়। যদি কেউ এরূপ করে, তবে তাকে
যৌতুক পুরাপুরি ফেরৎ দিয়ে অনুতপ্ত হৃদয়ে স্ত্রীর নিকট ক্ষমা চেয়ে আল্লাহর
নিকট খালেছ মনে তওবা না করা পর্যন্ত তার গোনাহ মাফ হবে না। মনে রাখতে হবে
যে, ইসলামী শরী‘আতে স্ত্রীর ভরণ-পোষণের যাবতীয় দায়িত্ব স্বামীর। অতএব
স্ত্রীর নিজস্ব সম্পদে হস্তক্ষেপ করা স্বামীর জন্য নিষিদ্ধ। সেকারণ
স্বেচ্ছায় হৌক বা অনিচ্ছায় হৌক স্ত্রীর পক্ষ থেকে স্বামীকে যৌতুক দেওয়া ও
স্বামীর যৌতুক নেওয়া দু’টিই নিষিদ্ধ। যে ব্যক্তি এরূপ হারাম কাজে যুক্ত
হবে, সে ব্যক্তি তওবা না করলে জাহান্নামের কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হবে (নিসা ১৩-১৪, ত্বালাক ১)।