যেলা সম্মেলন
দেশ ও জাতির উন্নয়নে প্রয়োজন নৈতিক শিক্ষা
-মুহতারাম আমীরে জামা‘আত
গোবিন্দগঞ্জ, গাইবান্ধা-পশ্চিম ২৯শে নভেম্বর মঙ্গলবার : অদ্য বাদ আছর ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ গাইবান্ধা-পশ্চিম সাংগঠনিক যেলার উদ্যোগে গোবিন্দগঞ্জে বি.পি.এড. কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত যেলা সম্মেলনে প্রধান অতিথির ভাষণে মুহতারাম আমীরে জামা‘আত প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব উপরোক্ত কথা বলেন। তিনি বলেন, ইসলাম মানুষকে নৈতিকতা শিক্ষা দেয়। এই শিক্ষার কারণেই জাহেলী যুগের বর্বর, কলহপ্রিয় মানুষগুলি সোনার মানুষে পরিণত হয়েছিল। তিনি বলেন, দেশ পরিচালনার জন্য জ্ঞানী ও সুদক্ষ তাক্বওয়াশীল মানুষ দরকার। আল্লাহভীতি ও পরকালীন জওয়াবদিহিতার অনুভূতি মানুষকে আদর্শ মানুষ হ’তে শেখায় এবং তাদেরকে জনকল্যাণে নিবেদিত করে। অতএব আসুন পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছ ভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করে জাতিকে নৈতিকতার শিক্ষায় উজ্জীবিত করি।
বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা ও ‘আন্দোলন’-এর যেলা প্রধান উপদেষ্টা জনাব নূরুল ইসলাম প্রধানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মাওলানা নূরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক ড. এ এস এম আযীযুল্লাহ, প্রচার ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক এবং মাসিক আত-তাহরীক সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন। সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য পেশ করেন আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী, নওদাপাড়া, রাজশাহীর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুর রায্যাক বিন ইউসুফ, মহিমাগঞ্জ কামিল মাদরাসার মুফাসসির ও ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’-এর সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা আব্দুর রশীদ সালাফী। সম্মেলনে ইসলামী জাগরণী পরিবেশন করেন ‘আলহেরা শিল্পী গোষ্ঠী’র প্রধান মুহাম্মাদ শফীকুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে সঞ্চালক ছিলেন যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি ডা. আওনুল মা‘বূদ।
শঠিবাড়ী, রংপুর ৩০শে নভেম্বর বুধবার : অদ্য বাদ আছর ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ রংপুর সাংগঠনিক যেলার উদ্যোগে শঠিবাড়ী থানাধীন গুর্জিপাড়া হাইস্কুল মাঠে যেলা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি মাষ্টার মুহাম্মাদ খায়রুল আযাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মাওলানা নূরুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ড. এ এস এম আযীযুল্লাহ। সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য পেশ করেন আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফীর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুর রায্যাক বিন ইউসূফ এবং আলহেরা শিল্পী গোষ্ঠীর প্রধান মুহাম্মাদ শফীকুল ইসলাম।
আহলেহাদীছ আন্দোলনকে নস্যাৎ করার জন্য ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল
-মুহতারাম আমীরে জামা‘আত
টাউন হল ময়দান, পাবনা, ৩রা ডিসেম্বর : অদ্য দুপুর ২-টায় ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ পাবনা যেলার উদ্যোগে পাবনা শহরের টাউনহল ময়দানে অনুষ্ঠিত যেলা সম্মেলনে প্রধান অতিথির ভাষণে মুহতারাম আমীরে জামা‘আত প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব উপরোক্ত কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন’ দেশে ইসলামের যে বিশুদ্ধ দাওয়াত দিয়ে যাচ্ছে, তা কারো কারো ব্যক্তি ও দলীয় স্বার্থে আঘাত লাগায় এ আন্দোলনকে নির্মূল করার জন্যই আন্দোলনের আমীর সহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে নোংরা অপবাদ ও মিথ্যা মামলা দিয়ে কারারুদ্ধ করা হয়েছিল। কিন্তু এজন্য আহলেহাদীছ আন্দোলনের কর্মীরা কোন হিংসাত্মক কর্মকান্ডের আশ্রয় নেয়নি; বরং এই যুলুমের বিরুদ্ধে তারা সরকারের নিকটে নিয়মতান্ত্রিকভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছিল এবং মহান আল্লাহর দরবারে অশ্রুসিক্ত নয়নে দো‘আ করেছিল। শান্তিপূর্ণ এ আন্দোলন সর্বদা দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করে থাকে। এ আন্দোলনের আদর্শিক বিরোধীরাই এ আন্দোলনকে স্তব্ধ করে দেওয়ার জন্য চক্রান্ত করেছিল, আজও করে যাচ্ছে। কিন্তু তারা সফল হয়নি, ভবিষ্যতেও হবে না ইনশাআল্লাহ। রাসূল (ছাঃ)-এর ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী এ আন্দোলন ক্বিয়ামত পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ।
যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি মাওলানা বেলালুদ্দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক মাওলানা নূরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক ড. এএসএম আযীযুল্লাহ, প্রচার ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন, ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি মুযাফফর বিন মুহসিন এবং বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা ও ‘আন্দোলন’-এর সাবেক শূরা সদস্য জনাব রবীউল ইসলাম প্রমুখ।
আসুন! সার্বিক জীবনে সুন্নাতের যথাযথ অনুসারী হই!
-মুহতারাম আমীরে জামা‘আত
সিরাজগঞ্জ ২২শে ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার : অদ্য বাদ আছর ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ সিরাজগঞ্জ সাংগঠনিক যেলার উদ্যোগে শহরের উপকণ্ঠে অবস্থিত রহমতগঞ্জ সুতাকল ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত যেলা সম্মেলনে প্রধান অতিথির ভাষণে মুহতারাম আমীরে জামা‘আত প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুলাহ আল-গালিব উপরোক্ত আহবান জানান। তিনি বলেন, যুগে যুগে বিধর্মীদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের অনুকরণে নানাবিধ বিদ‘আত ধর্মের নামে মুসলিম সমাজে চালু হয়েছে। এসব বিদ‘আতের কারণে সমাজ থেকে সুন্নাত বিদায় নিয়েছে। এইসব বিদ‘আতের বিরুদ্ধে হকপন্থী আলেমদের প্রচার ও প্রতিরোধ সর্বদা অব্যাহত ছিল। তাঁরা সুন্নাতকে বাঁচাতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে গেছেন। এ যুগেও ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন’ বিদ‘আতের বিরুদ্ধে আপোষহীন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। আর এজন্যই বিদ‘আতীদের পক্ষ থেকে এ আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের উপরে নির্যাতন নেমে এসেছিল। তিনি বলেন, আমল কবুল হওয়ার জন্য আমাদেরকে রাসূলের সুন্নাতের পূর্ণাঙ্গ অনুসারী হতে হবে। তাহ’লেই পরকালে কাঙ্খিত নাজাত মিলবে, অন্যথায় নয়। অতএব আসুন! আমরা আমাদের সার্বিক জীবন পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের আলোকে গড়ে তুলি।
স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান জনাব আমজাদ হোসেন শেখ-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মাওলানা নূরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক ড. এ এস এম আযীযুলাহ, প্রচার ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন, ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি মুযাফ্ফর বিন মুহসিন। সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য পেশ করেন আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী, নওদাপাড়া, রাজশাহীর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ। অনুষ্ঠানে সঞ্চালক ছিলেন যেলা ‘যুবসংঘ’-এর সাবেক সভাপতি মুহাম্মাদ আব্দুল মতীন।
উপযেলা সম্মেলন
আসুন! ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে হাবলুল্লাহর ছায়াতলে ঐক্যবদ্ধ হই
-মুহতারাম আমীরে জামা‘আত
কলারোয়া, সাতক্ষীরা ১৯শে ডিসেম্বর সোমবার : অদ্য বাদ আছর ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ সাতক্ষীরা সাংগঠনিক যেলার অন্তর্গত কলারোয়া উপযেলার উদ্যোগে কলারোয়া জি কে এম কে পাইলট হাইস্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত উপযেলা সম্মেলনে প্রধান অতিথির ভাষণে মুহতারাম আমীরে জামা‘আত প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব উপরোক্ত আহবান জানান। তিনি আরো বলেন, আল্লাহ প্রেরিত হাবলুল্লাহ বা কুরআন ও সুন্নাহ সকল মানুষের কল্যাণের জন্য প্রেরিত। যা মানুষকে প্রকৃত মানুষ রূপে গড়ে তোলে। তিনি বলেন, নানা ধর্মে-বর্ণে ও মতবাদে বিভক্ত মানবজাতির ঐক্যের একটাই মাত্র আশ্রয়স্থল হ’ল হাবলুল্লাহ। আসুন! তার ছায়াতলে আশ্রয় নিয়ে ঐক্যবদ্ধভঅবে আমরা দেশ ও জাতির কল্যাণে অবদান রাখি।
‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর কেন্দ্রীয় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মাদ নযরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ড. এ এস এম আযীযুল্লাহ, কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন, ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি মুযাফ্ফর বিন মুহসিন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী, নওদাপাড়া, রাজশাহীর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ, সাতক্ষীরা যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি মাওলানা আব্দুল মান্নান, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আলতাফ হোসাইন প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সঞ্চালক ছিলেন যেলা ‘যুবসংঘ’-এর সহ-সভাপতি হাফেয মুহাম্মাদ মুহসিন।
এলাকা সম্মেলন
আহলেহাদীছ আন্দোলন শিরক-বিদ‘আতের বিরুদ্ধে আপোষহীন সংগ্রামের নাম
-মুহতারাম আমীরে জামা‘আত
দারুসা, পবা, রাজশাহী ১০ই ডিসেম্বর শনিবার : অদ্য বাদ আছর ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ রাজশাহী সাংগঠনিক যেলার দারুসা এলাকার উদ্যোগে দারুসা হাইস্কুল মাঠে দারুসা এলাকা সম্মেলনে প্রধান অতিথির ভাষণে মুহতারাম আমীরে জামা‘আত প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুলাহ আল-গালিব উপরোক্ত কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন’ ছাহাবায়ে কেরামের যুগ হ’তে চলে আসা নির্ভেজাল ইসলামী আন্দোলনের নাম। এ আন্দোলন বাতিলের সাথে কোন আপোষ করে না। পৃথিবীতে নির্ভেজাল ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্যই আহলেহাদীছ আন্দোলন এসেছে। ক্বিয়ামত পর্যন্ত এ আন্দোলনের দাওয়াতী তৎপরতা অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ। যত বাধা আসুক এ আন্দোলনের কর্মীদের সে বাধাকে উপেক্ষা করে মাঠে-ময়দানে কাজ করে যেতে হবে।
তিনি মরা পদ্মার শুকনো বালুচরে ‘রিভার সিটি’ গড়ার সাম্প্রতিক ঘোষণার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে একে ‘নির্মম রসিকতা’ হিসাবে মন্তব্য করেন এবং অবিলম্বে ভারতের পানি আগ্রাসন ও বাংলাদেশকে মরুভূমি বানানোর চক্রান্তের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা দায়েরের জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান।
স্থানীয় আলেম মাওলানা আব্দুল্লাহ সালাফী-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর কেন্দ্রীয় দফতর ও যুববিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক মুহাম্মাদ আমীনুল ইসলাম, প্রচার ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন, কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম, ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি মুযাফ্ফর বিন মুহসিন প্রমুখ। সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য পেশ করেন রাজশাহী যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি ডা. ইদ্রীস আলী, ‘আন্দোলন’-এর বাগধানী এলাকা সভাপতি মাওলানা শামসুল হুদা (মোহনপুর) ও কেন্দ্রীয় মুবাল্লিগ মুহাম্মাদ শরীফুল ইসলাম প্রমুখ।
সুধী সমাবেশ
জলঢাকা, নীলফামারী ৩০শে নভেম্বর বুধবার : অদ্য বেলা ৩-টায় ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ নীলফামারী সাংগঠনিক যেলার উদ্যোগে ডাকালীগঞ্জ বাজার সংলগ্ন আহলেহাদীছ জামে মসজিদে এক সুধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি জনাব ওছমান গণী মাস্টারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মাওলানা নূরুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ড. এ এস এম আযীযুল্লাহ ও আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী, নওদাপাড়া, রাজশাহীর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুর রায্যাক বিন ইউসুফ।
জেদ্দা, সঊদী আরব ২১শে অক্টোবর শুক্রবার : অদ্য বাদ মাগরিব ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ জেদ্দা শাখার উদ্যোগে জেদ্দা দা‘ওয়াহ সেন্টারে এক সুধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সেন্টারের বাংলা বিভাগের দাঈ হাফেয অলিউল বাসেত-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মাওলানা নূরুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক ও মাসিক আত-তাহরীক সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন, কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য ও খুলনা যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি মাওলানা জাহাঙ্গীর আলম, সাতক্ষীরা যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি মাওলানা আব্দুল মান্নান প্রমুখ। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জয়পুরহাট যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি মাহফূযুর রহমান, আহলেহাদীছ ব্যবসায়ী সমিতি মেহেরপুর যেলার আহবায়ক আব্দুল আলীম, সঊদী প্রবাসী মাওলানা মুহাম্মাদ মুহসিন (রাজশাহী) প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন, ‘আন্দোলন’-এর জেদ্দা শাখার অর্থ সম্পাদক জনাব নিযামুদ্দীন (ফেনী), দফতর সম্পাদক আল-আমীন (বি-বাড়িয়া), মেহেদী হাসান (নোয়াখালী), মফীযুর রহমান (কুমিল্লা), মীযানুর রহমান (লক্ষ্মীপুর) ও মুহাম্মাদ সেলিম (ফেনী) প্রমুখ। উল্লেখ্য যে, ‘আন্দোলন’-এর উপরোক্ত দায়িত্বশীলগণ ঐসময় হজ্জ-এর সফরে সঊদী আরবে অবস্থান করছিলেন।
কর্মী প্রশিক্ষণ
‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর উদ্যোগে গত ১৫-১৬, ২২-২৩ ও ২৯-৩০ ডিসেম্বর দেশের চারটি স্থানে আঞ্চলিক কর্মী প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়। ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় পরিষদ সদস্য, সাধারণ পরিষদ সদস্য ও যেলা কর্মপরিষদ সদস্যদের সমন্বয়ে উক্ত প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়। বিস্তারিত রিপোর্ট নিম্নরূপ :
রাজশাহী ১৫-১৬ বৃহস্পতি ও শুক্রবার : গত ১৫-১৬ ডিসেম্বর দারুল ইমারত আহলেহাদীছ, নওদাপাড়া, রাজশাহীতে দু’দিনব্যাপী কর্মী প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়। এতে রাজশাহী যেলা ও মহানগরের দায়িত্বশীল ও কর্মীবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন। বিপুল সংখ্যক কর্মীদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত প্রাণবন্ত এ প্রশিক্ষণে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মুহতারাম আমীরে জামা‘আত প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব। অন্যান্যের মধ্যে প্রশিক্ষণ প্রদান করেন, ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ড. এএসএম আযীযুল্লাহ, গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক অধ্যাপক মুহাম্মাদ আব্দুল লতীফ, দফতর ও যুববিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক আমীনুল ইসলাম, শূরা সদস্য ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম, আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী, নওদাপাড়া, রাজশাহীর মুহাদ্দিছ মাওলানা আব্দুল খালেক সালাফী ও ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় মুবাল্লিগ মুহাম্মাদ শরীফুল ইসলাম প্রমুখ।
ঢাকা ১৫ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার : অদ্য সকাল ১০-টায় বংশালস্থ ঢাকা যেলা কার্যালয়ে ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর কেন্দ্রীয় উদ্যোগে আঞ্চলিক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত প্রশিক্ষণে কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন এবং ঢাকা বিভাগীয় সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য অধ্যাপক মুহাম্মাদ জালালুদ্দীন। প্রশিক্ষণে ঢাকা, কুমিল্লা, নরসিংদী, গাযীপুর ও জামালপুর যেলার দায়িত্বশীলগণ যোগদান করেন।
সাতক্ষীরা ২২-২৩ ডিসেম্বর বৃহস্পতি ও শুক্রবার : গত ২২-২৩ ডিসেম্বর সাতক্ষীরার বাঁকালস্থ দারুল হাদীছ আহমাদিয়া সালাফিইয়াহ মিলনায়তনে ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর উদ্যোগে আঞ্চলিক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়। যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি মাওলানা আব্দুল মান্নানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত প্রশিক্ষণে প্রধান প্রশিক্ষক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর নযরুল ইসলাম। কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় সাহিত্য ও পাঠাগার সম্পাদক অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম। অন্যান্যের মধ্যে প্রশিক্ষণ প্রদান করেন কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য অধ্যাপক শেখ রফীকুল ইসলাম, পিরোজপুর যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি ও কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য অধ্যাপক আব্দুল হামীদ বিন শামসুদ্দীন প্রমুখ। প্রশিক্ষণে সাতক্ষীরা, যশোর, খুলনা, বাগেরহাট ও পিরোজপুর যেলার কর্মী ও দায়িত্বশীলবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
মেহেরপুর ২৯-৩০ ডিসেম্বর বৃহস্পতি ও শুক্রবার : গত ২৯-৩০ ডিসেম্বর মেহেরপুর যেলার গাংনী থানাধীন বামুন্দী আহলেহাদীছ জামে মসজিদে ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর উদ্যোগে আঞ্চলিক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়। মেহেরপুর যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি ও ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক মাওলানা নূরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত প্রশিক্ষণে কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষক ছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক বাহারুল ইসলাম। প্রশিক্ষণে মেহেরপুর, কুষ্টিয়া পূর্ব, পশ্চিম, রাজবাড়ী ও ঝিনাইদহ যেলার কর্মী ও দায়িত্বশীলবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
রাজশাহী ২৯-৩০ ডিসেম্বর বৃহস্পতি ও শুক্রবার : গত ২৯-৩০ ডিসেম্বর রোজ বৃহস্পতি ও শুক্রবার দারুল ইমারত আহলেহাদীছ নওদাপাড়ায় রাজশাহী বিভাগের ১৬টি যেলার সমন্বয়ে আঞ্চলিক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়। ১ম দিন সকাল ৭-টায় প্রশিক্ষণ শুরু হয়ে পরদিন জুম‘আ পর্যন্ত চলে। ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত উক্ত প্রশিক্ষণে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মুহতারাম আমীরে জামা‘আত প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব। অন্যান্যের মধ্যে প্রশিক্ষক ছিলেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ড. এএসএম. আযীযুল্লাহ, যুববিষয়ক ও দফতর সম্পাদক অধ্যাপক আমীনুল ইসলাম, শূরা সদস্য ও মাসিক আত-তাহরীক-এর সহকারী সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম, শূরা সদস্য অধ্যাপক ফারূক আহমাদ ও আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী নওদাপাড়ার মুহাদ্দিছ মাওলানা আব্দুল খালেক সালাফী প্রমুখ।
১২ তাকবীরে ঈদের জামা‘আত
(১) সাতকানিয়া, চট্টগ্রাম : গত ৭ নভেম্বর সোমবার সকাল ৭-টায় প্রথম বারের মত ছহীহ হাদীছ ভিত্তিক ১২ তাকবীরে ঈদের ছালাত অনুষ্ঠিত হয় যেলার সাতকানিয়া থানাধীন পশ্চিম ঘাটিয়াডাঙ্গা হাইস্কুল মাঠে। চট্টগ্রাম দারুল মা‘আরেফের কামেল শ্রেণীর ছাত্র হাফেয রকীবুদ্দীনের ইমামতিতে ৩০ জন মুছল্লী প্রথম বারের মত বারো তাকবীরের এই জামা‘আতে যোগদান করেন।
উল্লেখ্য যে, ১২ তাকবীরে ঈদের ছালাতের ঘোষণা পূর্বেই পোষ্টারিং ও মসজিদে চিঠির মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এতে বিদ‘আতীরা চরমভাবে ক্ষেপে যায় ও তা প্রতিহত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নতুন আহলেহাদীছ ভাইদের এবারের মত মসজিদে ছালাত আদায়ের অনুমতি দিলে এরা ঈদের দিন সকালে মসজিদ তালাবদ্ধ করে রাখে। অবশেষে সকল বাধা ডিঙ্গিয়ে উক্ত ময়দানে ঈদের ছালাত অনুষ্ঠিত হয়। ফালিল্লাহিল হাম্দ।
(২) কুষ্টিয়া শহর : গত ৭ই নভেম্বর কুষ্টিয়া শহরস্থ ‘গড়াই মহিলা কলেজ ময়দানে’ সকাল ৭-টায় দ্বিতীয় বারের মত ছহীহ হাদীছ ভিত্তিক ১২ তাকবীরে ঈদের জামা‘আত অনুষ্ঠিত হয়। কলেজ অধ্যক্ষের নিকট থেকে অনুমতি নিয়ে কুষ্টিয়া শহরের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা আহলেহাদীছগণ স্বতন্ত্রভাবে ঈদের জামা‘আত কায়েম করেন। ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ কুষ্টিয়া-পূর্ব সাংগঠনিক যেলার সভাপতি মাওলানা আব্দুল ওয়াহ্হাব-এর ইমামতিতে উক্ত ঈদের জামা‘আতে উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-কুরআন এ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ লোকমান হোসাইন, আল-হাদীছ এ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ মুযযাম্মিল আলীসহ অনেক আহলেহাদীছ মুছল্লী। উল্লেখ্য যে, গত ঈদুল ফিতরে কুষ্টিয়া শহরে কুষ্টিয়া হাউজিং এস্টেটের বি-ব্লকে সর্বপ্রথম ঈদের জামা‘আত অনুষ্ঠিত হয়। যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি মাওলানা আব্দুল ওয়াহ্হাব সেই জামা‘আতে ইমামতি করেন। ইমাম সহ মুছল্লীদের অধিকাংশ ছিলেন নূতন আহলেহাদীছ। আলহামদুলিল্লাহ।
ঈদগাহের রাস্তা উদ্বোধন করলেন মুহতারাম আমীরে জামা‘আত
গত ৯ই নভেম্বর’১১ বুধবার সকালে মুহতারাম আমীরে জামা‘আত প্রায় অর্ধ কিলোমিটার ব্যাপী যে রাস্তার ভিত দিয়ে এসেছিলেন, গত ২৮শে ডিসেম্বর ৪৯ দিনের মাথায় তা শেষ হয়। অতঃপর গত ৩০শে ডিসেম্বর শুক্রবার বাদ জুম‘আ টেলি কনফারেন্সের মাধ্যমে তিনি আল্লাহর নামে তার উদ্বোধন করেন। জুম‘আর দিন সকালে তিনি মোবাইল ফোনে মুরববীদের বলে দেন যেন বুলারাটি, মাহমূদপুর ও তালবেড়ে তিন গ্রামের মুছল্লীগণ জুম‘আর পরপরই নতুন রাস্তা দিয়ে সোজা ঈদগাহে চলে যান এবং সেখানে গিয়ে সকলে সিজদায়ে শুক্র আদায় করেন। অতঃপর সেখানে সমবেত মুছল্লীদের উদ্দেশ্যে ভাষণ ও আল্লাহর নিকটে প্রার্থনার মাধ্যমে তিনি রাস্তা উদ্বোধন করবেন।
তাঁর নির্দেশনা পেয়ে কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য অধ্যাপক শেখ রফীকুল ইসলামের তদারকিতে ‘আন্দোলন’ ও ‘যুবসংঘে’র দায়িত্বশীল ও অন্যান্য মুরববীগণ দ্রুত ব্যবস্থাপনা সম্পন্ন করেন এবং জুম‘আর ছালাতের পর বেলা ১-৫৫ মিনিটে মোবাইল ফোনে মাত্র সাত মিনিটের ভাষণে তিনি সূরা নাহলের ৯৭ আয়াত এবং ছহীহ বুখারী ও মুসলিম থেকে পরপর তিনটি হাদীছ পেশ করে বলেন, আজকে আমাদের ভাইয়েরা যে উত্তম আমল করলেন, সেটি তাদের জন্য ছাদাক্বায়ে জারিয়াহ হ’ল। আমরা দুনিয়া থেকে বিদায় হয়ে যাব, কিন্তু এ রাস্তা যতদিন টিকে থাকবে, যতদিন এ রাস্তা দিয়ে মানুষ ঈদগাহে আসবে, ততদিন এর নেকী আমরা কবরে গিয়েও পাব। আমাদের বাপ-দাদারা যারা এটা করতে পারেননি, কিন্তু আকাংখা করেছিলেন, তারাও তাদের সন্তানদের এ নেক আমলের ছওয়াবের অংশীদার হবেন।
ভাষণের শেষদিকে তিনি এলাকাবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, প্রচলিত দল ও প্রার্থীভিত্তিক ইলেকশন ব্যবস্থা আমাদের সামাজিক ঐক্য বিনষ্ট করেছে। পরষ্পরে হিংসা-হানাহানি সৃষ্টি করেছে। আপনারা এইসব দলীয় কোন্দলে জড়াবেন না। ভাই-ভাইয়ে মহববত ও ভালোবাসা বজায় রাখুন। এ ধরনের সামাজিক কাজে সকলে উৎসাহের সাথে এগিয়ে আসুন। পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছ অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করুন। এলাকার উপরে আল্লাহর রহমত নেমে আসবে ইনশাআল্লাহ। অতঃপর তিনি সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে আল্লাহর নামে রাস্তার শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন। এভাবে এলাকাবাসীর শতবর্ষ লালিত একটি সুন্দর স্বপ্ন পূরণ হ’ল। ভাষণ শেষ হবার সাথে সাথে উপস্থিত এলাকাবাসী আমীরে জামা‘আতের হায়াতে ত্বাইয়েবাহ কামনা করে দো‘আ করেন। ফালিল্লাহিল হাম্দ।
ভারতীয় পানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে অভিযোগ দায়ের করুন
-সরকারের প্রতি ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন’
‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক নূরুল ইসলাম এক বিবৃতিতে ভারতের পানি আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, প্রতিবেশী দেশ ভারত একের পর এক নদীর উজানে বাঁধ দিয়ে বাংলাদেশকে মরুভূমি বানানোর অপপ্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। ইতিপূর্বে ফারাক্কায় ও গজলডোবায় বাঁধ দিয়ে পদ্মা ও তিস্তাকে তারা হত্যা করেছে। এরপর সংযোগ খাল কেটে পানি টেনে নিয়ে ব্রক্ষ্মপুত্র নদীকে শুকিয়ে দিয়েছে। এবারে টিপাইমুখে বাঁধ দিয়ে মেঘনাকে ধ্বংস করার পায়তারা করছে। এভাবে পুরো বাংলাদেশ মরুভূমি হওয়ার উপক্রম হয়েছে। অন্যদিকে পরীক্ষামূলক ট্রানজিটের নামে বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে করিডোর প্রতিষ্ঠা করেছে। সেই সাথে কুমিল্লার তিতাস নদীতে মাটি ভরাট করে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করেছে। এভাবে একের পর এক বাংলাদেশের স্বার্থকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে ভারত যে একচেটিয়া নীতি অবলম্বন করে চলেছে, তার প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি আন্তর্জাতিক আদালতে অভিযোগ দায়েরের জন্য বাংলাদেশ সরকারের কাছে জোর দাবী জানান। সাথে সাথে এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য দলমত নির্বিশেষে সকলের প্রতি আহবান জানান।
যুবসংঘ
কেন্দ্রীয় কাউন্সিল সদস্য সম্মেলন ২০১১
রাজশাহী ৮ ও ৯ ডিসেম্বর বৃহস্পতি ও শুক্রবার : গত ৮ ও ৯ ডিসেম্বর আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফীর পূর্ব পার্শ্বস্থ ময়দানে ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’-এর উদ্যোগে দু’দিন ব্যাপী ‘কেন্দ্রীয় কাউন্সিল সদস্য সম্মেলন ২০১১’ অনুষ্ঠিত হয়। ‘যুবসংঘ’-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি মুযাফ্ফর বিন মুহসিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ-এর মুহতারাম আমীরে জামা‘আত প্রফেসর ডঃ মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ‘আন্দোলন’-এর প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মাদ নযরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মাওলানা নূরুল ইসলাম, গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক অধ্যাপক আব্দুল লতীফ এবং সাবেক কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য ও পাবনার বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা জনাব রবীঊল ইসলাম। ২ দিন ব্যাপী এই ঐতিহাসিক সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয় ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’ প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত প্রাক্তন ও বর্তমান সকল কেন্দ্রীয় কাউন্সিল সদস্যকে। এছাড়াও কেন্দ্রীয় সংগঠনের আমন্ত্রণে সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন যেলা ‘আন্দোলন’ ও ‘যুবসংঘ’-এর সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ।
১ম দিন বাদ আছর ‘যুবসংঘ’-এর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এবং সম্মেলন ব্যবস্থাপনা কমিটির আহবায়ক আহমাদ আব্দুল্লাহ ছাকিবের স্বাগত ভাষণের মাধ্যমে সম্মেলনের কার্যক্রম শুরু হয়। উদ্বোধনী ভাষণ প্রদান করেন কেন্দ্রীয় সভাপতি মুযাফ্ফর বিন মুহসিন। নাতিদীর্ঘ ভাষণে তিনি সংগঠনের বিগত দিনের ইতিহাস স্মরণ করে বলেন, সাবেক কেন্দ্রীয় কাউন্সিল সদস্যগণের অকৃত্রিম প্রচেষ্টার ফসল হিসাবে ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’ আজকের এই দৃঢ় অবস্থানে এসে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছে। তিনি বলেন, যুগে যুগে আহলেহাদীছরাই মুসলিম সমাজকে সঠিক পথে পরিচালনায় নেতৃত্ব দিয়েছে। এদেশের বুকে ‘যুবসংঘ’ তার কর্মতৎপরতার মাধ্যমে সেটাই প্রমাণ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, এদেশে ‘যুবসংঘ’-এর জন্ম এমন এক সময়ে হয়েছিল, যখন স্বয়ং আহলেহাদীছরা রাফঊল ইয়াদায়েন করা ও আমীন বলাকেই আহলেহাদীছ হওয়ার জন্য যথেষ্ট মনে করত। অন্যদিকে নামধারী ইসলামী দলগুলো কেউ ফযীলত নিয়ে, কেউ পীর ও মাযারপূজা নিয়ে, আর কেউবা পশ্চিমা গণতন্ত্রের লেজুড়বৃত্তি করে ইসলামের সঠিক রাস্তা থেকে বহু দূরে ছিটকে পড়েছিল। এমনই ধর্মীয় ও রাজনৈতিক দুর্যোগক্ষণে ‘যুবসংঘ’ প্রতিষ্ঠা লাভ করে। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ‘যুবসংঘ’ ইসলামের নামে প্রচলিত সকল বিদ‘আতী আক্বীদা ও আমলের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলে এবং ইসলামের বিশুদ্ধ রূপ সমাজে প্রতিষ্ঠার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালাতে থাকে। ফলে সূচনাকাল থেকেই ঘরে-বাইরে সর্বত্র ‘যুবসংঘ’ চরম বাধার সম্মুখীন হয়। নানাভাবে চক্রান্তকারীরা দুনিয়ার বুক থেকে এ সংগঠনকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য ষড়যন্ত্র চালিয়ে গেছে এবং এখনো যাচ্ছে। তদুপরি আল্লাহর অশেষ রহমতে বাতিলের হাযারো চক্রান্তের জাল ছিন্ন করে ‘যুবসংঘ’ বাংলার বুকে সগৌরবে দন্ডায়মান। শুধু তাই নয় বরং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে শনৈঃ শনৈঃ অগ্রগতির মাধ্যমে তার তৎপরতা বিস্তার লাভ করে চলেছে। ফালিল্লাহিল হামদ। অতএব এ সংগঠনের সর্বোচ্চ কান্ডারী হিসাবে কেন্দ্রীয় কাউন্সিল সদস্যগণকে ‘আহলেহাদীছ আন্দোলনে’র জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে হবে এবং সমাজের বুক থেকে জাহেলী রসম-রেওয়াজকে উচ্ছেদের জন্য অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। তবেই বাতিলকে উৎখাত করে ন্যায়ের প্রতিষ্ঠাদান সম্ভব হবে। তিনি নতুন-পুরাতন সকল কেন্দ্রীয় কাউন্সিল সদস্যকে এই প্রতিজ্ঞায় কায়েম ও দায়েম থাকার জন্য আহবান জানান।
২য় অধিবেশনে শুরু হয় স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্যের পালা। বর্তমান কেন্দ্রীয় কাউন্সিল সদস্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মুযাফ্ফর রহমান (সাতক্ষীরা), অধ্যাপক শহীদুযযামান ফারূক (সাতক্ষীরা) ও ইমামুদ্দীন (চাঁপাইনবাবগঞ্জ)। সাবেক কেন্দ্রীয় কাউন্সিল সদস্যদের মধ্যে পর্যায়ক্রমে বক্তব্য রাখেন আব্দুল খালেক মাষ্টার (রাজশাহী), গোলাম মুক্তাদির (খুলনা), অধ্যাপক শেখ রফীকুল ইসলাম (সাতক্ষীরা), গোলাম যিল-কিবরিয়া (কুষ্টিয়া-পশ্চিম), মাসঊদ বিন ইসহাক (খুলনা), মাওলানা ফযলুর রহমান (গাইবান্ধা), মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম (বগুড়া), মাওলানা ছফিউল্লাহ (কুমিল্লা), আওনুল মা‘বূদ (গাইবান্ধা), অধ্যাপক ফারূক আহমাদ (রাজশাহী), মোরশেদ আলম (যশোর), মাওলানা আব্দুল মান্নান (সাতক্ষীরা), মাওলানা জাহাঙ্গীর আলম (খুলনা), মাওলানা আলতাফ হোসাইন (সাতক্ষীরা), ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন (কুমিল্লা), তাসলীম সরকার (ঢাকা), অধ্যাপক জালালুদ্দীন (নরসিংদী), আবু তাহের (গাইবান্ধা) এবং অধ্যাপক আকবর হোসাইন (যশোর)। সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতিদের মধ্য থেকে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক আমীনুল ইসলাম, ড. এ এস এম আযীযুল্লাহ এবং ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ‘আন্দোলন’-এর সাবেক কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য পাবনার বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা জনাব রবীঊল ইসলাম বলেন, এমন একটা সময় ছিল যখন আমি নিজে আহলেহাদীছের সন্তান হওয়া সত্ত্বেও ড্রামা করে বেড়াতাম, আমি দ্বীনকে চিনতাম না। কিন্তু আল্লাহর অশেষ রহমতে ‘যুবসংঘ’-এর দাওয়াত পেয়ে আমি নিজেকে ফিরে পেয়েছি। আমি দ্বীনকে চিনতে শিখেছি। আমার সন্তান, আমার পরিবারও দ্বীনকে চিনেছে। ‘যুবসংঘ’ যদি না থাকত তাহ’লে আমি এ পথে আসতে পারতাম না। তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে এ কথাই বলতে পারি যে, বাধা আসবে, বাধা থাকবে, আবার চলে যাবে। তাই বলে বাধার কাছে হার মানা যাবে না। বাধার মাধ্যমেই বরং সংগঠনের অগ্রগতি, মযবুতি আরো বৃদ্ধি পাবে। বাধা বাধা হয়ে পড়ে থাকবে, হক এগুতেই থাকবে, বাতিল হকের বিরুদ্ধে কখনোই সফল হবে না ইনশাআল্লাহ।
‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর নযরুল ইসলাম বলেন, দুঃখ হয় যখন দেখি শ্রদ্ধা করার মত মানুষগুলো হঠাৎই চেহারা বদলে ফেলেন। তখন আমার কেবলই স্মরণ হয় বৃটিশবিরোধী যুদ্ধের দুঃসাহসী কমান্ডার ইয়াহইয়া খানের কথা (পরবর্তীতে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট)। যার গর্বোদ্ধত চেহারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার সময় আমাদের দেশের এক শিল্পীর চিত্রকর্মে হায়েনার রূপে দেখা দিয়েছিল। মানুষের চেহারা থেকে হায়েনার মূর্তি বেরিয়ে আসার অনেক অভিজ্ঞতা আমার হয়েছে ‘আন্দোলন’-য়ে আসার পর। তদুপরি আমরা হতাশ নই। কোন আন্দোলন যদি তার সংগ্রামকে অগ্রসর করতে চায়, তবে ৩টি জিনিস প্রয়োজন- বই, বই এবং বই। রাসূল (ছাঃ) আল্লাহর পক্ষ থেকে যে গ্রন্থটি প্রাপ্ত হয়েছিলেন, সেই মহাগ্রন্থ আল-কুরআনই পৃথিবীর ইতিহাসকে পাল্টে দিয়েছিল। ‘যুবসংঘ’ তার সংগ্রামকে সফল করার জন্য প্রয়োজনীয় সে সাহিত্য আজ পেয়ে গেছে। এখন ‘যুবসংঘ’-এর কর্মীদের মনে রাখতে হবে যে, দুনিয়া পরিবর্তন হচ্ছে। বিশেষ করে মুসলিম অধ্যুষিত দেশগুলোতে। যার নেতৃত্বে আসছে ইসলামপন্থী দলগুলি। কিন্তু তারা সঠিক ইসলামপন্থী কি-না তা নিয়ে রয়েছে বিস্তর সন্দেহ। তাই দুনিয়াকে যদি সঠিকভাবে নেতৃত্ব দিতে হয়, তবে আপনাদেরকেই সামনে এগিয়ে আসতে হবে। সংকীর্ণ দেশীয় গন্ডিতে আটকে থাকার সুযোগ নেই আপনাদের। এই ‘যুবসংঘ’কে আমি দুনিয়ার বুকে একমাত্র দল হিসাবে দেখি, যারা নেতৃত্ব দিলে দুনিয়া সঠিক নেতৃত্ব পাবে। সেই ছবি দেখতে পাই আমি আপনাদের মাঝে। এ দলকে ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ নয়, বরং আমি দেখতে চাই আহলেহাদীছ আন্দোলনের আন্তর্জাতিক দল হিসাবে।
‘যুবসংঘ’-এর প্রতিষ্ঠাতা ও ‘আন্দোলন’-এর মুহতারাম আমীরে জামা‘আত প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব বলেন, আজকের এই আনন্দঘন মিলনমেলা আমার কাছে যেন বিদায়ের ঘন্টাধ্বনি মনে হচ্ছে। ‘আন্দোলন’ যখন পূর্ণতা লাভ করে তখন আর প্রতিষ্ঠাতার প্রয়োজন হয় না। এখন প্রতিষ্ঠা আপনারাই দিবেন। বিদায় হজ্জের ভাষণে রাসূল (ছাঃ) বলেছিলেন, আমি তোমাদের মাঝে দু’টি জিনিস রেখে যাচ্ছি- আল্লাহর কিতাব ও তাঁর নবীর সুন্নাত। আমিও আজ আপনাদেরকে বলব, আমি আপনাদের কাছে রেখে যাচ্ছি এ আন্দোলনকে। এই আমানতের হক আদায়ের জন্য আপনারা কি রাযী আছেন? এসময় সকলে সমস্বরে ওয়াদা করেন। তিনি বলেন, মুরুববীরা দো‘আ করবেন এবং ছেলেরা কাজ করবে। ইবরাহীমের মত পিতা এবং ইসমাঈলের মত সন্তান না থাকলে কখনও কুরবানী ও আত্মত্যাগের ইতিহাস রচিত হ’ত না। যখনই জাতির সামনে ইবরাহীমের মত নেতৃত্ব থাকবে এবং ইসমাঈলের মত উৎসর্গীত প্রাণ যুবশক্তি থাকবে, তখনই একটি আদর্শ প্রতিষ্ঠা লাভ করতে পারে। আজকের এই কাউন্সিল সম্মেলন আমাকে বিদায়ের কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। আমি অনুভব করছি এ আন্দোলনের হাল ধরার মত যোগ্য নেতৃত্ব তৈরী হয়ে গেছে। আলহামদুলিল্লাহ। ‘যুবসংঘ’-এর যে সকল সাবেক সভাপতি এখানে ‘সম্মাননা স্মারক’ নিলেন তাদের প্রত্যেকেই সাংগঠনিক মেধা ও প্রজ্ঞাসম্পন্ন। আমি তাদের সকলের জন্য দো‘আ করছি, আল্লাহ যেন তাদেরকে এ আন্দোলনের হাল ধরার যোগ্যতা দান করেন। এজন্য যে আদর্শিক দৃঢ়তা, লক্ষ্যের অবিচলতা, জ্ঞানের গভীরতা ও দূরদর্শিতার প্রয়োজন, তার প্রতিফলন অনেকের মাঝেই দেখতে পাচ্ছি। তোমাদের প্রতি অনুরোধ, যে ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ উত্তাল স্রোতে এ তরীকে আমরা রেখে যাচ্ছি তোমরা একে যথাস্থানে পৌঁছনোর চেষ্টা করো। আমাদের হৃদয়ের গভীরতম প্রদেশে আন্দোলনের যে বীজ উপ্ত হয়েছে সে বীজ মহীরূহ আকারে আমাদের আন্দোলনে, আমাদের কর্মে, আমাদের বৈষয়িক জীবনে যেন প্রতিফলিত হয় সেই প্রার্থনা করছি। কেবল ছালাতের ক্ষেত্রে আহলেহাদীছ নয়, বরং আহলেহাদীছ হ’তে হবে ধর্মীয় জীবনে, বৈষয়িক জীবনে তথা জীবনের সর্বক্ষেত্রে। আল্লাহ আমাদেরকে সে তাওফীক দান করুন- আমীন!
‘যুবসংঘ’-এর ৩৩ বছরের ইতিহাসে ‘কেন্দ্রীয় কাউন্সিল সদস্য’ মানে উন্নীত হওয়া সকল কর্মীদের এই মিলনমেলা এক অভূতপূর্ব দৃশ্যের অবতারণা করে। দীর্ঘদিনের পুরনো সাথীদের একত্রে পেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন অনেকে। আলোচনার মঞ্চে উঠে অতীতকে স্মরণ করতে গিয়ে বার বার স্মৃতিকাতর হয়ে পড়ছিলেন বক্তারা। জীবন বাজি রেখে সারাদেশ জুড়ে এতদিন যারা সংগঠনের দাওয়াত দিয়ে এসেছেন, দীর্ঘদিন বাদে তারা নিজেদেরকে শ্রোতাদের আসনে আবিষ্কার করে ক্ষণিকের জন্য হ’লেও ফেলে আসা দিনগুলিতে হারিয়ে গিয়েছিলেন।
এই ঐতিহাসিক সম্মেলনকে স্মৃতিময় করে রাখা এবং আন্দোলনের পূর্বসূরীদের অবিচল সংগ্রামের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য বিশেষভাবে মনোনীত পাঁচজন সাবেক কেন্দ্রীয় কাউন্সিল সদস্যকে ‘সম্মাননা স্মারক’ ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। তাঁরা হ’লেন মাষ্টার আব্দুল খালেক (রাজশাহী), মাওলানা ছফিউল্লাহ (কুমিল্লা), জনাব গোলাম মুক্তাদির (খুলনা), জনাব আব্দুর রহীম (বগুড়া) এবং অধ্যাপক শেখ রফীকুল ইসলাম (সাতক্ষীরা)। এছাড়া ‘যুবসংঘ’-এর সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতিবৃন্দ এবং বিশেষ অতিথিবৃন্দকে বিশেষ সম্মাননায় ভূষিত করা হয়। ‘যুবসংঘ’-এর প্রতিষ্ঠাতা প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিবের হাতে সংগঠনের পক্ষ থেকে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন কেন্দ্রীয় সভাপতি মুযাফ্ফর বিন মুহসিন। এছাড়া সাবেক ও বর্তমান সকল কাউন্সিল সদস্যকে ‘সম্মেলন স্মারক’ ও ‘ডায়েরী’ উপহার দেয়া হয়।
ছালাতুর রাসূল (ছাঃ) ইংরেজী ভার্সন-এর উদ্বোধন :
সম্মেলনের ২য় দিন প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব প্রণীত দেশে-বিদেশে বহুল প্রচারিত ও সর্বমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত ‘ছালাতুর রাসূল (ছাঃ)’-এর ইংরেজী সংস্করণের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর কেন্দ্রীয় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মাদ নযরুল ইসলাম। উপস্থিত সুধী মন্ডলী গ্রন্থটির বহুল প্রচার কামনা করেন। উল্লেখ্য যে, এটিই ‘হাদীছ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’ প্রকাশিত প্রথম ইংরেজী গ্রন্থ। ফালিল্লাহিল হাম্দ।
প্রদর্শনী ও আর্ট :
সম্মেলনের বিশেষ আয়োজন ছিল ‘যুবসংঘ’-এর ফেলে আসা ৩৩ বছরের কর্মকান্ডের উপর একটি বিশেষ প্রদর্শনী। যেখানে স্থান পায় ‘যুবসংঘ’ আয়োজিত তাবলীগী ইজতেমা, বিভিন্ন সভা-সমাবেশ, মিছিল-মিটিং-এর পোষ্টার, লিফলেট, আলোকচিত্র, পত্রিকার কাটিং ইত্যাদির অনেক দুর্লভ ডকুমেন্ট। এছাড়া আরো স্থান পায় ১৯৭৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রকাশিত বার্ষিক ক্যালেন্ডার, হ্যান্ডবিল, পত্রিকা, সাময়িকী ইত্যাদি, যা উপস্থিত দর্শকদের অভিভূত করে। এছাড়া অংশগ্রহণকারীদের স্বাগত জানানোর জন্য ‘যুবসংঘ’ ও ‘সোনামণি’-এর কর্মীরা অনুষ্ঠানের প্রবেশপথে বালির উপর ‘আহলান সাহলান’ ও অন্যান্য শ্লোগান চিত্রিত করে দৃষ্টিনন্দন শৈল্পিক আর্ট ফুটিয়ে তোলে, যা সম্মেলনস্থলের শোভা বহুলাংশে বৃদ্ধি করে
মারকায সংবাদ
ইবতেদায়ী সমাপনী ও জেডিসি পরীক্ষার ফলাফল
১. আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী, নওদাপাড়া, রাজশাহী : বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ২০১১ সালের ৫ম শ্রেণীর ইবতেদায়ী শিক্ষা সমাপনী ও ৮ম শ্রেণীর দাখিল জুনিয়র সার্টিফিকেট পরীক্ষায় আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী ও মহিলা মাদরাসার ছাত্র-ছাত্রীরা শতভাগ পাশের কৃতিত্ব অর্জন করেছে। ৫ম শ্রেণীর সমাপনী পরীক্ষায় ৭১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৫জন এ+ (৫.০০) ৪৬ জন এ (৪.০০), ৯ জন এ- (৩.৫), ৮ জন বি (৩.০০) এবং ৩ জন সি (২.০০) গ্রেডে উত্তীর্ণ হয়েছে। এদের মধ্যে মুনীরুল ইসলাম (চুয়াডাঙ্গা), সিরাজুল ইসলাম (ঝিনাইদহ), ইউনুস (কুমিল্লা), আব্দুলাহ আল-যুবায়ের (চাঁপাই নবাবগঞ্জ) ও নাহিদ হাসান (নওগাঁ) জিপিএ-৫ (এ+) পেয়েছে।
অন্যদিকে ৮ম শ্রেণীর জেডিসি পরীক্ষায় ৩৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৩জন এ+ (৫.০০), ২১ জন এ (৪.০০), ৭ জন এ- (৩.৫) ও ৩ জন বি (২.০০) গ্রেডে উত্তীর্ণ হয়েছে। এদের মধ্যে মাহবুব যামান (রাজশাহী), রুমাইসা (নওগাঁ) ও রুবাইয়া (রাজশাহী) জিপিএ-৫ (এ+) পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে।
(২) দারুল হাদীছ আহমাদিয়াহ সালাফিইয়াহ, বাঁকাল, সাতক্ষীরা : ইবতেদায়ী শিক্ষা সমাপনী ও জেডিসি পরীক্ষায় দারুল হাদীছ আহমাদিয়া সালাফিইয়াহর ছাত্ররা শতভাগ পাশের কৃতিত্ব অর্জন করেছে। ৫ম শ্রেণীর সমাপনী পরীক্ষায় ৩০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১০ জন এ (৪.০০), ৪ জন এ- (৩.৫), ১১ জন বি (৩.০০) এবং ৫ জন সি (২.০০) গ্রেডে উত্তীর্ণ হয়েছে। অন্যদিকে ৮ম শ্রেণীর জেডিসি পরীক্ষায় ২৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৯ জন এ, ১ জন এ-, ১ জন বি গ্রেডে উত্তীর্ণ হয়েছে।