উত্তর :
৪০ হিজরীর ১৭ই রামাযান হযরত আলী (রাঃ)-এর মৃত্যুর পর ইরাক, মক্কা, মদীনা ও
ইয়ামনবাসী হাসান ইবনু আলী (রাঃ)-এর হাতে খেলাফতের বায়‘আত গ্রহণ করলে, তার
নেতৃত্বেই পঞ্চম খলীফার অগ্রযাত্রা শুরু হয় এবং তিনি ছয় মাস খেলাফতের
দায়িত্ব পালন করেন। এর দ্বারা রাসূল (ছাঃ)-এর ভবিষ্যদ্বাণী ‘আমার পরে
খেলাফত ত্রিশ বছর থাকবে’ (আবুদাঊদ হা/৪৬৪৬, তিরমিযী হা/২২২৬; মিশকাত হা/৫৩৯৫)
কার্যকর হয়। কিন্তু শামবাসী মু‘আবিয়া বিন আবু সুফিয়ান (রাঃ)-এর হাতে
খেলাফতের বায়‘আত গ্রহণ করে এবং মিসরবাসী বিভক্ত হয়ে দু’পক্ষ দু’দলকে সমর্থন
দেয়। হাসান (রাঃ) মু‘আবিয়া (রাঃ)-কে আনুগত্যের শপথ নেওয়ার জন্য আহবান
জানালে তিনি অস্বীকার করেন। এমতাবস্থায় হাসান (রাঃ) মু‘আবিয়া (রাঃ)-এর
বিরুদ্ধে এক বিশাল সৈন্য দল প্রস্ত্তত করে শাম-এর উদ্দেশ্যে বের হয়ে
‘মাসকিন’ নামক স্থানে অবস্থান গ্রহণ করেন। বিপক্ষে মু‘আবিয়া (রাঃ)-এর বিশাল
সৈন্যদলও মুখোমুখি অবস্থান নেয়। এমতাবস্থায় মু‘আবিয়া (রাঃ)-এর পক্ষ থেকে
আলোচনার প্রস্তাব সম্বলিত চিঠি আসলে হাসান (রাঃ) নিজ পক্ষের ছাহাবীগণের
সাথে পরামর্শ করে মুসলিম ঐক্য অটুট রাখার এবং রক্তপাত এড়িয়ে যাওয়ার বৃহত্তর
স্বার্থে মু‘আবিয়া (রাঃ)-কে মুসলমানদের খলীফা হিসেবে মেনে নেন (হাকেম হা/৪৮০৮)। যার ইঙ্গিত রাসূল (ছাঃ) তাঁর বাণীতে দিয়ে যান (বুখারী হা/২৭০৪, মিশকাত হা/৬১৩৫)।
মু‘আবিয়া (রাঃ) ৪১ হিজরীর রবীউল আউয়াল মাসে মুসলিম জাহানের খলীফা
নির্বাচিত হন এবং প্রায় বিশ বছর তাঁর নেতৃত্বে ইসলামী শাসন পরিচালিত হয় (বিস্তারিত দ্রঃ আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ ৮/১৬-১৮, ইবনুল আছীর, কামেল ফিত তারীখ ৩/৫-৮)।