উত্তর :
আছারটি বিভিন্ন গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে। যেমন মালেকুদ্দার বলেন, ওমর
(রাঃ)-এর যুগে লোকেরা দুর্ভিক্ষে পতিত হ’ল। তখন জনৈক ব্যক্তি রাসূল
(ছাঃ)-এর কবরের নিকটে এলো এবং বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার উম্মতের জন্য
পানি প্রার্থনা করুন। কারণ তারা ধ্বংস হয়ে গেল। অতঃপর আল্লাহর রাসূল
স্বপ্নে ঐ ব্যক্তির নিকটে এলেন এবং তাকে বলা হ’ল, ‘তুমি ওমরের নিকটে যাও ও
তাকে আমার সালাম বল। তাকে খবর দাও যে, তোমরা পানি প্রার্থী। আর তাকে বল,
তুমি সাধ্যমত জনগণের সেবা কর। অতঃপর ঐ ব্যক্তি ওমরের নিকটে এল এবং তাকে এ
খবর দিল। তখন ওমর (রাঃ) ক্রন্দন করলেন এবং বললেন, হে আমার প্রতিপালক আমি
সাধ্যমত চেষ্টা করব’ (ইবনু আবী শায়বাহ হা/৩২০০২, ইবনু কাছীর, আল-বিদায়াহ ৩/৫৬; বুখারী, তারীখুল কাবীর ৭/৩০৪)।
আছারটির সনদ যঈফ, যা থেকে দলীল গ্রহণ করা যায় না। কারণ (১) ঘটনাটি সঠিক নয়। (২) রাবী মালেকুদ্দার ন্যায়পরায়ণতা এবং স্মৃতিশক্তির ব্যাপারে অপরিচিত। যা মুহাদ্দেছীনের নিকট গ্রহণযোগ্য নয় (৩) এটি শরী‘আতের বিরোধী। কেননা দুর্ভিক্ষের জন্য শরী‘আতে ইস্তিসক্বার ছালাত আদায়ের বিধান রয়েছে। স্বয়ং ওমর (রাঃ) ইস্তিসক্বার ছালাত আদায় করেছেন এবং আববাস (রাঃ)-এর অসীলায় আল্লাহর নিকটে বৃষ্টি প্রার্থনা করেছেন (বুখারী হা/১০১০; মিশকাত হা/১৫০৯)। (৪) ছাহাবায়ে কেরামের কারু থেকে এমন কোন আমল পাওয়া যায় না যে তারা দুর্ভিক্ষের সময় রাসূল (ছাঃ)-এর কবরে গিয়েছেন এবং তাঁর নিকটে বৃষ্টি প্রার্থনা করেছেন। যদি এটি শরী‘আতসম্মত হ’ত, তাহ’লে খলীফা হিসাবে ওমর (রাঃ) নিজেই সর্বাগ্রে কবরের নিকটে যেতেন এবং রাসূল (ছাঃ) সরাসরি তাঁকেই স্বপ্ন দেখাতেন। (৫) সর্বোপরি এটি কুরআনের আয়াতের বিরোধী। যেখানে আল্লাহ তাঁর রাসূলকে বলেন, তুমি কোন কবরবাসীকে শুনাতে পারো না’ (নমল ২৭/৮০. ফাত্বির ৩৫/২২)। মূলতঃ কবরপূজারীদের স্বার্থের অনুকূলে হওয়ায় তারা ভিত্তিহীন এই কাহিনীটিকে বিশুদ্ধ প্রমাণের জন্য গলদঘর্ম হয়ে থাকে। (বিস্তারিত আলোচনা দ্রঃ নাছিরুদ্দীন আলবানী, আত-তাওয়াস্সুল পৃঃ ১২০-২৪)।