উত্তর :
প্রথমতঃ এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা, যা সনদ বিহীনভাবে বর্ণিত হয়েছে। আর
ঐতিহাসিক ও সনদ বিহীন কোন বক্তব্যকে শরী‘আতের দলীল হিসাবে গ্রহণ করা যায় না
(সৈয়ূত্বী, আল-ইতক্বান ফী উলূমিল কুরআন ২/২২৭-২২৮ পৃঃ)। সনদ
থাকার পরেও তা যঈফ হওয়ার কারণে যেখানে হাদীছ গ্রহণযোগ্য হয় না, সেখানে কোন
ইবাদতের ক্ষেত্রে উক্ত ঘটনা দলীল হিসাবে গ্রহণযোগ্য হওয়ার প্রশ্নই আসে না।
দ্বিতীয়তঃ এই দো‘আটি ছিল মূলতঃ ইস্তিস্কা বা পানি প্রার্থনার জন্য। আর পানি প্রার্থনার জন্য হাত তুলে সম্মিলিতভাবে দো‘আ করার বিষয়টি ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত (বুখারী হা/১০৯২, ‘ইস্তিস্কা’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-২১)। ঘটনাটি হ’ল, বাহরাইন যুদ্ধের প্রাক্কালে মুসলিম সেনাবাহিনী এমন এক স্থানে অবতরণ করে যেখানে পানি সংকটের কারণে তাদের থাকা কষ্টকর হয়ে পড়েছিল। এমনকি তাদের উটগুলো তাদের খাদ্য সামগ্রী-পানীয় ও বস্ত্র সমূহ পিঠে করে নিয়ে হারিয়ে গিয়েছিল। ফলে তাদের সাথে তাদের পরনের কাপড় ছাড়া আর কিছুই বাকী ছিল না। তখন ছাহাবী ‘আলা ইবনুল হাযরামী (রাঃ) লোকদের নিয়ে ফজরের ছালাত আদায় করেন ও সূর্যোদয় পর্যন্ত দো‘আ করতে থাকেন। তিনি যখন দো‘আর তৃতীয় পর্যায়ে পৌঁছলেন, তখন আল্লাহ তা‘আলা তাদের জন্য তাদের পাশে একটি শীতল পানির পুকুর সৃষ্টি করে দিলেন। অতঃপর তিনি সহ সকলে সেখানে গেলেন এবং পানি পান করলেন ও গোসল করলেন। ওদিকে দিনের আলো প্রস্ফুটিত হ’তে না হ’তেই তাদের উটগুলো পিঠের বোঝা সহ বিভিন্ন দিক থেকে ফিরে আসল। অথচ তাদের আসবাবপত্রের একটিও হারায়নি। অতঃপর তারা তাদের উটগুলোকে উদর পূর্তি করে পানি পান করালেন (আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ ৬/৩২৮)।
অতএব স্পষ্ট যে, উক্ত ঘটনাটি ছিল পানি প্রার্থনার সাথে সংশ্লিষ্ট। প্রচলিত মুনাজাতের সাথে এর কোন সম্পর্ক নেই।
-রূহুল আমীন, দুবাই।