উত্তর : আত্মঘাতি হওয়া আত্মহত্যার শামিল। শরী‘আতে যার কোন অনুমোদন নেই। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সাথে জিহাদে অংশগ্রহণ করে ইসলামের পক্ষে বীরত্বের সাথে যুদ্ধ শেষে যখমে অতিষ্ঠ হয়ে নিজের তরবারি দিয়ে আত্মহত্যা করলে রাসূল (ছাঃ) তাকে জাহান্নামী বলে আখ্যায়িত করেন (বুখারী হা/৪২০৩ ‘খায়বর যুদ্ধ’ অনুচ্ছেদ)। তাছাড়া এগুলি জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহ নয়। বরং ইহূদী-নাছারাদের চক্রান্তে জিহাদের সুড়সুড়ি দিয়ে তাদের পাতানো ফাঁদে আটকিয়ে মুসলমানদের ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র মাত্র। মূলতঃ ইহূদী-খ্রিষ্টান রাষ্ট্র শক্তিগুলির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার দায়িত্ব মুসলিম রাষ্ট্র শক্তিগুলির। তারা এটা না করলে পরকালে জওয়াবদিহি করতে বাধ্য হবে। এ দায়িত্ব সাধারণ নাগরিকের নয় এবং তারা এজন্য আল্লাহর নিকট দায়ী হবে না। কারণ এটি তাদের সাধ্যের অতীত। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা সাধ্যমত আল্লাহকে ভয় কর’ (তাগাবুন ৬৪/১৬)। (বিস্তারিত দ্রঃ ‘জিহাদ ও ক্বিতাল’ বই)। এসব আত্মঘাতিরা একদিকে আত্মহত্যাকারী হিসাবে পরকালে কঠিন শাস্তিপ্রাপ্ত হবে (বুখারী হা/৫৭৭৮, মুসলিম হা/১০৯, মিশকাত হা/৩৪৫৩), অন্যদিকে তাদের হাতে নিহত নিরপরাধ মানুষ হত্যার অপরাধে পরকালে কঠোর শাস্তি ভোগ করবে’ (বুখারী হা/৬৬৭৫; মিশকাত হা/৫০)। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা নিজেদেরকে হত্যা করো না’ (নিসা ৪/২৯)। তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি মানুষকে অন্যায়ভাবে হত্যা করল, সে যেন সকল মানুষকে হত্যা করল’ (মায়েদাহ ৫/৩২)। যারা এসব কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছে তারা নিজেরা পথভ্রষ্ট হচ্ছে, অন্যকেও পথভ্রষ্ট করছে। এরূপ ব্যক্তিদের সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, ‘তারা নিজেদের পাপভার বহন করবে এবং নিজেদের বোঝার সাথে অন্যদের পাপের বোঝা। আর তারা যেসব মিথ্যা উদ্ভাবন করে সে বিষয়ে ক্বিয়ামত দিবসে অবশ্যই তাদের প্রশ্ন করা হবে’ (আনকাবূত ২৯/১৩)। শায়খ আলবানী, উছায়মীন, আব্দুল্লাহ বিন বায, আব্দুল আযীয আলে শায়খ, ছালেহ বিন ফাওযান, আব্দুল আযীয রাজেহী প্রমুখ ওলামায়ে কেরাম আত্মঘাতি বোমা হামলার মাধ্যমে নিহত হওয়াকে আত্মহত্যা বলে গণ্য করেছেন (সিলসিলাতুল হুদা ওয়ান নূর ক্রমিক নং ২৭৩; উছায়মীন, শরহ রিয়াযুছ ছালেহীন ১/১৬৫-১৬৬; ফাতাওয়া শার‘ঈয়াহ লিল হাছীন, পৃষ্ঠা ১৬৬-১৬৯)।