উত্তর :
তালাকের ব্যাপারে ওমর (রাঃ)-এর ফয়ছালা প্রশাসনিক উদ্দেশ্যে গৃহীত তাঁর
সাময়িক সিদ্ধান্ত ছিল। কিন্তু এতে তাঁর উদ্দেশ্য সফল হয়নি। সেকারণ মৃত্যুর
পূর্বে তিনি অনুতপ্ত হয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন (ইবনুল ক্বাইয়িম, ইগাছাতুল লাহফান, ১/২৭৬)।
কেবল তিনিই নন, বরং এ ধরনের ইজতিহাদী সিদ্ধান্ত অন্য খলীফাগণও নিয়েছিলেন।
যেমন মদ্য পানকারীকে রাসূল (ছাঃ) চড়-থাপ্পড়, খেজুরের ডাল দিয়ে পিটানো,
জুতাপেটা ইত্যাদি করতেন। আবুবকর (রাঃ) খেলাফতকালে ৪০ বেত এবং ওমর (রাঃ)-এর
খেলাফতের শেষদিকে ফাসেক্বী বেড়ে গেলে তিনি ৮০ বেত্রাঘাত করেন (মুসলিম হা/১৭০৬; বুখারী হা/৬৭৭৯; মিশকাত হা/৩৬১৬)।
আবুবকর (রাঃ) জনৈক পায়ুকামীকে এবং আলী (রাঃ) তাঁকে ‘আল্লাহর অবতার’
দাবীকারী একদল যিন্দীককে জীবন্ত পুড়িয়ে মেরেছিলেন। অথচ আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)
কোন প্রাণীকে আগুনে পুড়িয়ে মারতে নিষেধ করেছেন। ছাহাবায়ে কেরাম গর্ভাবস্থা
দেখেই যেনার শাস্তি এবং মদের গন্ধ পেয়েই মদ্যপানের শাস্তি দিয়েছিলেন
সাক্ষীর অপেক্ষা করেননি। ওমর (রাঃ) মদের দোকান ও মদের গ্রাম জ্বালিয়ে
দিয়েছিলেন। ৩য় খলীফা ওছমান (রাঃ) কুরায়শী ক্বিরাআতের বিপরীতে কুরআনের অন্য
সকল মুছহাফ জ্বালিয়ে দিয়েছিলেন (ইবনুল ক্বাইয়িম, ই‘লামুল মুওয়াকক্বেঈন (বৈরূত : দারুল জীল, ১৯৭৩) ৪/৩৭২-৭৪ পৃ.)। মদীনার বাযারে লোক সমাগম বৃদ্ধি পাওয়ায় তিনি জুম‘আর খুৎবার মূল আযানের পূর্বে ‘যাওরা’ বাযারে আরেকটি আযানের প্রচলন করেন (বুখারী হা/৯১২; মিশকাত হা/১৪০৪)।
এমনিভাবে খোলাফায়ে রাশেদীনের যুগে সময় ও প্রেক্ষিত বিবেচনায় ইজতিহাদের
ভিত্তিতে বেশ কিছু প্রশাসনিক নির্দেশ সাময়িকভাবে জারী করা হয়েছিল, যা
চিরস্থায়ীভাবে জারী রাখার দলীল নয়। কেননা এলাহী বিধানই একমাত্র চিরন্তন ও
চিরস্থায়ী (ইবনু তায়মিয়াহ, মাজমূউল ফাতাওয়া ৩৩/৯৭-৯৮; দ্র. তালাক ও তাহলীল বই, পৃ. ৪৬-৪৭)।