উত্তর : উক্ত আক্বীদা সম্পূর্ণ ভ্রান্ত। নবী করীম (ছাঃ) বা ছাহাবীগণ থেকে এ বিষয়ে কোন বর্ণনা আসেনি। অতএব এই ধরনের আক্বীদা পোষণ করা বিদ‘আত। আর কবরের উপর কোন ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করা হারাম (মুসলিম হা/৯৭০; হাকেম হা/১৩৩০; মিশকাত হা/১৬৭০)। এই বিদ‘আতের সূচনা হয়েছে হিজরী ৭ম শতাব্দীতে ছূফীবাদী তুর্কী শাসকদের মাধ্যমে।

তুর্কীরাই রাসূল (ছাঃ)-এর কবরের উপর সবুজ গম্বুজ স্থাপন করেছিল। ইতিপূর্বে এর কোন অস্তিত্ব ছিল না। হিজরী ৬৭৮ মোতাবেক ১২৭৯ খ্রিষ্টাব্দে সর্বপ্রথম গম্বুজটি নির্মাণ করেন মামলূক সুলতান কালাউন। অতঃপর হিজরী ৮৮৬ মোতাবেক ১৪৮১ খ্রিষ্টাব্দে অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত হবার পর সুলতান আশরাফ কায়েতবায়ী ৮৮৭ হিজরীতে পুনরায় পিলার দিয়ে একটি কালো পাথরের গম্বুজ নির্মাণ করেন। পরবর্তী শাসকদের আমলে তাতে সাদা এবং নীল রঙের প্রলেপ দেয়া হয়েছিল। ৯৪৬ হিজরীতে গম্বুজের উপর তুর্কী খেলাফতের প্রতীকবাহী চন্দ্রাকৃতি স্থাপন করেন মক্কার শাসক ওয়াছেল। অতঃপর হিজরী ১২৩৩ সালে ওছমানীয় সুলতান আব্দুল হামীদ-২ নতুনভাবে গম্বুজটি নির্মাণ করেন। তিনি ইবনু ‘আরাবী (৫৫৮-৬৩৮ হিঃ)-এর ভ্রান্ত ছূফীবাদী আক্বীদাকে বাস্তবায়ন করার জন্য ১২৫৩ হিজরীতে গম্বুজের উপর সবুজ রঙের প্রলেপ দেন। তখন থেকে এটি ‘কুববাতুল  খাযরা’ (সবুজ গম্বুজ) নামে পরিচিতি লাভ করে এবং তা আজও রয়েছে।

১৮০৫ খৃষ্টাব্দে মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওয়াহহাবের অনুসারী সংস্কারবাদীগণ মদীনার বাক্বী‘ কবরস্থানের সকল কবরের উপর থেকে গম্বুজ ভেঙ্গে ফেলে দেন। কিন্তু বৃহত্তর ফিৎনার আশংকায় এবং গম্বুজটির বিশ্বব্যাপী পরিচিতির কারণে এটি ভাঙ্গেননি (রশীদ রেযা, আল-ওয়াহহাবিইয়ূন ওয়াল হিজায ৬৯-৭১ পৃঃ; আলী হাফেয, ফুছূল মিন তারীখিল মাদীনাতিল মুনাওয়ারাহ ১২৭-২৮ পৃঃ)। এর বিরুদ্ধে সঊদী ওলামায়ে কেরাম সোচ্চার হওয়া সত্ত্বেও কেবল ফিৎনার আশংকায় সরকার এটা রেখে দিয়েছেন (মাজমূ‘ ফাতাওয়া বিন বায ১/২৭০)

রাসূল (ছাঃ) সবুজ নয় বরং কালো পাগড়ী পরিধান করতেন। আমর বিন হুরায়েছ (রাঃ) বলেন, নবী করীম (ছাঃ) জুম‘আর খুৎবা দিলেন, তখন তাঁর উপর কালো পাগড়ী ছিল। যার দু’মাথা কাঁধের মাঝে ঝুলছিল (মুসলিম, মিশকাত হা/১৪১০)। জাবের (রাঃ) বলেন, মক্কা বিজয়ের দিন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বিনা ইহরামে যখন কা‘বা গৃহে ঢুকলেন, তখন তাঁর মাথায় কালো পাগড়ী ছিল (ইবনু মাজাহ হা/২৮২২)। তাছাড়া রাসূল (ছাঃ) সাদা পোষাক পরিধান করতে উৎসাহিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘তোমরা সাদা পোষাক পরিধান কর। কেননা এটি পূত-পবিত্র। আর এর দ্বারা তোমাদের মৃতদের কাফন পরাও’ (তিরমিযী হা/২৮১০; মিশকাত হা/৪৩৩৭)। অন্য বর্ণনায় রয়েছে, রাসূল (ছাঃ) বলেন, তোমাদের জন্য সর্বোত্তম পোষাক হ’ল সাদা পোষাক। এই পোষাকে তোমাদের মৃতদের কাফন পরাবে এবং নিজেরাও তা পরবে (ইবনু মাজাহ হা/১৪৭২; মিশকাত হা/১৬৩৮; ছহীহুল জামে‘ হা/৩৩০৫)। আয়েশা (রাঃ) বলেন, ‘রাসূল (ছাঃ)-কে তিনটি সাদা কাপড়ে কাফন পরানো হয়েছিল’ (বুখারী হা/১২৬৪; মুসলিম হা/৯৪১)। সুতরাং সবুজ রঙের কোন বিশেষত্ব ইসলামে নেই।

সবুজ রং সম্পর্কে কেবল এতটুকুই এসেছে যে, হাশরের মাঠে রাসূল (ছাঃ)-কে সবুজ পোষাক দেওয়া হবে এবং শহীদদের রূহ জান্নাতে সবুজ পাখির ভিতর থাকবে। যেমন- কা‘ব ইবনে মালিক (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘ক্বিয়ামতের মাঠে মানুষকে উঠানো হবে। আমি এবং আমার উম্মত একটি উপত্যকার উপর থাকব। আমার প্রতিপালক আমাকে সবুজ জোড়া পরাবেন। তারপর আমাকে কথা বলার অনুমতি দেয়া হবে। তখন আমি আল্লাহর ইচ্ছায় যা বলার বলব। এটাই হচ্ছে মাক্বামে মাহমূদ’ (সিলসিলা ছাহীহাহ হা/২৩৭০, ইবনে হিববান হা/৬৪৪৫)। আর শহীদদের রূহ সম্পর্কে রাসূল (ছাঃ) বলেন, তাদের রূহ সবুজ পাখির পেটে থেকে জান্নাতের বিভিন্ন নদী ও বাগান থেকে আহার করে (মুসলিম হা/৪৯৯৩)

সুতরাং যারা সবুজ রংকে বিশেষ পবিত্র মনে করে এবং প্রশ্নে বর্ণিত ভ্রান্ত আক্বীদা সমূহ পোষণ করে, তারা এরূপ দলীলবিহীন ও রাসূলের আদর্শ বিরোধী আক্বীদা পোষণের কারণে রাসূল (ছাঃ)-এর শাফা‘আত থেকে বঞ্চিত হবে। কেননা সেদিন রাসূল (ছাঃ) তাদের বলবেন, দূর হও দূর হও, যারা আমার পরে আমার দ্বীনকে পরিবর্তন করেছ’ (বুখারী হা/৭০৫০; মুসলিম হা/২২৯০; মিশকাত হা/৫৫৭১ ‘ফিতান’ অধ্যায় ‘হাউয ও শাফা‘আত’ অনুচ্ছেদ)






প্রশ্ন (১৬/৩৭৬) : ছিয়াম শেষে ইফতারের সময় আমরা পুরো পরিবার একত্রিত হই এবং জামা‘আতবদ্ধভাবে হাত তুলে মুনাজাত করি। আমার দাদু দো‘আ পড়েন। আর আমরা আমীন বলি। এরূপ করা জায়েয কি?
প্রশ্ন (২৬/২২৬) : পুকুরে মাছের চাষ করে প্রতি বছর দশ-বারো লাখ টাকার মাছ বিক্রি হয়। এক্ষণে এর যাকাত কিভাবে আদায় করতে হবে। পুকুরে স্থিত মাছের মূল্য হিসাবে না আয়কৃত অর্থের মধ্যে যতটুকু সঞ্চয় করা হয় তার উপর?
প্রশ্ন (৩৬/৩৫৬) : আল্লাহ রূহ সৃষ্টি করার পর কাউকে জান্নাতী কাউকে জাহান্নামী হিসাবে আগেই নির্ধারণ করে রেখেছেন। এক্ষণে কোন জান্নাতী স্বীয় বদআমলের কারণে যেমন আত্মহত্যা করার কারণে জাহান্নামে যেতে পারে কি?
প্রশ্ন (৩৫/৪৩৫) : রাসূল (ছাঃ) একজনের উপর আরেকজনের দর-দাম করতে নিষেধ করেছেন। কিন্তু বিভিন্ন স্থানে পণ্য নিলামে বা ডাকে বিক্রয়ের সময় একাধিক লোক দাম বলতে থাকে এবং যে সবচেয়ে বেশী বলে তার নিকটে পণ্যটি বিক্রিত হয়ে থাকে। এক্ষণে এ পদ্ধতি কি জায়েয হবে?
প্রশ্ন (১/১৬১): ২০০৩ ইং জুলাই আত-তাহরীক ৯নং প্রশ্নোত্তরে লেখা হয়েছে, ‘কবিরাজগণ জিনদের মাধ্যমে যেসব কথাবার্তা বলে থাকেন তা বিশ্বাস করা যাবে’। কিন্তু হাদীছে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি কোন গণকের নিকট আসল এবং তার কথার প্রতি বিশ্বাস করল সে মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর উপর যা অবতীর্ণ হয়েছে তাকে অস্বীকার করল (আহমাদ ২/৪২৯ পৃঃ)। অন্য হাদীছে রয়েছে, ৪০ দিন তার ছালাত কবুল হবে না (মুসলিম, মিশকাত হা/৪৫৯৫)। উক্ত বিষয়ে সমাধান জানিয়ে বাধিত করবেন।
প্রশ্ন (২০/৩৪০) : সাহারী খাওয়ার সময় আযান দেয়া অবস্থায় প্লেট পূর্ণ থাকলে তা কি আর খাওয়া যাবে, না রেখে দিতে হবে? আর যদি খাওয়া যায়, তবে কতটুকু খেতে পারবে?
প্রশ্ন (৩৩/১১৩) : বৃষ্টির সময় আযানে ‘আছ-ছালাতু ফী রিহালিকুম’ বলার বিধান কি? কখন এবং কয়বার এটি বলতে হবে?
প্রশ্ন (৮/৮৮) : খারেজী, রাফেযী, শী‘আ, মুরজিয়া, মু‘তাযিলা ইত্যাদি বাতিল ফের্কার লোকদের পিছনে ছালাত আদায় করা যাবে কি?
প্রশ্ন (১৫/২৯৫) : ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করলে তা পরিশোধ হওয়ার আগ পর্যন্ত মাইয়েত কষ্ট পাবে কি? এছাড়া তার সন্তানেরা যদি দাতার নিকট এক বছরের অবকাশ নিয়ে থাকে তাহ’লে কি মাইয়েত কবরের আযাব থেকে অবকাশ পাবে?
প্রশ্ন (৩৮/২৩৮) : সূরা বাক্বারাহ ১৪৮ আয়াতের ব্যাখ্যা জানতে চাই। - -নূরুল ইসলাম, নীলফামারী।
প্রশ্ন (১৭/২১৭) : মাসবূক যদি ইমামকে দ্বিতীয় রাক‘আতে পায় তাহ’লে সেই রাক‘আত কি মাসবূকের ছালাতের প্রথম রাক‘আত গণ্য হবে, নাকি দ্বিতীয় রাক‘আত গণ্য হবে? - -আব্দুল্লাহিল কাফী, হড়গ্রাম-পূর্ব শেখপাড়া, রাজশাহী।
প্রশ্ন (৪/২৪৪) : আমাদের প্রভিডেন্ট ফান্ডে নিয়ম অনুযায়ী আমার মূল বেতনের ১৫% কাটা হয় এবং বেপজা এর সাথে ১৫% যোগ করে। চাকুরী হ’তে অবসর নেয়ার পর উভয়ের জমাকৃত টাকার দ্বিগুণ টাকা অবসরগ্রহণকারীকে দেওয়া হয়। এক্ষণে উক্ত অর্থ কতটুকু গ্রহণ করা জায়েয হবে? - -আমীনুল ইসলামউপ-সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ), বেপজা, ঢাকা।
আরও
আরও
.