উত্তর : বিশেষ প্রয়োজনে মসজিদ স্থানান্তর করা যায়। যেমন রাসূল (ছাঃ) কা‘বাগৃহ ভেঙ্গে দিতে চেয়েছিলেন এবং ইবরাহীম (আঃ)-এর দেওয়া ভিতের উপর ভিত দিতে চেয়েছিলেন। কারণ কুরায়েশরা কা‘বাগৃহ নির্মাণের সময় ইবরাহীম (আঃ)-এর ভিত থেকে ছোট করে নির্মাণ করেছিল। কিন্তু তারা নতুন মুসলিম হওয়ায় বিরোধের আশংকায় রাসূল (ছাঃ) তা করেননি (বুখারী হা/১২৩; মুসলিম হা/২৩৬৭)। ওমর (রাঃ)-এর যুগে কূফার শাসক ছিলেন ছাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ)। একদা মসজিদ হ’তে বায়তুল মালের অর্থ চুরি হ’লে সে ঘটনা ওমর (রাঃ)-কে জানানো হয়। ফলে তিনি মসজিদ স্থানান্তরের নির্দেশ দেন এবং মসজিদ স্থানান্তর করা হয়। পরে মসজিদের পরিত্যক্ত স্থানটি খেজুর ব্যবসায়ীদের বাজারে পরিণত হয়’ (ত্বাবারাণী কাবীর হা/৮৯৪৯; মাজমা‘উয যাওয়ায়েদ হা/১০৬৫৪, হায়ছামী বলেন, এর বর্ণনাকারীগণ বিশ্বস্ত; ইবনু তায়মিয়াহ, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ৩১/২১৬-২১৭; ফিক্বহুস সুন্নাহ ৪/২৯০ পৃঃ)। উক্ত হাদীছ ও আছার থেকে বুঝা যায় যে, অনিবার্য কারণে মসজিদ ভেঙ্গে দিয়ে স্থানান্তর করা যায়। প্রকাশ থাকে যে, ‘ওয়াক্ফের সম্পত্তি বিক্রি করাও যাবে না এবং কাউকে হেবা করাও যাবে না’ মর্মের হাদীছ (বুখারী হা/২৭৬৪, মিশকাত হা/৩০০৮)-এর প্রেক্ষিতে কিছু বিদ্বান বলেন, যেহেতু মসজিদের সম্পত্তি ওয়াক্ফকৃত, তাই তাকে পরিবর্তন করা যাবে না’। ইমাম ইবনু তায়মিয়াহ (রহঃ) একথার উত্তরে বলেন, ‘ওয়াক্ফের সম্পত্তি বিক্রি করে তার চেয়ে উন্নতমানের সম্পত্তি ক্রয় করলে ওয়াক্ফকে নষ্ট করা হয় না বা পরিবর্তন করাও হয় না। যেমন জিহাদের জন্য ওয়াক্ফকৃত ঘোড়া বৃদ্ধাবস্থায় বিক্রি করে তার চেয়ে উন্নতমানের ঘোড়া ক্রয় করে জিহাদের জন্য রেখে দিলে তাতে ওয়াক্ফের কোন পরিবর্তন হয় না; বরং আরো উত্তম হয়’ (ইবনু তায়মিয়াহ, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ৩১/২১৪)। অতএব মসজিদ স্থানান্তরে কোন বাধা নেই। তবে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে, তা যেন ফিৎনার কারণ না হয়। যা অবশেষে ‘যেরার’ মসজিদে পরিণত হ’তে পারে।