উত্তর : উক্ত হাদীছে বর্ণিত ১২ জন খলীফা সম্পর্কে ওলামায়ে কেরাম মতভেদ করেছেন। ইমাম নববী (রহঃ) বলেন, এর দ্বারা ন্যায়পরায়ণ শাসকদের বুঝানো হয়েছে, যাদের অনেকে পূর্বে গত হয়েছেন এবং ক্বিয়ামতের পূর্বে অবশিষ্টদের দ্বারা পূর্ণতা লাভ করবে (শারহুন নববী ‘আলা মুসলিম ১২/২০২)। মুহাদ্দিছ কুরতুবী (৫৭৮-৬৫৬ হি.) বলেন, এ বিষয়ে তিনটি মত রয়েছে। তবে আমার নিকট সর্বোত্তম হ’ল এই যে, তারা হ’লেন ন্যায়পরায়ণ খলীফাগণ। যাদের মধ্যে চার খলীফা এবং ওমর বিন আব্দুল আযীয রয়েছেন। তাছাড়া ইনছাফ ও সত্য প্রকাশে ব্রতী খলীফাগণ এর অন্তর্ভুক্ত হবেন। যতদিন না এই সংখ্যা পূর্ণ হয়’ (আল-মুফহিম শরহ মুসলিম ৮/৪)। ইবনু কাছীর বলেন, অত্র হাদীছে ১২জন ন্যায়পরায়ণ খলীফার সুসংবাদ রয়েছে। যারা তাদের মাঝে ইনছাফ ও সত্য প্রতিষ্ঠা করবেন। এদের ধারাবাহিক হওয়া আবশ্যক নয়। অবশ্য চারজন ধারাবাহিক ছিলেন চার খলীফা। নিঃসন্দেহে ওমর বিন আব্দুল আযীয ছিলেন তাদের অন্যতম। এছাড়া কয়েকজন আববাসীয় খলীফা। বাকীদের খেলাফত না আসা পর্যন্ত ক্বিয়ামত হবে না। ভবিষ্যতের জন্য সুসংবাদপ্রাপ্ত ইমাম মাহদীও তাদের অন্যতম। কারণ তিনিও হবেন ফাতেমা (রাঃ)-এর বংশধর। এর দ্বারা রাফেযী শী‘আদের কথিত ১২ ইমাম অর্থ নেওয়াটা চরম অজ্ঞতা ও বোকামীর পরিচয়। যার কোনই শারঈ ভিত্তি নেই (ইবনু কাছীর, তাফসীর সূরা মায়েদাহ ১৪ আয়াত; ইবনু তায়মিয়াহ, মিনহাজুস সুন্নাহ ৮/১৭৩-১৭৪)। আর চার খলীফার খেলাফত পূর্ণ ত্রিশ বছর টিকে ছিল যার ভবিষ্যদ্বাণী রাসূল (ছাঃ) করেছিলেন (তিরমিযী হা/২২২৬; আহমাদ হা/২১৯৬৯; মিশকাত হা/৫৩৯৫; ছহীহাহ হা/৪৫৯)।
উক্ত ৩০ বছর হ’ল যথাক্রমে : (১) হযরত আবুবকর (১১-১৩ হি.) = ২বছর (২) হযরত ওমর (১৩-২৩ হি.) = ১০ বছর (৩) হযরত ওছমান (২৩-৩৫ হি.) = ১২ বছর (৪) হযরত আলী (৪ বছর ৯ মাস ও হযরত হাসান বিন আলী ৩ মাস- রামাযান হ’তে রবীউল আউয়াল ৪১ হি.; ৩৫-৪১ হি.)= ৬ বছর। সর্বমোট ৩০ বছর (আহলেহাদীছ আন্দোলন, ডক্টরেট থিসিস (প্রকাশকাল : রাজশাহী ১৯৯৬ খৃ.) ১২৬ পৃ. টীকা-১২৫)।