উত্তর : মানুষের উপর তার নামের প্রভাব পড়তে পারে। আর এজন্য রাসূল (ছাঃ) ব্যক্তি, বস্ত্ত এমনকি জায়গার নামও পরিবর্তন করে দিতেন। নবী করীম (ছাঃ) আ‘ছ (অবাধ্য), আযীয (পরাক্রমশালী), আতলাহ (কর্কশ), হাকাম (বিচারক), গুরাব (কাক), হুবাব (সাপ) ও শিহাব (উল্কা) নামকে পরিবর্তন করে রেখেছেন হিশাম (বিধ্বস্তকারী)। তিনি হারব (যুদ্ধ)-এর পরিবর্তে সালাম (শান্তি), মুনবাইছ (জাগ্রত)-কে মুযতাজি‘ (শয়নকারী), আফিরাহ (অনুর্বর) নামক এলাকাকে খাযিরাহ (সবুজ), আয-যালালাহ (বিপথ) উপত্যকাকে আল-হুদা (হিদায়াতের পথ), বনু যানিয়াহ (জারজ সন্তান)-এর নাম বনুর-রিশদাহ (নির্মল সন্তান) এবং বনু মুগবিয়াহ (বিপথগামী নারীর সন্তান)-এর বনু রিশদা (হিদায়াতপ্রাপ্ত নারীর সন্তান) নামকরণ করেছেন (আবুদাউদ হা/৪৯৫৬-এর আলোচনা দ্রষ্টব্য)।
সাঈদ ইবনু মুসাইয়িব (রহঃ) তার পিতার সূত্রে বলেন, ‘তাঁর দাদা নবী করীম (ছাঃ) এর নিকট আসল। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তোমার নাম কি? সে বলল, হায্ন (কঠোর)। নবী করীম (ছাঃ) বললেন, বরং তোমার নাম সাহল (সহজ-সরল)। সে বলন, না কারণ সহজ-সরলকে পদদলিত করা হয়, অপমান করা হয়। আমার পিতা আমার যে নাম রেখেছেন, তা অন্য কোন নাম দিয়ে আমি বদলাব না। ইবনুল মুসাইয়িব (রহঃ) বলেন, এরপর থেকে আমাদের বংশের মধ্যে কঠোর স্বভাব চলে এসেছে (বুখারী হা/৬১৯০; আবুদাউদ হা/৪৯৫৬; মিশকাত হা/৪৭৮১)।
অন্য একটি আছারে এসেছে, ইয়াহ্ইয়া ইবনু সাঈদ বলেন, ওমর ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) জনৈক ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার নাম কি? লোকটি বলল, জমরা (কয়লা বা অঙ্গার)। আবার জিজ্ঞেস করলেন, তোমার পিতার নাম কি? লোকটি বলল, শিহাব (অগ্নিশিখা)। আবার জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কোন গোত্রের? লোকটি বলল, হারাক (জ্বলন্ত)। আবার জিজ্ঞেস করলেন, কোথায় বাস কর? লোকটি বলল, হাররাতুন্নারে (দোযখের গরমে)। আবার জিজ্ঞেস করলেন, সেই স্থানটা কোথায়? লোকটি বলল, যাতে লাযা (লাযা নামক দোযখে)। ওমর (রাঃ) বললেন, যাও, গিয়ে তোমার খবর নাও; তারা সকলেই জ্বলে গেছে। লোকটি গিয়ে দেখল যে, সত্যই ওমর (রাঃ) যা বলেছেন, তাই হয়েছে (অর্থাৎ সকলেই জ্বলে গেছে) (মুয়াত্ত্বা মালেক হা/৩৫৭০)। অতএব নাম রাখার ক্ষেত্রে সুনদর অর্থবোধক ইসলামী নাম রাখা আবশ্যক।
প্রশ্নকারী :আব্দুল্লাহ, সাহেব বাজার, রাজশাহী।