উত্তর : কবীরা গুনাহ হ’ল যে সকল গুনাহের ব্যাপারে অভিসম্পাত করা হয়েছে এবং পরকালীন শাস্তি কিংবা দুনিয়ায় হদ্দের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আর জেনে-শুনে বার বার ছগীরা গুনাহে লিপ্ত হ’লে তাও কবীরা গুনাহে পরিণত হয়। যেমন ওমর ও ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন,لاَ كَبِيْرَةَ مَعَ اسْتِغْفَارٍ وَلاَ صَغِيْرَةَ مِنْ إِصْرَارٍ، ‘ইস্তেগফার করলে কাবীরা গোনাহ থাকে না। আর বারবার করলে তা আর ছগীরা গোনাহ থাকে না’ (নববী, শরহ মুসলিম ২/৮৭)। কবীরা গোনাহ অর্থ মহাপাপ বা বড় পাপ। যার শীর্ষে রয়েছে- (১) আল্লাহর সাথে শিরক করা (২) এরপরে ঐসব গোনাহ, যার শাস্তি কুরআন ও সুন্নাহ দ্বারা নির্ধারিত। যেমন হত্যা, চুরি, ব্যভিচার, জুয়া, লটারী, মদ্যপান, মিথ্যা সাক্ষ্য দান ইত্যাদি (৩) যেসব পাপের জন্য আল্লাহ ও রাসূল (ছাঃ) অভিসম্পাত করেছেন। যেমন ঘুষ খাওয়া ও দেওয়া, হিল্লা বিয়ে করা ইত্যাদি (৪) ছগীরা গোনাহ বারবার করা। যেমন কথায় কথায় আল্লাহর নামে মিথ্যা কসম খাওয়া, দাড়ি মুন্ডন করা ইত্যাদি। কুরআন-সুন্নাহর দৃষ্টিতে কবীরা গোনাহের সংখ্যা ৭ থেকে ৭০০-এর কাছাকাছি। অনুতপ্ত হয়ে তওবা করা ব্যতীত যা মাফ হয় না। নিম্নে বিশেষ কয়েকটি কবীরা গোনাহ উল্লেখ করা হ’ল :

(১) শিরক করা (২) কবরে বা মাযারে সিজদা করা (৩) বিদ‘আত করা (৪) গণক ও জ্যোতিষীর কথা বিশ্বাস করা (৫) আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে যবেহ ও মানত করা (৬) পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া (৭) তাক্বদীরকে অবিশ্বাস করা (৮) অলসতাবশতঃ ছালাত ও যাকাত পরিত্যাগ করা (৯) অকারণে রামাযানে ছিয়াম পালন না করা (১০) সামর্থ্যবান ব্যক্তির হজ্জ না করা (১১) যুলুম করা (১২) হত্যা করা (১৩) আত্মহত্যা করা (১৪) চুরি করা (১৫) ডাকাতি করা (১৬) জাদু করা (১৭) ইয়াতীমের মাল আত্মসাৎ করা (১৮) প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয়া (১৯) ওযনে কম দেওয়া (২০) হারাম খাওয়া (২১) খিয়ানত করা (২২) হালালা করা (২৩) বেপর্দা চলা (২৪) যেনা করা (২৫) যেনার অপবাদ দেয়া (২৬) সমকামিতা করা (২৭) স্ত্রীর পশ্চাতদেশে সঙ্গম করা (২৮) মাসিক অবস্থায় সহবাস করা (২৯) মহিলা পুরুষের বেশ ধারণ করা ও পুরুষ মহিলার বেশ ধারণ করা (৩০) পুরুষের রেশমী কাপড় ও স্বর্ণালংকার পরা (৩১) মদ্য পান করা (৩২) জুয়া খেলা (৩৩) সূদ গ্রহণ, প্রদান এবং তা লেখা ও তার জন্য সাক্ষী হওয়া (৩৪) ঘুষ গ্রহণ ও প্রদান করা (৩৫) মিথ্যা কথা বলা ও মিথ্যা কসম খাওয়া (৩৬) অঙ্গীকার ভঙ্গ করা (৩৭) অহংকার করা (৩৮) পুরুষের কাপড় পায়ের গিটের নিচে ঝুলিয়ে পরিধান করা (৩৯) আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা (৪০) যুদ্ধের ময়দান থেকে পলায়ন করা (৪১) রিয়া বা লোক দেখানো আমল করা (৪২) গীবত করা (৪৩) তোহমত বা অপবাদ দেওয়া (৪৪) অভিশাপ দেয়া (৪৫) দুনিয়ার উদ্দেশ্যে দ্বীন শিক্ষা করা (৪৬) দুনিয়ার লোভে দ্বীন বিক্রি করা (৪৭) বিপদাপদে বা কারো মৃত্যুতে মাথায় ও বুকে আঘাত করা ও চিৎকার করে কান্নাকাটি করা (৪৮) পেশাব থেকে পরিচ্ছন্ন না থাকা (ইমাম শামসুদ্দীন যাহাবী প্রণীত আল-কাবায়ের গ্রন্থ অবলম্বনে)

অন্যদিকে ছগীরা গুনাহ হ’ল- যে সকল গুনাহের ব্যাপারে অভিসম্পাত করা হয়নি এবং পরকালীন শাস্তি কিংবা দুনিয়ায় হদ্দের কথা উল্লেখ করা হয়নি। বরং সাধারণভাবে নিষেধ করা হয়েছে বা আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল অপসন্দ করেছেন। যেমন অন্যায়ভাবে রাগ করা, হিংসা করা, গালি দেওয়া, প্রতিবেশীকে কষ্ট দেওয়া, ক্বিবলামুখী হয়ে পেশাব-পায়খানা করা, গীবত শ্রবণ করা, মুসলিম ভাইয়ের সাথে কথা বলা বন্ধ করা, ঝগড়া করা, কারো প্রস্তাবের সময় বা ক্রয়ের সময় নিজের জন্য প্রস্তাব দেওয়া, বিনা কারণে কুকুর পোষা, মুছল্লীদের অপসন্দে ইমামতি করা, মসজিদে ক্রয়-বিক্রয় করা ইত্যাদি (নববী, শরহ মুসলিম ২/৮৫ ; ফাৎহুল বারী ১/১৮৪; আবু ফায়ছাল বাদরানী, আল ওয়ালা ওয়াল বারা ওয়াল আদাওয়া ফিল ইসলাম পৃ. ২৩)

প্রশ্নকারী : ফেরদাউস, নলডাঙ্গা, নাটোর।








বিষয়সমূহ: পাপ
প্রশ্ন (৭/২০৭) : কোন্ মাসে পবিত্র কুরআন নাযিল হয়?
প্রশ্ন (২/২৮২) : রাসূল (ছাঃ) বলেন, প্রোথিতকারী (পিতা) এবং যাকে প্রোথিত করা হয়েছে (সন্তান) উভয়েই জাহান্নামী (আবুদাঊদ হা/৪৭১৭)। হাদীছটির সঠিক ব্যাখ্যা জানতে চাই।
প্রশ্ন (৩৪/৭৪): মসজিদের জমির পিছনের জমিওয়ালারা বের হওয়ার জন্য রাস্তা চাচ্ছে। এমতাবস্থায় মসজিদের জমি বিক্রি বা দান করার মাধ্যমে তা দেয়া যাবে কি?
প্রশ্ন (২৪/১০৪) : প্রচলিত আছে যে, নেক সন্তান জন্মের সময় পরিবারে সচ্ছলতা আসে, শান্তির পরিবেশ বিরাজ করে, সমাজও শান্তিময় হয়। উক্ত কথাগুলো কি সঠিক?
প্রশ্ন (৩২/৪৩২) : পিতা-মাতা উভয়েই নিছাব পরিমাণ সম্পদের মালিক ছিলেন এবং উভয়ে পৃথকভাবে যাকাত আদায় করতেন। কিন্তু বর্তমানে পিতার সম্পদ নিছাব পরিমাণ নেই। এক্ষণে মা কি এককভাবে না পিতার সম্পদ সহ যাকাত আদায় করবেন? - -রেযওয়ানুল হকতাহেরপুর, রাজশাহী।
প্রশ্ন (২৮/১৪৮) : দুই সিজদার মধ্যে দো‘আ পাঠ করার সময় অনেকে শাহাদাত অঙ্গুলী দ্বারা ইশারা করেন। এ ব্যাপারে কোন দলীল আছে কি? - -মুহাম্মাদ আহসানুল হক, মুজীবনগর, মেহেরপুর।
প্রশ্ন (৫/১৬৫) : যেনার মাধ্যমে জন্ম নেওয়া সন্তানকে অপমানসূচক কোন কথা বললে বা তার জন্ম নিয়ে কোন সমালোচনা করলে গোনাহ হবে কী?
প্রশ্ন (৩০/৩৯০) : জনৈক যুবক শারীরিক দুর্বলতার কারণে ছিয়াম রাখতে পারছে না। এক্ষণে তার জন্য করণীয় কি? - -তুষার আহমাদজামিরা, পুঠিয়া, রাজশাহী।*[শুধু ‘আহমাদ’ নাম রাখুন (স.স.)]
প্রশ্ন (২৯/৬৯) : মৃত মাতা-পিতার জন্য কোন্ কোন্ দো‘আ পড়ে ক্ষমা চাইতে হবে? দো‘আগুলো বাংলা উচ্চারণসহ জানতে চাই। উক্ত দো‘আগুলো ছালাতের মধ্যে ও ছালাতের বাইরে হাত তুলে করা যাবে কি?
প্রশ্ন (৩০/১৯০) : ‘হা-মীম’ ‘ইয়াসীন’ নাম রাখা কি শরী‘আত সম্মত? ইসলামে নাম রাখার মূলনীতি কী?
প্রশ্ন (৮/৮৮) : মূসা (আঃ) মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর উম্মত হওয়ার জন্য আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছিলেন মর্মে বর্ণিত হাদীছটির সত্যতা আছে কি? - -ছাকিব, বাঘা, রাজশাহী।
প্রশ্ন (১৫/২১৫) : আমাদের মসজিদের ইমাম ছাহেব প্রত্যেক জুম‘আর দিন ফজরের ছালাতের ২য় রাক‘আতে হাত তুলে দো‘আ করেন। এটা শরী‘আতসম্মত কি? - -ইউসুফ আলী, কান্তনগর পূর্বপাড়া, নাটোর।
আরও
আরও
.