উত্তর : উক্ত মর্মে বর্ণিত হাদীছটি ছহীহ (বুখারী হা/৭৫২৭)। মধুর সুরে তেলাওয়াতের অর্থ হচ্ছে নিজ স্বভাবজাত সুরে কুরআনকে শ্রুতিমধুর করে তোলা (নববী, শরহ মুসলিম ৬/৭৮; মির‘আত ৭/২৬৮)। যেমন রাসূল (ছাঃ) অন্যত্র বলেন, ‘তোমাদের (সুমিষ্ট) শব্দ দ্বারা কুরআনকে সৌন্দর্যমন্ডিত কর। কারণ মধুর আওয়াজ কুরআনের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে’ (দারেমী হা/৩৫০৮; ছহীহাহ হা/৭৭১)। বারা ইবনে আযেব (রাঃ) বলেন, আমি রাসূল (ছাঃ)-কে এশার ছালাতে সূরা তীন পড়তে শুনেছি। বস্ত্ততঃ আমি তাঁর চেয়ে মধুর কণ্ঠস্বর আর কারো শুনিনি (বুঃ মুঃ মিশকাত হা/৮৩৪)। আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি যে, মহান আল্লাহ এভাবে উৎকর্ণ হয়ে কোন কথা শোনেন না, যেভাবে সেই মধুরকণ্ঠী পয়গম্বরের (দাঊদ) প্রতি উৎকর্ণ হয়ে শোনেন, যিনি মধুর কণ্ঠে উচ্চস্বরে কুরআন মাজীদ পড়তেন (বুখারী হা/৭৪৮২; মিশকাত হা/২১৯৩)। আবু মূসা আশ‘আরী বলেন, একদা রাসূল (ছাঃ) তাঁকে বললেন, ‘যদি তুমি আমাকে গত রাতে তোমার তেলাওয়াত শোনা অবস্থায় দেখতে তাহ’লে তুমি কতই না খুশী হ’তে! ‘তোমাকে দাউদের সুললিত কণ্ঠের মত মধুর কণ্ঠ দান করা হয়েছে’ (বুঃ মুঃ মিশকাত হা/৬১৯৪)। তবে কুরআনকে শ্রুতিমধুর করে তেলাওয়াত করার আদেশের অর্থ এই নয় যে, কোন গানের আদলে কুরআন তেলাওয়াত করবে। বরং প্রচলিত গানের সুর ও লয়ে কুরআন তেলাওয়াত করা কুরআনের অমর্যাদার শামিল (ইবনুল ক্বাইয়িম, যাদুল মা‘আদ ১/৪৭৪)। অনুরূপভাবে সুরের নামে ক্বারীদের তেলাওয়াতে অতি বাড়াবাড়িও নিন্দনীয়। কেননা রাসূল (ছাঃ) যে কোন ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি নিষিদ্ধ করেছেন ও দুনিয়াবী খ্যাতির উদ্দেশ্যে কোন জ্ঞান অর্জন করতে নিষেধ করেছেন (মুসলিম হা/২৬৭০; তিরমিযী হা/২৬৫৪; মিশকাত হা/২২৫; ছহীহ আত-তারগীব হা/১০৬)। সুতরাং মধ্যমপন্থা বজায় রেখে স্বাভাবিক সুললিত কণ্ঠে তেলাওয়াত করা বাঞ্ছনীয়।
প্রশ্নকারী : মুহাম্মাদ বিল্লাল, ওয়ারী, ঢাকা।