উত্তর : মানুষ হিসাবে সবার প্রতি মানবিক সমবেদনা দেখানো যাবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘তোমরা পৃথিবীবাসীর প্রতি দয়া কর, আসমানবাসী (আল্লাহ) তোমাদের প্রতি দয়া করবেন’ (আবুদাউদ হা/৪৯৪১; মিশকাত হা/৪৯৬৯; ছহীহাহ হা/৯২৫)। জনৈক ইহূদী বালক রাসূল (ছাঃ)-এর খিদমত করত। সে অসুস্থ হ’লে রাসূল (ছাঃ) তাকে দেখতে যান (বুখারী হা/১৩৫৬; মিশকাত হা/১৫৭৪)। অতএব বিদ‘আতী ব্যক্তির বিদ‘আত কুফরী সমতুল্য না হ’লে তার মৃত্যুতে তার মাগফিরাতের জন্য দো‘আ করায় বাধা নেই। যেহেতু সে মুসলিম। সে ফাসেক বা বিদ‘আতী হ’লে সে পাপ তার উপরেই চাপবে (ইবনুল ক্বাইয়িম, জালাউল আফহাম ১৫৯ পৃ.)। ইবনু তায়মিয়াহ (রহঃ) বলেন, মুনাফিক না হ’লে প্রত্যেক মুসলিম- হোক সে ফাসিক কিংবা বিদ‘আতী- তার জানাযা পড়া বা তার জন্য মাগফিরাত কামনা করা জায়েয (মিনহাজুস সুন্নাহ ৫/২৩৫)।
তবে ক্ষেত্রবিশেষে ফিৎনা সৃষ্টিকারী বিদ‘আতীর মৃত্যুতে আনন্দ প্রকাশ করাতে বাধা নেই। কারণ তাদের মৃত্যুতে বিদ‘আতের প্রচার ও প্রসার কমে যাবে। জনৈক বিদ‘আতী আব্দুল মজীদ মারা গেলে আব্দুর রাযযাক ছান‘আনী (রহঃ) বলেন, সে আল্লাহ্র প্রশংসা যিনি আব্দুল মজীদ থেকে উম্মতে মুহাম্মাদীকে রেহাই দিয়েছেন (যাহাবী, সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা ৯/৪৩৫)। ইবনু কাছীর (রহঃ) বলেন, রাফেযী নেতা হাসান বিন ছাফী বিন বাযদান তুর্কী মারা গেলে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের আলেমগণ আনন্দ প্রকাশ করেন এবং আল্লাহ্র প্রশংসা করেন (আল-বিদায়াহ ১২/৩৩৮)। তিনি এক বিদ‘আতীর মৃত্যুসন উল্লেখ করে বলেন, আল্লাহ তা‘আলা এই বছর মুসলমানদেরকে অমুক বিদ‘আতী থেকে রেহাই দেন (আল-বিদায়াহ ১২/৩৩৮)।
তবে মৃতব্যক্তিকে গালমন্দ করা যাবে না। কারণ রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘তোমরা মৃতদের গালি দিয়ো না। কেননা তারা তাদের কর্মফলের প্রতি ধাবিত হয়েছে’ (বুখারী হা/১৩৯৩; মিশকাত হা/১৬৬৪ ‘জানায়েয’ অধ্যায়)। বর্তমান যুগে স্রেফ দলীয় বিদ্বেষবশতঃ কোন ব্যক্তির বিপদে বা মৃত্যুতে যেভাবে উল্লাস প্রকাশ করা হয় ও মিষ্টি বিতরণ করা হয়, তা চরম ধৃষ্টতা ও শিষ্টাচার বিরোধী। এ থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে।
-ইমরান, সিলোনিয়া, দাগনভূঞা, ফেণী।