উত্তর : কুরআন ভুলে যাওয়া মন্দ কাজ। বিশেষতঃ অলসতা বশতঃ এরূপ হলে তা আরো নিন্দনীয়। আবুল ‘আলিয়া (রহঃ) বলেন, আমরা কোন ব্যক্তির কুরআন শিক্ষার পর তা থেকে চোখ ফিরিয়ে রাখার কারণে ভুলে যাওয়াকে বড় পাপ হিসাবে গণ্য করতাম’। ইবনু সীরীন বলেন, কেউ কুরআন ভুলে গেলে লোকেরা তাকে কঠিন ভাষায় ভৎর্সনা করত’ (ইবনু হাজার, ফাৎহুল বারী হা/৫০৩৮-এর আলোচনা, সনদ ছহীহ)। তবে চেষ্টা সত্ত্বেও যদি ভুলে যায়, তবে সে গুনাহগার হবে না। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘তোমরা কুরআনের প্রতি যথাযথভাবে যত্নবান হও। আল্লাহর কসম! উট যেমন বাঁধন ছিঁড়ে চলে যায়, কুরআন তার চেয়ে বেশী দ্রুত চলে যায়’ (বুঃ মুঃ মিশকাত হা/২১৮৭)। তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি কষ্টের সাথে কুরআন মুখস্ত করে, সে দ্বিগুণ ছওয়াব পায়’ (বুঃ মুঃ মিশকাত হা/২১১২)। তিনি বলেন, ‘তোমাদের কেউ যেন এরূপ না বলে যে, আমি কুরআনের অমুক অমুক আয়াত ভুলে গেছি। বরং সে যেন বলে, আমাকে ভুলিয়ে দেওয়া হয়েছে’ (বুঃ মুঃ মিশকাত হা/২১৮৮)।
উল্লেখ্য যে, দু’টি কারণে মানুষ কুরআন ভুলে যায়। (১) মানবীয় স্বভাবজাত কারণ তথা স্মৃতিশক্তির দুর্বলতার কারণে। এভাবে ভুলে গেলে সে গুনাহগার হবে না। রাসূল (ছাঃ) নিজে মাঝে-মধ্যে কুরআন ভুলে যেতেন এবং ছাহাবীগণের তেলাওয়াত শুনে স্মরণ করে নিতেন (বুখারী হা/৫০৩২, ৫০৪২; মুসলিম হা/৭৮৮, ৭৯০; মিশকাত হা/২১৮৮)। (২) অলসতা বা অবহেলার কারণে। এমন কোন কারণে কুরআন ভুলে গেলে গোনাহগার হ’তে হবে (ইবনু তায়মিয়াহ, মাজমূউল ফাতাওয়া ১৩/৪২৩; ফাতাওয়া লাজনা দায়েমাহ ৪/৯৯; উছায়মীন, কিতাবুল ইলম ৯৬-৯৭ পৃ.)।
উল্লেখ্য যে, ‘ক্বিয়ামতের দিন কুরআন পড়ে ভুলে যাওয়া ব্যক্তির মুখের চামড়া থাকবে না’ মর্মে কোন বর্ণনা পাওয়া যায় না। অনুরূপভাবে যে ব্যক্তি কুরআন শিক্ষা করে ভুলে যাবে সে ক্বিয়ামতের দিন অঙ্গহানী অবস্থায় আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করবে মর্মে বর্ণিত হাদীছটি যঈফ (আবুদাঊদ হা/১৪৭৪; মিশকাত হা/২২০০; যঈফুল জামে‘ হা/৫১৩৬, ৫১৫৩)। এছাড়া ‘কুরআন বা কুরআনের কোন আয়াত ভুলে যাওয়া সবচেয়ে বড় গোনাহ‘ মর্মে বর্ণিত হাদীছটিও যঈফ (তিরমিযী, মিশকাত হা/৭২০, যঈফুল জামে‘ হা/৩৭০০)।
প্রশ্নকারী : ওবায়দুল্লাহ, রূপপুর, পাবনা।