উত্তর :
মোবাইল আসক্তি বর্তমান সময়ে নৈতিক অধঃপতনের অন্যতম বড় মাধ্যম। শিশু থেকে
বৃদ্ধ সবাই মোবাইলের কোন না কোন এ্যাপস বা গেম নিয়ে ব্যস্ত থাকে। মোবাইল
আসক্তি থেকে বাঁচতে প্রথমেই সময়ের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন হ’তে হবে।
আল্লাহর দেওয়া নে‘মত এই সময়কে তাঁর ইবাদতে ব্যয় করতে হবে। রাসূল (ছাঃ)
বলেন, ‘ক্বিয়ামতের দিন পাঁচটি প্রশ্নের জবাব প্রদান ব্যতীত আদম সন্তান পা
ফেলতে পারবে না, (১) তার বয়স সম্পর্কে, কিভাবে সে তা অতিবাহিত করেছে। (২)
তার যৌবনকাল, কিভাবে সে তা নিঃশেষ করেছে। (৩) তার ধন-সম্পদ সম্পর্কে,
কিভাবে সে তা উপার্জন করেছে। (৪) উপার্জিত সম্পদ সে কোন খাতে ব্যয় করেছে।
(৫) সে যে ইল্ম শিক্ষা করেছে, সে অনুযায়ী আমল করেছে কি-না’ (তিরমিযী হা/২৪১৬; মিশকাত হা/৫১৯৭; ছহীহাহ হা/৯৪৬)। অন্য হাদীছে রাসূল (ছাঃ) এরশাদ করেন, ‘দু’টি নে‘মতের ব্যাপারে বহু মানুষ ক্ষতির মধ্যে নিমজ্জিত। আর তা হ’ল সুস্থতা ও অবসর’ (বুখারী হা/৬৪১২; মিশকাত হা/৫১৫৫)।
এক্ষণে মোবাইল আসক্তি থেকে রক্ষা পেতে নিম্নের পন্থাগুলো অবলম্বন করা যায়। যেমন- (ক) নফল ইবাদতে বেশী সময় দেওয়া। (খ) হকপন্থী দ্বীনী সংগঠনের সাথে যুক্ত হয়ে কাজ করা। (গ) ছহীহ আক্বীদা সম্পন্ন লেখকদের লিখিত দ্বীনী বই-পত্র পড়াশোনা করা। (ঘ) সমাজসেবামূলক কাজে অংশগ্রহণ করা। (ঙ) বিভিন্ন ইসলামী অনুষ্ঠানে যুক্ত হওয়া। এছাড়া বন্ধুদের সঙ্গে নিজের অভিজ্ঞতা বিনিময় করা, স্ত্রী ও সন্তানদের সময় দেওয়া এবং পিতামাতার খেদমতে সময় ব্যয়ের মাধ্যমেও নিজেকে মোবাইলের আসক্তি থেকে মুক্ত রাখা যেতে পারে।
এছাড়া আরো কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়- যেমন (ক) প্রতিদিন সকালে কুরআন ও হাদীছ পড়ার অভ্যাস ও রাতে বই পড়ার অভ্যাস স্মার্টফোনে আসক্তি অনেকটা কমিয়ে আনে। (খ) ফেসবুক, টুইটারসহ সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমের নোটিফিকেশন বার্তা বন্ধ রাখা। (গ) মোবাইলের সামগ্রিক ব্যবহার কমানোর জন্য নানাবিধ ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। (ঘ) সর্বোপরি পরিবার ও সমাজের প্রতি কর্তব্যবোধ বাড়াতে হবে এবং আল্লাহর সামনে জবাবদিহিতার জন্য নিজেকে সবসময় প্রস্ত্তত রাখতে হবে।
প্রশ্নকারীঃ আব্দুল খালেক, কাজলা, রাজশাহী।