উত্তর :
ইলহাম অর্থ প্রেরণা সৃষ্টি করা। এটি হ’ল এক ধরনের অনুপ্রেরণা, যা
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি কোন প্রকার বাহ্যিক উৎসের যোগসূত্রতা ছাড়াই অন্তরে অনুভব
করেন।
আর ইলক্বা অর্থ নিক্ষেপ করা। অর্থাৎ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির অন্তরে কোন কিছু এমনভাবে প্রতীয়মান হওয়া যাতে তার সব সন্দেহ দূরীভূত হয়ে তিনি নিশ্চিন্ততা অনুভব করেন। যেমন রাসূল (ছাঃ) বলেন, বিগত সকল উম্মতের মাঝে কিছু ‘মুহাদ্দাছ’ বা ইলহামপ্রাপ্ত ব্যক্তি ছিল, যদি আমার উম্মতে এরূপ কোন ব্যক্তি থেকে থাকে. তবে সে হ’ল ওমর ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) (বুখারী হা/৩৪৬৯, মিশকাত হা/৬০২৬)।
ইবনু হাজার আসক্বালানী (রহঃ) বলেন, এ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, ‘ইলহাম’ সত্য এবং এটা গোপন অহী (ফাৎহুলবারী হা/৬৯৯৩-এর ব্যাখ্যা দ্রঃ ১২/৩৮৮)।
‘কাশ্ফ’ অর্থ প্রকাশিত হওয়া। অর্থাৎ আল্লাহ কর্তৃক তার কোন বান্দার নিকট অহী মারফত এমন কিছুর জ্ঞান প্রকাশ করা যা অন্যের নিকট অপ্রকাশিত। আর এটি কেবলমাত্র নবী-রাসূলগণের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। যেমন আল্লাহ বলেন, ‘তিনি অদৃশ্য জ্ঞানের অধিকারী। তিনি তাঁর অদৃশ্যের জ্ঞান কারু নিকট প্রকাশ করেন না’। ‘তাঁর মনোনীত রাসূল ব্যতীত। তিনি তার (অহীর) সম্মুখে ও পশ্চাতে প্রহরী নিযুক্ত করেন’ (জিন ৭২/২৬-২৭)। এখানে ‘রাসূল’ বলতে জিবরীল ও নবী-রাসূলগণকে বুঝানো হয়েছে। তবে কখনও কখনও রীতি বহির্ভূতভাবে অন্য কারু নিকট থেকে অলৈাকিক কিছু ঘটতে পারে বা প্রকাশিত হতে পারে। যেমন ছাহাবী ও তাবেঈগণ থেকে হয়েছে। অতএব এরূপ যদি কোন মুমিন থেকে হয়, তবে সেটা হবে ‘কারামত’। অর্থাৎ আল্লাহ্ তাকে এর দ্বারা সম্মানিত করেন। আর যদি কাফির থেকে ঘটে, তবে সেটা হবে ফিৎনা। অর্থাৎ আল্লাহ এর দ্বারা তার পরীক্ষা নিচ্ছেন যে, সে এর মাধ্যমে তার কুফরী বৃদ্ধি করবে, না তওবা করে ফিরে আসবে।
কাশফ-কারামাত, ইলহাম-ইলক্বা শরী‘আতের কোন দলীল নয় এবং এগুলি আল্লাহর অলী হওয়ারও কোন নিদর্শন নয়। বস্ত্ততঃ মুসলমানদের জন্য অনুসরণীয় দলীল হ’ল কেবলমাত্র কুরআন ও ছহীহ সুন্নাহ (মুওয়াত্ত্বা, মিশকাত হা/১৮৬)।