উত্তর : এখানে ‘গরীব’ বলতে অল্প সংখ্যক লোকদের বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ শেষ যামানায় অল্প সংখ্যক লোকের মধ্যেই খাঁটি ইসলাম কেন্দ্রীভূত হবে। বংশগত ও নামধারী মুসলমানের সংখ্যা বাড়বে। কিন্তু প্রকৃত মুসলমানের সংখ্যা কমবে এবং কমতে কমতে তা এক পর্যায়ে মুষ্টিমেয় লোকদের মাঝে তা কেন্দ্রীভূত হবে। যেমন শুরুতে অল্প সংখ্যক লোকের মাধ্যমে ইসলামের সূচনা হয়েছিল। অতঃপর নবুঅতের বরকতে এবং খেলাফতে রাশেদাহর মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী ইসলামের বিজয় সাধিত হয়। কিন্তু খেলাফতের অবর্তমানে মুসলমানের আদর্শিক অবনতি দ্রুততর হয়, যা ইমাম মাহদীর আগমনের প্রাক্কাল অবধি চলতে থাকবে। একসময় ইসলামের প্রকৃত অনুসারীদের খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হবে। নানাবিধ শিরক ও বিদ‘আতে ডুবে গিয়ে মুসলমান সেগুলিকেই ইসলাম ভাববে। অথচ প্রকৃত ইসলাম হবে তা থেকে অনেক দূরে।
হাদীছটির ব্যাখ্যায় ক্বাযী আয়ায বলেন, ইসলাম শুরু হয়েছিল অল্প সংখ্যক মানুষের দ্বারা। অতঃপর তা প্রকাশিত হয় এবং ছড়িয়ে পড়ে। অতঃপর অচিরেই তাতে আবার ঘাটতি বা কমতি দেখা দিবে। অতঃপর সূচনাকালের ন্যায় অল্প কিছু মানুষের মধ্যেই ইসলাম অবশিষ্ট থাকবে (নববী, শরহ মুসলিম হা/১৪৭-এর ব্যাখ্যা)।
অতঃপর হাদীছটির বাকী অংশে বলা হয়েছে, ‘সুসংবাদ সেই অল্পসংখ্যক লোকদের জন্যই’ (মুসলিম, মিশকাত হা/১৫৯ ‘ঈমান’ অধ্যায়; ‘কুরআন ও সুন্নাহকে দৃঢ় ভাবে ধারণ করা’ অনুচ্ছেদ)।
অন্য বর্ণনায় সেই অল্প সংখ্যক মানুষের পরিচয় দিয়ে রাসূল (ছাঃ) বলেন, সুসংবাদ হ’ল সেই অল্পসংখ্যক লোকদের জন্য। যারা আমার পরে লোকেরা (ইসলামের) যে বিষয়গুলি বিনষ্ট করে, সেগুলিকে পুনঃ সংস্কার করবে’ (আহমাদ হা/১৬৭৩৬; মিশকাত হা/১৭০; ছহীহাহ হা/১২৭৩)। এরাই হ’লেন ফিরক্বা নাজিয়াহ। ৭৩ ফিরক্বার মধ্যে কেবল তারাই শুরুতে জান্নাতী হবে’ (তিরমিযী হা/২৬৪১ প্রভৃতি; মিশকাত হা/১৭১; ছহীহাহ হা/১৩৪৮; বিস্তারিত দ্রষ্টব্য : ‘ফিরক্বা নাজিয়াহ’ বই)।