উত্তর : ইমাম ইবনু তায়মিয়াহ (৬৬১-৭২৮ খৃ.) সালাফে ছালেহীনের মাসলাক অনুসরণকারী একজন যুগশ্রেষ্ঠ মুজতাহিদ ছিলেন। মাসআলা ইসতিম্বাতের সময় তিনি ব্যক্তি নির্বিশেষে সকল ইমামের মাসআলা যাচাই করতেন। ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহঃ) তার অন্যতম অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন। কারণ তাঁর ফৎওয়া সমূহ সর্বাধিক হাদীছ ভিত্তিক ছিল। তিনি কুরআন ও ছহীহ হাদীছ ভিত্তিক ফৎওয়াকে অগ্রাধিকার দিতেন। এমনকি ক্ষেত্র বিশেষে জমহূরের মতামত দলীল ভিত্তিক না হ’লে তিনি তা বাদ দিয়ে হাদীছ ভিত্তিক ফৎওয়া প্রদান করেছেন। যেমন তিনি বলেন,وَلَيْسَ عَلَى أَحَدٍ مِنْ النَّاسِ أَنْ يُقَلِّدَ رَجُلاً بِعَيْنِهِ فِي كُلِّ مَا يَأْمُرُ بِهِ وَيَنْهَى عَنْهُ وَيَسْتَحِبُّهُ إلاَّ رَسُولَ اللهِ صـ... ‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ব্যতীত নির্দিষ্টভাবে কোন এক ব্যক্তির আদেশ বা নিষেধের তাক্বলীদ করা বা তাদের কথাকে মুস্তাহাব বলা কারো জন্য সমীচীন নয়। বরং মুসলমানরা সোনালী যুগ থেকেই মুসলিম বিদ্বানগণের নিকট ফৎওয়া তলব করতেন এবং কখনো এর অনুসরণ করতেন আবার কখনো আরেকজনের অনুসরণ করতেন এবং বিষয়টি দ্বীনের জন্য নিরাপদ ও প্রণিধানযোগ্য হওয়ার কারণে এই ধরনের আমল বিদ্বানগণের সর্বসম্মতিক্রমে জায়েয (মাজমূ‘উল ফাতাওয়া ২৩/৩৮৩)। হাফেয যাহাবী, জালালুদ্দীন সুয়ূতী, ইমাদুদ্দীন ওয়াসেত্বী (রহঃ) তাঁকে অন্যতম শ্রেষ্ঠ মুজতাহিদ হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন (ইবনু রজব, যায়লু তাবাক্বাতিল হানাবিলা ৪/৩৯০; আল-‘উকূদুদ দুর্রিইয়াহ ৩১১ পৃ.; তাবাক্বাতুল হুফফায ৫১৬ পৃ.)। ৮৫ জন জীবনীকার তাঁকে ‘শায়খুল ইসলাম’ বলে আখ্যায়িত করেছেন (নাছিরুদ্দীন দিমাশক্বী, আর রাদ্দুল ওয়াফির ‘আলা মান যা‘আমা.... বই দ্রষ্টব্য)। এছাড়াও হানাফী বিদ্বান মোল্লা আলী ক্বারী হানাফী ইমাম ইবনু তায়মিয়াহর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলি খন্ডন করেছেন (মিরক্বাত ৭/২৭৬৮-৭২)। অতএব ইমাম ইবনু তায়মিয়াহ (রহঃ) একজন যুগশ্রেষ্ঠ সালাফী ও মুজতাহিদ ইমাম ছিলেন। তিনি মুক্বাল্লিদ ছিলেন না।
প্রশ্নকারী : তাজবীরুল হক, চকবাজার, চট্টগ্রাম।