উত্তর : দাজ্জাল পূর্ব থেকেই জীবিত রয়েছে এবং বিখ্যাত ছাহাবী তামীম দারী (রাঃ) ও তার ত্রিশজন সাথী সাগরে পথ হারিয়ে এক দ্বীপে গিয়ে ওঠেন। সেখানে পানির খোঁজে বের হ’লে একজন ব্যক্তির সঙ্গে দেখা হয়। যে তার চুল টেনে নিয়ে চলছিল। অতঃপর তিনি দাজ্জালের কাহিনী বর্ণনা করেন। যেখানে দাজ্জালের বক্তব্য এসেছে এভাবে যে, যদি আমাকে এখান থেকে বের হওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়, তাহ’লে আমি পুরা পৃথিবী ধ্বংস করে দেব মদীনা ব্যতীত। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) লোকদের মাঝে নিয়ে এলেন এবং সে তাদেরকে পূর্ণ বৃত্তান্ত বর্ণনা করে শুনাল। রাসূল (ছাঃ) বললেন, এ শহরটি হ’ল ত্বাইবাহ (মদীনা)। আর সে হ’ল দাজ্জাল’ (মুসলিম হা/২৯৪২ (১২১)। অন্য বর্ণনায় রাসূল (ছাঃ) বলেন, দাজ্জাল শেষ যামানায় খোরাসান থেকে বের হবে’ (তিরমিযী হা/২২৩৭; ইবনু মাজাহ হা/৪০৭২)

অপর বর্ণনায় ফাতেমা বিনতে ক্বায়েস (রাযিয়াল্লাহু ‘আনহা) বলেন, একদিন রাসূল (ছাঃ) এশার ছালাতে দেরীতে এলেন ও বললেন, তামীম দারী আমাকে এমন কিছু ঘটনা বলেছে, যা আমাকে আটকে রেখেছিল। সে বলল, সাগরের কোন এক দ্বীপে তার সাথে এক নারীর সাক্ষাৎ হয়। যার মাথার চুল এত লম্বা যে, তা যমীনে হিঁচড়িয়ে চলে। তামীম দারী তাকে বলল, তুমি কে? সে বলল, আমি গুপ্তচর। অতঃপর সে বলল, ঐ প্রাসাদে প্রবেশ করুন। তখন আমি সেখানে গেলাম ও লোহার শিকলে বাঁধা লম্বা চুলবিশিষ্ট এক ব্যক্তিকে দেখলাম। সে আসমান যমীনের মাঝখানে ছটফট করছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, তুমি কে? সে বলল, আমি দাজ্জাল। সে বলল, নিরক্ষরদের নবীর আবির্ভাব ঘটেছে কি? আমি বললাম, হ্যাঁ। সে বলল, লোকেরা তাঁকে মান্য করছে নাকি অমান্য করছে? আমি বললাম, মান্য করছে। সে বলল, এটাই তাদের জন্য কল্যাণকর’ (আবুদাঊদ হা/৪৩২৫; মিশকাত হা/৫৪৮৪)

উক্ত হাদীছদ্বয়ে বুঝা যায় যে, দাজ্জাল পূর্ব থেকেই জীবিত রয়েছে এবং শেষ যামানায় ক্বিয়ামতের প্রাক্কালে বের হবে। এক্ষণে ইবনু ছাইয়াদকে দাজ্জাল হিসাবে রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবীগণের সন্দেহের কারণ হ’ল, রাসূল (ছাঃ)-কে দাজ্জালের আগমনের সময় সম্পর্কে অবহিত করা হয়নি। সেকারণ তাঁর ও ছাহাবীগণের মনে সন্দেহ ছিল। তবে এই সন্দেহ দূর হয়ে যায় যখন ইবনু ছাইয়াদ হজ্জ সম্পাদন করে। যেমন হাদীছে এসেছে যে, হজ্জের সফরে ইবনু ছাইয়াদ আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ)-কে আপ্যায়ন করতে চাইলে তিনি অনীহা প্রকাশ করেন। এই অবস্থা দেখে ইবনু ছাইয়াদ বলল, হে আবু সাঈদ! লোকেরা আমার ব্যাপারে যেসব কথা বলে তাতে আমার ইচ্ছা হয় যে, আমি একটি রশি নিয়ে সেটা গাছে লটকিয়ে ফাঁসি দিয়ে মরে যাই এবং এ থেকে পরিত্রাণ পাই। তারপর সে বলল, হে আবু সাঈদ! তোমাদের আনছারদের নিকট রাসূল (ছাঃ)-এর কোন হাদীছ গোপন নেই। তুমি কি রাসূল (ছাঃ)-এর হাদীছ সম্বন্ধে সবচেয়ে বেশী জ্ঞাত নও? রাসূল (ছাঃ) কি বলেননি যে, সে ব্যক্তি (দাজ্জাল) কাফির হবে? অথচ আমি মুসলিম। তিনি কি বলেননি যে, দাজ্জাল নিঃসন্তান হবে। অথচ মদীনায় আমি আমার সন্তান রেখে এসেছি। রাসূল (ছাঃ) কি বলেননি যে, দাজ্জাল মক্কা-মদীনায় প্রবেশ করতে পারবে না। অথচ আমি মদীনা থেকে এসেছি। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, তার কথায় আমি তাকে বিশ্বাস করার কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলাম। অতঃপর ইবনু ছাইয়াদ বলল, আল্লাহর কসম! আমি তাকে (দাজ্জালকে) চিনি, তার জন্মস্থান চিনি এবং এখন সে কোথায় আছে, তাও আমি জানি। এ কথা শুনে আমি বললাম, তোমার সারাটা দিন ধ্বংস হোক’ (মুসলিম হা/২৯২৭ (৯১)

উক্ত হাদীছের শেষাংশে ইবনু ছাইয়াদ সন্দেহের তীর ছুঁড়েছে। সেজন্য হাফেয ইবনু হাজার (রহঃ) এই সংক্রান্ত হাদীছগুলির সমন্বয় করে বলেন, তামীম দারী (রাঃ) যে দাজ্জালকে দেখে এসেছেন সে-ই প্রকৃত দাজ্জাল। আর শয়তান ইবনু ছাইয়াদের রূপ ধারণ করে দাজ্জালী কর্মকান্ড ঘটিয়ে রাসূল (ছাঃ) সহ ছাহাবায়ে কেরামকে সন্দেহে নিক্ষেপ করেতে চেয়েছিল। সেজন্য সে হাররার দিন ইছফাহানের দিকে রওয়ানা দিয়ে হারিয়ে যায়। যাকে পরবর্তীতে কোথাও দেখা যায়নি (ফাহুল বারী ১৩/৩৮০)। ‘হাররার দিন’ অর্থ ইয়াযীদের সেনাবাহিনী কর্তৃক মদীনা অবরোধের দিন।

উল্লেখ্য যে, বর্তমান যুগে কোন কোন ব্যক্তি বা দল ইহূদী-খৃষ্টান জগৎ, এমনকি যালেম শাসক, অনৈসলামী মিডিয়া প্রভৃতিকে ‘দাজ্জাল’ আখ্যায়িত করে থাকে। ইসলামী শরী‘আতে যার কোন ভিত্তি নেই।

প্রশ্নকারী : আরিফ খান, ত্রিশাল, ময়মনসিংহ






প্রশ্ন (৩৭/১১৭) : অনেক গৃহকর্তা বা কত্রী কাজের মানুষদের সাথে দাস-দাসীর ন্যায় আচরণ করে থাকে এবং তাদের অনেক নীচু পর্যায়ের বলে মনে করে। তাদেরকে নিম্ন মানের পোষাক, খাবার, আবাসস্থল প্রদান করে। এক্ষণে এরূপ আচরণের পরিণাম এবং এদের সাথে আচরণ কেমন হওয়া উচিত সে সম্পর্কে জানিয়ে বাধিত করবেন।
প্রশ্ন (৩/১২৩) : জনৈক আলেম বলেন, কাউকে সাপে দংশন করলে সূরা ফাতিহা সাতবার পড়ে তার উপর দম করবে। অতঃপর অর্থহীন মন্ত্র পড়তে হবে। যেমন- সিজ্জাতুন তারানি য়্যাতুন মিলহাতু বাহরিন কাফাত্বা। প্রশ্ন হল, উক্ত পদ্ধতিতে ঝাড়ফুঁক করা যাবে কি?
প্রশ্ন (২৮/৬৮): ছালাতের মধ্যে হাঁচি আসলে আলহামদু-লিল্লাহ বলা যাবে কি?
প্রশ্ন (৬/২০৬) : স্বামী স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার পর কতদিন পর্যন্ত খোরপোষ দেওয়ার শারঈ নির্দেশনা রয়েছে? - -মুনীরুল শেখ, পাকুড়, ঝাড়খন্ড, ভারত।
প্রশ্ন (১৩/৩৩৩) : জনৈক বক্তা বলেন, ‘মাক্কী সূরায় মুসলমানদেরকে ‘হে ঈমানদারগণ’ বলা হয়নি। কিন্তু মাদানী সূরায় বলা হয়েছে। এ থেকে বুঝা যায় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ব্যতীত পূর্ণ ঈমানদার হওয়া সম্ভব নয়’। একথা গ্রহণযোগ্য কি?
প্রশ্ন (৩৯/৩৫৯) : হাদীছে বর্ণিত ‘আমীরবিহীন মৃত্যু জাহেলিয়াতের মৃত্যু’ বলতে কি বুঝানো হয়েছে? ভারতের বর্তমান হিন্দু শাসকই কি মুসলমানদের কুরআনে বর্ণিত উলুল আমর? যদি তা না হয় তবে আমাদের এলাকায় শারঈ ইমারত সম্পন্ন কোন জামা‘আত নেই যে আমরা তার আমীরের আনুগত্য করব। - -আব্দুর রাকীব মুর্শিদাবাদ, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত।
প্রশ্ন (৩৭/২৭৭) : অসুস্থ ব্যক্তির দো‘আ ফেরেশতাদের দো‘আর ন্যায়- কথাটির কোন সত্যতা আছে কি? - -আবু তালেব, সেতাবগঞ্জ, দিনাজপুর।
প্রশ্ন (৬/৬) : আমার কাছে অনেক গল্প-উপন্যাসের বই আছে, শরী‘আত মোতাবেক যা পাঠ করা হারাম। এক্ষণে তা বিক্রি করে টাকা নেওয়া যাবে কি? - -ছাদ্দাম হোসাইন, ঢাকা।
প্রশ্ন (২৮/১৪৮) : গোঁফ রাখার ব্যাপারে শরী‘আতের বিধান কি? তা সম্পূর্ণরূপে চেঁছে ফেলা যাবে কি? - -মাহবূবুর রহমান, যোগীপাড়া, নাটোর।
প্রশ্ন (১৪/৪১৪) : আমার পিতা ১০ লক্ষ টাকা ঘুষ দিয়ে আমাকে চাকুরী নিয়ে দিয়েছেন। এক্ষণে আমার জন্য উক্ত চাকুরীর বেতনের টাকা দিয়ে সংসার চালানো জায়েয হচ্ছে কি?
প্রশ্ন (১/২৮১) : শূকরের গোবর সার হিসাবে ব্যবহার করা যাবে কি? এ থেকে উৎপাদিত শাক-সবজি খাওয়ার হুকুম জানতে চাই।
প্রশ্ন (৩৬/৩৯৬) : হজ্জ থেকে ফিরে আসা উপলক্ষে আত্মীয়-স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের নিয়ে খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন করা যাবে কি? - -হারূণুর রশীদ, বংশাল, ঢাকা।
আরও
আরও
.