উত্তর : এক বৈঠকে তিন তালাক এক তালাক গণ্য হয় (মুসলিম হা/১৪৭২; আহমাদ হা/২৮৭৭; হাকেম হা/২৭৯৩)।
কাজেই কেউ তার স্ত্রীকে এক বৈঠকে তিন তালাক দিলে সে স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে
পারে। ইদ্দতের (তিন তোহরের) মধ্যে হ’লে স্বামী সরাসরি স্ত্রীকে ফিরিয়ে
নেবে। ইদ্দত পার হয়ে গেলে উভয়ের সম্মতিতে নতুন বিবাহের মাধ্যমে ফেরত নিবে (বাক্বারাহ ২/২৩২)।
ইবনু আববাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবু রুকানা তার স্ত্রীকে তালাক
দেওয়ার পর দারুণভাবে মর্মাহত হন। তখন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাকে জিজ্ঞেস
করলেন, কিভাবে তালাক দিয়েছ? তিনি বললেন, এক মজলিসে তিন তালাক দিয়েছি।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাকে বললেন, আমি জানি ওটা এক তালাকই হয়েছে। তুমি
স্ত্রীকে ফেরত নাও। অতঃপর তিনি সূরা তালাকের ১ম আয়াতটি পাঠ করে শুনান (আবুদাঊদ হা/২১৯৬; বায়হাক্বী, সুনানুল কুবরা হা/১৪৯৮৬, সনদ হাসান)। এক্ষণে স্বামী ইদ্দতকাল তথা তিন মাসের মধ্যে স্ত্রীকে ফিরিয়ে না নেওয়ায় বিবাহ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে (বাক্বারাহ ২/২২৯)। এমতাবস্থায় স্বামী-স্ত্রী পরস্পরে সম্মত হ’লে নতুন বিবাহের মাধ্যমে পুনরায় ঘর-সংসার করতে পারে (বাক্বারাহ ২/২৩২; তালাক ১; বুখারী হা/৫১৩০; বিস্তারিত দ্রঃ ‘হাদীছ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’ প্রকাশিত ‘তালাক ও তাহলীল’ বই পৃঃ ৩৪-৪০)।
তবে তিন তোহরে তিন তালাক প্রদান করলে এ সুযোগ বন্ধ হয়ে যায়, যতক্ষণ না সে
অন্যত্র বিবাহ করে ও সেখান থেকে স্বাভাবিকভাবে তালাকপ্রাপ্তা হয় (বাক্বারাহ ২/২৩০)।
উল্লেখ্য যে, ‘তাহলীল’ বা হিল্লা ইসলাম-পূর্ব যুগের একটি জাহেলী প্রথা। এর সাথে ইসলামী শরী‘আতের কোন সম্পর্ক নেই। আব্দুল্লাহ বিন মাস‘ঊদ (রাঃ) বলেন, আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) হিল্লাকারী ও যার জন্য হিল্লা করা হয়, উভয়কে লা‘নত করেছেন (আবুদাঊদ হা/২০৭৬; ইবনু মাজাহ হা/১৯৩৫ প্রভৃতি; মিশকাত হা/৩২৯৬-৯৭; ঐ, বঙ্গানুবাদ হা/৪০৬২)। উক্ববা বিন ‘আমের (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, আমি কি তোমাদেরকে ভাড়াটে ষাঁড় সম্পর্কে খবর দিব না? ছাহাবীগণ বললেন, অবশ্যই হে আল্লাহর রাসূল! তিনি বললেন, সে হ’ল ঐ হালালকারী ব্যক্তি। আল্লাহ লা‘নত করেছেন হালালকারী ও যার জন্য হালাল করা হয় উভয়কে’ (ইবনু মাজাহ হা/১৯৩৬; হাকেম হা/২৮০৪, ২/১৯৯ পৃ.; আলবানী, ইরওয়াউল গালীল ৬/৩০৯-১০)।
প্রশ্নকারী : মুহাম্মাদ রিপন মিয়া
আইনজীবী সহকারী, জর্জকোর্ট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
*[শুধু মুহাম্মাদ অথবা আরবীতে অন্যকোন ইসলামী নাম রাখুন(স.স.)]