পূর্ব ১। পূর্ব ২। 

৫. পরমত সহিষ্ণুতা : খোলাফায়ে রাশেদীনের যুগে যিম্মী ও চুক্তিবদ্ধদের সাথে উদারতার অতুলনীয় দৃষ্টান্ত পাওয়া যায়। যেমন (১) ওমর (রাঃ) জনৈক বৃদ্ধ ইহূদীকে দৈহিক অক্ষমতার কারণে তার জিযিয়া মওকুফ করে দেন এবং তার ও তার পরিবার পালনের জন্য মুসলমানদের বায়তুল মাল থেকে ভাতার ব্যবস্থা করেন। তিনি সকল অক্ষম যিম্মীদের জন্য একই নির্দেশ জারি করেন।[1] (২) সিরিয়া সফরের সময় পথিমধ্যে তিনি কিছু খৃষ্টান কুষ্ঠরোগীকে দেখেন। তিনি তাদের জিযিয়া মওকুফ করে দেন এবং তাদের জন্য মুসলমানদের বায়তুল মাল থেকে ভাতার ব্যবস্থা করেন।[2] (৩) ১৬ হিজরীতে ফিলিস্তীন বিজয়ের সময় তিনি বায়তুল মুক্বাদ্দাসে ছালাত আদায়ের সময় খৃষ্টানদের দেখানো স্থানে পড়েননি। যেখানে তাদের ধারণা মতে ঈসাকে শূলবিদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছিল। তিনি বলেন, যদি আমি আজকে এখানে ছালাত আদায় করি, তাহ’লে পরবর্তীকালে মুসলমানরা এটাকে তাদের মুছাল্লা হিসাবে গ্রহণ করবে। তাতে খৃষ্টানদের অধিকার ক্ষুণ্ণ হবে। অতঃপর তিনি সম্মুখে গিয়ে ছালাত আদায় করেন। যেখানে মে‘রাজ রজনীতে রাসূল (ছাঃ) ছালাত আদায় করেছিলেন। যার উপরে বায়তুল মুক্বাদ্দাস মসজিদ নির্মিত হয়েছে।[3] (৪) ওমর (রাঃ)-এর নিকট জনৈকা খৃষ্টান বৃদ্ধা মহিলা আসল। তিনি বললেন, ইসলাম কবুল কর। কেননা আল্লাহ মুহুম্মাদ (ছাঃ)-কে সত্য সহকারে প্রেরণ করেছেন। মহিলা বলল, আমি অতি বৃদ্ধা, আমার মৃত্যু অতি সন্নিকটে। ওমর বললেন, হে আল্লাহ আমি তাকে দাওয়াত দিয়েছি। অথচ তাকে বাধ্য করিনি।[4]

রাসূল (ছাঃ) মদীনার আহলে কিতাবদের সাথে সাক্ষাৎ করতেন। তাদের রোগীদের সেবা করতেন। তাঁর এই পথ ধরে মুসলিম খলীফাগণ ইতিহাসের দীর্ঘ পাতায় একইভাবে পদচারণা করেছেন। যেমন আল্লাহ বলেন,يَآأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُونُوا قَوَّامِينَ لِلَّهِ شُهَدَآءَ بِالْقِسْطِ وَلاَ يَجْرِمَنَّكُمْ شَنَآنُ قَوْمٍ عَلَى أَلاَّ تَعْدِلُوا، اِعْدِلُوا هُوَ أَقْرَبُ لِلتَّقْوَى وَاتَّقُوا اللهَ إِنَّ اللهَ خَبِيرٌم بِمَا تَعْمَلُونَ- ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে সত্য সাক্ষ্য দানে অবিচল থাক এবং কোন সম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্বেষ যেন তোমাদেরকে সুবিচার বর্জনে প্ররোচিত না করে। তোমরা ন্যায়বিচার কর, যা আল্লাহভীতির অধিক নিকটবর্তী। তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে সম্যক অবগত’ (মায়েদাহ ৫/৮)। অন্যদিকে রাসূল (ছাঃ) বলেন,أَلاَ مَنْ ظَلَمَ مُعَاهِدًا أَوِ انْتَقَصَهُ أَوْ كَلَّفَهُ فَوْقَ طَاقَتِهِ أَوْ أَخَذَ مِنْهُ شَيْئًا بِغَيْرِ طِيبِ نَفْسٍ فَأَنَا حَجِيجُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ- ‘সাবধান! তোমাদের কেউ যদি কোন যিম্মীর উপর অত্যাচার করে বা তার হক নষ্ট করে কিংবা তার সামর্থ্যের বাইরে তার উপর কিছু চাপিয়ে দেয় অথবা জোরপূর্বক তার কোন জিনিস নিয়ে নেয়, তবে আমি ক্বিয়ামতের দিন তার বিপক্ষে বাদী হব।[5]

ওমর ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত লোকদের কাছে যিম্মীদের অবস্থার খোঁজ-খবর নিতেন। যেমনভাবে তিনি মুসলিমদের, প্রাদেশিক গবর্ণর ও বিচারকদের খোঁজ-খবর নিতেন।

বাক স্বাধীনতার সীমারেখা : পবিত্র কুরআন মাজীদে আল্লাহ বলেন,لاَ يَنْهَاكُمُ اللهُ عَنِ الَّذِينَ لَمْ يُقَاتِلُوكُمْ فِي الدِّينِ وَلَمْ يُخْرِجُوكُمْ مِنْ دِيَارِكُمْ أَنْ تَبَرُّوهُمْ وَتُقْسِطُوا إِلَيْهِمْ إِنَّ اللهَ يُحِبُّ الْمُقْسِطِينَ- إِنَّمَا يَنْهَاكُمُ اللهُ عَنِ الَّذِينَ قَاتَلُوكُمْ فِي الدِّينِ وَأَخْرَجُوكُمْ مِنْ دِيَارِكُمْ وَظَاهَرُوا عَلَى إِخْرَاجِكُمْ أَنْ تَوَلَّوْهُمْ وَمَنْ يَتَوَلَّهُمْ فَأُولَئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ- ‘দ্বীনের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেনি এবং তোমাদেরকে তোমাদের দেশ থেকে বের করে দেয়নি, তাদের প্রতি সদাচরণ ও ন্যায়বিচার করতে আল্লাহ তোমাদের নিষেধ করেন না। নিশ্চয়ই আল্লাহ ন্যায়পরায়ণদের ভালবাসেন’। ‘আল্লাহ কেবল তাদের সাথে বন্ধুত্ব করতে নিষেধ করেন, যারা দ্বীনের কারণে তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে এবং তোমাদেরকে তোমাদের দেশ থেকে বহিষ্কার করেছে ও তোমাদের বহিষ্কারে সাহায্য করেছে। বস্ত্ততঃ তাদের সাথে যারা বন্ধুত্ব করে, তারাই যালেম’ (মুমতাহিনা ৬০/৮-৯)

ইসলামে ব্যক্তি স্বাধীনতা : ইসলাম মানুষের ব্যক্তি স্বাধীনতাকে যথাযথ গুরুত্ব প্রদান করেছে। কেননা সে সৎকর্মশীল হ’লে পরকালে যথাযথ পুরস্কার পাবে এবং অসৎকর্মী হ’লে সেখানে তার বদলা পাবে (যিলযাল ৯৯/৭-৮; মুমিন ৪০/১৭)

আললাহ বলেন, لَسْتَ عَلَيْهِمْ بِمُصَيْطِرٍ- ‘তুমি তাদের উপরে দারোগা নও’ (গাশিয়াহ ৮৮/২২)। তিনি বলেন,وَمَآ أَنْتَ عَلَيْهِمْ بِجَبَّارٍ فَذَكِّرْ بِالْقُرْآنِ مَنْ يَّخَافُ وَعِيدِ- ‘আর তুমি তাদের উপর যবরদস্তিকারী নও। অতএব তুমি উপদেশ দাও কুরআন দ্বারা, যে আমার শাস্তিকে ভয় করে’ (ক্বা-ফ ৫০/৪৫)। তিনি আরও বলেন,وَمَا جَعَلْنَاكَ عَلَيْهِمْ حَفِيظًا وَّمَآ أَنْتَ عَلَيْهِمْ بِوَكِيلٍ- ‘আর আমরা তোমাকে তাদের উপর তত্ত্বাবধায়ক নিযুক্ত করিনি। আর তুমি তাদের উপর দায়িত্বশীল নও’ (আন‘আম ৬/১০৭)। তিনি বলেন,وَقُلِ الْحَقُّ مِنْ رَّبِّكُمْ فَمَنْ شَآءَ فَلْيُؤْمِنْ وَمَنْ شَآءَ فَلْيَكْفُرْ، ‘তুমি বলে দাও যে, সত্য এসেছে তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ হ’তে। অতএব যে চায় তাতে বিশ্বাস স্থাপন করুক। আর যে চায় তাতে অবিশ্বাস করুক’ (কাহফ ১৮/২৯)। তিনি আরও বলেনفَإِنَّمَا عَلَيْكَ الْبَلاَغُ وَعَلَيْنَا الْحِسَابُ- ‘সর্বাবস্থায় তোমার দায়িত্ব কেবল দাওয়াত পৌঁছে দেওয়া। আর আমাদের দায়িত্ব হিসাব নেওয়া’ (রা‘দ ১৩/৪০)

ইসলামী শরী‘আত প্রত্যেক মানুষের ব্যক্তি স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে। এই স্বাধীনতা মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে মানুষের প্রতি একটি বিরাট অনুগ্রহ। স্বাধীনতা মানুষের স্বভাবজাত বিষয়। আর আল্লাহ মানুষকে যে স্বাধীনতা প্রদান করেছেন। কোন সরকার বা ব্যক্তির এই স্বাধীনতাকে হরণ করা কখনোই উচিৎ নয়।

ব্যক্তি স্বাধীনতার প্রকারভেদ

(১) বেঁচে থাকার অধিকার

(ক) অন্যায়ভাবে মানুষ হত্যা করা নিষিদ্ধ। এটি গোটা মানবতার বিপক্ষে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল। আল্লাহ বলেন,مِنْ أَجْلِ ذَلِكَ كَتَبْنَا عَلَى بَنِي إِسْرَآئِيلَ أَنَّهُ مَنْ قَتَلَ نَفْسًا بِغَيْرِ نَفْسٍ أَوْ فَسَادٍ فِي الْأَرْضِ فَكَأَنَّمَا قَتَلَ النَّاسَ جَمِيعًا، ‘এ কারণেই আমরা বনু ইস্রাঈলের উপর বিধিবদ্ধ করে দিয়েছি যে, যে কেউ জীবনের বদলে জীবন অথবা জনপদে অনর্থ সৃষ্টি করা ব্যতীত কাউকে হত্যা করে, সে যেন সকল মানুষকে হত্যা করল’ (মায়েদাহ ৫/৩২)। (খ) মানুষের বেঁচে থাকার অধিকার সুরক্ষিত হ’লে সমগ্র মানবজাতি উপকৃত হয়। মুসলিম বা অমুসলিম সকলের রক্তপাত নিষিদ্ধ করলে মানবসমাজ ধ্বংস হওয়া থেকে রক্ষা পায়। তার বিপরীত করলে অন্যায়কারীকে সমমানের শাস্তি পেতে হবে। যেমন আল্লাহ বলেন,وَكَتَبْنَا عَلَيْهِمْ فِيهَآ أَنَّ النَّفْسَ بِالنَّفْسِ وَالْعَيْنَ بِالْعَيْنِ وَالْأَنْفَ بِالْأَنْفِ وَالْأُذُنَ بِالْأُذُنِ وَالسِّنَّ بِالسِّنِّ وَالْجُرُوحَ قِصَاصٌ، ‘আর আমরা তাদের উপর বিধিবদ্ধ করেছিলাম যে, জীবনের বিনিময়ে জীবন, চোখের বদলে চোখ, কানের বদলে কান, দাঁতের বদলে দাঁত এবং যখম সমূহের বিনিময়ে যখম’ (মায়েদাহ ৫/৪৫)

আহলে কিতাবদের কোন যিম্মীর সাথে অসদাচরণ করলে সেটিও অত্যন্ত জঘন্য কাজ এবং মুসলমানদের সাথে শত্রুতা পোষণের সমান হিসাবে গণ্য হয়। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, مَنْ قَتَلَ مُعَاهِدًا لَهُ ذِمَّةُ اللهِ وَذِمَّةُ رَسُولِهِ لَمْ يَرَحْ رَائِحَةَ الْجَنَّةِ وَإِنَّ رِيحَهَا لَيُوجَدُ مِنْ مَسِيرَةِ سَبْعِينَ عَامًا- ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নিরাপত্তা গ্রহণের চুক্তিবদ্ধ কোন যিম্মীকে হত্যা করবে, সে জান্নাতের সুগন্ধিও পাবে না। অথচ জান্নাতের সুগন্ধি সত্তুর বছরের দূরতব থেকেই পাওয়া যায়।[6]

বন্দীদশা থেকে মুক্তি লাভের অধিকার : পৃথিবীর প্রায় সকল দেশেই স্বাধীন নাগরিকদের অন্যায়ভাবে পাকড়াও করে বন্দীশালায় নিক্ষেপ করা হয়। তাদের এই দুর্দশা থেকে মুক্ত করা সংশ্লিষ্ট কর্তৃত্বশীলদের অন্যতম কর্তব্য। আল্লাহ বলেন, وَمَآ أَدْرَاكَ مَا الْعَقَبَةُ- فَكُّ رَقَبَةٍ- ‘তুমি কি জানো গিরিসংকট কি? তা হ’ল দাসমুক্তি’ (বালাদ ৯০/১২-১৩)। তিনি আরও বলেন, وَيُطْعِمُونَ الطَّعَامَ عَلَى حُبِّهِ مِسْكِينًا وَّيَتِيمًا وَّأَسِيرًا- ‘তারা আল্লাহর মহববতে অভাবগ্রস্ত, ইয়াতীম ও বন্দীদের আহার্য প্রদান করে’ (দাহর ৭৬/৮)

(২) স্বাধীনভাবে কাজ করার অধিকার : আল্লাহ প্রত্যেক মানুষকে ভিন্ন ভিন্ন মেধা ও যোগ্যতা দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। সে তার মেধা দিয়ে স্বাধীনভাবে বৈধ কাজ করবে। এতে তার নিজের, পারিবারের, সমাজের ও দেশের প্রভূত কল্যাণ সাধিত হবে। আর এই প্রতিভা ও সৃজনশীলতার যোগ্যতা মহান রবের অপার দান। আল্লাহ বলেন,وَرَفَعَ بَعْضَكُمْ فَوْقَ بَعْضٍ دَرَجَاتٍ لِيَبْلُوَكُمْ فِي مَا آتَاكُمْ، ‘এবং তোমাদের একের উপর অপরের মর্যাদা সমুন্নত করেছেন, যাতে তিনি তোমাদেরকে যা দিয়েছেন, তাতে পরীক্ষা নিতে পারেন’ (আন‘আম ৬/১৬৫)। অন্যত্র তিনি বলেন, وَلَوْ شَآءَ اللهُ لَجَعَلَكُمْ أُمَّةً وَّاحِدَةً وَلَكِنْ لِّيَبْلُوَكُمْ فِي مَآ آتَاكُمْ، ‘আল্লাহ চাইলে তোমাদের সবাইকে এক দলভুক্ত করে দিতেন। কিন্তু তিনি চান তোমাদেরকে যে বিধানসমূহ দিয়েছেন, তাতে তোমাদের পরীক্ষা নিতে’ (মায়েদাহ ৫/৪৮)

একটি সামাজকে সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার সমন্বয়ে সক্ষমতার উন্মেষ ঘটাতে হয়। প্রতিটি ক্ষেত্রে মানুষ অপরের কল্যাণকর কাজে নিয়োজিত থাকে। যাতে তারা একে অপর থেকে উপকার নিতে পারে। আল্লাহ বলেন, أَهُمْ يَقْسِمُونَ رَحْمَتَ رَبِّكَ نَحْنُ قَسَمْنَا بَيْنَهُمْ مَعِيشَتَهُمْ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَرَفَعْنَا بَعْضَهُمْ فَوْقَ بَعْضٍ دَرَجَاتٍ لِّيَتَّخِذَ بَعْضُهُمْ بَعْضًا سُخْرِيًّا، وَرَحْمَتُ رَبِّكَ خَيْرٌ مِّمَّا يَجْمَعُونَ- ‘তবে কি তারা তোমার প্রতিপালকের রহমত বণ্টন করবে? অথচ আমিই তাদের মধ্যে তাদের জীবিকা বণ্টন করি তাদের পার্থিব জীবনে এবং তাদেরকে একে অপরের উপর মর্যাদায় উন্নত করি। যাতে তারা একে অপর থেকে কাজ নিতে পারে। বস্ত্ততঃ তারা যা জমা করে তা থেকে তোমার প্রতিপালকের রহমত অনেক উত্তম’ (যুখরুফ ৪৩/৩২)

এর মধ্যে অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার উৎস নিহিত রয়েছে। প্রথমতঃ বলা হয়েছে জীবিকার মালিকানা আল্লাহর। অতএব আল্লাহর বিধানমতে হালাল পথেই এর আয় ও ব্যয় বন্টন করতে হবে। এর ফলে পুঁজিবাদী অর্থনীতিকে সমূলে ধ্বংস করা হয়েছে। দ্বিতীয়তঃ মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে মানুষের মধ্যে উঁচু-নীচু ভেদাভেদ থাকবেই। কিন্তু একে অপরের মুখাপেক্ষী হওয়ায় প্রত্যেকে প্রত্যেকের প্রতি যথাযোগ্য মানবিক মর্যাদা ও অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার রাখতে হবে। তৃতীয়তঃ রূযীর মালিক আল্লাহ। কোন অবস্থাতেই তাঁর রূযী থেকে কেউ বঞ্চিত হবে না। ফলে ইসলামী সমাজে অর্থনৈতিক অগ্রগতি সদা চলমান থাকে।

(৩) ব্যক্তিগত নিরাপত্তার অধিকার : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, كُلُّ الْمُسْلِمِ عَلَى الْمُسْلِمِ حَرَامٌ دَمُهُ وَمَالُهُ وَعِرْضُهُ، ‘প্রত্যেক মুসলিমের জন্য অপর মুসলিমের উপর তার জান-মাল ও ইযযত হারাম করা হ’ল।[7] বিদায় হজ্জের দিন রাসূল (ছাঃ) বলেন,فَإِنَّ دِمَاءَكُمْ وَأَمْوَالَكُمْ وَأَعْرَاضَكُمْ بَيْنَكُمْ حَرَامٌ كَحُرْمَةِ يَوْمِكُمْ هَذَا فِى شَهْرِكُمْ هَذَا فِى بَلَدِكُمْ هَذَا، ‘নিশ্চয়ই তোমাদের রক্ত, তোমাদের সম্পদ এবং তোমাদের পারস্পরিক সম্মান এই দিন, এই মাস এবং তোমাদের এই শহরের মতই হারাম বা সম্মানিত’।[8] তিনি আরও বলেন, سِبَابُ الْمُسْلِمِ فُسُوقٌ وَقِتَالُهُ كُفْرٌ ‘মুসলমানকে গালি দেওয়া গোনাহের কাজ এবং তার সাথে যুদ্ধ করা কুফরী।[9] উপরোল্লিখিত হাদীছ সমূহ থেকে প্রমাণিত হয় যে, প্রত্যেক মুসলিমের জান-মাল ও ইযযতের ক্ষতি সাধন করা নিষিদ্ধ।

ঘর-বাড়ীর নিরাপত্তা : মানুষের প্রয়োজনীয় বিষয় সমূহের মধ্যে অতীব গুরুত্বপূর্ণ হ’ল তার বসবাসের গৃহ। আর এর নিরাপত্তা আল্লাহর এক বিশেষ নে‘মত। আল্লাহ বলেন,وَاللهُ جَعَلَ لَكُمْ مِنْ بُيُوتِكُمْ سَكَنًا وَّجَعَلَ لَكُمْ مِنْ جُلُودِ الْأَنْعَامِ بُيُوتًا تَسْتَخِفُّونَهَا يَوْمَ ظَعْنِكُمْ وَيَوْمَ إِقَامَتِكُمْ، ‘আল্লাহ তোমাদের জন্য তোমাদের গৃহকে করেছেন আবাসস্থল এবং পশুচর্মের দ্বারা তোমাদের জন্য করেছেন তাঁবুর ব্যবস্থা। যা তোমরা সফরকালে সহজে বহন করতে পার এবং অবস্থান কালে সহজে ব্যবহার করতে পার’ (নাহল ১৬/৮০)

বিনা অনুমতিতে কারু গৃহে প্রবেশ করা বা উঁকি মারা নিষিদ্ধ। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন,لَوْ أَنَّ امْرَءاً اطَّلَعَ بِغَيْرِ إِذْنِكَ فَحَذَفْتَهُ بِحَصَاةٍ فَفَقَأْتَ عَيْنَهُ مَا كَانَ عَلَيْكَ جُنَاحٌ- ‘কেউ যদি তোমার বিনা অনুমতিতে বাড়ীতে উঁকি মারে, আর তুমি পাথর নিক্ষেপ করে তার চক্ষু নষ্ট করে দাও, তবে তোমার কোনই পাপ হবেনা’।[10] একবার জনৈক ব্যক্তি নবী (ছাঃ)-এর একটি হুজরায় উঁকি মারল। তখন তিনি তাকে লক্ষ্য করে একটি দীর্ঘ ও তীক্ষ্ণ ছুরি নিয়ে দাঁড়ালেন এবং তার অগোচরে তাকে খোঁচা দেওয়ার সুযোগ তালাশ করতে লাগলেন (বুখারী হা/৬২৪২)

মু‘আবিয়া (রাঃ)-এর যুগে বাক স্বাধীনতা : ইসলামের সোনালী যুগের জনসাধারণের বাক স্বাধীনতা ছিল অতুলনীয়। হযরত মু‘আবিয়া (রাঃ) বলতেন, আমি লোকদের বাক স্বাধীনতায় ততক্ষণ হস্তক্ষেপ করব না, যতক্ষণ না তারা আমার ও আমার খেলাফতের বিরোধিতা না করবে।[11]

আবু মুসলিম খাওলানী : তিনি ছিলেন ওলামায়ে রববানীদের একজন। হক কথা বলায় তিনি কারু তোয়াক্কা করতেন না। একদিন তিনি খলীফা মু‘আবিয়ার সামনে এসে তাকে উপদেশ দিয়ে বলেন, আপনি আরবদের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করবেন না। তাতে আপনার ন্যায়বিচার প্রশ্নবিদ্ধ হবে।[12] আত্বিইয়াহ বিন ক্বায়েস থেকে বর্ণিত আবুবকর বিন মারিয়াম বলেন, আবু মুসলিম একদিন মু‘আবিয়া (রাঃ)-এর দরবারে প্রবেশ করলেন। তিনি সাধারণ লোকদের মধ্যে দাঁড়িয়ে বললেন,اَلسَّلاَمُ عَلَيْكَ أَيُّهَا الْأَجِيْرُ হে কর্মকর্তা, আপনার উপরে শান্তি বর্ষিত হোক! লোকেরা বলল, আমীর বলুন। মু‘আবিয়া বললেন, তাঁকে বলতে দাও। কেননা তিনি যা বলতে চাচ্ছেন, তা তিনি ভালোভাবে জানেন’। অতঃপর তিনি বললেন, وَعَلَيْكَ السَّلاَمُ يَا أَبَا مُسْلِمٍ আপনার প্রতিও শান্তি বর্ষিত হোক হে আবু মুসলিম’! অতঃপর তিনি প্রজাদের উপর আমীরের দায়িত্ব ও কর্তব্য সমূহ স্মরণ করিয়ে দিলেন।[13]

অমুসলিমদের ধর্মীয় স্বাধীনতায় ইসলামের নীতি :

(১) হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, একটি ইহূদী বালক রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সেবা করত। সে তাঁর ওযূর পানি এনে দিত ও জুতা গুছিয়ে দিত। একসময় সে পীড়িত হ’ল। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তার বাড়ীতে তাকে দেখতে গেলেন ও মাথার কাছে বসলেন। অতঃপর ছেলেটির শেষ অবস্থা বুঝতে পেরে তিনি তাকে বললেন, তুমি ইসলাম কবুল কর’। ছেলেটি তার পিতার দিকে তাকাল। পিতা তাকে বলল,أَطِعْ أَبَا الْقَاسِمِ ‘তুমি আবুল ক্বাসেম-এর কথা মেনে নাও। তখন ছেলেটি কালেমা শাহাদাত পাঠ করে ইসলাম কবুল করল। অতঃপর মারা গেল। এরপর রাসূল (ছাঃ) বের হবার সময় বললেন, الْحَمْدُ للهِ الَّذِى أَنْقَذَهُ بِىْ مِنَ النَّارِ- ‘আল্লাহর জন্য সকল প্রশংসা। যিনি তাকে আমার মাধ্যমে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিলেন’।[14] 

এখানে শিক্ষণীয় বিষয় এই যে, নিজের বাড়ীর কাজের ছেলে হওয়া সত্ত্বেও রাসূল (ছাঃ) কখনো তাকে বা তার ইহূদী পরিবারকে ইসলাম কবুলের জন্য চাপ দেননি। 

(২) ওমর ফারূক (রাঃ) স্বীয় খেলাফতকালে একবার তার খ্রিষ্টান গোলাম উসাক্বকে ইসলামের দাওয়াত দেন। কিন্তু সে অস্বীকার করে। তখন তিনি لاَ إِكْرَاهَ فِي الدِّينِ، (‘দ্বীনের ব্যাপারে কোন যবরদস্তি নেই’) আয়াতাংশটি পাঠ করেন। অতঃপর বলেন,يَا أُسَقُ لَوْ أَسْلَمْتَ، لاسْتَعَنَّا بِكَ عَلَى بَعْضِ أُمُورِ الْمُسْلِمِينَ ‘হে উসাক্ব! যদি তুমি ইসলাম কবুল করতে, তাহ’লে মুসলমানদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আমি তোমার নিকট থেকে সাহায্য নিতাম’।[15] অতঃপর তিনি তাকে মুক্ত করে দিলেন।[16]

(৩) ওমর ফারূক (রাঃ) স্বীয় খেলাফতকালে ১৫ হিজরীতে বায়তুল মুক্বাদ্দাস বিজয় উপলক্ষ্যে ফিলিস্তীন যাওয়ার পথে ওযূর পানি তলব করেন। তখন রাস্তার পাশের এক বাড়ী থেকে তাঁকে পানি এনে দেওয়া হয়। অতঃপর ওযূ শেষে তিনি বললেন, কোথা থেকে এ পানি আনলে? কোন কুয়ার পানি বা বৃষ্টির পানি তো এত সুমিষ্ট পাইনি। বলা হ’ল যে, ঐ বৃদ্ধা খ্রিষ্টান মহিলার বাড়ী থেকে এনেছি। তখন ওমর (রাঃ) তার কাছে গেলেন ও বললেন,أَيَّتُهَا الْعَجُوزُ أَسْلِمِي تَسْلَمِي بَعَثَ اللهُ مُحَمَّدًا صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالْحَقِّ- ‘হে বৃদ্ধা! ইসলাম কবুল কর। (জাহান্নাম থেকে) বেঁচে যাবে। আল্লাহ মুহাম্মাদ (ছাঃ)-কে সত্য সহকারে প্রেরণ করেছেন’। তখন বৃদ্ধা তার মাথা আলগা করে দেখালো কাশফুলের মত(مِثْلُ الثَّغَامَةِ) ধবধবে সাদা একরাশ চুল। অতঃপর বলল,وَأَنَا اَمُوْتُ الْآنَ ‘আমি এখন মৃত্যুর দুয়ারে আছি’। একথা শুনে ওমর (রাঃ) বললেন, اَللَّهُمَّ اشْهَدْ ‘হে আল্লাহ তুমি সাক্ষী থাক’ (যে, আমি তাকে ইসলামের দাওয়াত দিয়েছি)। কুরতুবী বর্ধিতভাবে লিখেছেন, অতঃপর তিনিلاَ إِكْرَاهَ فِي الدِّينِ، আয়াতাংশটি পাঠ করলেন।[17]

এখানে শিক্ষণীয় বিষয় এই যে, সে সময়কার খৃষ্টান বিশ্ব যে ওমরের কাছে আত্মসমর্পণ করেছিল এবং যখন ফিলিস্তীনের খৃষ্টান নেতারা তাঁকে অভ্যর্থনার জন্য প্রস্ত্তত, সে অবস্থায় তিনি একজন দুর্বল খৃষ্টান বৃদ্ধার প্রতিও ইসলাম কবুলের জন্য চাপ দেননি।

এরূপ অসংখ্য নযীর ইসলামী খেলাফতের পরতে পরতে রয়েছে। অথচ ইসলাম হ’ল মানবজাতির জন্য আল্লাহর মনোনীত সর্বশেষ ও পূর্ণাঙ্গ দ্বীন।[18] আর ইসলাম কবুল না করলে মানুষকে অবশ্যই পরকালে জাহান্নামী হ’তে হবে।[19] এরপরেও রাসূলুল্লাহ (ছাঃ), খোলাফায়ে রাশেদীন ও ছাহাবায়ে কেরাম মানুষকে কেবল ইসলামের দাওয়াত দিয়েছেন। কিন্তু কারু প্রতি ইসলাম কবুলের জন্য চাপ প্রয়োগ করেননি।[20]

বিদায় হজ্জের ভাষণে আইয়ামে তাশরীক্বের মধ্যবর্তী দিনে রাসূল (ছাঃ) বলেন,يَا أَيُّهَا النَّاسُ، إِنَّ رَبَّكُمْ وَاحِدٌ، وَإِنَّ أَبَاكُمْ وَاحِدٌ، أَلاَ لاَ فَضْلَ لِعَرَبِيٍّ عَلَى عَجَمِيٍّ، وَلاَ لِعَجَمِيٍّ عَلَى عَرَبِيٍّ، وَلاَ لِأَحْمَرَ عَلَى أَسْوَدَ، وَلاَ أَسْوَدَ عَلَى أَحْمَرَ، إِلاَّ بِالتَّقْوَى، إِنَّ أَكْرَمَكُمْ عِنْدَ اللهِ أَتْقَاكُمْ، أَلاَ هَلْ بَلَّغْتُ؟ قَالُوا: بَلَى يَا رَسُولَ اللهِ، قَالَ: فَلْيُبَلِّغِ الشَّاهِدُ الْغَائِبَ، ‘হে জনগণ! নিশ্চয় তোমাদের পালনকর্তা মাত্র একজন। তোমাদের পিতাও মাত্র একজন। মনে রেখ! আরবের জন্য অনারবের উপর, অনারবের জন্য আরবের উপর, লালের জন্য কালোর উপর এবং কালোর জন্য লালের উপর কোনরূপ প্রাধান্য নেই আল্লাহভীরুতা ব্যতীত’। নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্যে আল্লাহর নিকট সর্বাধিক সম্মানিত সেই ব্যক্তি, যে তোমাদের মধ্যে সর্বাধিক আল্লাহভীরু। তিনি বলেন, আমি কি তোমাদের নিকট পৌঁছে দিলাম? লোকেরা বলল, হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসূল! তিনি বললেন, অতএব উপস্থিতগণ যেন অনুপস্থিতদের নিকট পৌঁছে দেয়’।[21]

এই ভাষণের পর তিনি আর মাত্র ৭৭ দিন দুনিয়াতে বেঁচে ছিলেন। আল্লাহ বলেন,يَآأَيُّهَا النَّاسُ إِنَّا خَلَقْنَاكُمْ مِنْ ذَكَرٍ وَّأُنْثَى وَجَعَلْنَاكُمْ شُعُوبًا وَّقَبَآئِلَ لِتَعَارَفُوا، إِنَّ أَكْرَمَكُمْ عِنْدَ اللهِ أَتْقَاكُمْ إِنَّ اللهَ عَلِيمٌ خَبِيرٌ- ‘হে মানুষ! আমরা তোমাদের সৃষ্টি করেছি একজন পুরুষ ও নারী থেকে। অতঃপর তোমাদের বিভক্ত করেছি বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে, যাতে তোমরা পরস্পরে পরিচিত হ’তে পার। নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্যে আল্লাহর নিকট সর্বাধিক সম্মানিত ঐ ব্যক্তি, যে তোমাদের মধ্যে সর্বাধিক আল্লাহভীরু। অবশ্যই আল্লাহ সর্বজ্ঞ ও তোমাদের ভিতর-বাহির সবকিছু অবগত’ (হুজুরাত ৪৯/১৩)

এতে বুঝা যায় যে, মানুষের মধ্যে বিভিন্ন দল ও সম্প্রদায়ের সৃষ্টি করা হয়েছে পরস্পরের পরিচিতির জন্য। একে অপরের উপর আধিপত্য বিস্তারের জন্য নয়। অত্র আয়াতে ধর্ম, বর্ণ, ভাষা ও অঞ্চল ভিত্তিক সংকীর্ণ জাতীয়তাবাদের বিপরীতে ইসলামের বিশ্ব জাতীয়তার উদার নীতি দ্ব্যর্থহীনভাবে বর্ণিত হয়েছে। খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা, ধর্মীয় স্বাধীনতা, বাক ও ব্যক্তি স্বাধীনতা প্রভৃতি মানুষের মৌলিক অধিকার সমূহ কেবলমাত্র ইসলামী খেলাফতেই নিরাপদ থাকতে পারে। বাকী সকল শাসন ব্যবস্থায় মানুষ মানুষের দাসত্বের শৃংখলে আবদ্ধ থাকে। আল্লাহ আমাদেরকে ইসলামের সুমহান আদর্শের প্রতি অনুগত হওয়ার তাওফীক দান করুন- আমীন!


[1]. হামাদ মুহাম্মাদ আছ-ছামাদ, নিযামুল হুক্ম ফী ‘আহদিল খুলাফাইর রাশেদীন ১৭৭ পৃ.; আলী ছাল্লাবী, আল-হুর্রিইয়াত মিনাল কুরআন ১১৭ পৃ.।

[2]. হামাদ মুহাম্মাদ আছ-ছামাদ, নিযামুল হুক্ম ফী ‘আহদিল খুলাফাইর রাশেদীন ১৭৯ পৃ.।

[3]. ইবনু কাছীর, আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ ৭/৫৫-৫৮।

[4]. আলী ছাল্লাবী, আমীরুল মুমিনীন ওমর ইবনুল খাত্ত্বাব ১/১৩৪।

[5]. আবুদাঊদ হা/৩০৫২; মিশকাত হা/৪০৪৭; ছহীহাহ হা/৪৪৫।

[6]. ইবনু মাজাহ হা/২৬৮৭ রাবী আবু হুরায়রা (রাঃ); ছহীহাহ হা/২৩৫৬।

[7]. মুসলিম হা/২৫৬৪; মিশকাত হা/৪৯৫৯ রাবী আবু হুরায়রা (রাঃ)।

[8]. বুখারী হা/৬৭; মিশকাত হা/২৬৭০ রাবী আমর ইবনুল আহওয়াছ (রাঃ)।

[9]. বুখারী হা/৪৮; মুসলিম হা/৬৪; মিশকাত হা/৪৮১৪ রাবী আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ)।

[10]. আহমাদ হা/৭৩১১ রাবী আবু হুরায়রা (রাঃ); ছহীহুল জামে‘ হা/৫২৪৬।

[11]. আলী ছাল্লাবী, মু‘আবিয়া বিন আবু সুফিয়ান ২০৩ পৃ.।

[12]. যাহাবী, সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা ৪/১৩; ইবনু ‘আসাকির, তারীখু দিমাশক্ব ২৭/২২৩।

[13]. সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা ৪/১৩; ইবনু ‘আসাকির, তারীখু দিমাশক্ব ২৭/২২৪।

[14]. আবুদাঊদ হা/৩০৯৫; আহমাদ হা/১৩৩৯৯; বুখারী হা/১৩৫৬; মিশকাত হা/১৫৭৪; ইবনু কাছীর, তাফসীর সূরা আলে ইমরান ১৯ আয়াত।

[15]. ইবনু কাছীর, তাফসীর সূরা বাক্বারাহ ২৫৬ আয়াত; তাফসীর ইবনু আবী হাতেম হা/২৬৫৪। সনদ যঈফ হ’লেও ঘটনা হিসাবে উল্লেখ করা হ’ল।

[16]. মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ হা/১২৬৯০।

[17]. বায়হাক্বী হা/১২৮ ‘তাহারৎ’ অধ্যায় ১/৩২ পৃ.; দারাকুৎনী হা/৬০-৬১; কুরতুবী, তাফসীর সূরা বাক্বারাহ ২৫৬ আয়াত; আল-বিদায়াহ ৭/৫৬।

[18]. আলে ইমরান ৩/১৯, মায়েদাহ ৫/৩।

[19]. মুসলিম হা/১৫৩ ‘ঈমান’ অধ্যায়, ৭০ অনুচ্ছেদ; মিশকাত হা/১০।

[20]. দ্র. লেখক প্রণীত ‘ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ’ বই।

[21]. বায়হাক্বী শো‘আব হা/৫১৩৭; আহমাদ হা/২৩৫৩৬ রাবী জাবের বিন আব্দুল্লাহ (রাঃ); ছহীহাহ হা/২৭০০; দ্র. মাননীয় লেখক প্রণীত ‘সীরাতুর রাসূল (ছাঃ)’ ৩য় মুদ্রণ ‘আইয়ামে তাশরীক্বের ২য় দিনের ভাষণ’ অনুচ্ছেদ।






বিষয়সমূহ: বিবিধ
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের কর্তব্য - প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
আল্লাহকে উত্তম ঋণ - প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
ইসলামে বাক স্বাধীনতা (শেষ কিস্তি) - প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
ইসরা ও মি‘রাজ - প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
খৃষ্টান-মুসলিম সম্পর্ক - প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
সমাজ পরিবর্তনের স্থায়ী কর্মসূচী (পূর্ব প্রকাশিতের পর) - প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
ইনছাফ ও ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠা - প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
আছহাবে কাহফ-এর শিক্ষা
নবচন্দ্র সমূহ - প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
মূল্যবোধের অবক্ষয় ও আমাদের করণীয় - প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
মুমিনের গুণাবলী - প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
আমর বিল মা‘রূফ ও নাহী ‘আনিল মুনকার - প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
আরও
আরও
.