উত্তর : ‘মুক্বীম’ অবস্থায় ৭ ভাগে কুরবানী করার কোন দলীল পাওয়া যায় না। তাই একটি পরিবারের পক্ষ থেকে একটি পশু কুরবানী করাই যথেষ্ট। তবে সামর্থ্য থাকলে একাধিক পশুও কুরবানী করতে পারবে। ‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) নিজ হাত দ্বারা দু’টি শিংওয়ালা দুম্বা কুরবানী করেছেন’ (ছহীহ বুখারী হা/৫৫৬৪-৬৫; ছহীহ মুসলিম, মিশকাত হা/১৪৫৩ প্রভৃতি)। কখনও তিনি দু’-এর অধিক দুম্বা, খাসী, বকরী (ছাগল), গরু ও উট কুরবানী করেছেন (ফাৎহুল বারী ১০/৯ পৃঃ ৫৭; মিরা‘আত হা/১৪৭৪, ২/৩৫৪ পৃঃ)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বিদায় হজ্জে আরাফার দিনে সমবেত জনমন্ডলীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّ عَلَى كُلِّ أَهْلِ بَيْتٍ فِى كُلِّ عَامٍ أُضْحِيَةً ‘হে জনমন্ডলী! নিশ্চয়ই প্রতিটি পরিবারের উপরে প্রতি বছর একটি করে কুরবানী’ (সনদ ছহীহ, আলবানী-ছহীহ তিরমিযী হা/১২২৫; ছহীহ আবুদাউদ হা/২৪২১; ছহীহ নাসাঈ হা/৩৯৪০; ছহীহ ইবনে মাজাহ হা/২৫৩৩; মিশকাত হা/১৪৭৮)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর মৃত্যুর পরেও তাঁর সুন্নাত অনুযায়ী ছাহাবীগণের  মধ্যে প্রত্যেক পরিবারের পক্ষ থেকে একটা করে বকরী কুরবানী করার প্রচলন ছিল (ছহীহ তিরমিযী হা/১২১৬ ‘কুরবানী’ অধ্যায়; ছহীহ ইবনে মাজাহ হা/২৫৩৩ ‘নিজ পরিবারের পক্ষ হ’তে একটা বকরী কুরবানী করা’ অনুচ্ছেদ, ‘কুরবানী’ অধ্যায়)। প্রখ্যাত ছাহাবী আবু ছারীহা (রাঃ) বলেন, ‘একটি পরিবারের পক্ষ থেকে একটা অথবা দু’টা করে বকরী কুরবানী করা হ’ত (ছহীহ ইবনে মাজাহ হা/২৫৪৭)।’

ভাগা কুরবানী : সফরে থাকাকালীন সময়ে ঈদুল আযহা উপস্থিত হ’লে একটি পশুতে একে অপরে শরীক হয়ে ভাগে কুরবানী করা যায়। নিম্নে দলীল সহ বর্ণিত হ’ল-

(ক) আব্দুল্লাহ ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, كُنَّا مَعَ رَسُولِ اللهِ -صلى الله عليه وسلم- فِى سَفَرٍ فَحَضَرَ الأَضْحَى فَاشْتَرَكْنَا فِى الْبَقَرَةِ سَبْعَةً وَفِى الْبَعِيرِ عَشَرَةً অর্থ : আমরা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সাথে এক সফরে ছিলাম। এমতাবস্থায় কুরবানীর ঈদ উপস্থিত হ’ল। তখন আমরা সাত জন একটি গরুতে ও দশ জন একটি উটে শরীক হ’লাম (তিরমিযী, ইবনে মাজাহ, নাসাঈ, মিশকাত হা/১৪৬৯)

(খ) জাবির (রাঃ) বলেন, نَحَرْنَا مَعَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بالْحُدَيْبِيَةِ الْبُدَنَةَ عَنْ سَبْعَةٍ وَالْبَقَرَةَ عَنْ سَبْعَةٍ ‘হুদায়বিয়ার সফরে আমরা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সাথে ছিলাম। তখন একটি গরুতে সাত জন ও একটি উটে সাত শরীক হয়ে কুরবানী করেছিলাম’ (মুসলিম, আবুদাউদ, তিরমিযী,  ইবনে মাজাহ, মিশকাত হা/২৬৩৬)

(গ) জাবির (রাঃ) বলেন, حَجَجْنَا مَعَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَنَحَرْنَا الْبَعِيرَ عَنْ  سَبْعَةٍ وَالْبَقَرَةَ عَنْ سَبْعَةٍ‘আমরা রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে হজ্জের সফরে ছিলাম। তখন সাত জনের পক্ষ থেকে একটি উট এবং সাত জনের পক্ষ থেকে একটি গরু কুরবানী করেছিলাম’ (মুসলিম হা/৩২৪৯)

(ঘ) উক্ত জাবির (রাঃ) বলেন, كُنَّا نَتَمَتَّعُ مَعَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَنَذْبَحُ الْبَقَرَةَ عَنْ سَبْعَةٍ ‘আমরা নবী করীম (ছাঃ)-এর সঙ্গে তামাত্তু হজ্জের সফরে ছিলাম। তখন সাত জনে মিলে একটি গরু কুরবানী করেছিলাম’ (মুসলিম হা/৩২৫২, নাসাঈ হা/৪৩৯৩, আবুদাউদ হা/২৮০৭)। উলে­খ্য যে, জাবির (রাঃ) বর্ণিত এ মর্মে আরো হাদীছ রয়েছে। 

উপরোক্ত আলোচনা থেকে মুক্বীম ও মুসাফির অবস্থায় কুরবানী করার বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে।

বিভ্রান্তির কারণ : মুক্বীম অবস্থায় শুধু সাত জন মিলে নয়; বরং সাতটি পরিবারের পক্ষ থেকে একটি গরু কুরবানী করার প্রথা সমাজে চালু হওয়ার কারণ সম্ভবতঃ জাবির (রাঃ) বর্ণিত নিম্নের ব্যাখ্যা শূন্য হাদীছটি, যা শুধু আবুদাঊদে বর্ণিত হয়েছে। قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّي اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْبَقَرَةُ عَنْ سَبْعَةٍ وَالْجَزُورُ عَنْ سَبْعَةٍ ‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘একটি গরু সাত জনের পক্ষ থেকে ও একটি উট সাত জনের পক্ষ থেকে’। অথচ এই হাদীছটিও সফরে ভাগে কুরবানী করার সাথে সম্পৃক্ত। কারণ একই রাবী জাবির (রাঃ) থেকেই উপরোক্ত পরস্পর (খ, গ, ঘ নং) তিনটি হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। যেখানে বিস্তারিত ব্যাখ্যা সহ অর্থাৎ সফরের কথা বলা হয়েছে। তাছাড়া দলীলের ক্ষেত্রে কোন বিষয়ে একই রাবীর বর্ণিত সংক্ষিপ্ত হাদীছের স্থলে বিস্তারিত ও ব্যাখ্যা সম্বলিত হাদীছ গ্রহণ করাই মুহাদ্দিছগণের রীতি। দ্বিতীয়ত : ইমাম আবুদাউদ (রহঃ) উপরোক্ত খ ও ঘ নং ব্যাখ্যা সম্বলিত হাদীছ দু’টি যে অধ্যায়ে নিয়ে এসেছেন, এই ব্যাখ্যাশূন্য হাদীছটিও ঐ একই অধ্যায়ে নিয়ে এসেছেন। অতএব বিভ্রান্তির কোন প্রশ্নই উঠে না। তাছাড়া ১ম হিজরী সনে কুরবানীর বিধান চালু হওয়ার পর মুক্বীম অবস্থায় রাসূল (ছাঃ), খোলাফায়ে রাশেদীন বা ছাহাবীগণ ভাগে কুরবানী করেছেন মর্মে কোন ছহীহ, যঈফ হাদীছ বা আছার পাওয়া যায় না। তাই এ থেকে বিরত থাকাই কর্তব্য। আল্লাহই অধিক অবগত।






প্রশ্ন (৩২/৩১২) : রাষ্ট্রীয়ভাবে ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য বর্তমান গণতান্ত্রিক যুগে আমাদের করণীয় কি? - শফীকুল ইসলাম, আসাম, ভারত।
প্রশ্নঃ (৯/১২৯): শাওয়ালের ছয়টি ছিয়াম পালন করার পর বিভিন্ন স্থানে মিষ্টি মুখ করে ঈদ পালন করা হয়। এটা কি শরী‘আত সম্মত?
প্রশ্ন (৩৭/৩৭) : নাপিত হিসাবে আমি মূলত চুল কাটলেও মাঝে মাঝে ভোক্তার চাহিদা মোতাবেক দাড়িও কাটতে হয়। এটা জায়েয হবে কি?
প্রশ্ন (৭/১২৭) : মসজিদে ছালাত আদায়ের ক্ষেত্রে বা সফরে অনেক সময় পৃথক ওযূখানা বা পর্দার মধ্যে পানি ব্যবহারের ব্যবস্থা থাকেনা। ফলে মেয়েদের জন্য ওযূ করা সম্ভব হয় না। এমন অবস্থায় তাদের তায়াম্মুম করা যাবে কি?
প্রশ্ন (৩০/১৯০) : একটি বইয়ে ক্বিয়ামতের আলামতের মধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ক্বিয়ামতের আগে রোমক তথা খৃষ্টানদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এবং আরবদের সংখ্যা কমে যাবে। এর কোন সত্যতা আছে কি? - -জুয়েল রাণা, ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল, রাজশাহী।
প্রশ্ন (৪০/৪৪০) : ইন্নী ওয়াজ্জাহতু ওয়াজহিয়া লিল্লাযী... দো‘আটি ছালাতের কোন কোন স্থানে পড়া যাবে?
প্রশ্নঃ (১৫/৪১৫) : শাক্বীক্ব ইবনু সালামা (রাঃ) প্রায়ই নিম্নের দো‘আটি করতেন। ‘হে আল্লাহ! যদি আপনি আমাকে হতভাগ্য ও পাপিষ্ঠদের তালিকাভুক্ত করে থাকেন তাহ’লে তা মুছে ফেলুন এবং পুণ্যবান ও সৌভাগ্যবানদের অন্তর্ভুক্ত করুন। আর যদি আমাকে সৎকর্মশীলদের তালিকাভুক্ত করে থাকেন তাহলে তা বাকী রাখুন। আপনি যা ইচ্ছা মিটিয়ে থাকেন ও যা ইচ্ছা বাকী রাখেন। প্রকৃত লিখন আপনার কাছেই রয়েছে। এ হাদীছটি কি ছহীহ? এ দো‘আ সিজদায় ও তাশাহহুদের বৈঠকে পড়া যাবে কি? হাদীছটি ছহীহ হ’লে হরকত সহ ‘তাহরীকে’ প্রকাশের অনুরোধ করছি।
প্রশ্ন (১৩/৫৩) : ওযূ করার পর কিছু খেলে কুলি করা আবশ্যক কি?
প্রশ্ন (৪/২০৪) : মুমিন কি সৎকর্মের মাধ্যমে ক্বিয়ামতের দিন নবী-রাসূলগণের মর্যাদায় পৌঁছতে পারবে যেমন কুরআন ও বিভিন্ন হাদীছে দেখা যায়? - -আহমাদ রেযা, বর্ণালী, রাজশাহী।
প্রশ্ন (২৮/৪২৮) : কোন ব্যাংকে প্রোগ্রামার বা ইলেকট্রিশিয়ান পদে চাকুরী করা যাবে কি? কারণ এ পদগুলি তো সরাসরি সূদের লেনদেনের সাথে জড়িত নয়?
প্রশ্ন (১/২০১) : ওয়াহশী সম্পর্কে জানতে চাই। তিনি কি ছাহাবী ছিলেন? - -আলতাফ হোসেন, বায়া, রাজশাহী।
প্রশ্ন (১৫/৪১৫) : ঈদায়েনের ১২ তাকবীর তাকবীরে তাহরীমা সহ না ব্যতীত? এ বিষয়ে বিধান কি? - -আবুল হাশেম, বড়পেটা, আসাম।
আরও
আরও
.