উত্তর : ‘অসীলা’ অর্থ নৈকট্য। পারিভাষিক অর্থে যার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য কামনা করা হয়। অসীলা দুই প্রকার (১) সিদ্ধ অসীলা। এর পদ্ধতি তিনটি। যেমন- (ক) আল্লাহর নাম ও গুণাবলীর অসীলায় প্রার্থনা। যেমন রাসূল (ছাঃ) যখন কোন দুঃখ বা সংকটের সম্মুখীন হ’তেন, তখন বলতেন ‘ইয়া হাইয়ু ইয়া ক্বাইয়ূমু বিরাহমাতিকা আস্তাগীছ’ (হে চিরঞ্জীব! হে বিশ্বচরাচরের ধারক! আমি তোমার রহমতের আশ্রয় প্রার্থনা করছি) (তিরমিযী, মিশকাত হা/২৪৫৪)। (খ) নিজের নেক আমল সমূহের অসীলায় প্রার্থনা। যেমন গুহায় আটকে পড়ার পর তিন যুবকের নিজ নিজ সৎকর্মের কথা উল্লেখ করে প্রার্থনা করা এবং মুক্তি পাওয়া সম্পর্কিত প্রসিদ্ধ ঘটনা (বুখারী হা/২২৭২)। (গ) জীবিত কোন ব্যক্তির নিকট দো‘আ কামনার মাধ্যমে। যেমন প্রচন্ড খরার কারণে জনৈক বেদুঈন রাসূল (ছাঃ)-এর নিকটে এসে দো‘আর আবেদন করলে তিনি দো‘আ করেন এবং তাতে প্রবল বৃষ্টি নেমে আসে (বুখারী হা/১০১৪)।
একইভাবে ওমর (রাঃ) আববাস (রাঃ) এর অসীলায় প্রার্থনা করে বলতেন, হে আল্লাহ! আমরা তোমার নবীর অসীলায় বৃষ্টি প্রার্থনা করতাম এবং তুমি আমাদের বৃষ্টি দিতে। এখন (তাঁর মৃত্যুর পরে) নবীর চাচা (আববাস)-এর অসীলায় বৃষ্টি প্রার্থনা করছি। অতএব তুমি আমাদের বৃষ্টি দাও! অতঃপর বৃষ্টি হ’ত (বুখারী হা/১০১০; মিশকাত হা/১৫০৯)।
(২) দ্বিতীয় প্রকার হ’ল নিষিদ্ধ অসীলা। আর তা হ’ল মৃত মানুষের অসীলা। যেমন রাসূল (ছাঃ) বা পরবর্তী কোন নেককার মানুষের নিকটে বা তার ইযযতের দোহাই অসীলায় চাওয়া। এটা বড় শিরকের অন্তর্ভুক্ত।
স্মর্তব্য যে, আববাস (রাঃ)-এর মাধ্যমে ওমর (রাঃ)-এর বৃষ্টি প্রার্থনার অর্থ এটা নয় যে, তিনি আববাস (রাঃ)-এর মর্যাদার দোহাই দিয়ে নিজে দো‘আ করেছিলেন। বরং এর অর্থ হ’ল ওমর (রাঃ)-এর আবেদনক্রমে আববাস (রাঃ) দো‘আ করেন (ইবনু হাজার, ফাৎহুলবারী ২/৪৯৭, হা/৯৬৪-এর ব্যাখ্যা দ্রঃ)। মনে রাখতে হবে যে, অসীলা কোন ব্যক্তি নয়, বরং ব্যক্তির দো‘আ ও সুফারিশ মাত্র। যা আল্লাহ ইচ্ছা করলে কবুল করতেও পারেন, নাও পারেন (বিস্তারিত দ্রঃ দরসে কুরআন- অসীলা, মাসিক আত-তাহরীক, ডিসেম্বর ২০০০)।