উত্তর : আটরশী
পীর ছাহেবের মৌলিক বিভ্রান্তিগুলির অন্যতম হ’ল- (১) পরকালে মুক্তির জন্য
ইসলাম ধর্ম গ্রহণের আবশ্যকতা নেই। যেমন পীর ছাহেব বলেছেন, ‘হিন্দু,
মুসলমান, বৌদ্ধ ও খৃষ্টানগণ নিজ নিজ ধর্মের আলোকেই সৃষ্টিকর্তার নৈকট্য
অর্জনের চেষ্টা করতে পারে এবং তাহ’লেই কেবল বিশ্বে শান্তি আসতে পারে’ (আটরশীর
কাফেলা, সংকলনে মাহফূযুল হক, আটরশীর দরবার থেকে প্রকাশিত, ৮৯ পৃঃ,
সংস্করণ-১৯৮৪, তাসাউফ, তত্ত্ব ও পর্যালোচনা, ১৪৭ পৃঃ, প্রকাশকাল-২০০০ খৃঃ)। অথচ মানবজাতির জন্য আল্লাহর মনোনীত একমাত্র দ্বীন হ’ল ইসলাম (আলে ইমরান ১৯)।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘কেউ ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন ধর্ম তালাশ করলে, তা
কখনোই কবুল করা হবে না। এমন ব্যক্তি পরকালে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত
হবে’ (আলে-ইমরান ৮৫)। রাসূল (ছাঃ) বলেন, যার হাতে মুহাম্মাদের
জীবন তার শপথ করে বলছি, এ উম্মতের কেউ যদি আমার আনীত দ্বীন গ্রহণ ব্যতিরেকে
মৃত্যুবরণ করে, সে ইহুদী হৌক বা খৃষ্টান হৌক, অবশ্যই সে জাহান্নামের
অধিবাসী হবে (মুসলিম হা/১৫৩, মিশকাত হা/১০)।
(২) ভাল-মন্দ পীরের হাতে। পীর ছাহেব বলেছেন, এনায়েতপুরী ছাহেব তিরোধানের পূর্বে আমাকে বলে গেছেন, ‘বাবা তোর ভাল-মন্দ উভয়টাই আমার হাতে রইল। তোর কোন চিন্তা নেই’ (শাহছুফী হযরত ফরিদপুরী ছাহেবের নসিহত, ৩/১১১ পৃঃ, প্রকাশক : পীরজাদা মোস্তফা আমীর মুজাদ্দেদী, বিশ্ব জাকের মঞ্জিল ফরিদপুর, ৩য় মুদ্রণ ১লা মে-১৯৯৯ খৃষ্টাব্দ)। এই আক্বীদা পীরকে সরাসরি আল্লাহর আসনে বসিয়ে দেওয়ার শামিল। অথচ আল্লাহ বলেন, ‘(হে নবী)! বলুন, সবকিছুই আল্লাহর তরফ থেকে হয়’ (নিসা ৭৮)। অন্যত্র তিনি বলেন, ‘যদি আল্লাহ তোমাকে কষ্টে নিপতিত করেন, তাহলে তিনি ব্যতীত তা দূর করার কেউ নেই। আর যদি তিনি তোমার কোন কল্যাণ করতে চান, তবে প্রতিরোধের কেউ নেই’ (ইউনুস ১০৭)।
এছাড়াও সকল পীরপূজারীই এ বিশ্বাস করে থাকে যে, পীর পরকালে তাদের মুক্তির অসীলা হবে। অথচ স্বয়ং রাসূল (ছাঃ) নিজ কন্যা ফাতেমা (রাঃ)-কে লক্ষ্য করে বলছেন, হে ফাতেমা বিনতে মুহাম্মাদ! তুমি নিজেকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাও। আমি আল্লাহর আযাব থেকে তোমাকে রক্ষায় কিছুই করতে পারব না’ (মুসলিম হা/২০৪)।
উক্ত আলোচনায় তাদের আক্বীদা সম্পর্কে সামান্য কিছু ধারণা দেওয়া হ’ল। এছাড়াও তাদের আরো বিভ্রান্ত আক্বীদাসমূহ রয়েছে, যা থেকে দূরে থাকা আবশ্যক।