উত্তর : ইমাম বুখারী (রহঃ) কোন মাযহাবের অনুসারী ছিলেন না। বরং তিনি একজন উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন মুহাদ্দিছ ও মুজতাহিদ ছিলেন। তিনি ইমাম শাফেঈ, মালেক ও আহমাদ (রহঃ)-এর ন্যায় হাদীছের অনুসরণ করতেন বলেই অধিকাংশ মাসআলায় তাঁদের সাথে ঐক্যমত পরিলক্ষিত হয়। অপরদিকে ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) অধিকাংশ ক্ষেত্রে রায় অনুযায়ী ফৎওয়া প্রদান করায় তাঁর সাথে মতপার্থক্য বেশী দেখা যায়। ভারতের দেওবন্দ মাদরাসার সাবেক মুহতামিম আল্লামা আনওয়ার শাহ কাশ্মীরী বলেন, জেনে রেখ ইমাম বুখারী (রহঃ) নিঃসন্দেহে একজন মুজতাহিদ ছিলেন (ফায়যুল বারী ১/৫৮)। স্বীয় কিতাবে তিনি কারো তাক্বলীদ করেননি (ফায়যুল বারী ১/৪৩৮)। তিনি ফক্বীহ্দের নেতা ছিলেন (তারীখে বাগদাদ ২/০৬)। ইবনু হাজার আসক্বালানী (রহঃ) বলেন, এটা খুবই প্রসিদ্ধ যে ইমাম বুখারী হাদীছ থেকে মাসআলাসমূহ সাব্যস্ত করেছেন (ফাৎহুল বারী ১/৮২)। হাফেয যাহাবী বলেন, তিনি ইমাম, হাফেয, হুজ্জাত, ফিক্বহ ও হাদীছের নেতা এবং মুজতাহিদ ছিলেন। তিনি দ্বীনদারী, পরহেযগারিতা ও আল্লাহ ভীরুতার সাথে সাথে দুনিয়ার অনন্য সাধারণ ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন (আল-কাশিফ ফী মা‘রিফাতি মান লাহু রিওয়ায়াতুন ফিল কুতুবিস সিত্তাহ ৩/১৮, ক্রমিক নং ৪৭৯০)। ইমাম ইবনু তায়মিয়াহ (রহঃ) বলেন, ইমাম বুখারী ও আবুদাঊদ ফিক্বহের ইমাম ও মুজতাহিদ মুত্বলাক্ব ছিলেন। পক্ষান্তরে মুসলিম, তিরমিযী, নাসাঈ, ইবনু মাজাহ, ইবনু খুযায়মাহ, আবু ইয়া‘লা, বাযযার প্রমুখ আহলেহাদীছ মাযহাবের উপরে ছিলেন। তারা কোন নির্দিষ্ট আলেমের মুক্বাল্লিদ ছিলেন না। তারা মুজতাহিদ মুত্বলাক্বও ছিলেন না (মাজমূ‘ ফাতাওয়া ২০/৩৯-৪০)। অতএব ইমাম বুখারীসহ কুতুবে সিত্তার অন্যান্য ইমামগণ হাদীছের অনুসারী ছিলেন। প্রচলিত কোন মাযহাবের মুক্বাল্লিদ ছিলেন না।