উত্তর : ‘জিহাদ’
অর্থ, সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো’। পারিভাষিক অর্থে, আল্লাহর দ্বীনকে
সমুন্নত করার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো। এর দ্বারা নিজেকে এবং অপরকে
প্রবৃত্তির চাহিদা থেকে দূরে রাখা এবং জীবনের সকল ক্ষেত্রে আল্লাহর
দ্বীনকে সমুন্নত রাখার সর্বাত্মক প্রচেষ্টাকে বুঝানো হয়। ইবনু হাজার বলেন,
নফস, শয়তান ও ফাসিকদের বিরুদ্ধে জিহাদও এর অন্তুর্ভুক্ত’ (ইবনু হাজার, ফাৎহুল বারী ৬/৫ পৃঃ)।
কাফিরের বিরুদ্ধে জিহাদ প্রত্যেক মুসলমানের উপর ফরয। চাই সেটা হাত দিয়ে
হৌক বা যবান দিয়ে হৌক বা মাল দিয়ে হৌক কিংবা অন্তর দিয়ে হৌক’ (ফাৎহুল বারী হা/ ২৮২৫-এর ব্যাখ্যা, ৬/৪৫ পৃঃ)।
তবে ঈমান, ছালাত ও ছিয়ামের ন্যায় সশস্ত্র ‘জিহাদ’ প্রত্যেক মুমিনের উপরে
সর্বাবস্থায় ‘ফরয আয়েন’ নয়। বরং আযান, জামা‘আত, জানাযা ইত্যাদির ন্যায়
‘ফরযে কিফায়াহ’। যা উম্মতের কেউ আদায় করলে অন্যদের জন্য যথেষ্ট হয়ে যায়। না
করলে সবাই গোনাহগার হয়। তবে কিছু ক্ষেত্রে জিহাদ ফরযে আয়েন হয়ে যায়। যেমন,
(১) মুসলমানদের বাড়ীতে বা শহরে শত্রুবাহিনী উপস্থিত হ’লে (তওবাহ ৯/১২৩)। (২) শাসক যখন কাউকে যুদ্ধে বের হবার নির্দেশ দেন (মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/২৭১৫, ৩৮১৮)। (৩) যুদ্ধের সারিতে উপস্থিত হ’লে (আনফাল ৮/১৫, ৪৫)। (৪) যখন কেউ বাধ্য হয় (তিরমিযী হা/১৪২১, মিশকাত হা/৩৫২৯)। বর্তমান যুগে মুসলিম দেশের সেনাবাহিনী সশস্ত্র যুদ্ধের দায়িত্ব পালন করবে।
স্মর্তব্য যে, শত্রুশক্তির বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণার অধিকার হ’ল মুসলমানদের সর্বসম্মত আমীরের (নিসা ৪/৫৯)। রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষ ব্যতীত কোন দল বা ব্যক্তি এককভাবে কারু বিরুদ্ধে সশস্ত্র জিহাদ ঘোঘণা করতে পারে না (এবিষয়ে বিস্তারিত দ্রষ্টব্য : ‘জিহাদ ও ক্বিতাল’ বই)।