উত্তর :
কথা ও কাজের মধ্যে মিল থাকা মুমিনের অন্যতম গুণ। যার কথা ও কাজের মধ্যে
মিল নেই, তার পরিণতি সম্পর্কে কুরআন ও হাদীছে কঠোর সাবধান বাণী উচ্চারিত
হয়েছে (ছফ ২; বুখারী হা/৩২৬৭, মুসলিম, মিশকাত হা/৫১৩৯; ‘সৎ কাজের নির্দেশ’ অনুচ্ছেদ)।
নিজে সৎকাজ করা এবং অসৎ কাজ থেকে বিরত থাকা যেমন ওয়াজিব, তেমনি অপরকে
সৎকাজের উপদেশ দেওয়া এবং অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করাও ওয়াজিব। তবে একটি ওয়াজিব
পালন করতে না পারলেও আরেকটি ওয়াজিব ত্যাগ করা যাবে না। সর্বদা উপদেশ দিয়ে
যেতে হবে। কারণ আল্লাহ বলেন, ‘তুমি উপদেশ দাও। কারণ উপদেশ মুমিনদের উপকার
করে’ (যারিয়াত ৫১/৫৫)। তাবেঈ বিদ্বান সাঈদ বিন জুবায়ের
(রহঃ) বলেন, ‘মানুষ যদি নিজে করতে না পারার কারণে সৎকাজের আদেশ এবং অসৎ কাজ
থেকে নিষেধ করা থেকে বিরত থাকত, তাহ’লে সৎ-অসৎ কাজের আদেশ-নিষেধকারী খুঁজে
পাওয়া যেত না’ (আলোচনা দ্রঃ ইবনু কাছীর, বাক্বারাহ ৪৪ আয়াতের ব্যাখ্যা)।
অতএব কারো আদেশ-নিষেধ যদি শরী‘আতসম্মত হয়, সেক্ষেত্রে তা মেনে চলায় কোন বাধা নেই। আল্লাহ বলেন, সুসংবাদ দাও আমার ঐ সব বান্দাদেরকে’ ‘যারা মনোযোগ দিয়ে কথা শোনে এবং তার উত্তমটি গ্রহণ করে’ (যুমার ৩৯/১৭-১৮)। এখানে ‘উত্তম কথা’ বলতে ‘কুরআন ও হাদীছ’কে বুঝানো হয়েছে।
তবে শরী‘আতের আদেশ-নিষেধ গ্রহণের সময় ছহীহ আক্বীদা ও আমলসম্পন্ন আলেম ও তাদের লেখনী থেকে গ্রহণ করতে হবে। শিরক বা বিদ‘আতপন্থীদের নিকট থেকে নয়।
ওমর (রাঃ) বলেন, তোমরা রায়পন্থীদের থেকে দূরে থাক। ওরা সুন্নাতের শত্রু (দারাকুৎনী হা/৪২৩৬, সিলসিলাতুল আছার আছ-ছহীহাহ হা/২৭৭)। তাবেঈ বিদ্বান ইবনু সীরীন ও হাসান বাছরী বলেন, তোমরা কখনোই বিদ‘আতী ও ঝগড়াটে লোকদের সাথে বসবে না, তাদের সাথে তর্কে জড়াবে না ও তাদের কোন কথা শুনবে না (দারেমী হা/৪০১)। ইবনু সীরীন পরিষ্কারভাবে বলেন, নিশ্চয়ই কুরআন-হাদীছের ইলম হ’ল দ্বীন। অতএব তোমরা দেখ কার কাছ থেকে দ্বীন গ্রহণ করছ’ (মুক্বাদ্দামা মুসলিম, দারেমী হা/৪২৪)।
-আব্দুছ ছামাদ, পবা, রাজশাহী।