উত্তর : মদীনার সনদ মূলতঃ শান্তি ও নিরাপত্তার সাথে বসবাসের জন্য রাসূল (ছাঃ) ও মদীনার ইহূদীদের মধ্যেকার একটি চুক্তি পত্র। ৩য় হিজরীর রবীউল আউয়াল মাসে কা‘ব বিন আশরাফের হত্যাকান্ডের পরে যা সম্পাদিত হয়েছিল।

মদীনার সংখ্যাগুরু আউস ও খাযরাজ নেতাগণ আগেই ইসলাম কবুল করায় এবং রাসূল (ছাঃ)-এর মদীনায় আগমনের পিছনে আউস ও খাযরাজ দুই প্রধান গোত্রের আমন্ত্রণ থাকায় তাদের সাথে সন্ধিচুক্তির কোন প্রশ্নই ছিল না। খাযরাজ গোত্রের আব্দুল্লাহ বিন উবাই নেতৃত্বের অভিলাষী থাকলেও গোত্রের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের বিরুদ্ধে গিয়ে প্রকাশ্যে কিছু করার ক্ষমতা তার ছিল না। ফলে বদর যুদ্ধের পর সে এবং তার অনুসারীরা প্রকাশ্যে ইসলাম কবুল করে। তবে সেসময় মদীনার সংখ্যালঘু ইহূদী সম্প্রদায় মুসলমানদের নবতর জীবনধারার প্রতি এবং বিশেষভাবে রাসূল (ছাঃ)-এর প্রতি ঈর্ষান্বিত থাকলেও অতি ধূর্ত হওয়ার কারণে প্রকাশ্য বিরোধিতায় লিপ্ত হয়নি। সমস্যা ছিল কেবল কুরায়েশদের নিয়ে। তারা পত্র প্রেরণ ও অন্যান্য অপতৎপরতার মাধ্যমে মুনাফিক ও ইহূদীদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে রাসূল (ছাঃ) ও তার সাথীদেরকে মদীনা থেকে বহিষ্কারের সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে থাকে। একাজে তারা যাতে সফল না হয় সেজন্য রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ২য় হিজরীতে সর্বপ্রথম মদীনার পার্শ্ববর্তী এলাকার বনু যামরাহ, বনু বুওয়াত্ব, বনু মুদলিজ প্রভৃতি গোত্রের সাথে সহযোগিতা চুক্তি সম্পাদন করেন।

এভাবে রাসূল (ছাঃ) চেয়েছিলেন, যেন যুদ্ধাশংকা দূর হয় এবং সর্বত্র শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু এ সময় মদীনায় ইহূদী চক্রান্ত চূড়ান্ত রূপ ধারণ করে। যার নেতৃত্বে ছিল তাদের ধনশালী নেতা ও ব্যঙ্গ কবি কা‘ব বিন আশরাফ। রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরামকে নিয়ে কটূক্তি করাই ছিল যার স্বভাব।  অতঃপর তাকে হত্যা করা হয়। ফলে ইহূদীরা ভীত হয়ে রাসূল (ছাঃ)-এর নিকটে এলে রাসূল (ছাঃ) তাঁর ও তাদের মধ্যে একটি লিখিত চুক্তি সম্পাদনের আহবান জানান। অতঃপর নবী করীম (ছাঃ) তাঁর ও তাদের মধ্যে এবং মুসলমানদের মধ্যে সার্বজনীন একটা দলীল লিখে দেন’ (আবুদাঊদ হা/৩০০০)

অত্র হাদীছ দৃষ্টে প্রতীয়মান হয় যে, চুক্তি লিখনের এই বিষয়টি হিজরতের পরেই নয়, বরং ৩য় হিজরীর রবীউল আউয়াল মাসে কা‘ব বিন আশরাফের হত্যাকান্ডের পরে তা সম্পাদিত হয়েছিল। 

অতএব ছহীহ হাদীছের আলোকে কেবল এটুকুই বলা যায় যে, এটি ছিল ৩য় হিজরীর রবীউল আউয়াল মাসের পরের ঘটনা। হিজরতের পরপরই নয়। নিঃসন্দেহে চুক্তিটি ছিল পারস্পরিক সন্ধিচুক্তি। কিন্তু চুক্তিটি কি ছিল, তার ভাষা কি ছিল, সেখানে কয়টি ধারা ছিল, কিছুই সঠিকভাবে বলার উপায় নেই।

তবে পার্শ্ববর্তী নিকট ও দূরের গোত্রসমূহের সাথে সন্ধিচুক্তিসমূহ সম্পাদনের পর ইহূদীদের সাথে অত্র চুক্তি সম্পাদনের ফলে প্রকৃত প্রস্তাবে ইসলামী খিলাফতের ভিত্তি স্থাপিত হয় এবং মদীনা তার রাজধানীতে পরিণত হয়। অতএব মদীনার সনদ ছিল একটি আন্তঃধর্মীয় ও আন্তঃসাম্প্রদায়িক চুক্তি, যার মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ স্বার্থে ও একক লক্ষ্যে একটি উম্মাহ বা জাতি গঠিত হয়। আধুনিক পরিভাষায় যাকে ‘রাষ্ট্র’ বলা হয়। এই সনদ ছিল আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তার সর্বপ্রথম ভিত্তি স্বরূপ। (বিস্তারিত দ্রষ্টব্য : সীরাতুর রাসূল (ছাঃ) ‘মদীনার সনদ’ অধ্যায়)।

-আলী আহসান, রিয়াদ, সঊদী আরব।







প্রশ্ন (০১/৪০১) : যুলুমের শিকার হওয়ার পরও মুসলিম ভাইকে ক্ষমা করার গুরুত্ব ও ফযীলত সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাই। - রবীউল আলম, ভোলা।
প্রশ্ন (২৯/৩০৯) : সন্তান যদি মায়ের সাথে মন্দ ব্যবহার করে তবে উক্ত মায়ের করণীয় কি?
প্রশ্ন (৫/৪৫) : নির্দিষ্ট বছরে হজ্জের নিয়ত করার পর কোন কারণবশতঃ সে বছর তা আদায় করতে না পারলে গোনাহ হবে কি? বা এর জন্য কোন কাফফারা দিতে হবে কি? - -রিফাত হাসান, সঊদী আরব।
প্রশ্ন (১১/১৩১) : মহিষ দ্বারা কুরবানী করা যাবে কি?
প্রশ্ন (৩৬/৩৫৬) : দাড়ি ওঠার প্রারম্ভিক সময়ে উভয় কানের পাশ দিয়ে যে দাড়ি উঠতে শুরু করে, তা কেটে ফেলা যাবে কি? - -মশীউর রহমান, গুলশান, ঢাকা।
প্রশ্ন (২৮/১০৮) : দেশে প্রচলিত শেয়ার বাজারের ব্যবসা শরী‘আতসম্মত কি?
প্রশ্ন (২৪/১৮৪) : ইসলাম গরীব অবস্থায় শুরু হয়েছিল... গরীবদের মাঝেই তা ফিরে যাবে। এখানে গরীব বলতে মক্কা-মদীনাকে বুঝানো হয়েছে কি? হাদীছটির বিস্তারিত ব্যাখ্যা জানতে চাই। - -উম্মে হাবীবা, রংপুর।
প্রশ্ন (৪০/৪৮০) : হজ্জকারী ব্যক্তির নামের শুরুতে ‘আলহাজ্জ’ বা ‘হাজী’ লেখা হয় কেন? এগুলো লেখা যাবে কি? - -আব্দুল্লাহ, কানসাট, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
প্রশ্ন (৩৯/২৭৯) : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে দেখার জন্য কোন নির্দিষ্ট আমল আছে কি? তাঁকে দেখলে কি জাহান্নাম হারাম হয়ে যাবে?
প্রশ্ন (৩৪/৩১৪) : কোন মুক্তিযোদ্ধা বা সরকারী কর্মকর্তা মারা গেলে রাষ্ট্রীয় মর্যাদার নামে দাফনের পূর্বে রাইফেলের গুলি ফুটানো, বাঁশি বাজানো ইত্যাদি কর্মসূচী পালন করা হয়। এগুলো কি শরী‘আত সম্মত?
প্রশ্ন (৩১/৩১) : পিতা-মাতা আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে আমাকে বিয়ে দিতে চায়। তাদের এই নির্দেশ অমান্য করলে আমি গোনাহগার হব কি?
প্রশ্ন (৩৪/২৭৪) : কোন অমুসলিম মুসলিম ব্যক্তিকে উপকার করলে তাকে জাযাকাল্লাহু খায়রান বলতে বা শুকরিয়া জানাতে পারবে কি?
আরও
আরও
.