উত্তর : ছুরাইয়া
তারকা উদিত হ’লে মহামারী দূরীভূত হয় এমন কোন প্রমাণ নেই। কারণ যে সকল
হাদীছে ছুরাইয়া উদিত হওয়ার কথা বলা হয়েছে সেখানে মূলত ফসলের কথা বলা হয়েছে।
অর্থাৎ ছুরাইয়া তারকা উদিত হ’লে খেজুরসহ অন্যান্য ফসলের উপর থেকে বিপদ উঠে
যাবে। এতে ছুরাইয়া তারকার নিজস্ব কোন ক্ষমতা ও প্রভাবের কথা বলা হয়নি; বরং
চন্দ্র-সূর্যের মত সময় নির্দেশক তারকা হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। হযরত
যায়েদ ইবনু ছাবিত (রাঃ) ছুরাইয়া তারকা উদিত হওয়ার পর ফলের হলুদ ও লাল রংয়ের
পূর্ণ প্রকাশ না ঘটা পর্যন্ত তাঁর বাগানের ফল বিক্রি করতেন না (বুখারী হা/২১৯৩; মুসলিম হা/২৫৪৬)।
আহমাদের বর্ণনায় এসেছে, ইবনু ওমর (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বালা-মুছীবত দূর
হওয়ার পূর্বে ফল বিক্রয় করতে নিষেধ করেছেন। তাকে জিজ্ঞেস করা হ’ল কখন
বালা-মুছীবত দূর হয়? তিনি বললেন, ছুরাইয়া উদিত হ’লে (আহমাদ হা/৫০১২, সনদ ছহীহ)। হাফেয ইবনু হাজার বলেন, ছুরাইয়া তারকা উদিত হয় গ্রীষ্মের শুরুতে, যখন প্রচন্ড গরম পড়ে (ফাৎহুল বারী ৪/৩৯৫; নায়ল ৫/২০৬)। আর গরমের কারণেই মৌসুমী ফলগুলো পাকে। সুতরাং উপরোক্ত বর্ণনাগুলো ফল পাকার সাথে সংশ্লিষ্ট। মহামারীর সাথে এর কোন সম্পর্ক নেই।
তবে একটি বর্ণনায় এসেছে, রাসূল (ছাঃ) বলেন, সকালে তারকা তথা ছুরাইয়া উদিত হ’লে সকল দেশ থেকে বালা-মুছীবত উঠে যায় (আহমাদ হা/৮৪৭৬, ৫০১২, সনদ ছহীহ)। উক্ত হাদীছের সনদকে শায়খ আরনাঊত্ব ছহীহ ও হাসান বললেও শায়খ আলবানী যঈফ বলেছেন (যঈফাহ হা/৩৯৭)। কোন কোন বর্ণনায় আছে, বালা উঠে যাবে বা প্রশমিত হবে (আহমাদ হা/৯০২৭; যঈফুল জামে‘ হা/৫০৯৬)। এই হাদীছটিকে ছহীহ ধরে নিয়ে কতিপয় ব্যাখ্যাকার বলেছেন, যেদিন সকালে ছুরাইয়া উদিত হবে সেদিন লোকদের উপর থেকে মহামারী ও রোগ-ব্যাধি উঠে যাবে এবং ফসলের উপর থেকে বিপদ কেটে যাবে (মানাভী, আত-তায়সীর ২/৩৫২; ফায়যুল ক্বাদীর ৫/৪৫৪; তাফসীরে সাম‘আনী ৬/৩০৬)। সর্বোপরি নিঃসন্দেহে কোন তারকার নিজস্ব ক্ষমতার কারণে নয়; বরং একমাত্র আল্লাহ চাইলেই বিপদ দূর হ’তে পারে।
-খায়রুল ইসলাম, পুঠিয়া, রাজশাহী।