উত্তর
: সন্তান পিতা-মাতার পরিত্যক্ত সম্পদ থেকে তাদের ঋণ পরিশোধ করবে। আল্লাহ
তা‘আলা মীরাছের আলোচনা শেষে বলেন, মৃতের অছিয়ত পূরণ করার পর এবং তার ঋণ
পরিশোধের পর (নিসা ৪/১১)। তবে নিজ সম্পত্তি থেকে পিতা-মাতার ঋণ পরিশোধ করা সন্তানের জন্য বাধ্যতামূলক নয় (ইবনু তায়মিয়াহ, মিনহাজুস সুন্নাহ ৫/২৩২)।
কিন্তু ঋণ পরিশোধ করা পিতা-মাতার খেদমতের অংশ ও অফুরন্ত ছওয়াবের কাজ হওয়ায়
সন্তান নিজ দায়িত্বে তা পালন করার সর্বাত্মক চেষ্টা করবে। কেননা ঋণ অবশ্য
পূরণীয় বিষয়। এমনকি কোন ব্যক্তি যদি আল্লাহর রাস্তায় শহীদও হয়, তবুও সে
জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না যতক্ষণ না তার ঋণ পরিশোধ করা হয় (নাসাঈ হা/৪৬৮৪; মিশকাত হা/২৯২৯)।
জাবের (রাঃ) বলেন, জনৈক ব্যক্তি মারা গেল। আমরা তার গোসল দিলাম, সুগন্ধি
মাখালাম ও কাফন পরালাম। অতঃপর আমরা জানাযার জন্য তাকে রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট
নিয়ে এলাম। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তার কোন ঋণ আছে কি? আমরা বললাম, দুই দীনার
ঋণ আছে। তখন তিনি ফিরে গেলেন। তখন আবু ক্বাতাদাহ উক্ত ঋণ পরিশোধের দায়িত্ব
নিল। অতঃপর আমরা তাঁর নিকটে পুনরায় এলাম এবং আবু ক্বাতাদাহ বলল, উক্ত দুই
দীনার পরিশোধের দায়িত্ব আমার উপর রইল। তখন রাসূল (ছাঃ) বললেন, ঋণগ্রস্ত
নির্ধারিত হ’ল এবং মাইয়েত দায়মুক্ত হ’ল? আবু ক্বাতাদাহ বলল, হ্যাঁ। তখন
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তার জানাযা পড়ালেন। একদিন পরে তিনি জিজ্ঞেস করলেন, ঐ দুই
দীনারের অবস্থা কি? আবু ক্বাতাদাহ বললেন, মাত্র গতকালই লোকটি মারা গেছে।
পরের দিন রাসূল (ছাঃ) তার নিকটে পুনরায় এলেন। আবু ক্বাতাদাহ বললেন, আমি তার
দুই দীনার পরিশোধ করেছি। তখন রাসূল (ছাঃ) বললেন, ‘এখন ঐ মাইয়েতের চামড়া
ঠান্ডা হ’ল’ (আহমাদ হা/১৪৫৭৬, ছহীহুল জামে‘ হা/২৭৫৩)। এতে বুঝা যায় যে, কেবল দায়িত্ব নিলেই মাইয়েতের আযাব দূর হবে না, যতক্ষণ না তার ঋণ পরিশোধ করা হবে (শাওকানী, নায়লুল আওত্বার ৫/২৮৫ ‘ঋণ পরিশোধ না করা পর্যন্ত ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি দায়মুক্ত হবে না’ অনুচ্ছেদ)। অতএব পিতার ঋণ শোধ করতে সন্তান বাধ্য না হ’লেও তার বড় কর্তব্য হবে সেটা পরিশোধ করা।