উত্তর : জিনদের স্বতন্ত্র কোন ধর্মগ্রন্থ নেই বা তাদের নিকট তাদের মধ্য থেকে কোন নবী-রাসূল প্রেরণ করা হয়নি। বরং মানব জাতির নিকট যে নবী-রাসূল বা কিতাব প্রেরণ করা হয়েছিল, তাদের জন্যও একই নবী-রাসূল বা ধর্মগ্রন্থ প্রযোজ্য। আল্লাহ বলেন, ‘(স্মরণ কর) যখন আমরা একদল জিনকে তোমার দিকে ফিরিয়ে দিয়েছিলাম যারা মনোযোগ দিয়ে কুরআন শুনছিল। অতঃপর যখন তারা সেখানে উপস্থিত হ’ল, তখন বলল, তোমরা চুপ থাক। তারপর যখন শেষ হয়ে গেল, তখন তারা তাদের সম্প্রদায়ের নিকট ফিরে গেল সতর্ককারীরূপে। তারা বলল, হে আমাদের সম্প্রদায়! আমরা এমন এক কিতাব শুনেছি, যা মূসার উপর নাযিল হয়েছে। যা পূর্ববর্তী কিতাব সমূহের সত্যায়ন করে। যা সত্যের দিকে ও সরল পথের দিকে পরিচালিত করে (আহকাফ ৪৬/২৯-৩০)। অত্র আয়াতদ্বয় থেকে বুঝা যায় জিনেরা তাওরাত পেয়েছিল। পেয়েছিল কুরআনসহ পূর্ববর্তী ও পরবর্তী কিতাবসমূহও। জিনেরা রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট এসে কুরআন শুনে যেত। আল্লাহ বলেন, ‘ধাপনি বলুন (হে মুহাম্মাদ)! আমার প্রতি অহী করা হয়েছে এই মর্মে যে, জিনদের একটি দল মনোযোগ সহকারে (কুরআন) শ্রবণ করেছে এবং বলেছে যে, আমরা তো এক বিস্ময়কর কুরআন শ্রবণ করেছি’ (জিন ৭৪/১)। আল্লাহ কুরআনে মানুষ ও জিনকে একই সাথে সম্বোধন করে বলেন, ‘হে জিন ও ইনসান জাতি! তোমাদের কাছে কি তোমাদের মধ্য থেকে রাসূলগণ আসেননি, যারা তোমাদের নিকট আমাদের আয়াতসমূহ বর্ণনা করতেন এবং তোমাদেরকে আজকের দিনে সাক্ষাতের ভয় প্রদর্শন করতেন?’(আন‘আম ৬/১৩০)।
তবে জিনদের মধ্যে পৃথক দাঈ বা সৎপথে অহবানকারী রয়েছে। যারা রাসূলগণের নিকট ধর্ম শিখে গিয়ে নিজেদের মধ্যে প্রচার করে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘আমার কাছে এক জিন জাতির মধ্যস্থ আহবায়ক এসেছিল। আমি তার সঙ্গে গিয়ে তাদের কাছে কুরআন পড়লাম। অতঃপর তিনি আমাদেরকে সঙ্গে নিয়ে গিয়ে তাদের বিভিন্ন চিহ্ন ও তাদের আগুনের চিহ্ন দেখালেন। তারা তাঁর নিকট খাদ্য চেয়েছিল। তিনি বলেছিলেন, ‘আল্লাহর নাম উল্লেখ করে যে কোন হাড্ডির উপর তোমাদের হাত পড়বে, তা তোমাদের জন্য পর্যাপ্ত গোশতে পরিণত হবে। আর প্রত্যেক গোবর হবে তোমাদের পশুখাদ্য। অতঃপর তিনি (ছাহাবীদেরকে) বললেন, সুতরাং তোমরা ঐ দু’টি জিনিস দিয়ে পবিত্রতা অর্জন করবে না। কারণ তা তোমাদের (জিন) ভাইদের খাদ্য’ (মুসলিম হা/৪৫০; তিরমিযী হা/৩২৫৮; ছহীহাহ হা/৩২০৯)।