উত্তর : ‘নারদাশীর’ অনারব শব্দ। যা প্রাচীন পারস্য ও শামের লোকেরা আবিষ্কার করে। নারদাশীর বলতে সে সকল খেলাকে বুঝায় যাতে কাঠ, হাড় বা প্লাস্টিকের তৈরী বাক্স কিংবা চৌকো (dice) রয়েছে। যেমন পাশা, লুডু, দাবা, শতরঞ্জ প্রভৃতি, যা মূলতঃ ভাগ্য ও অনুমাননির্ভর (লিসানুল ‘আরাব ৩/৪২১; আল-মু‘জামুল ওয়াসীত্ব ২/৯১২)। এসব খেলার বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে, যা সবই হারাম। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি নারদাশীর খেলায় অংশগ্রহণ করল, সে নিজের হস্ত শূকরের রক্তে রঞ্জিত করল’ (মুসলিম হা/২২৬০; মিশকাত হা/৪৫০০)। অন্য বর্ণনায় রয়েছে, ‘যে ব্যক্তি নারদাশীর খেলল, সে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নাফরমানী করল’ (আবুদাউদ হা/৪৯৩৮; মিশকাত হা/৪৫০৫)। একদা আলী (রাঃ) একদল ব্যক্তিকে শতরঞ্জ খেলতে দেখে বললেন, এসব মূর্তি নিয়ে তোমরা মত্ত হয়ে উঠেছ কেন? (মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বা হা/২৬৬৮২; বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান হা/৬০৯৭, সনদ হাসান; ইবনু হাযম, মুহাল্লা ৬/৬৩)।
আবুল ওয়ালীদ আল-বাজী এই নিষেধাজ্ঞার কারণ সম্পর্কে বলেন, এসব খেলা মানুষকে প্রায়শই আল্লাহর স্মরণ থেকে গাফেল রাখে। এতে দ্বীন ও দুনিয়ার কোন উপকারিতা নেই; বরং এর পরিণামে মানুষ জুয়া খেলা, মিথ্যা শপথ এবং ছালাত পরিত্যাগে অভ্যস্ত হয় (আল-মুনতাক্বা শারহুল মুওয়াত্ত্বা ৭/২৭৮)। বর্তমান যুগে তাস, ক্যাসিনো, ব্রীজ প্রভৃতি খেলাও একই পর্যায়ভুক্ত। টাকার হারজিত না থাকলেও এসব খেলা পরিত্যাজ্য। কেননা এগুলোর প্রকৃতি ও কুফল একই। সুতরাং ঈমানদারের জন্য এ জাতীয় সময় অপচয়কারী এবং আল্লাহ থেকে বিমুখকারী খেলা হ’তে বিরত থাকা আবশ্যক (শাওকানী, নায়লুল আওত্বার ‘জুয়া ও নারদাশীর খেলা হারাম’ অনুচ্ছেদ ৮/১০৮)।