উত্তর : কুরআনে বর্ণিত ‘রাক্বীবুন ‘আতীদ’ ‘সদা প্রস্ত্তত প্রহরী’ (ক্বাফ ১৭-১৮) কোন ফেরেশতার নাম নয়, বরং এর দ্বারা দু’জন বা একদল সম্মানিত লেখক ফেরেশতাকে বুঝানো হয়েছে, যাঁরা প্রত্যেক মানুষের সাথে থাকেন। যাঁরা মানুষের ভাল-মন্দ আমল লিখেন। তাদের হেফাযতের দায়িত্বে থাকেন। আল্লাহ বলেন, ‘যখন দুই ফেরেশতা ডানে ও বামে বসে তার আমল লিপিবদ্ধ করে’; ‘সে যে কথাই উচ্চারণ করে, তাই লিপিবদ্ধ করার জন্য তার কাছে সদা প্রস্ত্তত প্রহরী (ফেরেশতা) রয়েছে’ (ক্বাফ ৫০/১৭-১৮)। তিনি আরো বলেন, ‘অথচ তোমাদের উপরে অবশ্যই তত্ত্বাবধায়ক নিযুক্ত রয়েছে’; ‘সম্মানিত লেখকবৃন্দ’; ‘তারা জানেন তোমরা যা কর’ (ইনফিতার ৮২/১০-১২)।
আবু মিজলায বলেন, মুরাদ এলাকা থেকে জনৈক ব্যক্তি আলী (রাঃ)-এর কাছে এল। তিনি বললেন, হে আলী! আপনি আপনার জন্য পাহারা নিযুক্ত করুন। কেননা মুরাদ এলাকার কিছু লোক আপনাকে হত্যা করতে চায়। জবাবে আলী (রাঃ) বললেন, নিশ্চয়ই প্রত্যেক ব্যক্তির সঙ্গে দু’জন করে ফেরেশতা থাকে। যারা তাকে হেফাযত করে সেসব বিষয় থেকে যা তাক্বদীরে নেই। কিন্তু যখন তাক্বদীর উপস্থিত হয়, তখন তারা উভয়ে তার থেকে সরে যায়’ (ইবনু কাছীর, তাফসীর সূরা রা‘দ ১১ আয়াত ৪/৪৩৯ পৃ.)। কা‘ব আল-আহবার বলেন, যদি আল্লাহ তোমাদের জন্য ফেরেশতা নিয়োগ না করতেন, যারা তোমাদের খাদ্য, পানীয় ও লজ্জাস্থান সবকিছু হেফাযত করে, তাহ’লে শয়তান জিনেরা তোমাদের উঠিয়ে নিয়ে যেত’ (ঐ)। সুতরাং প্রতিটি মানুষের কাঁধে লেখক ফেরেশতাগণ থাকেন- এটা কুরআন ও হাদীছ থেকে প্রমাণিত এবং আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের সর্বসম্মত আক্বীদা। সুতরাং যে যুক্তিবাদী লেখক ‘রাকীবুন আতীদ’ দ্বারা মানব মস্তিষ্কের নির্দিষ্ট অংশ বুঝাতে চেয়েছেন, তার কথার কোন শারঈ ভিত্তি নেই। এগুলি স্রেফ কষ্ট কল্পনা মাত্র। অতএব এসব বক্তব্য থেকে বেঁচে থাকা আবশ্যক।